নিরাপত্তা চুক্তির প্রতি ট্রাম্প প্রশাসনের অবস্থান এবং অব্যাহত আঞ্চলিক উত্তেজনা নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে জাপান তার দক্ষিণাঞ্চলীয় কিউশু দ্বীপে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের পরিকল্পনা করছে। প্রায় এক হাজার কিলোমিটার পাল্লার এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো উত্তর কোরিয়া ও চীনের উপকূলীয় অঞ্চলে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম হবে। আগামী বছর বিদ্যমান ক্ষেপণাস্ত্র গ্যারিসনসহ দুটি ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্রগুলো মোতায়েনের কথা রয়েছে। 

সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে কিয়োডো নিউজ জানিয়েছে, জাপান কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ ওকিনাওয়া দ্বীপ শৃঙ্খলের প্রতিরক্ষা জোরদার করবে এবং এটি আক্রমণের ক্ষেত্রে জাপানের ‘পাল্টা আক্রমণ ক্ষমতা’ উন্নয়নের অংশ।

ফুকুই প্রিফেকচারাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এমিরিটাস অধ্যাপক ইয়োইচি শিমাদা বলেন, “চীন ও উত্তর কোরিয়ার হুমকি ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাই জাপানের পক্ষে আরো কার্যকর অস্ত্র ব্যবস্থার মাধ্যমে এর মোকাবিলা করা স্বাভাবিক। আমি মনে করি জাপানের উচিত আরো শক্তিশালী নিরাপত্তা গড়ে তোলার জন্য দ্রুত দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের মতো পদক্ষেপ নেওয়া।”

৬ মার্চ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অভিযোগ করে বলেন, “জাপানের সাথে আমাদের একটি দুর্দান্ত সম্পর্ক রয়েছে, তবে জাপানের সাথে আমাদের একটি আকর্ষণীয় চুক্তি রয়েছে যা আমাদের তাদের রক্ষা করতে হবে, কিন্তু তাদের আমাদের রক্ষা করতে হবে না। চুক্তিটি এভাবেই লেখা আছে .

.. এবং যাইহোক, তারা আমাদের সাথে অর্থনৈতিকভাবে ভাগ্য তৈরি করে। আমি আসলে জানতে চাই কে এই চুক্তিগুলো করে?”

ট্রাম্পের এই মন্তব্য উদ্বিগ্ন করে তুলেছে জাপানকে।

টোকিওর টেম্পল বিশ্ববিদ্যালয়ের রবার্ট ডুজারিকের মতে, “যারা এটি মনোযোগ সহকারে দেখছেন তাদের কাছে এটা স্পষ্ট যে মার্কিন-জাপান জোট খারাপ অবস্থায় রয়েছে। চীন যদি জাপান আক্রমণ করে, তবুও ট্রাম্পের অধীনে আমেরিকা কিছু করবে এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই। এটা একটা বড় সমস্যা।”

ঢাকা/শাহেদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

ঈদুল ফিতরে ভূয়া তালিকা করে ভিজিএফ’র চাল আত্মসাত 

দিনাজপুরের হাকিমপুরে উপজেলার খট্রামাধবপাড়া ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান ছদরুল শামীম স্বপনের বিরুদ্ধে দুস্থদের ভিজিএফ’র চাল বিতরণে অনিয়ম ও আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এর কয়েকজন ইউপি সদস্য জড়িত আছেন বলেও অভিযোগ। প্রায় ১৮০০ জনের নামে-বেনামে ভূয়া তালিকা করে ১৮ মেট্রিকটন চাল আত্মসাত করেন তারা। এমন কি মৃত ব্যক্তিরও নাম রয়েছে ওই তালিকায়। 

