যশোরের ঝিকরগাছায় তরুণীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের প্রকাশ্যে ফাঁসির দাবি জানানো হয়েছে। আজ দপুর সাড়ে ১২টার দিকে জেলা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত চত্বরে এক বিক্ষোভে এ দাবি জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা।

বিক্ষোভে ‘ধর্ষকের ফাঁসি চাই, খুন, ধর্ষণ, নিপীড়ন, রুখে দাঁড়াও জনগণ’; ‘অবিলম্বে ধর্ষকদের বিচার করো করতে হবে’; ‘ধর্ষকেরা ধর্ষণ করে, প্রশাসন কী করে’ প্রভৃতি স্লোগান দিতে শোনা যায়।

বক্তারা বলেন, মা-বোনেরা রাস্তাঘাটে নিরাপত্তার সঙ্গে চলাফেরা করতে পারছেন না। প্রতিনিয়ত ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। শিশু থেকে গৃহবধূ, বৃদ্ধসহ কোনো নারীই রেহাই পাচ্ছেন না ধর্ষকদের ভয়াল থাবা থেকে। এমন বাংলাদেশ দেখার জন্য তো তাঁরা আন্দোলন করেননি, রাজপথে রক্ত দেননি। ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দিয়ে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান তাঁরা।

এতে বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোর জেলা শাখার আহ্বায়ক রাশেদ খান, মুখ্য সংগঠক আব্দুল্লাহ আল-মামুন লিখন, ভারপ্রাপ্ত সদস্যসচিব জান্নাতুল ফুয়ারা অন্তরা প্রমুখ। রাশেদ খান বলেন, ‘অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত সরকার ইচ্ছা করলে বিশেষ ফরমান জারি করে আলোচিত সব ধর্ষণের বিচার দ্রুততম সময়ের মধ্যে শেষ করতে পারে। ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে সমাজে অপরাধীদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি হবে। কেউ আর ধর্ষণের মতো অপরাধের সাহস করবে না। আমাদের মধ্যে কেউ কেউ ধর্ষকদের প্রকাশ্যে ফাঁসি দেওয়ার দাবিও তুলেছেন।’

গতকাল রোববার বিকেলে ঝিকরগাছা উপজেলার পটুয়াপাড়া গ্রামের একটি লিচুবাগানে এক তরুণী দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন। এ ঘটনায় ছাত্রদলের দুই নেতাসহ চারজনকে আটক করে পুলিশ। তাঁরা হলেন ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালী ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন বাপ্পী, দপ্তর সম্পাদক ইয়াসিন আরাফাত, জাবেদ হোসেন ও আমিনুর রহমান। সংগঠনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে রাতেই ছাত্রদলের প্রাথমিক পদসহ সব ধরনের কার্যক্রম থেকে আবদুল্লাহ ও ইয়াসিনকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

হত্যার ভয় দেখিয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থীকে ধর্ষণ

ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় এসএসসি (দাখিল) পরীক্ষার্থীকে হত্যার ভয় দেখিয়ে মুখে গামছা বেঁধে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শুক্রবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া সদর উপজেলায় পাঁচ বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। দুই ভুক্তভোগীকে ভোলার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এসব ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এসএসসি পরীক্ষার্থী জানায়, শুক্রবার রাত ১১টার দিকে লেখাপড়ার এক পর্যায়ে সে শৌচাগারে যায়। এ সময় ওমর কাজী নামে এক যুবক গামছা দিয়ে তার মুখ চেপে ধরে তুলে নিয়ে যায়। দূরে নিয়ে ছুরি দিয়ে হত্যার ভয় দেখিয়ে তাকে ধর্ষণ করে। পরে ওই কিশোরী বাড়ি ফিরে অচেতন হয়ে পড়ে। তাকে প্রথমে বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। 

ভুক্তভোগীর ভাই ও মা বলেন, ঘটনাটি আমরা পুলিশকে জানিয়েছি। পুলিশের পরামর্শে ভোলার হাসপাতালে চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে বোরহানউদ্দিন থানায় মামলা করবেন। 

থানার ওসি আহসান কবির জানান, শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কেউ থানায় অভিযোগ দেননি।

