ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের পরিবেশবান্ধব অর্থায়নের ২০ শতাংশ নারী উদ্যোক্তাদের ও ২৫ শতাংশ কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ (সিএমএসএমই) খাতে ঋণ দিতে হবে। আবার সিএমএসএমই ঋণের ১৫ শতাংশও নারী উদ্যোক্তাদের মধ্যে বিতরণ করতে হবে। এ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক আজ সোমবার প্রজ্ঞাপন জারি করে এমন নির্দেশনা দিয়েছে। বর্তমানে ব্যাংকগুলোর মোট ঋণের ৫ শতাংশ পরিবেশবান্ধব খাতে অর্থায়নের নির্দেশনা রয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন ও টেকসই শিল্পায়নে সিএমএসএমই খাতের পাশাপাশি নারী উদ্যোগ খাতের অবদান অনস্বীকার্য। সরকার কর্তৃক ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনের লক্ষ্যে সিএমএসএমই খাতের পাশাপাশি অর্থনীতিতে নারীর ক্ষমতায়ন, লিঙ্গবৈষম্য রোধ এবং নারীদের অংশগ্রহণকল্পে বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। তা সত্ত্বেও সিএমএসএমই এবং নারী উদ্যোগ খাতে কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় অর্থায়ন হচ্ছে না। দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে এসব খাতে অর্থায়ন বাড়ানোর লক্ষ্যে ব্যাংক ও ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোর (আর্থিক প্রতিষ্ঠান) ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।

এ জন্য সিদ্ধান্ত হয়েছে, সিএমএসএমই এবং নারী উদ্যোগ খাতে অর্থায়ন বৃদ্ধির লক্ষ্যে পরিবেশবান্ধব অর্থায়নের মধ্যে ২৫ শতাংশ সিএমএসএমই খাতে ও ২০ শতাংশ নারী উদ্যোগ খাতে বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে। সিএমএসএমই খাতের ঋণের মধ্যে ১৫ শতাংশ নারী উদ্যোগ খাতে দিতে হবে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

জামানত ছাড়াই পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাবেন ছোট ছোট উদ্যোক্তারা

করদাতা শনাক্তকরণ নম্বর (টিন) নেই এমন ছোট ছোট উদ্যোক্তারা পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাবেন। ঋণ নিতে জামানতও লাগবেনা। তাঁরা অন্য ব্যবসা সংক্রান্ত সনদ দিয়ে এই ঋণ পাবেন। আগামী পাঁচ বছরের জন্য সিএমএসএমই খাতের নতুন যে নীতিমালা আজ সোমবার প্রণয়ন করা হয়েছে, সেখানে ‘অপ্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোক্তা’ নামের একটি নতুন শ্রেণি যুক্ত করা হয়েছে। এখন থেকে বাংলাদেশে এই অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের উদ্যোক্তাদের পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে।

কোন উদ্যোক্তারা অপ্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোক্তা হিসেবে বিবেচিত হবেন, নীতিমালায় তা–ও পরিষ্কার বলে দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, জাতীয় শিল্পনীতি–২০২২–এর আলোকে ‘অপ্রাতিষ্ঠানিক শিল্প খাতের উদ্যোক্তা’ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রণীত ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা–২০২১ অনুযায়ী এই উদ্যোক্তাদের সংজ্ঞায়ন করা হয়েছে। ইউনিক বিজনেস আইডেনটিফিকেশন (ইউবিআইডি), ডিজিটাল বিজনেস আইডেনটিফিকেশন (ডিবিআইডি) ও বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালার আলোকে পারসোনাল রিটেইল অ্যাকাউন্ট (পিআরএ) আছে, এমন শ্রমনির্ভর অতিক্ষুদ্র বা ভাসমান উদ্যোক্তা বা সেবাপ্রদানকারীরা ‘অপ্রাতিষ্ঠানিক বা প্রান্তিক উদ্যোক্তা’ হিসেবে বিবেচিত হবেন।

উৎপাদন, সেবা ও ব্যবসা—এই তিন অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের উদ্যোক্তারা, যাঁদের জনবল পারিবারিক সদস্যসহ ১০ জনের বেশি নয়, তাঁরা পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাবেন। এই শ্রেণির উদ্যোক্তাদের টার্নওভারের শর্ত রাখা হয়নি। তবে তাঁদের জমি ও কারখানা ভবন ব্যতীত প্রতিস্থাপন ব্যয়সহ শিল্পপ্রতিষ্ঠানের স্থায়ী সম্পদের মূল্য পাঁচ লাখ টাকার কম হতে হবে।

সিএমএসএমই খাতের নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, মাঝারি শিল্প–উদ্যোক্তারা সর্বোচ্চ ১০০ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ পাবেন। ১২১ থেকে ৩০০ কর্মী আছেন, এমন তৈরি পোশাক প্রতিষ্ঠান অথবা এক হাজার কর্মী আছেন, এমন শ্রমঘন শিল্পে এই ঋণ দেওয়া হবে। এ ছাড়া মাঝারি শিল্পের মধ্যে সেবা খাতে সর্বোচ্চ ৭৫ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হবে, যেখানে কর্মীর সংখ্যা ৫১ থেকে ১২০।

উৎপাদন খাতের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, মাইক্রো শিল্পে সর্বোচ্চ দুই কোটি টাকা ও ক্ষুদ্র শিল্পে ২৫ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হবে। মাঝারি শিল্পের ট্রেডিং খাতে ১০ কোটি টাকা এবং ক্ষুদ্র শিল্পের ট্রেডিং ও সেবা খাতে সর্বোচ্চ আট কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হবে। অন্যদিকে মাইক্রো শিল্পের ট্রেডিংয়ের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৭৫ লাখ টাকা ঋণ দেওয়া হবে। কুটিরশিল্পে সর্বোচ্চ ২০ লাখ টাকা ঋণ দেওয়া হবে।

এর আগে ২০১৯ সালের ৫ সেপ্টেম্বর পাঁচ বছরের জন্য সিএমএসএমই নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়। সেই নীতিমালার মেয়াদ শেষ হওয়ায় নতুন এই নীতিমালা করা হয়েছে। আগামী পাঁচ বছরের জন্য এই নীতিমালা কার্যকর হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জামানত ছাড়াই পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাবেন ছোট ছোট উদ্যোক্তারা