অভিযোগ থেকে জানা যায়, এই পবিত্র ঈদুল ফিতরে খট্রামাধবপাড়া ইউনিয়নের ৪ হাজার ১৬৯ জনের ভিজিএফ চালের তালিকা করেন ওই প্যানেল চেয়ারম্যান। এ তালিকায় একজনের নাম একাধিকবার তোলেন। এক ওয়ার্ডের তালিকাভুক্তদের অন্য ওয়ার্ডের তালিকায়ও নাম ওঠান। এমনকি ওই তালিকায় মৃত ব্যক্তিরও নাম রয়েছে। এভাবে চাল আত্মসাত প্রক্রিয়ায় প্যানেল চেয়ারম্যান স্বপনের সঙ্গে ৩ ইউপি সদস্যকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এরা হলেন- ১নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য শাহানুর রহমান, ৭নং ইউপি সদস্য আবুল কাশেম ও ৮নং ওয়ার্ড সদস্য জাহাঙ্গীর আলম। 

এ ঘটনায় প্রায় ৩০০ জন বঞ্চিত সুবিধাভোগী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।

ইউনিয়নের মংলা বাজারের বাসিন্দা তাহাজ্জত আলী বলেন, “আমার প্রতিবেশী মৃত রবিউল ইসলামের নাম ভিজিএফ তালিকায় রয়েছে। কিন্তু  তিনি গত ৩ বছর আগে মারা গেছেন। এক বছর পূর্বে তার স্ত্রীর অন্যত্র বিয়েও হয়েছে। চেয়ারম্যান চাল আত্মসাতের উদ্দেশ্যে ভিজিএফের তালিকায় এই মৃত ব্যক্তির নাম তালিকাভুক্ত করেছেন।”  

অভিযোগকারী মাধবপাড়া গ্রামের কাশেম আলীর স্ত্রী বেগম জানান, ভিজিএফএর তালিকায় তার নামের সিরিয়াল ২৩৭৬। অথচ কয়েকবার চেয়ারম্যানের নিকট ভিজিএফ চালের জন্য গেলে তার নাম তালিকায় নেই বলে ফিরিয়ে দেন। 

তিনি জানান, শুধু তাকে নয় এরকম আরও অনেক মেয়ে মানুষকে চাল না দিয়ে ফিরিয়ে দিয়েছেন। 

অভিযোগকারী ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের আমিনুল ইসলাম জানান, তার মাস্টার রোলের সিরিয়াল নম্বর ২১০। তালিকায় তার নাম নেই বলে তাকেও ওই দিন চাল না দিয়ে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, “আমরা গরীব মানুষ ঈদের আগে ভিজিএফের চালের অপেক্ষায় থাকি। সেই চাল যদি চেয়ারম্যান  খেয়ে ফেলেন তাহলে তো গরীবের তো আর বাঁচার পথ নাই। সরকারের উচিত গরীবের চাল মেরে খাওয়া চেয়ারম্যানকে শাস্তি দেওয়া।” 

লিখিত অভিযোগকারী সাইমুমুর রহমান ডলার জানান, ১নং ওয়ার্ডের ৮৬ জন , ২নং ওয়ার্ডের ৭৫ জন, ৩নং ওয়ার্ডের ৬৩ জন, ৪নং ওয়ার্ডের ৫৬ জন,  ৫নং ওয়ার্ডের ১১১ জন, ৬নং ওয়ার্ডের ১৩১ জন, ৭নং ওয়ার্ডে ৯২ জন, ৮নং ওয়ার্ডের ১০৯ জন ও ৯নং ওয়ার্ডের ৮৩ জনের মোট ৮০৬ জনের নাম অন্য ওয়ার্ডের মাস্টার সিরিয়ালে একাধিকবার ব্যবহার করা হয়েছে। চেয়ারম্যান ও তার লোকেরা এসব নামের বিপরীতে বরদ্দকৃত চাল আত্মসাৎ করেছেন। 

এ ব্যাপারে প্যানেল চেয়ারম্যান ছদরুল শামীম স্বপন বলেন, “ভিজিএফ এর চাল বিতরণে সময় ট্যাগ অফিসারসহ সব ওয়ার্ডের মেম্বাররা উপস্থিত ছিলেন। আমি সব চাল সুষ্ঠুভাবে বিতরণ করেছি।”

এবিষয়ে হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার অমিত রায় বলেন, “খট্রামাধবপাড়া ইউনিয়ন প্যানেল চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ভিজিএফ’র চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছি। পিআইওকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/মোসলেম/টিপু 

সম্পর্কিত নিবন্ধ