সরাইলে পরিবহনশ্রমিকদের হামলায় ‘বৈষম্যবিরোধী’ ৩ ছাত্র আহত, আটক ৬
Published: 17th, March 2025 GMT
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলায় মাইক্রোবাসের শ্রমিকদের হামলায় তিন ছাত্র আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে একজন নিজেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সরাইল উপজেলার প্রধান সমন্বয়কারী হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। গতকাল রোববার রাত ১০টার দিকে উপজেলা সদরের হাসপাতাল মোড় এলাকায় হামলার ঘটনা ঘটে। এতে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ ছয়জনকে আটক করেছে।
হামলায় আহতরা হলেন ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইরফান খান (২২), সরাইল সরকারি কলেজের ছাত্র আরিফ মোহাম্মদ নাঈম (২০) ও মোহাম্মদ মোজাম্মেল (২০)। তাঁরা সবাই সরাইল উপজেলা সদরের সৈয়দটুলা গ্রামের বাসিন্দা।
এ ঘটনায় ইরফান খান বাদী হয়ে দ্রুত বিচার আইনে সরাইল থানায় মামলা করেছেন। মামলায় ১৩ জনের নাম উল্লেখ ও ৮ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। এজাহারে নিজেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সরাইল উপজেলার প্রধান সমন্বয়কারী পরিচয় দিয়েছেন ইরফান। নাঈম ও মোজাম্মেলকে আন্দোলনে নিজের সহযোদ্ধা হিসেবে উল্লেখ করেছেন তিনি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাত নয়টার দিকে মোটরসাইকেল নিয়ে উপজেলা সদরের সৈয়দটুলা গ্রামের পারভেজ মিয়া (৩৩) ও রাজীব মিয়া (২৫) নামে দুজন সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই আঞ্চলিক মহাসড়কের ধরন্তী এলাকা অতিক্রম করছিলেন। এ সময় পেছন দিক থেকে একটি মাইক্রোবাস তাঁদের মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দেয়। এতে তাঁরা আহত হন। বিষয়টি তাঁরা উপজেলা সদরের কয়েকজনকে অবহিত করেন। পরে স্থানীয় লোকজন উপজেলা সদরের হাসপাতাল মোড়ে গিয়ে মাইক্রোবাসটিকে চিহ্নিত করেন। বিষয়টি জানতে মাইক্রোবাস স্ট্যান্ডে যান ইরফান খানসহ তিন ছাত্র। সেখানে মাইক্রোবাস স্ট্যান্ডের শ্রমিক-মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল মিয়া ও চালক ভাবন মিয়ার সঙ্গে এই তিন ছাত্রের বাগ্বিতণ্ডা হয়। এ সময় কয়েকজন শ্রমিক ছাত্রদের মারধর করেন এবং ইট দিয়ে আঘাত করেন। এতে তাঁরা গুরুতর আহত হন। তাঁদের উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ইরফান খানের বাবা সরাইল উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক উছমান খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার ছেলেসহ তিনজন বিষয়টি জানতে সেখানে গিয়েছিল। সেখানে তাদের মারধর করে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করেছে মাইক্রোবাস স্ট্যান্ডের লোকজন। ওই সময়ে ছাত্রদের ব্যবহৃত মুঠোফোনের সেট ও টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে শ্রমিকেরা।’
অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে মাইক্রোবাস স্ট্যান্ডের শ্রমিক-মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল মিয়ার মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও তিনি সাড়া দেননি।
সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আসছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের দুই কর্মকর্তা
সংস্কার, মানবাধিকার, গণতন্ত্রসহ নানা বিষয়ে আলোচনা করতে আগামীকাল মঙ্গলবার ঢাকায় আসছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি নিকোল অ্যান চুলিক। এ ছাড়া মিয়ানমার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে বুধবার আসছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের পূর্ব এশীয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল বিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অ্যান্ড্রু আর হেরাপ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর এটাই তাঁর প্রশাসনের কর্মকর্তাদের প্রথম বাংলাদেশ সফর। সফরে অ্যান্ড্রু আর হেরাপের সঙ্গে যোগ দেওয়ার কথা মিয়ানমারে ভারপ্রাপ্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত সুসান স্টিভেনসনের।
মার্কিন জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক চুলিক তাঁর চার দিনের সফরে বাংলাদেশে সংস্কার কার্যক্রমে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা এবং গণতান্ত্রিক পথে ফেরার বিষয়ে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। তিনি বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গেও বৈঠক করবেন। এ ছাড়া প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ করার কথা।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে সমকালকে বলেন, নিকোল অ্যান চুলিক বর্তমানে দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি হলেও, অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি না থাকায় এ দপ্তরের দায়িত্ব তিনি পালন করছেন। সফরকালে তিনি সংস্কারে যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে সহযোগিতা করতে পারে, সে চাহিদাগুলো জানতে চাইবেন। পাশাপাশি গণমাধ্যমগুলোতে জঙ্গিবাদের মাথাচাড়া দেওয়ার খবর আসায় বৈঠকে সন্ত্রাসবাদ এবং মানবাধিকার বিষয়ও আসতে পারে। তিনি বলেন, ১/১১-এর সময় সংস্কারে জোর না দেওয়াটা এক প্রকার ভুল মনে করে মার্কিনিরা। সংস্কারের মাধ্যমে বাংলাদেশকে গণতন্ত্রের পথে নিয়ে যাওয়ায় সহযোগী হিসেবে থাকতে চায় দেশটি।
এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের পূর্ব এশিয়া বিষয়ে অভিজ্ঞ কূটনীতিক অ্যান্ড্রু আর হেরারের বৈঠকে মিয়ানমার পরিস্থিতি প্রধান্য পাবে। সফরকালে তিনি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। এ ছাড়া প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভসহ বিভিন্ন পর্যায়ে তাঁর বৈঠক করার কথা। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা বলেন, মিয়ানমারের পরিস্থিতি প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে। এটিকে যুক্তরাষ্ট্র তাদের ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় কৌশল (আইপিএস) বাস্তবায়নে বাধা হিসেবে দেখছে। কারণ মিয়ানমারের কিছু এলাকা বাদে দেশটিতে সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। বর্তমানে মিয়ানমার মাদক চোরাচালান, অবৈধ অস্ত্রের ব্যবসা, বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের অপহরণ করে আটকে রাখা, নারী ও শিশুসহ মানব পাচারের অন্যমত কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। এর সঙ্গে রোহিঙ্গা পরিস্থিতিও রয়েছে। এসব কর্মকাণ্ডে দেশটির সেনাবাহিনীসহ বিদ্রোহী সশস্ত্র সংগঠনগুলো জড়িত। এ ছাড়া বিভিন্ন দেশের অপরাধীরা অপরাধমূলক কার্যক্রম মিয়ানমারের মাটিতে বসে চালাচ্ছে। তাই পুরো পরিস্থিতি আলোচনায় আসবে।