গাজীপুরে সাংবাদিকদের সম্মানে জামায়াতের ইফতার
Published: 17th, March 2025 GMT
গাজীপুরে সাংবাদিকদের সম্মানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মহানগর শাখার আয়োজনে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (১৭ মার্চ) গাজীপুর জেলা পরিষদ মিলনায়তনে এ মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
ইফতার মাহফিলে গাজীপুর মহানগর জামায়াতের আমীর অধ্যাপক মুহা. জামাল উদ্দীনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ।
প্রধান অতিথি হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ‘‘সাংবাদিক দম্পত্তি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা একযুগ পেরিয়ে গেছে, এখনো বিচার হয়নি। বিচারহীনতার এই সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে। কথা বলা ও লেখার অপরাধে একাধিক সাংবাদিককে জেলবন্দি জীবন কাটাতে হয়েছে ও নির্বাসনে যেতে হয়েছে। সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ গণতন্ত্রের জন্য হুমকি।’’
আরো পড়ুন:
নিষেধাজ্ঞা বাতিল, সরকারি বিজ্ঞাপন পাবে ‘সাপ্তাহিক একতা’
বিএনপি সংস্কারের ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ: ফখরুল
তিনি আরো বলেন, ‘‘মাগুরায় ৮ বছরের শিশু এবং বরগুনায় ১২ বছরের কিশোরী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। পবিত্র রমজান মাসেও দেশে চুরি, ছিনতাই, খুন, রাহাজানি ও চাঁদাবাজির মতো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বেড়ে চলেছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।’’
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ‘‘বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে সাংবাদিকেরা স্বাধীনভাবে সত্য সংবাদ প্রকাশ করতে পারেননি। তৎকালীন সময়ে কিছু সাংবাদিক জামায়াতের সংবাদগুলো বিকৃতভাবে মিডিয়াতে উপস্থাপন করতেন। একজন সাংবাদিকের লেখনী হতে হবে নিরপেক্ষ ও মজলুম মানুষের পক্ষে।’’
ইফতার মাহফিলে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি সালাউদ্দিন আইয়ুবী, খায়রুল আলম, আবুল হাশেম খান, গাজীপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান টিটুসহ জামায়াতে ইসলামী মহানগর শাখার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।
ঢাকা/রেজাউল/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইফত র ইসল ম ইফত র
এছাড়াও পড়ুন:
প্রতিমা মাত্র
বাবেলের অধিবাসীরা যখন হজরত ইবরাহিমের (আ.) কথা কর্ণপাত করল না, শক্ত যুক্তিও মেনে নিতে রাজি হলো না, তখন তিনি দাওয়াত দেওয়ার ভিন্ন একটি কৌশল অবলম্বন করলেন। তাদের মন্দিরে অনেকগুলো কাঠের দেবদেবী ছিল, এর মধ্যে একটি ছিল প্রধান দেবতা। তিনি পরিকল্পনা করলেন তার জাতিকে দেখাবেন এই প্রতিমাগুলো কত দুর্বল—নিজের শরীর থেকে একটি মাছি তাড়াবারও শক্তি এদের নেই।
