বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের গুরুত্বপূর্ণ ১৬৬টি সুপারিশের মধ্যে ১০৮টি বিষয়ে একমত পোষণ করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে নিজেদের মতামত দিয়েছে এবি পার্টি। দলটি ৩২টি সুপারিশের বিষয়ে দ্বিমত এবং ২৬টি বিষয়ে আংশিক একমত জানিয়ে আজ সোমবার লিখিত মতামত কমিশনের কাছে জমা দেয়।

এবি পার্টির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়। পাঁচটি সংস্কার কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ ১৬৬টি সুপারিশের বিষয়ে মতামত চেয়ে ৬ মার্চ ৩৭টি রাজনৈতিক দল ও জোটের কাছে ‘স্প্রেড শিট’ (ছক আকারে) পাঠিয়েছিল ঐকমত্য কমিশন। ১৩ মার্চের মধ্যে তাদের মতামত জানাতে অনুরোধ করা হয়েছিল।

গতকাল ঐকমত্য কমিশন জানিয়েছিল, গতকাল পর্যন্ত ১১টি দল মতামত দিয়েছে।

এবি পার্টি জানায়, আজ লিখিত মতামত দেয় এবি পার্টি। পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, ভাইস চেয়ারম্যান লে.

কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল হক ও নাসরিন সুলতানা দলের পক্ষ থেকে ঐকমত্য কমিশনের কাছে মতামত জমা দেন। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষে মতামত গ্রহণ করেন কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ ও কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।

এবি পার্টি জানায়, সংস্কারের সময়কাল ও বাস্তবায়নের উপায় হিসেবে সর্বমোট ৬টি প্রস্তাব দিয়েছিল ঐকমত্য কমিশন। এর মধ্যে একটি হলো ‘নির্বাচনের আগে অধ্যাদেশের মাধ্যমে’। এই পদ্ধতিতে সংবিধান সংশোধন বর্তমান সংবিধানের আলোকে অগ্রহণযোগ্য। বর্তমান সংবিধান স্থগিত বা বাতিল না করে অধ্যাদেশের মাধ্যমে সংবিধান সংশোধন করা বর্তমান সংবিধান সাপেক্ষে বেআইনি। তবে বর্তমান সংবিধান স্থগিত করে জুলাই বিপ্লবের চেতনার আলোকে প্রস্তাবিত সাংবিধানিক বিধানগুলো পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও পরিমার্জন করে নতুন সংবিধান পুনর্লিখন করা যেতে পারে। এ বিষয়ে অ্যটর্নি জেনারেলের মাধ্যমে আপিল বিভাগের কাছে সরকার অধিকতর সাংবিধানিক ব্যাখ্যা চাইতে পারে।

দলটি আরও বলেছে, অবশিষ্ট পাঁচটি প্রস্তাব সার্বিক বিবেচনায় দুরূহ ও সময়সাপেক্ষ বলে মনে করে এবি পার্টি। এই পরিস্থিতিতে এবি পার্টি সংস্কারের সময়কাল ও বাস্তবায়নের উপায় হিসেবে আইনি সম্ভাব্য জটিলতা থাকা সত্ত্বেও ‘নির্বাচনের আগে অধ্যাদেশের মাধ্যমে’ এই উপায়টিকে বেছে নিয়েছে। তা ছাড়া যেসব সুপারিশে সংবিধান সংশোধনের সম্ভাব্য উপাদান নেই, সেসব ক্ষেত্রে নির্বাচনের আগে অধ্যাদেশের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা সবচেয়ে সহজসাধ্য বলে এবি পার্টি বিশ্বাস করে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: মত মত

এছাড়াও পড়ুন:

বিএনপির চেয়ে বেশি সংস্কার কোনো রাজনৈতিক দল করেছে, প্রশ্ন নজরুল ইসলাম খানের

বিএনপি সংস্কারের বিপক্ষে নয় বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিএনপির আলোচনার শুরুতে তিনি এ কথা বলেন। পরে সংস্কারের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ নিয়ে বিএনপির সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনা সকাল ১১টায় দিকে জাতীয় সংসদের এলডি হলে শুরু হয়।