এদিকে শুক্রবার বিকেলে ভোলা সদর উপজেলার চরসামাইয়া ইউনিয়নে পাঁচ বছরের শিশুকে চিপস দেওয়ার কথা বলে ডেকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে এক কিশোরের বিরুদ্ধে। শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়লে রাতেই তাকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। খবর পেয়ে ভোলা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শংকর তালুকদারসহ পুলিশের একটি দল হাসপাতালে গিয়ে ভুক্তভোগীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে। 

চিকিৎসক তায়েবুর রহমান জানান, দুই ভুক্তভোগীর চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। দু’জনই শঙ্কামুক্ত।

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানার গাবতলী এলাকায় কোলের শিশুকে জিম্মি করে এক গৃহবধূকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তাঁকে প্রায় এক মাস ধরে দফায় দফায় ধর্ষণ করে বখাটেরা। সর্বশেষ ৯ এপ্রিল ধর্ষণে অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই নারী। ঘটনাটি তিনি স্বামীকে জানান এবং শুক্রবার ফতুল্লা থানায় মামলা করেন।

ভুক্তভোগীর স্বামীর অভিযোগ, রমজান মাস শুরুর কয়েক দিন আগে তাঁর স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে ইসদাইর-গাবতলী লিঙ্ক রোড দিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় ইসদাইর বটতলা এলাকার সজিব ওরফে বদনা সজিব, গাবতলী মাজার এলাকার রাকিব ওরফে মাইন, নয়ন, নজরুলসহ পাঁচজন তাঁকে ধরে নিয়ে যায়। শিশুকে জিম্মি করে তাঁর স্ত্রীকে ধর্ষণ করে তারা এবং ভিডিও ধারণ করে। 

ফতুল্লা থানার ওসি শরীফুল ইসলাম জানান, রাকিব নামে এক বখাটে ওই গৃহবধূকে অন্যদের সহযোগিতায় ধর্ষণ করেছে। এ ঘটনায় চারজনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা করেছেন ভুক্তভোগী। আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।

অন্যদিকে, কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে ১ এপ্রিল বন্দরে এক কিশোরী দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়। এ ঘটনায় শুক্রবার বন্দর থানায় টিপু সুলতান, সজিব হোসেন ও অজ্ঞাতনামা দু’জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তাদের মধ্যে সজিবকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

নরসিংদীর পলাশ উপজেলায় কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে আশিক দেওয়ান শান্ত নামে এক তরুণকে শনিবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, শুক্রবার চরসিন্দুর এলাকায় ওই কিশোরীকে ঘুরতে নিয়ে যায় আশিক। পরে রাতে চরসিন্দুরের চলনা গ্রামে নানির বাড়িতে নিয়ে ওই তরুণ ও তার এক বন্ধু মেয়েটিকে ধর্ষণ করে। কিশোরী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। 

পলাশ থানার ওসি মনির হোসেন জানান, ভুক্তভোগীর পরিবার থানায় অভিযোগ দেওয়ার পর শনিবার বিকেলে হাসপাতাল থেকে আশিককে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বন্ধুকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। 

এদিকে নরসিংদীর রায়পুরায় দুই স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে আজ প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে সম্মিলিত সচেতন নাগরিক সমাজ।

দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলায় বাক্প্রতিবন্ধী শিশুকে (১২) ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলার আসামি পরিতোষ চন্দ্রকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শনিবার পার্বতীপুর উপজেলার আমবাড়ী এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ও র‌্যাব-১৩-এর একটি দল। পরিতোষের বাড়ি ফুলবাড়ীর এলুয়াড়ী ইউনিয়নের মালিপাড়া গ্রামে। এর আগে ২১ মার্চ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে। 

হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলায় প্রতিবন্ধী তরুণীকে ধর্ষণের মামলায় গ্রেপ্তার রুহুল আমীন (৬০) নামে এক বৃদ্ধকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করে মাধবপুর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ৮ এপ্রিল রাতে ঘরে ঢুকে তরুণীকে ধর্ষণ করে রুহুল আমীন। এ ঘটনায় শুক্রবার থানায় মামলা হলে ওই দিনই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • তরুণীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ, গ্রেপ্তার সাবেক প্রেমিক
  • কোলের শিশুকে জিম্মি করে গৃহবধূকে দলবদ্ধ ধর্ষণ
  • হত্যার ভয় দেখিয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থীকে ধর্ষণ
  • তিন মাসে নির্যাতনের শিকার ৮৩৬ নারী ও কন্যাশিশু