৪ ঘণ্টা পর ভৈরব ছাড়ল কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস
Published: 17th, March 2025 GMT
দীর্ঘ চার ঘণ্টা আটকে থাকার পর ইঞ্জিন সমস্যার সমাধান হলে ভৈরব থেকে কিশোরগঞ্জের উদ্দেশে ছেড়ে গেছে ‘কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি। বিকল ইঞ্জিন মেরামতের পর বিকেল ৫টার দিকে কিশোরগঞ্জের উদ্দেশ্যে ট্রেনটি ছেড়ে যায়।
এর আগে দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে ভৈরব থেকে ছেড়ে যাওয়ার পর কিশোরগঞ্জের ভৈরব পৌর শহরের জগন্নাথপুর-লক্ষ্মীপুর এলাকায় হঠাৎ বিকল হয়ে পড়ে ট্রেনটি। ফলে ভোগান্তিতে পড়েন কয়েক শতাধিক যাত্রী।
জানা যায়, কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনটি সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকার কমলাপুর স্টেশন থেকে ছেড়ে সঠিক সময়ে ভৈরব স্টেশনে পৌঁছায়। স্টেশন থেকে নির্দিষ্ট সময়ের যাত্রা বিরতির পর কিশোরগঞ্জের উদ্দেশে ১২টা ৫০ মিনিটে ছেড়ে যায় ট্রেনটি। কিছুদূর যেতেই পৌর শহরের জগন্নাথপুর-লক্ষ্মীপুর এলাকায় হঠাৎ ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ে। পরে নাসিরাবাদ থেকে একটি ইঞ্জিন এনে ট্রেনটি উদ্ধার করে ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনের ৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মে রাখা হয়।
পরে ইঞ্জিন মেরামতের পর বিকেল ৫টার দিকে ট্রেনটি যাত্রীদের নিয়ে ভৈরব স্টেশন থেকে কিশোরগঞ্জের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। ফলে ৩ ঘণ্টা কিশোরগঞ্জ-ভৈরব রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে। এতে বিজয় এক্সপ্রেস, নাসিরাবাদ ও এগারো সিন্দুর, গোধূলি ট্রেনগুলো ছাড়তে বিলম্ব হয়।
এ বিষয়ে যাত্রীদের অভিযোগ, ট্রেন বিকল হলে যাত্রীদের নির্দেশনা দেওয়ার কথা। কিন্তু ৪ ঘণ্টা অতিবাহিত হলেও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ কোনো নির্দেশনা দেয়নি।
এ বিষয়ে ভৈরব স্টেশন মাস্টার আবু ইউসুফ বলেন, ট্রেনের হাওয়া জটিলতায় ইঞ্জিন চালু হলেও বগি নিয়ে ট্রেনটি ছুটতে পারছিলো না। সাড়ে তিনটায় কুলিয়ারচর থেকে নাসিরাবাদ ট্রেনের ইঞ্জিন এনে সেটির সহযোগিতায় পুনরায় ট্রেনটি ভৈরব এনে মেরামত করা হয়। পাঁচটার দিকে ট্রেনটি গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র ল য গ য গ বন ধ
এছাড়াও পড়ুন:
স্বাধীন কমিশন গঠনের দাবি জানাল পুলিশ, বলল নানা চ্যালেঞ্জের কথা
প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্বাধীন পুলিশ কমিশনের দাবি পুনর্ব্যক্ত করেছেন পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা। পুলিশ বাহিনীকে সেবামুখী করতে এবং পুরোপুরি সঠিক ধারায় ফেরাতে এ কমিশন প্রয়োজন বলে জানান তাঁরা। পরিচালনাকারী কর্তৃপক্ষ হিসেবে স্বাধীন অথবা স্বশাসিত কমিশন এই সময়ে গঠন করতে না পারলে পুলিশ তার পুরোনো নেতিবাচক চরিত্রে ফিরে যাবে—এমন আশঙ্কার কথাও জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
আজ সোমবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে পুলিশ বাহিনী পরিচালনায় বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ, দাবি ও আশঙ্কার কথা তুলে ধরেন পুলিশ কর্মকর্তারা। রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে অংশ নেওয়া ১১ জন পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
