সেই এসপিকে আদালতে হাজির, জেলহাজতে প্রেরণ
Published: 17th, March 2025 GMT
নাটোরে স্ত্রীর মামলায় বরখাস্ত পুলিশ সুপার এস এম ফজলুল হককে আদালতে হাজির করা হয়েছে। এ সময় আইনজীবী তাঁর জামিনের আবেদন না করায় ফের জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
সোমবার দুপুরে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ময়মনসিংহ রেঞ্জে সংযুক্ত বরখাস্ত পুলিশ সুপার এস এম ফজলুল হককে নাটোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে হাজির করে পুলিশ। তাঁর আইনজীবী জামিন শুনানির জন্য আবেদন না করায় তাঁকে আবারও জেলহাজতে পাঠানো হয়। এ সময় দুই মাস পর তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
গত ১১ মার্চ স্ত্রী মেহনাজ আক্তারের দায়ের করা নির্যাতন মামলায় আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন এস এম ফজলুল হক। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুহাম্মদ আব্দুর রহিম আবেদন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এ সময় গণমাধ্যম কর্মীরা ভিডিও ফুটেজ নিতে গেলে ফজলুল হক তাদের ওপর হামলা করেন। হামলার ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে আলোচনা-সমলোচনার সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় ওই দিনই স্থানীয় সাংবাদিক কাউছার হাবীব বাদী হয়ে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পুলিশ সুপার এস এম ফজলুল হককে আসামি করে মামলা করেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এসপ
এছাড়াও পড়ুন:
‘উৎকোচের’ টাকা নির্ধারণ, শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি-সম্পাদককে শোকজ
বিভিন্ন মামলায় আদালতের পেশকার, পিয়ন ও কোর্ট পুলিশের উৎকোচ দেওয়ার টাকা নির্ধারণ করার ঘটনায় শরীয়তপুর আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়েছে।
আজ রোববার শরীয়তপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবুল বাশার মিঞা আইনজীবী সমিতির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম ও সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ কামরুল হাসানকে ওই নোটিশ প্রদান করেন। তাঁদের আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
৬ মার্চ শরীয়তপুর আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী সভায় বিভিন্ন মামলায় আদালতের পেশকার, পিয়ন ও কোর্ট পুলিশের উৎকোচ দেওয়ার টাকা নির্ধারণ করার সিদ্ধান্ত হয়। ওই টাকা নির্ধারণের জন্য করা সভার কার্যবিবরণী আদালতের বিভিন্ন কর্মচারী, আইনজীবী ও আইনজীবীর সহকারীদের দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে।
কারণ দর্শানোর নোটিশে বলা হয়েছে, ‘পরিমাণ যা–ই হোক না কেন, ঘুষ গ্রহণ ও প্রদানের যাবতীয় উদ্যোগ সমানভাবে নিন্দনীয় ও বেআইনি কাজ। বিচার বিভাগ থেকে যখন সব ধরনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতা নীতি গ্রহণ করা হয়েছে, ঠিক তখন আপনাদের স্বাক্ষরিত এ ধরনের বেআইনি ও নৈতিকতাবিবর্জিত উৎকোচ প্রদানের উদ্যোগ আইন পেশার মতো একটি মহৎ পেশাকে যেমন কলুষিত করেছে, তেমনি বিচারপ্রার্থী জনগণের নিকট বিচার বিভাগের মর্যাদাহানি ঘটেছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে এমন বেআইনি উদ্যোগের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কেন আপনার পেশাগত নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করা হবে না, তা এই চিঠি প্রাপ্তির তিন দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নির্দেশ প্রদান করা হলো।’
শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতি সূত্র জানায়, গত ১২ ফেব্রুয়ারি শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হন। ওই কমিটি ৬ মার্চ প্রথম সভা করে। সভায় বিভিন্ন সিদ্ধান্তের মধ্যে আছে আইনজীবীদের বিভিন্ন মামলা পরিচালনা করার জন্য পেশকার, পিয়ন, সি আর ফাইলিংয়ের জন্য ১০০ টাকার বেশি না দেওয়া; কোনো দরখাস্তে জিআর, সিআর ১০০ টাকার বেশি না দেওয়া; জামিননামা দাখিলের খরচ মামলাপ্রতি ১০০ টাকার নিচে এবং ২০০ টাকার বেশি না দেওয়া; গারদখানায়, ওকালতনামায় স্বাক্ষরে ১০০ টাকা, সিভিল ফাইলিংয়ে সর্বোচ্চ ২০০ টাকা এবং হলফনামায় ১০০ টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত।
আইনজীবী সমিতির এমন সিদ্ধান্তের একটি কপি জজকোর্ট, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পেশকার, পিয়ন ও কোর্ট পুলিশের জিআরওদের কাছে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন আইনজীবীকে দেওয়া হয়েছে।
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম ও জজকোর্টের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মনিরুজ্জামানকে আজ বেলা তিনটা পর্যন্ত কয়েক দফা কল করা হলেও তাঁরা ধরেননি।
জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ কামরুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা দুর্নীতি বন্ধ করার জন্য এমন উদ্যোগ নিয়েছিলাম। আদালতের সঙ্গে আমরা আইনজীবীরাও দুর্নীতিতে জিরো টলারেন্স নীতিতে আছি। বিষয়টি নিয়ে জেলা ও দায়রা জজ এবং চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। আমরা তিন দিনের মধ্যেই শোকজের জবাব দেব।’
আরও পড়ুনশরীয়তপুর আদালতের কর্মচারীদের ফি নির্ধারণ করেছে আইনজীবী সমিতি, নানা আলোচনা ১৫ মার্চ ২০২৫