একদিন বাবেলে ধর্মীয় মেলা হবে, লোকজন ইবরাহিমকে (আ.) সেখানে নিয়ে যাওয়ার জন্য পীড়াপীড়ি করতে লাগল। ইবরাহিম (আ.) আকাশের তারকার দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘আমি অসুস্থ।’ তিনি ঠিক মিথ্যা বলেননি, তার জাতির কুফরি কাজকর্মে তিনি আত্মিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তারা তার কথা বিশ্বাস করে। (সুরা সফফাত, আয়াত: ৮৮-৯০) ইবরাহিম (আ.) আস্তে আস্তে বললেন, ‘আল্লাহর কসম, তোমরা চলে যাওয়ার পর আমি অবশ্যই তোমাদের প্রতিমাগুলোর কায়দা করব।’ (সুরা আম্বিয়া, আয়াত: ৫৭)
আরও পড়ুন‘রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনিয়া’ কখন পড়ব০৪ মার্চ ২০২৫এরপর তারা যখন চলে যায়, তিনি চুপি চুপি প্রতিমাগুলোর কাছে গেলেন। যাদের সামনে ছিল থরেথরে সাজানো ফলমূল আর সুস্বাদু খাবার। তিনি বললেন, ‘তোমরা কি খাবে না? তোমাদের কী হয়েছে, কথা বলছো না কেন?’ (সুরা সফফাত, আয়াত: ৯১-৯৩) তিনি সজোরে মূর্তিগুলোর ওপর আঘাত হানলেন। কিন্তু বড় মূর্তিটাকে কিছু করলেন না, যেন ওটার ওপর সব দোষ চাপানো যায়।
লোকজন ধর্মমেলা থেকে ফিরে যখন মন্দিরের এই হাল দেখল, রেগেমেগে একদম বেহাল হয়ে হয়ে গেল। তারা বলল, ‘কে আমাদের দেবদেবীর এই অবস্থা করল? সে নিশ্চয় সীমালংঘনকারী। কেউ কেউ বলল, এক যুবককে দেখেছি এদের সমালোচনা করতে, তার নাম ইবরাহিম। তারা বলল, তাকে জনতার সামনে উপস্থিত করো, যেন তারা তাকে দেখতে পারে।’
ইবরাহিমকে (আ.) উপস্থিত করার পর তাকে জিজ্ঞেস করা হলো, ‘তুমিই কি আমাদের দেবদেবীদের এই হাল করেছ? ইবরাহিম (আ.) বললেন, ওই বড় দেবতাটাই এসব করেছে, ওটাকে জিজ্ঞেস করো, যদি কথা বলতে পারে!’
এ কথা শুনে তারা চিন্তায় পড়ে গেল। তারা একে অপরকে বলল, তোমরা দেবদেবীদের অরক্ষিত রেখে গেছ, তোমরাই বরং সীমালঙ্ঘনকারী। তারপর লজ্জায় তাদের মাথানত হয়ে গেল। তারা ইবরাহিমকে (আ.) বলল, ‘তুমি তো ভালো করেই জানো এরা কথা বলতে পারে না।’
আরও পড়ুনসুরা ইয়াসিনের সার কথা১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ইবরাহিম (আ.) এই মন্তব্য শোনারই অপেক্ষায় ছিলেন। তিনি বললেন, ‘তবে কি তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে এমন কিছুর ইবাদত করো, যা তোমাদের কোনো উপকার করতে পারে না এবং কোনো ক্ষতিও করতে পারে না? ধিক তোমাদের এবং আল্লাহর পরিবর্তে তোমরা যাদের ইবাদত কর তাদের। এরপরও কি তোমরা বুঝবে না?’ (সুরা আম্বিয়া, আয়াত ৫৯-৬৭)
মূর্তিপূজার অসারতার এমন স্পষ্ট প্রমাণের পর বাবেলের অধিবাসীদের উচিত ছিল এক আল্লাহয় বিশ্বাস করা, হজরত ইবরাহিমকে (আ.) নবী বলে মেনে নেওয়া। কিন্তু তারা তা না করে ফন্দি আঁটতে থাকে কীভাবে মূর্তি ভাঙার প্রতিশোধ নেওয়া যায়, কীভাবে তাকে কঠিন শাস্তি দেওয়া যায়।
আল্লাহর শরিয়ত কোনো প্রাণীকেই জ্যান্ত পুড়িয়ে মারার অনুমতি দেয় না, আর মানুষ তো সবচেয়ে সম্মানিত প্রাণী, তার বেলায় তো আরও আগে না। (মিশকাতুল মাসাবিহ, হাদিস: ৩,৫৪২) কিন্তু কাফেরদের নীতিতে ইনসাফ নাই, মানবতা নাই, আছে কেবল পাশবিকতার জয়গান। আর তাই বাবেলের মূর্তিপূজারীরা সিদ্ধান্ত নেয়—এই যুবককে নিরস্ত করার একটাই উপায় আছে, আর তা হলো জ্যান্ত পুড়িয়ে মারা।
আরও পড়ুনআল্লাহর কাছে যে দোয়া করেছিলেন নবী সোলায়মান (আ.) ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