ঘুষ-দুর্নীতি বন্ধে শরীয়তপুর আদালত চত্বরে অভিযোগ বাক্স স্থাপন
Published: 17th, March 2025 GMT
ঘুষ, দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ হিসেবে ‘অভিযোগ বাক্স’ খুলেছেন শরীয়তপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। আজ সোমবার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবুল বাশার মিঞা এ–সংক্রান্ত একটি পরিপত্র জারি করেছেন। পত্রটি জেলা ও দায়রা জজসহ আদালতের সব বিচারক, আদালত পুলিশ, সরকারি কৌঁসুলি (পিপি), আইনজীবী সমিতি ও প্রেসক্লাবে পাঠানো হয়েছে।
জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের দেয়ালে একটি অভিযোগ বাক্স স্থাপন করা হয়েছে। এ ছাড়া মুঠোফোন নম্বর, হোয়াটসঅ্যাপ, ই–মেইলেও অভিযোগ জানাতে পারবেন সংশ্লিষ্টরা।
সম্প্রতি শরীয়তপুর আইনজীবী সমিতির একটি সভায় আদালতের পেশকার, পিয়ন ও কোর্ট পুলিশের ঘুষ দেওয়ার টাকার হার নির্ধারণের সিদ্ধান্ত হয়। গত বৃহস্পতিবার ওই টাকার হার নির্ধারণের জন্য করা একটি সভার রেজল্যুশন (কার্যবিবরণী) আদালতের বিভিন্ন কর্মচারী, আইনজীবী ও আইনজীবীর সহকারীদের দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা ধরনের আলোচনা হচ্ছে। আইনজীবী সমিতির ওই সিদ্ধান্ত নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। যার প্রেক্ষিতে শরীয়তপুর আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
ওই চিঠিতে বলা হয়, বিচারপ্রার্থী জনতা, আইনজীবী ও সর্বসাধারণের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের আওতাধীন যেকোনো আদালত বা শাখায় বিচারিক সেবা গ্রহণের সময় কোনো প্রকার ঘুষ, দুর্নীতি বা অনিয়মের অভিযোগ থাকলে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের বাইরে দেয়ালে স্থাপিত অভিযোগ বক্সে ও নির্ধারিত নম্বরে সরাসরি ফোন করে, হোয়াটসঅ্যাপ ও ই–মেইলে জানানোর আহ্বান জানানো হয়। এ ছাড়া কোনো ধরনের ঘুষ গ্রহণ বা প্রদানের ঘটনা প্রত্যক্ষ করে ভিডিও, অডিও, ছবি ও কোনো প্রমাণ থাকলে সেগুলো জানানোর অনুরোধ করা হয়। প্রতিটি মাধ্যমে গৃহীত অভিযোগ সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শরীয়তপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের প্রশাসনিক কর্মকর্তা সামছুল হক সরকার বলেন, ‘শরীয়তপুরে আদালতের কোনো কর্মচারী ঘুষ-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নয়। আইনজীবী সমিতি আমাদের বদনাম করার জন্য বিভিন্ন ফি নির্ধারণ করেছেন। আমরা দুর্নীতিতে জিরো টলারেন্স নীতিতে আছি। আদালতের কর্মচারীদের নাম ব্যবহার করে কোনো পক্ষ বিচারপ্রার্থীদের হয়রানি করতে পারে। যার কারণে এ–সংক্রান্ত অভিযোগ, ঘুষ, দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ নেওয়া হবে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আইনজ ব
এছাড়াও পড়ুন:
মডেল মেঘনা আলমের আটকাদেশ কেন অবৈধ নয়: হাইকোর্ট
মডেল মেঘনা আলমকে পরোয়ানা ছাড়া গ্রেপ্তার, কারণ উল্লেখ না করে গ্রেপ্তার, ২৪ ঘন্টার বেশি গোয়েন্দা কার্যালয়ে হেফজতে রাখা প্রশ্নে রুলে দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে মেঘনা আলমকে দেওয়া আটাকাদেশ কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা রুলে জানতে চাওয়া হয়েছে।
একটি রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি রাজিক আল জলিল ও বিচারপতি তামান্না রহমান খালিদীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার এ রুল দেন। মেঘনা আলমকে আটকের প্রক্রিয়া ও আটকাদেশের বৈধতা নিয়ে তার বাবা বদরুল আলম রিট আবেদন দায়ের করেন।
গত ৯ এপ্রিল রাতে মডেল মেঘনা আলমকে রাজধানীর বসুন্ধরার বাসা থেকে আটক করে হেফাজতে নেয় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আদেশ অনুযায়ী, পর দিন ১০ এপ্রিল রাতে আদালত তাঁকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৩০ দিন আটক রাখার আদেশ দেন। তিনি কারাগারে আছেন।
সুনির্দিষ্ট কারণ না জানিয়ে মেঘনা আলমের আটকের ঘটনা নানা আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়। অপরাধে জড়ালে মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার না করে তাঁকে কেন বিশেষ ক্ষমতা আইনের বিতর্কিত ‘প্রিভেন্টিভ ডিটেনশন’ বা প্রতিরোধমূলক আটক করা হলো, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এমন প্রেক্ষাপটে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) পদ থেকে রেজাউল করিম মল্লিককে গতকাল শনিবার সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এ দিকে মেঘনা আলমকে যে প্রক্রিয়ায় আটক করা হয়েছে, তা সঠিক হয়নি বলে আজ রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে মন্তব্য করেছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। এর আগে মেঘনা আলমকে গ্রেপ্তার ও আটকাদেশের বৈধতা নিয়ে মেঘনার বাবা আজ রিটটি করেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সারা হোসেন, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী কাজী জাহেদ ইকবাল ও প্রিয়া আহসান চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ ও জামিলা মমতাজ।
রুলে পরোয়ানা ছাড়া বাসা থেকে মেঘনা আলমকে গ্রেপ্তার, কারণ না জানিয়ে গ্রেপ্তার, ডিবি কার্যালয়ে ২৪ ঘণ্টার বেশি হেফাজতে রাখা ও আইনজীবীর সুযোগ না দেওয়া কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বিশেষ ক্ষমতা আইনে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে দেওয়া আটকাদেশ কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তাও জানতে চেয়েছেন আদালত।
স্বরাষ্ট্রসচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার, ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) প্রধান,ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ও ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।