এডিপি: সাত মাসে আগেরবারের চেয়ে ১৮ হাজার কোটি টাকা কম খরচ হয়েছে
Published: 17th, March 2025 GMT
চলতি অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) প্রথম সাত মাসে আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ১৮ হাজার ৪৯ কোটি টাকা কম খরচ হয়েছে। ওই সময়ে উন্নয়ন প্রকল্পে খরচ হয়েছে ৬৭ হাজার ৫৫৩ কোটি টাকা। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময় ৮৫ হাজার ৬০২ কোটি টাকা খরচ হয়।
বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) জানুয়ারি মাস পর্যন্ত এডিপি বাস্তবায়নের হালনাগাদ তথ্যে এ চিত্র পাওয়া গেছে। আজ সোমবার দুপুরে এডিপি বাস্তবায়নের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আইএমইডি।
জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে এডিপি বাস্তবায়নের দিক থেকে এবারই গত পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম টাকা খরচ হয়েছে। গত জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে মাত্র ২৪ দশমিক ২৭ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে।
এর আগে জুলাই-ফেব্রুয়ারি হিসাবে কোভিডের বছরে (২০২০-২১ অর্থবছর) ৭২ হাজার ৬০৩ কোটি টাকা খরচ হয়েছিল। পরের দুই বছরের প্রায় ৮২ থেকে ৮৪ হাজার কোটি টাকা করে খরচ হয়েছিল।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মনে করেন, জুলাই-আগস্টের আন্দোলন; ক্ষমতার পটপরিবর্তন এবং ঠিকাদার ও প্রকল্প পরিচালকদের খুঁজে না পাওয়া—সবকিছুর প্রভাব পড়েছে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে। চলতি অর্থবছরে ২ লাখ ৭৮ হাজার ২৮৯ কোটি টাকার এডিপি নেওয়া হয়েছে। অবশ্য এখন তা সংশোধন করে ২ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে। এর আগে কখনো এডিপি এতটা কাটছাঁট করা হয়নি।
স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের বাস্তবায়ন ১% হয়নিআইএমইডির প্রতিবেদন অনুসারে, গত সাত মাসে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের বাস্তবায়ন ১ শতাংশও হয়নি। বিভাগের ১৩টি প্রকল্পে ৪ হাজার ৪৬৩ কোটি টাকা বরাদ্দ আছে। কিন্তু গত সাত মাসে খরচ হয়েছে মাত্র ২০ কোটি টাকা। বাস্তবায়ন হার দশমিক ৪১ শতাংশ।
সব মিলিয়ে আটটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ তাদের বরাদ্দের ১০ শতাংশ খরচ করতে পারেনি। স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ ছাড়া অন্য মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো হলো স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ; জননিরাপত্তা বিভাগ; সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়; পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়; অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ; ভূমি মন্ত্রণালয়; জাতীয় সংসদ সচিবালয়।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বার্ষিক করমুক্ত আয়সীমা চার লাখ টাকা করার সুপারিশ করেছে সিপিডি
ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের বার্ষিক করমুক্ত আয়সীমা চার লাখ টাকায় বাড়ানোর সুপারিশ করেছে বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। বর্তমানে একজন করদাতার করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে তিন লাখ টাকা আছে। ২০২৫-২৬ অর্থবছরে তা আরও ৫০ হাজার টাকা বাড়ানোর কথা বলেছে সিপিডি।
আজ রোববার আগামী অর্থবছরের বাজেট সুপারিশ নিয়ে সিপিডি সংবাদ সম্মেলন করে। সিপিডির ধানমন্ডির কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। এতে বক্তব্য দেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন, গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম প্রমুখ। আরও বক্তব্য দেন সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান।
বর্তমান ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের ওপর ৫, ১০, ১৫, ২০ ও ২৫ শতাংশ হারে কর বসে। প্রথম সাড়ে তিন লাখ টাকার ওপর কর নেই। পরের প্রথম এক লাখ টাকার জন্য ৫ শতাংশ, পরবর্তী ৪ লাখ টাকার জন্য ১০ শতাংশ, পরবর্তী ৫ লাখ টাকার জন্য ১৫ শতাংশ, পরবর্তী ৫ লাখ টাকার জন্য ২০ শতাংশ এবং বাকি অর্থের ওপর ২৫ শতাংশ হারে কর বসবে।
এ ছাড়া মহিলা করদাতা এবং ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য করমুক্ত আয়সীমা হলো চার লাখ টাকা। তৃতীয় লিঙ্গের করদাতা এবং প্রতিবন্ধী স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতার করমুক্ত আয়সীমা হবে পৌনে পাঁচ লাখ টাকা। গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা করদাতার করমুক্ত আয়ের সীমা পাঁচ লাখ টাকা হবে। আর প্রতিবন্ধী ব্যক্তির পিতামাতা বা আইনানুগ অভিভাবকের প্রত্যক সন্তান বা পোষ্যর জন্য করমুক্ত আয়ের সীমা আরও ৫০ হাজার টাকা বেশি হবে।
এ ছাড়া ঢাকা উত্তর সিটি, ঢাকা দক্ষিণ সিটি এবং চট্টগ্রাম সিটির এলাকায় অবস্থিত করদাতার জন্য ন্যূনতম কর ৫ হাজার টাকা, অন্য সিটির করদাতার জন্য ৪ হাজার টাকা এবং সিটি করপোরেশন ব্যতীত অন্য এলাকার করদাতার জন্য ৩ হাজার টাকা দিতে হবে।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে ১ কোটি ১১ হাজারের মতো লাখ কর শনাক্তকরণ নম্বরধারী (টিআইএনধারী) আছেন। চলতি অর্থবছরে প্রায় ৪০ লাখ করদাতা রিটার্ন দিয়েছেন।