নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে গণমাধ্যমের ভূমিকা শীর্ষক কর্মশালা
Published: 17th, March 2025 GMT
রাজধানীর জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটে ‘নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সোমবার সকাল সাড়ে ৯টায় এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মশালায় অংশ নেন দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধি, সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী, খাদ্য অধিদপ্তর ও জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তাসহ মোট ২৫ জন।
এ সময় প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণের মাধ্যমে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে আবশ্যকীয় তথ্যসমূহ তুলে ধরা হয়।
জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের (নিমকো) মহাপরিচালক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো.
প্রকল্প পরিচালক ড. মো. মারুফ নাওয়াজ তার বক্তব্যে বলেন, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে আমাদের তিন স্তরে সংকট রয়েছে। উৎপাদন, প্রস্তুতকরণ ও ভোগ। সমস্যাগুলো ম্যান-মেইড (মনুষ্যসৃষ্ট)। ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে এসব থেকে উত্তরণ ঘটাতে হবে। এক্ষেত্রে সাংবাদিকরা বড় ভূমিকা পালন করতে পারেন। এগুলো নিয়ে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা করা যেতে পারে। বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের দুরারোগ্য ব্যধিতে আমরা আক্রান্ত হচ্ছি। এগুলোর অন্যতম কারণ ভেজাল খাবার ও অনিরাপদ খাদ্যাভ্যাস। ফলে খাদ্যাভ্যাসেও আমাদের পরিবর্তন আনতে হবে।
প্রধান আলোচক ড. মিজানুর রহমান তার বক্তব্যে বলেন, নিরাপদ খাদ্যের বিষয়টি দুইভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। একটি হলো খাদ্যের নিরাপত্তা, অপরটি নিরাপদতা। নিরাপত্তার বিষয়টি প্রাতিষ্ঠানিক হলেও ব্যক্তি পর্যায়ে নিরাপদতা নিয়ে আমরা কাজ করতে পারি। সেক্ষেত্রে খাদ্যের উৎপাদন, প্রস্তুতকরণ ও ভোগের ক্ষেত্রে সচেতন থাকতে হবে। উৎপাদনের ক্ষেত্রে অতিমাত্রায় সার-কীটনাশক ব্যবহার পরিহার; প্রস্তুতের ক্ষেত্রে ক্ষতিকর রাসায়নিক মুক্ত রাখা এবং ভোগ ও সংরক্ষণের ক্ষেত্রে পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করতে হবে।
অনুষ্ঠানের সভাপতি ও নিমকোর মহাপরিচালক মো. কাউসার আহাম্মদ বলেন, আজকে অত্যন্ত জন-গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আশাকরি এখান থেকে আমরা যা শিখেছি তা আমাদের ব্যক্তিজীবন ও সমাজে কাজে লাগবে। আমরা আমাদের পরিচিতজনদের মধ্যে যদি এগুলো শেয়ার করি তাহলে সচেতনতার মাত্রা বৃদ্ধি পাবে এবং সবাই উপকৃত হতে পারবে। এ সময় তিনি কর্মশালার আয়োজক ও অংশগ্রহণকারীদের ধন্যবাদ জানান।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন র পদ খ দ য ন শ চ ত আম দ র অন ষ ঠ
এছাড়াও পড়ুন:
দুই কোম্পানি একীভূত হচ্ছে প্রিমিয়ার সিমেন্টের সঙ্গে
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত প্রিমিয়ার সিমেন্টের সঙ্গে একীভূত হচ্ছে তার সহযোগী দুই কোম্পানি। কোম্পানি দুটি হলো ন্যাশনাল সিমেন্ট মিলস ও প্রিমিয়ার পাওয়ার জেনারেশন। খরচ কমাতে সহযোগী দুই কোম্পানিকে একীভূত করার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রিমিয়ার সিমেন্টের পরিচালনা পর্ষদ।
