খুলনার কয়রা উপজেলায় সুন্দরবনে অবৈধভাবে শিকার করা হরিণের সাড়ে তিন মণ মাংস উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড ও বন বিভাগের কোবাদক ফরেস্ট স্টেশনের বনরক্ষীরা। আজ সোমবার সকালে সুন্দরবন-সংলগ্ন জোড়শিং এলাকায় যৌথ অভিযান চালিয়ে এ মাংস উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি, মাংস ফেলে পালিয়ে যায় চোরা শিকারিরা।

বন বিভাগের খাঁশিটানা টহল ফাঁড়ির বনরক্ষী ছানা রঞ্জন পাল জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায়, সুন্দরবন থেকে চোরা শিকারিরা হরিণ শিকার করে মাংস নিয়ে লোকালয়ে ফিরছে। এরপর কোস্টগার্ডের সঙ্গে যৌথ অভিযানে নেমে সুন্দরবন-সংলগ্ন জোড়শিং এলাকার নদীর চরের কাছাকাছি পৌঁছানোর আগেই শিকারিরা পালিয়ে যায়। এ কারণে কাউকে আটক করা যায়নি। পরে নদীর চরে পড়ে থাকা চারটি বস্তায় রাখা হরিণের মাংস পাওয়া যায়। 

বন বিভাগ ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সুন্দরবন-সংলগ্ন কয়রায় ৩০টির বেশি চোরা শিকারিচক্র ফাঁদ পেতে হরিণ নিধন করে। গত জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত শুধু কয়রা থেকে ২৯৪ কেজি হরিণের মাংস উদ্ধার করা হয়েছে। এর আগে গত বুধবার হরিণের ২৫ কেজি মাংস ও ৮০টি শিকারের ফাঁদসহ কয়রার পাঁচ হরিণ শিকারিকে গ্রেপ্তার করে কোস্টগার্ড।  

সুন্দরবন খুলনা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক শরিফুল ইসলাম বলেন, তারা সুন্দরবনে হরিণ শিকারি ও লোকালয়ে হরিণের মাংস ক্রেতাদের তালিকা তৈরি করছেন। এদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে। এছাড়া শিকারে জড়িত ব্যক্তিদের তথ্যদাতাকেও পুরস্কার দিচ্ছেন। হরিণ শিকারের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে তাদের অভিযান চলছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ন দরবন

এছাড়াও পড়ুন:

পদ্মা সেতু হয়ে খুলনা-যশোর ট্রেন!

তিরিশ হাজার কোটি টাকার পদ্মা সেতুতে দিনে অন্তত ৩০টি ট্রেন চলবে। এটিই ছিল পরিকল্পনা। পরী বানু পরী হয়ে উড়ে গেছে কল্পনার ফানুস রেখে। এখন এক রেকে জাহানাবাদ/রূপসী বাংলা, সুন্দরবন, বেনাপোল, মধুমতী ও নকশিকাঁথা পদ্মা সেতুকে গমগমিয়ে মাতালেও ভাঙা-জামদিয়া রেলপথ দেখে শুধু জাহানাবাদ/রূপসী বাংলার নাচন। ২৪ ডিসেম্বর ঘটা করে যখন উদ্বোধন হলো একটি রেক দিয়ে জাহানাবাদ/রূপসী বাংলা নামে দুটি ট্রেন, সেদিনের ট্রেনে গিয়েছিলাম নড়াইল। পথে পথে সে কী বরণ! মুকসুদপুর, নগরকান্দা, কাশিয়ানী, লোহাগড়া ও নড়াইলে কী উচ্ছ্বাস! লোকালয়ে ট্রেন এলো। ঢাকা এসে গেল ঢিল ছোড়া দূরত্বে। তবে সেই রেলপথে সপ্তাহে এক দিন সোমবার কোনো ট্রেনের বাঁশি বাজে না। সেদিন জাহানাবাদ/রূপসী বাংলা ট্রেনের ছুটি। শুধু ট্রেন নয়, সোমবারে ভাঙা-জামদিয়া সেকশনে সবার ঘুমপাড়ানিয়া। আশা ছিল ১০ মার্চ চালু হওয়া নতুন সময়সূচিতে ট্রেন বাড়বে, বাড়েনি। বলা হয়, কোচ নেই। অথচ পদ্মা সেতু দিয়ে নড়াইল হয়ে খুলনা/যশোর ট্রেন যাবে বলে কেনা হয়েছিল ১০০ খানা কোচ। সেসব কোচ ভাগাভাগি হয়ে চলে গেছে নানান দিকে, শুধু পদ্মা সেতুর ভাগেই জোটেনি বরাদ্দ।