সংস্কার চলমান প্রক্রিয়া মন্তব্য করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘সংস্কার হতেই হবে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অনেক বদলায়, বদলাবেই। আমরা কালকেও প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছি, বিএনপির চেয়ে বেশি সংস্কার বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক দল করেছে? রাজনৈতিকভাবে যদি বলেন, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা তো বিএনপি করেছে। বহু দলীয় গণতন্ত্র তো বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেছে। কাজেই বিএনপি সংস্কারের বিপক্ষে না, বিএনপি সংস্কারেই দল।’ 

এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘তারা যখন সংস্কারের দন্তস্য উচ্চারণ করেন নাই, তখন তো বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ভিশন ২০৩০ দিয়েছেন। আরও বহুজন যখন সংস্কারের কথা ভাবে নাই, তখন তো শহীদ জিয়া (সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান) ১৯ দফা কর্মসূচি দিয়েছিলেন। আর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আন্দোলনরত সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে ৩১ দফা রাষ্ট্র সংস্কার কর্মসূচি দিয়েছিলেন। এর চেয়ে ভালো প্রস্তাব কারও থাকলে সেটা আমরা গ্রহণ করব। এই যে সংস্কার কমিশনের কাজ, এটাকে আমরা ওই দৃষ্টিকোণ থেকে নিয়েছি।’ 

বিএনপির এ স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, ‘যদি ঐকমত্য কমিশনের কোনো সনদ নেওয়া হয়, বিএনপির জন্য সনদ তো আছে, সংস্কারের সনদ। কাজেই আমরা এর পক্ষে। আমরা তো শুধু একটা কথা বলব, সবকিছুর মূলে জনগণ- জনগণের সম্মতিতে যেন সব হয়।’ 

তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, যে প্রস্তাবগুলো এরমধ্যে করা হয়েছে, সদিচ্ছা নিয়েই সব প্রস্তাব করা হয়েছে। আমরা ভালো চাই, আরও ভালো চাই। কিন্তু খুব ভালো করার জন্য এতো সময় যেন না নেই, যাতে মানুষের পরিবর্তনের যে আকাঙ্ক্ষা, সেটা স্তিমিত হয়ে যায়।’ 

নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের সামনে আরেকবার আরেকটা সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এই সুযোগটা আমরা কাজে লাগাতে চাই। আমরা এই কমিশন ও সরকারকে সহযোগিতা করছি, সেই প্রত্যাশা নিয়েই। কারণ আর কত? আর কতবার আমরা লড়াই করব, বিজয়ী হব এবং আমাদের সেই লড়াইয়ের ফসলটি কেড়ে নেওয়া হবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাষ্ট্রের মূলনীতি পরিবর্তনে জোর আপত্তি বিএনপির
  • বিএনপি-ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে ঐকমত্য কম
  • কিছু বিষয় এমন আছে, যেগুলো দলীয় ফোরামে আলোচনা করতে হবে: সালাউদ্দিন
  • কতগুলো বিষয়ে একমত, তা এখনই বলতে পারব না: সালাহউদ্দিন আহমদ
  • সংবিধান সংশোধন-সংক্রান্ত মৌলিক প্রস্তাবের বিষয়ে আলোচনার মাধ্যমে এক জায়গায় আসার চেষ্টা করবে বিএনপি
  • ঐকমত্য তৈরিতে আলোচনা চালিয়ে যাবে বিএনপি: সালাউদ্দিন আহমেদ
  • বিএনপির চেয়ে বেশি সংস্কার কোনো রাজনৈতিক দল করেছে, প্রশ্ন নজরুল ইসলাম খানের
  • জনগণকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত রাখার কৌশল সমর্থন করে না বিএনপি
  • প্রধান উপদেষ্টা একটি দলকে সন্তুষ্ট করতে নির্বাচনের সময় বললে অন্যরা অসন্তুষ্ট হতো
  • জাতীয় সনদ তৈরির মাধ্যমে জাতির আকাঙ্ক্ষিত রাষ্ট্র সংস্কারের দিকে অগ্রসর হতে পারব: আলী রীয়াজ