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি হিসেবে নিয়ম অনুযায়ী, প্রিমিয়ার সিমেন্ট এ একীভূতকরণের সিদ্ধান্তের কথা গতকাল রোববার দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মাধ্যমে শেয়ারধারীদের জানিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার প্রিমিয়ার সিমেন্টের পরিচালনা পর্ষদের সভায় সহযোগী দুই কোম্পানিকে একীভূত করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বর্তমানে কোম্পানি তিনটি আলাদাভাবে পরিচালিত হচ্ছে। লোকবল থেকে শুরু করে প্রশাসনিক খরচ সবই আলাদা। তাই খরচ কমিয়ে আনতে সহযোগী দুই কোম্পানিকে প্রিমিয়ার সিমেন্টের সঙ্গে একীভূত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।আমীরুল হক ব্যবস্থাপনা পরিচালক, প্রিমিয়ার সিমেন্টপ্রিমিয়ার সিমেন্ট জানায়, ন্যাশনাল সিমেন্ট মিলস ও প্রিমিয়ার পাওয়ার জেনারেশন নামের কোম্পানি দুটি প্রিমিয়ার সিমেন্টের সঙ্গে একীভূত হয়ে যাবে। বর্তমানে এ দুটি কোম্পানির মালিকানার সঙ্গে প্রিমিয়ার সিমেন্টও যুক্ত রয়েছে। তবে নিয়ম অনুযায়ী, শেয়ারধারী, সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও আদালতের অনুমোদনের পর একীভূতকরণের সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে।
কোম্পানি–সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে ন্যাশনাল সিমেন্টের ১৮ শতাংশ মালিকানা রয়েছে প্রিমিয়ার সিমেন্টের হাতে। আর প্রিমিয়ার পাওয়ার জেনারেশনের ৯৬ শতাংশ মালিকানা প্রিমিয়ার সিমেন্টের। একীভূতকরণের মাধ্যমে এ দুটি কোম্পানির শতভাগ মালিকানা প্রিমিয়ার সিমেন্টের কাছে ন্যস্ত হবে। তাতে বিলুপ্ত হয়ে যাবে ওই দুটি কোম্পানির আলাদা সত্তা। বর্তমানে এসব কোম্পানি আলাদা আলাদা সত্তা নিয়ে নিজেদের ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। প্রিমিয়ার সিমেন্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, দুটি কোম্পানিকে একীভূত করা হলে তাতে প্রশাসনিক ব্যয় কমবে। এতে প্রিমিয়ার সিমেন্টের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়বে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ন্যাশনাল সিমেন্ট মিলস চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তীরবর্তী ইছানগরে অবস্থিত। ১৯৯৬ সালে কোম্পানিটি চালু হয়। এটির মালিকানার সঙ্গে প্রিমিয়ার সিমেন্ট যুক্ত হয় ২০১৩ সালে। ওই বছর কোম্পানিটির ১৮ শতাংশ মালিকানা নেয় প্রিমিয়ার সিমেন্ট। বাকি ৮২ শতাংশ মালিকানা ব্যক্তিশ্রেণির উদ্যোক্তাদের হাতে রয়েছে। এখন কোম্পানিটি একীভূত হলে ব্যক্তিশ্রেণির উদ্যোক্তারা তাঁদের হাতে থাকা শেয়ার প্রিমিয়ার সিমেন্টের কাছে হস্তান্তর করবেন। বিনিময়ে তাঁরা প্রিমিয়ার সিমেন্টের শেয়ার পাবেন।
বর্তমানে ন্যাশনাল সিমেন্টের কারখানার বার্ষিক সিমেন্ট উৎপাদন ক্ষমতা ২৪ লাখ মেট্রিক টন। কোম্পানিটির সর্বশেষ আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত অর্থবছরে কোম্পানিটির টার্নওভার বা বার্ষিক আয়ের পরিমাণ ছিল ৪৯৪ কোটি টাকা। ওই বছর সব ধরনের খরচ বাদ দেওয়ার পর কোম্পানিটির মুনাফা হয়েছিল প্রায় সোয়া এক কোটি টাকা। একীভূত হলে কোম্পানিটির এ আয় যুক্ত হবে প্রিমিয়ার সিমেন্টের আয়ের সঙ্গে।
