গাজীপুরের কালীগঞ্জে মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে এক সাংবাদিকের ওপর হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। রোববার রাতে উপজেলার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের আওড়াখালি বাজারে এই হামলা হয়। এ সময় ছিনিয়ে নেওয়া হয় দৈনিক যুগান্তরের কালীগঞ্জ প্রতিনিধি আব্দুল গাফফারের মোবাইল ফোন, নগদ টাকা ও ল্যাপটপ। বর্তমানে তিনি গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুলিশ ইতোমধ্যে এ ঘটনায় একজনকে আটক করেছে।
ঘটনার সময় আব্দুল গাফফারের সঙ্গে ছিলেন একই পত্রিকার কাপাসিয়া প্রতিনিধি মো.
হামলাকারীদের মধ্যে কাউলিতা গ্রামের মো. আলমগীর হোসেন আকন্দ, সাহেদ, ফালু, কুলথুন গ্রামের ফয়সাল ও কালীগঞ্জ পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড মুনশুরপুর গ্রামের রুবেলকে চিনতে পারেন তারা। এদের মধ্যে মাদক কারবারি হিসেবে পরিচিতি রয়েছে আলমগীরের।
হামলায় গুরুতর আহত হন গাফফার। একপর্যায়ে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়ে। গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আবদুল গাফফারের ধারণা, হামলার ঘটনাটি পরিকল্পিত। সম্প্রতি কালীগঞ্জে বিএনপি নেতাকর্মীদের নানা অপতৎপরতা নিয়ে তার লেখা সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এতে ক্ষুব্ধ কেউ পরিকল্পিতভাবে হামলা করেছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন।
কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলাউদ্দিন বলেন, এ বিষয়ে জানতে পেরে তারা রাতেই অভিযান চালিয়ে কুলথুন এলাকা থেকে ফয়সাল খান নামের একজনকে আটক করেন। প্রধান সন্দেহভাজন আলমগীর পালিয়ে গেছে। এ বিষয়ে শিগগিরই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সোমবার রাত ৮টা পর্যন্ত থানায় লিখিত অভিযোগ আসেনি।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
অধ্যাপক আহমদ শামসুল ইসলাম আর নেই
দেশে টিস্যু কালচার ও বায়োটেকনোলজি গবেষণার পথিকৃৎ ও বাংলাদেশি বায়োটেকনোলজিস্টদের সংগঠন জিএনওবিবির প্রতিষ্ঠাতা মডারেটর অধ্যাপক আহমদ শামসুল ইসলাম আর নেই। আজ সোমবার সকালে ঢাকার একটি হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজেউন)। আহমদ শামসুল ইসলামের মেয়ে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) অধ্যাপক জেবা ইসলাম সিরাজ জানিয়েছেন, তাঁর বয়স হয়েছিল ১০০ বছর।
অধ্যাপক আহমদ শামসুল ইসলাম ১৯২৪ সালের ৬ আগস্ট জন্মগ্রহণ করেন। তিনি রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল থেকে ১৯৪১ সালে ম্যাট্রিক, রাজশাহী কলেজ থেকে ১৯৪৩ সালে ইন্টারমিডিয়েট (বিজ্ঞান বিভাগ), প্রেসিডেন্সি কলেজ, কলকাতা থেকে ১৯৪৫ সালে বোটানিতে অনার্স এবং ১৯৪৭ সালে এমএসসি সম্পন্ন করেন। ১৯৫৪ সালে তিনি ব্রিটিশ কাউন্সিলের আর্থিক সহায়তায় যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বোটানিতে (সাইটোজেনেটিকস) পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। বীজবিহীন স্ট্রবেরি নিয়ে তাঁর অনন্য গবেষণার জন্য একই বছর কারি মেমোরিয়াল পুরস্কার লাভ করেন।
অধ্যাপক আহমদ শামসুল ইসলাম চার দশকের বেশি সময় ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, পাকিস্তানের সিন্ধ বিশ্ববিদ্যালয়, তানজানিয়া, নাইরোবির দার-এ-সালাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে উদ্ভিদবিজ্ঞান পড়িয়েছেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগে সর্বপ্রথম ‘প্ল্যান্ট টিস্যু কালচার ও জেনেটিকস ল্যাবরেটরি’ স্থাপন করেন, যা দেশে এ ক্ষেত্রে গবেষণার সূত্রপাত করে। লিখেছেন বেশ কিছু পাঠ্যপুস্তক।
শিক্ষা ও গবেষণায় অবদানের জন্য ১৯৮৪ সালে কৃষিতে রাষ্ট্রপতির স্বর্ণপদক, ১৯৮৬ সালে শিক্ষায় একুশে পদক পেয়েছেন অধ্যাপক আহমদ শামসুল ইসলাম।
আহমদ শামসুল ইসলামের মেয়ে অধ্যাপক জেবা ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। বড় ছেলে অধ্যাপক ইউসুফ মাহবুবুল ইসলাম সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও ছোট ছেলে খালিদ ইসলাম যুক্তরাষ্ট্রে একটি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত।
আজ বাদ জোহর গুলশান আজাদ মসজিদে মরহুমের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।