পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নামে ছড়ানো ফেসবুকের একটি পোস্টকে কেন্দ্র করে আলোচনা-সমালোচনা তৈরি হয়েছে। UNO Galachipa নামের ওই আইডি হ্যাক হয়েছে দাবি করে গতকাল রোববার রাতে সংবাদ সম্মেলন করেন ইউএনও মিজানুর রহমান। এ ছাড়া গলাচিপা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও করেছেন তিনি।

গতকাল রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা অফিসার্স ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ইউএনও মিজানুর রহমান বলেন, ১৬ মার্চ রাত সাড়ে নয়টার দিকে তাঁর অফিশিয়াল ফেসবুক আইডি UNO Galachipa হ্যাক হয়েছে। হ্যাকার এলোমেলো আপত্তিকর মন্তব্য ছড়াচ্ছে। এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। তিনি গলাচিপা থানায় জিডি করে পুলিশের কাছে আইনগত সহায়তা চেয়েছেন। ইউএনওর সঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন গলাচিপা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো.

নাসিম রেজা ও উপজেলা প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. ফারুকুজ্জামান।

ছড়িয়ে পড়া ফেসবুক পোস্টে লেখা হয়েছে, ‘আমার বিরুদ্ধে বড় একটা অভিযোগ হলো আমি ছাত্রলীগ করতাম। হ্যাঁ, একসময় করতাম। সো, কী হয়েছে? নুরু ভাইও (গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক) একসময় ছাত্রলীগ করত। তিনি একসময় জননেত্রীর পা ছুঁয়ে সালামও করেছেন। সো, তাতে কি নুরু ভাইয়ের জনপ্রিয়তা এখন কম? বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কারণে আমরা মোটেই লজ্জিত নই, কারণ এই দেশমাতৃকার জন্ম তার হাত ধরেই। আরেকটা অভিযোগ হলো দুর্নীতির। হু ইজ ফ্রি ফ্রম ইট? যে দুর্নীতি করে না, বুঝতে হবে সে সুযোগ পায় না। মাথা উঁচু করে বাঁচতে চাই। করলাম না এই প্রশাসনের চাকরি। আমার অনুজ উর্মীও করে নাই। সো, আমার কেন করতে হবে? সোজাসাপটা কথা। একদিন আমাদেরও সময় আসবে। এভরি ডগ হ্যাজ ইটস বার্কিং ডে।’

এদিকে গলাচিপার ইউএনও মিজানুর রহমানকে ঘিরে পক্ষে-বিপক্ষে নানা কর্মসূচি পালন করছে কয়েকটি মহল। পক্ষে-বিপক্ষে আন্দোলন নিয়ে ইউএনও বলেন, একটি মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে এসব করছে। ছাত্রসংগঠনের ব্যানারে কিছু ব্যক্তি নানা সুবিধা চেয়েছেন, এতে তিনি অপারগতা জানানোর পর থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ফ সব ক

এছাড়াও পড়ুন:

নেত্রকোনায় বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে যুবদলের হামলা, ইউএনও লাঞ্ছিত

নেত্রকোনায় বর্ষবরণ অনুষ্ঠান চলাকালে মঞ্চে হামলার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা যুবদলের কয়েকজন পদধারী নেতার বিরুদ্ধে। এসময় ওই নেতারা মঞ্চ থেকে শিল্পীদের নামিয়ে দেওয়াসহ সামনে বসা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও (ইউএনও) অন্যান্য অতিথিদের লাঞ্ছিত করেন। ছিঁড়ে ফেলে দেন অনুষ্ঠানের ব্যানার। পণ্ড হয়ে যায় অনুষ্ঠানটি।

সোমবার দুপুরে আটপাড়া উপজেলা মুক্তমঞ্চে এ ঘটনা ঘটে। অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে উপজেলা প্রশাসন।

আটপাড়া উপজেলা প্রশাসন ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, আজ সোমবার সকাল থেকে আটপাড়া উপজেলা পরিষদসংলগ্ন মুক্তমঞ্চে প্রশাসন আয়োজিত বর্ষবরণের অনুষ্ঠান চলছিল। এতে বিভিন্ন সামজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে দ্বিতীয় অধিবেশন চলাকালীন ‘উপজেলা প্রশাসন বিদ্যানিকেতন’ এর শিক্ষার্থীরা নৃত্য পরিবেশন করছিল।

এসময় উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব নূর ফরিদ খান, যুগ্ম আহ্বায়ক মোদাচ্ছের হোসেন ওরফে কাইয়ুম, কামাল হোসেন তালুকদারসহ স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হন। পরে তাঁরা ইউএনওকে অনুষ্ঠান বন্ধ করতে বলেন।

