বন্দরে ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে অজ্ঞাত যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে কলাগাছিয়া নৌ পুলিশ। সোমবার (১৭ মার্চ) দুপুর সোয়া ২টা দিকে বন্দর উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের লাঙ্গলবন্ধস্থ রাজঘাটের সামনে থেকে ওই মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয় ।

স্থানীয়রা জানিয়েছে, সোমবার সকালে স্থানীয় এলাকাবাসী  ব্রহ্মপুত্র নদে অজ্ঞাত নামা এক পুরুষের  মৃতদেহ ভাসতে  দেখে কলাগাছিয়া নৌ পুলিশকে সংবাদ জানায়। পরে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে দুপুরে লাশটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে।

কলাগাছিয়া নৌ ফাঁড়ী পুলিশ পরিদর্শক সালেহীন আহমেদ পাঠান জানান, নিহত যুবকের বয়স আনুমানিক ২৫ বছর। উদ্ধারকালে তার পরনে শুধু একটি গেঞ্জি ছিল, তবে নিচের অংশে কোনো পোশাক পাওয়া যায়নি। 

লাশটি ব্রহ্মপুত্র নদে ভাসমান অবস্থায় ছিল এবং পচন ধরতে শুরু করেছিল। পুলিশের ধারণা, কয়েক দিন আগে তার মৃত্যু হয়েছে, তবে সঠিক সময় নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি।

অজ্ঞাত  যুবকের  পরিচয় এখনো শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। পুলিশের একটি দল বিষয়টি তদন্ত করছে এবং আশপাশের থানাগুলোতে নিখোঁজ ব্যক্তিদের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।

তিনি আরো জানান, এটি হত্যাকাণ্ড নাকি কোনো দুর্ঘটনা, তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরই নিশ্চিত হওয়া যাবে। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে।  
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

চুরির অপবাদ দেওয়ায় শরীরে পেট্রল ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা, দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে

কুমিল্লার চান্দিনায় চুরির অপবাদ দেওয়ায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার এক চালক শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। গতকাল রোববার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে চান্দিনা উপজেলা সদরের সরকারি হাসপাতালসংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

মো. সবুজ নামের ওই চালককে চান্দিনা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রাতেই কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আরিফুর রহমান জানান, আগুনে সুবজের শরীরের ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাঁকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

সবুজ চান্দিনা উপজেলার বাড়েরা ইউনিয়নের গড়ামারা গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে। তিনি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে চান্দিনা উপজেলা সদরের বেলাশহর এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চান্দিনা সদরের হাসপাতাল সড়কের ইউনুছ মিয়ার অটোরিকশা গ্যারেজ ভাড়া নিয়ে সবুজসহ তিনজন ওই গ্যারেজে তাঁদের অটোরিকশা রাখেন। পালাক্রমে তাঁরা তিনজন পাহারাও দেন। প্রায় চার মাস আগে এক রাতে পাহারার দায়িত্ব ছিলেন সবুজ। ওই দিন রাত আনুমানিক দুইটার দিকে গ্যারেজে তালা দিয়ে সবুজ প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বাইরে যান। ওই সময় চোরচক্র দুটি অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যায়। পরদিন ওই ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ দেখে মানিক নামের একজনকে আটক করে পুলিশে দেওয়া হয়। সেদিন রাতেই পুলিশ মানিককে ছেড়ে দেয়। পরে স্থানীয় কয়েকজন মাতবর সবুজকে চোর আখ্যা দিয়ে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। কিন্তু সবুজ জানান, তিনি ওই রায় মানেন না এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা দেওয়ার ক্ষমতাও তাঁর নেই।

এদিকে গতকাল সন্ধ্যায় স্থানীয় কয়েকজন মাতবরের প্ররোচনায় সালাউদ্দিন নামের এক ব্যক্তি সবুজকে আটক করে তাঁর অটোরিকশা নিয়ে যান। এ সময় তাঁকে চোর আখ্যা দিয়ে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা দিতে চাপ দেওয়া হয়। একপর্যায়ে সে প্রকাশ্যে শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।

সুবজের স্ত্রী খুশি আক্তার বলেন, ‘মাতবররা চোর ধরে ছেড়ে দিছে আর আমার স্বামীরে চুরির অপবাদ দিয়ে জরিমানা করেছে। আমার স্বামী চোর আখ্যা দেওয়ার এই নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে নিজের শরীরে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। গরিবের জন্য আইন নাই, বিচার নাই। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।’

গতকাল রাতে চান্দিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাবেদ উল ইসলাম বলেন, ‘অটোরিকশা চুরির ঘটনায় সময় মানিক, সাইফুল ও নাজমুল নামের তিনজনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি মামলা হয়। ওই চুরির ঘটনায় সবুজকে দায়ী করে চাপ সৃষ্টি করলে সে অপমান সহ্য করতে না পেরে নিজের গায়ে পেট্রল ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বলে জেনেছি। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এ ঘটনার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