মাগুরার সেই শিশুকে একাই ধর্ষণ করেছেন বোনের শ্বশুর
Published: 17th, March 2025 GMT
মাগুরার সেই শিশুটিকে একাই ধর্ষণ করেছেন তার বোনের শ্বশুর। পরে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে হত্যার চেষ্টা করেন। বোন রান্নার কাজে ব্যস্ত ছিল। এই সুযোগ নেয় শ্বশুর।
৬ মার্চ সকালে তার ছোট ছেলের (শিশুটির বোনের স্বামী) কক্ষে শিশুটিকে একা পেয়ে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা করেন তিনি। ধর্ষণের মামলায় দোষ স্বীকার করে আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ কথা জানিয়েছেন মাগুরার সেই শিশুটির বোনের শ্বশুর। আদালত ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
গত শনিবার (১৫ মার্চ) বিকেলে মাগুরার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সব্যসাচী রায় ওই আসামির ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দি রেকর্ড করেন। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ধর্ষণ মামলার প্রধান এই আসামি জবানবন্দিতে জানান— ৬ মার্চ সকাল ৮টা ২০ মিনিটের দিকে তাঁর ছোট ছেলের কক্ষে শিশুটিকে একা শুয়ে থাকতে দেখে ঘরে ঢুকে পড়েন তিনি। শিশুটি চিৎকার করলে তার গলা চেপে ধরেন। শিশুটি জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। এরপর তিনি ধর্ষণের চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে ব্লেড দিয়ে শিশুটিকে ক্ষতবিক্ষত করেন। শিশুটিকে অচেতন ফেলে রেখে মাঠে কাজ করতে চলে যান। ঘটনার সময় বাড়ির অন্য সদস্যরা যে যার কাজে বেরিয়েছিলেন। আর শিশুটির বোন বাড়ির এক কোণে রান্নাঘরে মোবাইল ফোনে কথা বলায় ব্যস্ত ছিলেন।
আরো পড়ুন:
ধর্ষণের দায় একাই নিচ্ছেন মাগুরার সেই শিশুর বোনের শ্বশুর
ফেনীতে যৌতুকের জন্য নববধূকে হত্যা, শ্বশুর গ্রেপ্তার
ঘটনার কিছুক্ষণ পর শিশুটির বোন ঘরে গিয়ে তাকে অচেতন অবস্থায় দেখতে পান। এ সময় প্রতিবেশী এক নারী ওই বাড়িতে আসেন। তারা শিশুটিকে অচেতন দেখে তার মাথায় পানি ঢালেন। খবর পেয়ে বেলা ১১টার দিকে শিশুটির বোনের শাশুড়ি বাড়িতে এসে প্রথমে শিশুটিকে স্থানীয় এক কবিরাজের বাড়িতে নেন। সেখান থেকে নেওয়া হয় মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে।
মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, আসামির জবানবন্দির সঙ্গে মামলার বাদী শিশুটির মায়ের এজাহারের অমিল রয়েছে। বাদী বলেছিলেন, ঘটনা ঘটেছে রাতে। অবশ্য এজাহারে তিনি এ–ও উল্লেখ করেছিলেন, বিয়ের পর থেকে তার বড় মেয়েকে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন মেয়ের শ্বশুর। বিষয়টি পরিবারের অন্য সদস্যরা জানতেন। এ নিয়ে ঝগড়াও হয়েছে।
১ মার্চ মাগুরার শিশুটি নিজ বাড়ি থেকে বড় বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যায়। ৬ মার্চ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নেওয়া হয়। ১৩ মার্চ দুপুরে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় শিশুটি। সেদিন সন্ধ্যায় শিশুটির মরদেহ হেলিকপ্টারে করে মাগুরায় নেওয়া হয়। প্রথম জানাজা শেষে উত্তেজিত জনতা শিশুটির বোনের শ্বশুরবাড়িতে ভাঙচুর চালায় ও অগ্নিসংযোগ করে। এর আগে ৮ মার্চ মাগুরা সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণ ও ধর্ষণের মাধ্যমে আহত করার অভিযোগে মামলা করেন শিশুটির মা।
