দেশের সার্বভৌমত্ব এবং অর্থনীতির উপর ডোনাল্ড ট্রাম্পের আক্রমণ মোকাবেলায় আরো শক্তিশালী জোটের সন্ধান করছেন কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ফ্রান্স এবং যুক্তরাজ্যে তার প্রথম বিদেশ সফরের মাধ্যমে কার্নি তার জোট সন্ধান শুরু করেছেন। 

ট্রাম্পের নাম উল্লেখ না করেই কার্নি এবং ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ সোমবার প্যারিসে একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে তারা অর্থনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক সংকটের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান প্রদর্শন করেছেন।

ম্যাক্রোঁ বলেছেন, “কানাডা অনন্য বন্ধু। শুল্কের চেয়ে ন্যায্য বাণিজ্য বেশি কার্যকর।” 

আর কার্নি খোলামেলাই বলেছেন কানাডার জন্য ‘নির্ভরযোগ্য মিত্রদের’ সাথে সম্পর্ক জোরদার করা গুরুত্বপূর্ণ।

২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ এবং কানাডাকে ৫১তম মার্কিন রাজ্য করার ট্রাম্পের বক্তব্য কানাডিয়ানদের ক্ষুব্ধ করেছে। দেশটির অনেকেই আমেরিকান পণ্য কেনা এড়িয়ে চলছে। ট্রাম্পের বাণিজ্য যুদ্ধের আলোকে কার্নির সরকার মার্কিন তৈরি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান কেনার বিষয়টি পর্যালোচনা করছে।

কার্নির সফর প্রসঙ্গে টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের এমিরিটাস অধ্যাপক নেলসন ওয়াইজম্যান বলেন, “ট্রাম্প ফ্যাক্টরই এই ভ্রমণের কারণ। কার্নির অন্যান্য সমস্ত কিছুর চেয়ে ট্রাম্প ফ্যাক্টর বেশি গুরুত্বপূর্ণ।”

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

মারমাদের মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব যে কারণে হয়, যেভাবে এল

মারমা জনগোষ্ঠীর সাংগ্রাইং উৎসবের এক গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হয়ে আছে ‘মৈতা রিলং পোয়ে’ বা মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব। এই উৎসবে পরস্পরের দিকে পানি ছিটিয়ে মৈত্রীর বন্ধনে আবদ্ধ হন মারমারা। ‘সাংগ্রাইংমা ঞি ঞি ঞা ঞা রিকোজাই পামে’(এসো হে সাংগ্রাইংয়ে সবাই মৈত্রী পানিবর্ষণে) গানটিও দীর্ঘদিন ধরে হয়ে আছে এই উৎসবের ‘থিম সং’।

গবেষক ও মারমা জনগোষ্ঠীর প্রবীণ ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাংলাদেশে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবের শুরু গত শতকের সত্তরের দশকে। কিছু তরুণ মিয়ানমারে সাংগ্রাইং উৎসবে এ ধরনের আয়োজন দেখে দেশেও এর প্রচলন করেন। আর ‘সাংগ্রাইংমা ঞি ঞি ঞা ঞা রিকোজাই পামে’ উৎসবের থিম সং হয়েছে ১৯৮৪ সালে।

মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবকে অনেকেই ‘জলকেলি’ ও ‘পানি খেলা’ বলে থাকেন। তবে এসব নাম আপত্তিকর বলে মনে করেন মারমা সমাজের অনেকেই। তাঁদের দাবি, এর মধ্য দিয়ে ধর্মের যোগ থাকা অনুষ্ঠানটি ভুলভাবে উপস্থাপন হয়।

এবারের সাংগ্রাইং উপলক্ষে আজ বুধবার থেকে বান্দরবান জেলা শহরে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব শুরু হয়েছে। তবে জেলার অন্যান্য জায়গায় গতকাল মঙ্গলবার এই উৎসব শুরু হয়। খাগড়াছড়িতে কোথাও কোথাও সোমবার শুরু হয়েছে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব।

মারমা জনগোষ্ঠীর প্রবীণদের একজন শিক্ষাবিদ থোয়াইংচ প্রু। তিনি প্রথম আলকে বলেন, সাংগ্রাইং আখ্যেয়া বা মূল সাংগ্রাই দিনে বুদ্ধমূর্তি স্নানের আগে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব হয় না। এটা প্রথাসিদ্ধ রীতি। তাই মৈত্রী পানিবর্ষণের সঙ্গে ধর্মের যোগ বেশ স্পষ্ট। তিনি বলেন, পানিকে মারমারা পবিত্র মনে করে। তাই সাংগ্রাইং উৎসবে বন্ধুত্বের বন্ধন এবং পরস্পরের প্রতি মৈত্রী ভাবনা নবায়ন ও সুদৃঢ় করার জন্য একে-অপরের দিকে পানি ছোড়েন। পানি ছিটানোর পর কেউ বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখালে বোঝা যাবে, বন্ধুত্বের সম্পর্কে ও বন্ধনে টানাপোড়েন আছে। এটিই মৈত্রী পানিবর্ষণের মূল্যবোধ। এ কারণে অনেক সময় অযাচিত কাউকে পানিবর্ষণ করলে আগে সালিসের মুখোমুখিও হতে হতো।

মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবে মেতেছেন মারমা সম্প্রদায়ের তরুণ-তরুণীরা। গতকাল বান্দরবানের ডলুপাড়ায়

সম্পর্কিত নিবন্ধ