ওই বৈঠকে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি), রেঞ্জ ডিআইজি (উপমহাপরিদর্শক), মহানগর পুলিশ কমিশনার, সব ইউনিটের প্রধান, সব অতিরিক্ত আইজিপি অংশ নেন। ১২৭ জন কর্মকর্তার উপস্থিত থাকার কথা ছিল বৈঠকে। এমআরটি পুলিশের ডিআইজি ছাড়া বাকি সব কর্মকর্তাই সভায় ছিলেন। সভায় পুলিশের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আহসান হাবিব ও রাজশাহীর পুলিশ সুপার (এসপি) ফারজানা ইসলাম।
বৈঠকে আইজিপি বাহারুল আলম তাঁর বক্তব্যে পুলিশ কমিশন গঠনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছেন। চারজন পুলিশ কর্মকর্তা প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, আইজিপি বৈঠকে বলেছেন পুলিশ কমিশন ভারতে আছে, পাকিস্তানে আছে, শ্রীলঙ্কায় আছে। আওয়ামী ফ্যাসিস্ট আমলে পুলিশকে যেভাবে ব্যবহার করা হয়েছে, সেই জায়গা থেকে বের হওয়ার জন্যই পুলিশ কমিশন দরকার। আইজিপি আরও বলেন, পুলিশ সংস্কার কমিশনে ‘পুলিশ কমিশন’ গঠনের বিষয়ে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তবে পুলিশ সংস্কার কমিশনের সুপারিশে বিষয়টি পরিষ্কারভাবে আসেনি। এটি বাস্তবায়ন হচ্ছে কি না, সেই বিষয়ে পুলিশ কিছুই জানে না। অথচ ভবিষ্যৎ স্থিতিশীলতা রক্ষায় এটি সবচেয়ে জরুরি।
সংস্কারের এখনই সময়পুলিশ কর্মকর্তারা বলেছেন, আগামী প্রজন্মকে সুরক্ষিত রাখতে পুলিশকে সঠিক ধারায় ফেরানোর এখনই উপযুক্ত সময়। এ সময়ে যদি পুলিশের মৌলিক সংস্কার না হয়, তাহলে ভবিষ্যতে পুলিশ আবার আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ের মতো ফ্যাসিস্টের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারে।
চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আহসান হাবিব তাঁর বক্তব্যে বলেছেন, এখন ইতিহাসের মাহেন্দ্রক্ষণ। এখনই যদি পুলিশ কমিশন গঠন করা না হয়, তাহলে কোনো দিনই হবে না। পুলিশ কমিশন সব পর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের দাবি। ডিআইজি আরও বলেন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে মানুষ সংস্কারের কথা বলছে। আর পুলিশ বাহিনী নিজেরাই নিজেদের সংস্কারের কথা তুলে ধরছে। কিন্তু পুলিশের সংস্কারের কথা কেউ সেভাবে শুনছে না।
পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পুলিশ সংস্কার কমিশনের সুপারিশে ‘স্বাধীন পুলিশ কমিশন’ গঠনের বিষয়টি সুস্পষ্ট না আসায় বাহিনীটির সদস্যদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়। ঐকমত্য কমিশনে পুলিশ সংস্কারের প্রসঙ্গটি না রেখে, ‘প্রশাসনিক ব্যবস্থার’ সংস্কারের সুপারিশ বাস্তবায়নের উদ্যোগে এই ক্ষোভ বাড়ে। এসব বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টাকে বিস্তারিত বলতে চেয়েছিলেন কর্মকর্তারা। কিন্তু বৈঠকে আটজন পুলিশ কর্মকর্তার বক্তব্য দেওয়ার কথা থাকলেও আইজিপিসহ মাত্র তিনজন বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ পান।
তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আয়োজিত বৈঠকে পুলিশ কর্মকর্তারা। ঢাকা, ১৭ মার্চ