মামলায় শিশুটির বোনের স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুরকে আসামি করা হয়। এর মধ্যে প্রধান আসামি জবানবন্দি দিয়েছেন। বাকি তিন আসামির রিমান্ড চলছে।
রবিবার (১৬ মার্চ) দুপুরে মাগুরার পুলিশ সুপার মিনা মাহমুদা সদর থানায় সাংবাদিকদের বলেন, মামলার অন্যতম আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য তিন আসামির জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তদন্তের স্বার্থে এর চেয়ে বেশি কিছু বলা সম্ভব হচ্ছে না।
শাহীন/মাগুরা/বকুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
রিতুর ব্যাটে নাটকীয় জয়, বিশ্বকাপের আরও কাছে বাংলাদেশ
লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে রূপকথা লিখলেন বাংলাদেশের মেয়েরা। শেষ দশ ওভারে বাংলাদেশের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৫৯ রান। হাতে ছিল ৪ উইকেট। এমন জায়গা থেকে অনেকেই ম্যাচের আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন। তবে তখনও আশার প্রদীপ হয়ে এক প্রান্তে দাঁড়িয়ে ছিলেন রিতু মণি। নিভু নিভু হয়ে জ্বলতে থাকা সেই রিতুতেই শেষ পর্যন্ত আলো খুঁজে পেলো বাংলাদেশ। তার অপরাজিত ফিফটিতে আয়ারল্যান্ডকে ২ উইকেটে হারিয়েছে টাইগ্রেসরা।
নারী বিশ্বকাপের বাছাই পর্বের ম্যাচে লাহোরে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৩৫ রান সংগ্রহ করে আয়ারল্যান্ড। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৬৩ রান করেছেন ডেলানি। জবাবে খেলতে নেমে ৪৮ ওভার ৪ বলে ৮ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। টাইগ্রেসদের হয়ে ৬১ বলে অপরাজিত ৬৭ রান করেছেন রিতু।
লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে টসে হেরে বোলিং পেয়ে ভালো শুরু পেয়েছিল বাংলাদেশ। দলীয় ৬ রানেই ৮ বল খেলে ৪ রান করে রান আউটে কাটা পড়েন সারা। এই ওপেনারের বিদায়ে চতুর্থ ওভারে মাত্র ৬ রানের মাথায় ভাঙে উদ্বোধনী জুটি।
তবে শুরুর সেই ধাক্কা সামাল দেন লুইস ও অ্যামি হান্টার। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে তারা যোগ করেন ৫০ রান। ১৪তম ওভারে জান্নাতুল ফেরদৌসকে ফিরতি ক্যাচ দেওয়ার আগে ৪৩ বলে ২৪ রান করেছেন লুইস। অধিনায়কের বিদায়ের পর হান্টারের সঙ্গে যোগ দেন ওরলা পেন্ডারগেস্ট। তবে এরপর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি হান্টার। ভালো শুরুর পর ফিরেছেন দুর্ভাগ্যজনক রান আউটে। সাজঘরে ফেরার আগে ৩৮ বলে ৩৩ রান করেছেন এই টপ অর্ডার ব্যাটার।
এরপর ৪র্থ উইকেট জুটিতে প্রতিরোধ গড়ে ৭২ রানের জুটি গড়েন পেন্ডারগেস্ট ও লরা ডেলানি। দলীয় ১৪৯ রানে রাবেয়া খানের বলে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হয়ে ৪১ রানে ফেরেন পেন্ডারগেস্ট। এরপর লিহ পলকে নিয়ে ৩৩ রানের জুটি গড়েন ডেলানি। তার বিদায়ে ভাঙে এই জুটি। সাজঘরে ফেরার আগে ৭৫ বলে ৬৩ রান করেন ডেলানি। এরপর ছোট ছোট জুটিতে দলীয় স্কোর ২৩৫ রানে নিয়ে যায় আইরিশদের লোয়ার অর্ডার। ক্রিস্টিনা ১০, ক্যানিং ৪ রান করেন। ২৪ রানে কেলি ও ৭ রানে অপরাজিত থাকেন মাগুইরে।
বাংলাদেশের হয়ে ৩টি উইকেট শিকার করেন রাবেয়া। ২টি ফাহিমার ও ১টি নেন জান্নাতুল ফেরদৌস।