মানিকগঞ্জ শহরে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের এক সদস্যের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগে ফজলুল করিম নামে যুবদলের এক কর্মীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তারের পর আজ সোমবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মামলার এজাহার এবং স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, জেলা শহরের যানজট নিরসনে শহীদ রফিক সড়কে একদিকে (ওয়ানওয়ে) যানবাহন চলাচলের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। গতকাল বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে ওই সড়কের উত্তরা ব্যাংকের কাছে রিকশাচালককে উল্টো পথে যেতে বলেন শামীম। এ সময় সেখানে দায়িত্বরত ট্রাফিক কনস্টেবল শাহিন আলম বাধা দেন। এ নিয়ে শাহিন আলম ও শামীমের মধ্যে কথা–কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে শামীম ট্রাফিক পুলিশ শাহীনকে মারধরের হুমকি দেন। পরে ট্রাফিক পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে এসে শামীমকে আটক করে থানা-পুলিশে সোপর্দ করেন।

এ ঘটনায় গতকাল রাতে ট্রাফিক কনস্টেবল শাহীন আলম বাদী হয়ে মারধর, সরকারি কাজে বাধা ও হুমকির অভিযোগে যুবদল কর্মী শামীমকে আসামি করে সদর থানায় মামলা করেন।

জেলা ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (প্রশাসন) আবদুল হামিদ খান বলেন, শামীম নামের এক যুবক দায়িত্বরত ট্রাফিক কনস্টেবলকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও মারধরের হুমকি দেন। এ ঘটনায় ওই যুবককে আটক করে সদর থানার পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে।

জেলা যুবদলের সদস্যসচিব তুহিনুর রহমান বলেন, শামীম ফ্রান্স শাখা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতন আন্দোলনে শামীম সক্রিয়ভাবে রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন। যুবদলে তাঁর পদ না থাকলেও তিনি যুবদলের সক্রিয় কর্মী। তুহিনুর আরও বলেন, ইফতারের সময় ঘনিয়ে আসায় ট্রাফিক পুলিশের নির্দেশনা অমান্য করে রিকশায় চড়ে শামীম দ্রুত বাসায় যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় ট্রাফিক কনস্টেবল বাধা দিলে কথা–কাটাকাটি হয়। ভুল–বোঝাবুঝি থেকে অনাকাঙ্ক্ষিত এই ঘটনা ঘটেছে।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আমান উল্লাহ্ বলেন, দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ, মারধরের হুমকি ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে শামীম নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছেন এক ট্রাফিক কনস্টেবল। আসামি শামীমকে আজ দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ য় ত বরত ট র ফ ক ম রধর য বদল

এছাড়াও পড়ুন:

শরীয়তপুরের জাজিরায় আবারও সংঘর্ষ, মুহুর্মুহু ককটেল বিস্ফোরণ

শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় শতাধিক ককটেল (হাতবোমা) বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।

গতকাল রোববার দুপুরে জয়নগর ইউনিয়নের ছাব্বিশপারা এলাকায় এ সংঘর্ষ হয়। এতে এক তরুণের হাতের কব্জিতে গুরুতর ক্ষত হয় এবং আরও একজন আহত হন।

জাজিরা থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জয়নগর ইউনিয়নের ছাব্বিশপারা এলাকায় তেজগাঁও কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিঠুন ঢালী ও জয়নগর ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য হালিম তালুকদারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলছে। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর এই দুই নেতা আত্মগোপনে গেলে স্থানীয় পর্যায়ে তাদের পক্ষ থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন জসিম তালুকদার ও নুর আলম সরদার।

রোববার দুপুরে দুই পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র ও ককটেল নিয়ে সংঘর্ষের প্রস্তুতি নেয়। এ সময় নুর আলম সরদারের অনুসারীরা প্রতিপক্ষের ওপর ককটেল বোমা নিক্ষেপ করে। এরপর উভয় পক্ষ ঘণ্টা-ব্যাপী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। চলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ককটেল বিস্ফোরণ ও মারামারি। পরে পুলিশ, র‌্যাব ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

সংঘর্ষের কিছু দৃশ্য স্থানীয় এক ব্যক্তির সিসিটিভি ক্যামেরায় ধারণ হয়, যা ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ৪ মিনিট ৪৪ সেকেন্ডের সেই ভিডিওতে দেখা যায়, এক পক্ষের সমর্থকরা বালতিতে করে ককটেল নিয়ে প্রতিপক্ষের দিকে নিক্ষেপ করছেন। তাদের হাতে ছিল টেঁটা, রামদা, ছেনদা, বল্লম, ডাল-সুরকি ও অন্যান্য দেশীয় অস্ত্র।

সম্প্রতি জাজিরার বিলাশপুরে সংঘর্ষের ঘটনায় খইয়ের মতো ককটেল বিস্ফোরণ দেশজুড়ে আলোচিত হয়। গত ৫ এপ্রিল সেখানে দুই শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে, যা এখনও আলোচনায় রয়েছে। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই আবারও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটলো ছাব্বিশপারা এলাকায়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দুলাল আখন্দ বলেন, গতকাল দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বেশ কিছু হাতবোমা বিস্ফোরিত হয় বলে জানতে পেরেছি। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এ ঘটনায় একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