এ সময় ইউএনও কারণ জানতে চাইলে মঞ্চের ব্যানারে স্থান হিসেবে কেন ‘উপজেলা পরিষদ বঙ্গবন্ধু চত্বর’ লেখা হয়েছে, এ কথা বলে যুগ্ম আহ্বায়ক মোদাচ্ছের হোসেনের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা মঞ্চে ওঠে শিক্ষার্থীদের নামিয়ে দিয়ে মঞ্চে থাকা ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন।

প্রত্যক্ষদর্শী একজন বলেন, ইউএনওসহ কর্মকর্তারা তাদের বাধা দিতে চাইলে ওই নেতারা তাদের ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেন। তাঁদের মধ্যে এক নেতা উপস্থাপককে মারধর করে মাইক কেড়ে নিয়ে ইউএনওকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী এক কর্মকর্তা জানান, তখন ইউএনও বলেন- ব্যানারে তো কোনও ‘বঙ্গবন্ধু চত্বর’ লেখা নেই। তখন সদস্য সচিব নূর ফরিদ আবারও বলেন, না ব্যানারে বঙ্গবন্ধুর নাম আছে। ফেইসবুকেও ব্যানারের ছবি পোস্ট আছে। আমার ফোনেও এ ছবি একজন পাঠিয়েছেন। অনুষ্ঠান এখনই বন্ধ করতে হবে। বিশৃঙ্খলার কারণে একপর্যায়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে অনুষ্ঠানটি পণ্ড হয়ে যায়। পরে দেখা যায় ফেসবুকে পোস্ট করা ‘বঙ্গবন্ধু চত্বর’র ওই ছবিটি বাংলা সন ১৪৩০ এর।

আটপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুয়েল সাংমা বলেন, উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব নূর ফরিদের নেতৃত্বে কাইয়ুম, কামালসহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী সংঘবদ্ধ হয়ে হঠাৎ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে মঞ্চের ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন। এ সময় আমি কারণ জানতে চাইলে আমাকেসহ কর্মকর্তাদের লাঞ্ছিত করে অনুষ্ঠানটি বন্ধ করে দেন। উপস্থাপককে মারধর করে মাইক হাতে নিয়ে আমাকে ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে আখ্যায়িত করেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
 
আটপাড়া উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব নূর ফরিদ খান বলেন, আমরা একটি স্থানে বসেছিলাম। হঠাৎ একজন আমার ম্যাসেঞ্জারে একটি ব্যানার দেন। ওই ব্যানারে ‘বঙ্গবন্ধু চত্বর’ লেখা ছিল। ফেসবুকেও একজন শেয়ার দিয়েছেন দেখেছি। পরে আমরা মঞ্চে গিয়ে কারণ জানতে চাই। এ সময় আমাদের দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মোদাচ্ছের হোসেন, কামাল হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক উজ্জ্বল, সদস্য সচিব রুপণ, ছাত্রদলের টিটুসহ কয়েকজন ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন। পরে প্রশাসনের লোকজন আমাদের নিশ্চিত করেন যে ব্যানারে বঙ্গবন্ধুর নাম নেই। বিষয়টি আমাদের ভুল হয়ে গেছে। এর জন্য আমরা ইউএনও মহোদয়ের কাছে ভুল স্বীকার করেছি। মাফ চেয়েছি। আপনারাও বিষয়টি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। আমরা কাউকে লাঞ্ছিত করিনি। এটা মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হচ্ছে।

আটপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান বলেন, যখন এ ঘটনাটি ঘটেছে তখন আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলাম না। অভিযোগ পাওয়া গেলে এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নেত্রকোনা জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ও কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ড. রফিকুল ইসলাম হিলালী জানান, যে ঘটনাটি ঘটেছে তা কোনোভাবেই কাম্য নয়। দলীয়ভাবে বিষয়টি তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস জানান, এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ইউএনওকে বলা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সরকারি কর্মচারীকে পিটিয়ে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা বললেন, ‌‌‌‘রাগ কন্ট্রোল করতে পারিনি’
  • নববর্ষে পুকুরে ১০ হাঁস ধরতে নামে ৪০ প্রতিযোগী
  • নেত্রকোনায় বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে যুবদলের হামলা, ইউএনও লাঞ্ছিত
  • ১০-২০ ওভারের ক্রিকেট যখন সোনার খনি
  • নিলাম দেখিয়ে বিদ্যালয়ের ঘর বাড়িতে নিলেন শিক্ষক
  • ১৭ শর্তে সেই বিটি মাঠে একদিনের জন্য বৈশাখী মেলার অনুমতি
  • চাটমোহরে ঐতিহ্যবাহী চড়ক পূজা শুরু
  • অনুমতি বাতিল হলেও বৈশাখী মেলা করার ঘোষণা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের
  • হুমকিতে উদ্বিগ্ন ইউএনও, নিরাপত্তা চেয়ে জিডি
  • একসময় কংগ্রেসের মালিকানাধীন ন্যাশনাল হেরাল্ডের সম্পত্তি অধিগ্রহণে নোটিশ দিল ইডি