শেয়ারবাজারের কোম্পানিন্যাশনাল সিমেন্ট ও প্রিমিয়ার পাওয়ার নামে দুটি আলাদা কোম্পানিকে একীভূত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রিমিয়ার সিমেন্টের পরিচালনা পর্ষদ।অন্যদিকে প্রিমিয়ার পাওয়ার জেনারেশনের যাত্রা শুরু হয় ২০০৮ সালে। কোম্পানিটির বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ৫ মেগাওয়াট। মুন্সীগঞ্জের মুক্তারপুরে প্রিমিয়ার সিমেন্টের কারখানাতেই এই বিদ্যুকেন্দ্র অবস্থিত। সিমেন্ট কারখানার উৎপাদন নিরবিচ্ছিন্ন রাখতে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি স্থাপন করা হয়। এটির উৎপাদিত শতভাগ বিদ্যুৎ ব্যবহার হয় প্রিমিয়ার সিমেন্ট কারখানায়। কোম্পানিটির মালিকানার ৯৬ শতাংশই রয়েছে প্রিমিয়ার সিমেন্টের হাতে। বাকি ৪ শতাংশ শেয়ারের মালিকানায় রয়েছে ব্যক্তিশ্রেণির কয়েকজন উদ্যোক্তা। কোম্পানিটি এখন প্রিমিয়ার সিমেন্টের সঙ্গে একীভূত হলে তাতে ব্যক্তিশ্রেণির উদ্যোক্তাদের হাতে থাকা ৪ শতাংশ শেয়ার প্রিমিয়ার সিমেন্টের কাছে হস্তান্তর করা হবে। বিনিময় তাঁরা প্রিমিয়ার সিমেন্টেরও সমপরিমাণ শেয়ার পাবেন। সর্বশেষ ২০২৩–২৪ অর্থবছরে প্রিমিয়ার পাওয়ার জেনারেশন সাড়ে ১০ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। বছর শেষে কোম্পানিটির লোকসান হয়েছে ১ কোটি ৩২ লাখ টাকা।
দুই কোম্পানি একীভূতকরণের এ সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রিমিয়ার সিমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমীরুল হক প্রথম আলোকে বলেন, বর্তমানে কোম্পানি তিনটি আলাদাভাবে পরিচালিত হচ্ছে। লোকবল থেকে শুরু করে প্রশাসনিক খরচ সবই আলাদা। তাই খরচ কমিয়ে আনতে সহযোগী দুই কোম্পানিকে প্রিমিয়ার সিমেন্টের সঙ্গে একীভূত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাতে খরচ কমলে প্রিমিয়ার সিমেন্ট দীর্ঘ মেয়াদে লাভবান হবে।
কোম্পানি সূত্রে জানা যায়, দুই কোম্পানিকে একীভূত করতে প্রিমিয়ার সিমেন্টকে নতুন করে প্রায় তিন কোটি শেয়ার ইস্যু করতে হবে। আদালত ও সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদনের পর এসব শেয়ার ইস্যু করা হবে। ব্যক্তি উদ্যোক্তাদের হাতে থাকা ন্যাশনাল সিমেন্ট ও প্রিমিয়ার পাওয়ার জেনারেশনের মালিকানা বুঝে নিতে এসব শেয়ার ইস্যু করা হবে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রিমিয়ার সিমেন্টের শীর্ষ পর্যায়ের এক কর্মকর্তা জানান, ১০ টাকা অভিহিত মূল্য বা ফেসভ্যালুতে প্রিমিয়ার সিমেন্টের নতুন এসব শেয়ার ইস্যু করা হবে। তাতে প্রিমিয়ার সিমেন্টের পরিশোধিত মূলধন বাড়বে ৩০ কোটি টাকা।
প্রিমিয়ার সিমেন্টের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে কোম্পানিটির কর্মীর সংখ্যা ১ হাজার ৯০১। অন্যদিকে প্রিমিয়ার পাওয়ার জেনারেশনের ২৪ জন ও ন্যাশনাল সিমেন্টে ৭৬২ জন কর্মী রয়েছেন। সব মিলিয়ে তিন কোম্পানিতে লোকবল দাঁড়াচ্ছে ২ হাজার ৬৮৭ জন। কোম্পানি তিনটি একীভূত হলেও কোনো কর্মীকে চাকরিচ্যুত করা হবে না বলে জানিয়েছেন কোম্পানির শীর্ষ এক কর্মকর্তা। তিনি জানান, সব কর্মী প্রিমিয়ার সিমেন্টের কর্মী হিসেবে কাজ করবেন।
প্রাক্–বাজেট আলোচনায় পরামর্শ
প্রাক্-বাজেট আলোচনায় অর্থ পদেষ্টাকে ধনী ব্যক্তিদের কাছ থেকে বাড়তি কর আদায়ের পরামর্শ দিয়েছেন অর্থনীতিবিদেরা।