চলতি অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) প্রথম সাত মাসে আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ১৮ হাজার ৪৯ কোটি টাকা কম খরচ হয়েছে। ওই সময়ে উন্নয়ন প্রকল্পে খরচ হয়েছে ৬৭ হাজার ৫৫৩ কোটি টাকা। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময় ৮৫ হাজার ৬০২ কোটি টাকা খরচ হয়।

বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) জানুয়ারি মাস পর্যন্ত এডিপি বাস্তবায়নের হালনাগাদ তথ্যে এ চিত্র পাওয়া গেছে। আজ সোমবার দুপুরে এডিপি বাস্তবায়নের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আইএমইডি।

জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে এডিপি বাস্তবায়নের দিক থেকে এবারই গত পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম টাকা খরচ হয়েছে। গত জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে মাত্র ২৪ দশমিক ২৭ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে।

এর আগে জুলাই-ফেব্রুয়ারি হিসাবে কোভিডের বছরে (২০২০-২১ অর্থবছর) ৭২ হাজার ৬০৩ কোটি টাকা খরচ হয়েছিল। পরের দুই বছরের প্রায় ৮২ থেকে ৮৪ হাজার কোটি টাকা করে খরচ হয়েছিল।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মনে করেন, জুলাই-আগস্টের আন্দোলন; ক্ষমতার পটপরিবর্তন এবং ঠিকাদার ও প্রকল্প পরিচালকদের খুঁজে না পাওয়া—সবকিছুর প্রভাব পড়েছে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে। চলতি অর্থবছরে ২ লাখ ৭৮ হাজার ২৮৯ কোটি টাকার এডিপি নেওয়া হয়েছে। অবশ্য এখন তা সংশোধন করে ২ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে। এর আগে কখনো এডিপি এতটা কাটছাঁট করা হয়নি।

স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের বাস্তবায়ন ১% হয়নি

আইএমইডির প্রতিবেদন অনুসারে, গত সাত মাসে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের বাস্তবায়ন ১ শতাংশও হয়নি। বিভাগের ১৩টি প্রকল্পে ৪ হাজার ৪৬৩ কোটি টাকা বরাদ্দ আছে। কিন্তু গত সাত মাসে খরচ হয়েছে মাত্র ২০ কোটি টাকা। বাস্তবায়ন হার দশমিক ৪১ শতাংশ।

সব মিলিয়ে আটটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ তাদের বরাদ্দের ১০ শতাংশ খরচ করতে পারেনি। স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ ছাড়া অন্য মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো হলো স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ; জননিরাপত্তা বিভাগ; সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়; পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়; অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ; ভূমি মন্ত্রণালয়; জাতীয় সংসদ সচিবালয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কল য ণ বছর র

এছাড়াও পড়ুন:

গ্যাস–সংকটে সিইউএফএলে সার উৎপাদন বন্ধ

গ্যাস–সংকটে চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় অবস্থিত রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানা চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেডে (সিইউএফএল) সার উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। আজ শুক্রবার সকাল সাতটার দিকে কারখানায় উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়।

এর আগে যান্ত্রিক ত্রুটির (রিঅ্যাক্টরের সমস্যা) কারণে গত ৩ জানুয়ারি থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ইউরিয়া সার উৎপাদন বন্ধ ছিল কারখানাটিতে। দেড় মাস পর আবারও কারখানায় উৎপাদন বন্ধ হয়ে পড়ল।

উৎপাদন আবার বন্ধ হয়ে পড়ার বিষয়টি সিইউএফএলের উৎপাদন বিভাগের প্রধান উত্তম চৌধুরী প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘গ্যাস সরবরাহ না থাকায় আজ সকালে উৎপাদন বন্ধ করে দিতে হয়েছে।’

পূর্ণমাত্রায় উৎপাদনের জন্য সম্পূর্ণ গ্যাসনির্ভর এ কারখানায় দৈনিক ৪৮ থেকে ৫২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের প্রয়োজন। গ্যাস–সংকট ও যান্ত্রিক নানা সমস্যা থাকায় গত অর্থবছর কারখানাটিতে প্রায় আড়াই লাখ মেট্রিক টন ইউরিয়া সার উৎপাদিত হয়। কৃষিনির্ভর বাংলাদেশে ইউরিয়া সারের চাহিদা বছরে প্রায় ২৬ লাখ মেট্রিক টন। তার মধ্যে সিইউএফএলসহ বিসিআইসির অন্যান্য কারখানা প্রায় ১০ লাখ মেট্রিক টন ইউরিয়া উৎপাদন করে। অবশিষ্ট ১৬ লাখ মেট্রিক টন ইউরিয়া উচ্চমূল্যে আমদানি করতে হয়।

সিইউএফএল সূত্র জানায়, গত দুই বছর কখনো যান্ত্রিক ত্রুটিতে, কখনো গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় দীর্ঘ সময় ধরে বন্ধ ছিল সিইউএফএল। ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে শুধু পাঁচ দিন চালু ছিল এ কারখানা। গত বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে কারখানার উৎপাদন বন্ধ হয়ে পড়ার পর ১৩ অক্টোবর সিইউএফএল চালু হয়। এ বছরের ৩ জানুয়ারি আবারও যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে দীর্ঘ সময় লাগে কারখানাটি চালু করতে। সর্বশেষ যাবতীয় স্টার্টআপ (কারখানা চালু প্রক্রিয়া) শেষে ২৬ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত আড়াইটার সময় কারখানা চালু হয়।

১৯৮৭ সালের ২৯ অক্টোবর জাপানের কারিগরি সহায়তায় কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে আনোয়ারা উপজেলার রাঙ্গাদিয়ায় সার কারখানাটি প্রতিষ্ঠা করে সরকার। কারখানা চালু হওয়ার সময় দৈনিক ১ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন এবং বার্ষিক ৫ লাখ ৬১ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া উৎপাদনক্ষমতা থাকলেও বর্তমানে দৈনিক ১ হাজার ২০০ মেট্রিক টন ইউরিয়া উৎপাদন করতে সক্ষম হচ্ছে। পাশাপাশি বার্ষিক ৩ লাখ ১০ মেট্রিক টন অ্যামোনিয়া উৎপাদন করতে পারে সিইউএফএল।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ছোট হচ্ছে আগামী বাজেটের আকার
  • প্রকল্প বন্ধ, কাজও নেই দুর্ভোগে দরিদ্র শ্রমিকরা
  • আমদানি-রপ্তানি কমলেও রাজস্ব বেড়েছে ৩৬৬ কোটি টাকা
  • বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে বাংলাদেশ পিছিয়ে কেন
  • গ্যাস–সংকটে সিইউএফএলে সার উৎপাদন বন্ধ