থাকত যদি একটা রেক অন্তত গোটা দশেক কোচ নিয়ে, তাহলে হতে পারত একটি নতুন ট্রেন; যেটি দাপাতে পারত পদ্মা সেতু আর ভাঙা-জামদিয়া সেকশন। কেমন হতো ট্রেনটা? সকাল ৬টায় ছাড়ত ঢাকার শহরতলি প্ল্যাটফর্ম, ঠিক ৯টায় পৌঁছে যেত যশোর। না, যশোরে কোনো ঝাড়পোঁছ নয়, লোকো ঘুরিয়ে ৯:১৫-তে খুলনার পথে ছুটে পথে নোয়াপাড়া থেমে ১০:১৫-তে খুলনা পৌঁছে হবে ঝাড়পোঁছ। ঢাকা থেকে ওই ট্রেনে বিক্রি হবে যশোর ও খুলনার টিকিট। সেই সঙ্গে পথে আর যে যে স্টেশনে থামবে সেখানকার টিকিট। ১১টায় খুলনা ছেড়ে এ যাত্রায় যশোর না গিয়ে ১৪:৩০-এ ঢাকা। ঢাকায় দমটম নিয়ে ১৫:৩০-এ এবার খুলনামুখী যাত্রা, অনায়াসে ১৯:০০-এ খুলনা পৌঁছে লোকো রিভার্স করে ১৯:১৫-এ খুলনা ছেড়ে ২০:১৫-তে যশোর। এ যাত্রায় ঢাকা থেকে যাত্রীরা কিনতে পারবেন খুলনা ও যশোরের টিকিট। খুলনার যাত্রীরাও কিনতে পারবেন যশোর, ঢাকাসহ পথিমধ্যের স্টেশনের টিকিট। যশোরে লোকো রিভার্স করে ২০:৩০-এ ঢাকার পথে দে ছুট; ২৩:৩০টায় ঢাকায় পৌঁছে লম্বা বিরতি।
ইশ, হবে কি এমন একটি ট্রেন! যদি লোকো জোটে আর জোটে একটি রেক, তবে হবে কি এমন একটি ট্রেন? ট্রেনের নাম হতে পারে দখিনা ১, ২, ৩, ৪। সাপ্তাহিক বিরতি থাকুক শুক্রবারে। হলফ করে বলছি ট্রেনটি চালু হলে চিত্রা আর সুন্দরবন এক্সপ্রেসের জন্য খুলনা-যশোরের যাত্রীরা হত্যে দেবে না। কোচ নেই? নিকট ভবিষ্যতে ‘মৈত্রী’ আর ‘মিতালী এক্সপ্রেস’ চালুর সম্ভাবনা আছে বলে মনে হয় না। অথচ ওই দুই ট্রেনের রেক দিব্বি পড়ে আছে ঈশ্বরদীর ইয়ার্ডে, বিবর্ণ হচ্ছে রোদে তাপে। আপাতত পড়ে থাকা ওই রেক দিয়েই না-হয় চালু হোক দখিনা এক্সপ্রেস। হলে খুলনা, যশোর, নড়াইল, লোহাগড়া, কাশিয়ানী, নগরকান্দা, মুকসুদপুরের মানুষ বড়ই উপকৃত হতো।

আ ক ম সাইফুল ইসলাম চৌধুরী: অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পদ্মা সেতু হয়ে খুলনা-যশোর ট্রেন!
  • ছেলের সঙ্গে বাড়ি ফিরলেন সুন্দরবন থেকে উদ্ধার হওয়া সেই বৃদ্ধা
  • ‘সকলে থামুন, এখানে বাঘের পায়ের ছাপ’, তারপর কী হলো