ঈদযাত্রায় ডাকাতি-ছিনতাই ঠেকাতে সাত সুপারিশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির
Published: 17th, March 2025 GMT
ঈদযাত্রায় সড়কে ডাকাতি, ছিনতাই এবং দুর্ঘটনা রোধে সাত দফা সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
সোমবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় এ আহ্বান জানান সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী।
তিনি সড়কে বাড়তি চাপ ও ফিটনেসবিহীন সিটিবাসে পোশাক শ্রমিকদের যাত্রা বন্ধে কলকারখানা ও পোশাক শ্রমিকদের বেতন-বোনাস ২৪ মার্চের মধ্যে পরিশোধ করে ধাপে ধাপে বাড়ি পাঠানো নিশ্চিত করার দাবি জানান।
মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, যাত্রীদের ভোগান্তিমুক্ত, স্বস্তিদ্বায়ক ঈদযাত্রা নিশ্চিত করতে এবং তীব্র গণপরিবহনের সংকট মোকাবিলায় এবারে দীর্ঘ ছুটি সঠিকভাবে কাজে লাগাতে হবে।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, এবারের ঈদে ঢাকা ও আশেপাশের জেলা থেকে প্রায় দেড় কোটি মানুষ নিজ গন্তব্যে যাত্রা করবেন। দেশের এক জেলা থেকে অপর জেলায় আরও ৩ থেকে সাড়ে ৩ কোটি মানুষের যাতায়াত হতে পারে, যার ৭৫ শতাংশ সড়কপথে, ১৭ শতাংশ নৌপথে এবং ৮ শতাংশ রেলপথে যাতায়াত হবে। পথে পথে যাত্রী হয়রানি, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধ করা, সড়কে ডাকাতি, ছিনতাই ও দুর্ঘটনা রোধে সম্মিলিত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি সংগঠনটির।
সংগঠনটি জানায়, বিগত ঈদুল ফিতরে ৩৯৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪০৭ জন নিহত এবং ১৩৯৮ জন আহত হয়। বিগত ৯ বছরে শুধুমাত্র ঈদুল ফিতরে ২৩৭৭টি দুর্ঘটনায় ২৭১৪ জন নিহত এবং ৭৪২০ জন আহত হয়েছে। এবারের ঈদে দুর্ঘটনা রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মালিক সমিতি, শ্রমিক ফেডারেশন, পুলিশ ও বিআরটিএর হস্তক্ষেপ জরুরি।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ৮৩ শতাংশ কোচ ও ৬০ শতাংশ লোকোমোটিভ মেয়াদোত্তীর্ণ এবং ৮২ শতাংশ রেলক্রসিং অরক্ষিত এমন পরিস্থিতিতে রেল দুর্ঘটনা ও লাইনচ্যুতি, টিকিট কালোবাজারি বন্ধ করে হয়রানিমুক্ত রেলসেবা নিশ্চিত করতে হবে। নৌ-পথে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, ঘাট ও নৌ-বন্দর কেন্দ্রিক যাত্রী হয়রানি, খেয়া পারাপারে বন্দরের যাত্রী পারাপারে বেসরকারি ইজারাদারদের লুটপাটের দৌরাত্ম্য বন্ধ করার দাবি উঠে আসে।
সভায় যাত্রী কল্যাণ সমিতি সাত দফা সুপারিশ তুলে ধরে। সেগুলো হচ্ছে -
১.
২. মোটরসাইকেল যাত্রী ও আরোহীর মানসম্মত হেলমেট ব্যবহার, পর্যাপ্ত নিরাপত্তা সামগ্রীসহ ভেস্ট পরিধান বাধ্যতামূলক করা, রুটভিত্তিক গতি নির্ধারণ, সহযাত্রীর সঙ্গে লাগেজ-ব্যাগেজ নিয়ে মহাসড়কে যাতায়াত নিষিদ্ধ করা।
৩. অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। ভাড়া নৈরাজ্য পর্যবেক্ষণের ভিজিলেন্স টিমে যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
৪. যানজট ও দুর্ঘটনা কমাতে জাতীয় মহাসড়ক থেকে প্যাডেল রিকশা, ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক, নসিমন-করিমন, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ঈদের ১০ দিন আগে উচ্ছেদ করতে হবে।
৫. কৃত্রিমভাবে যানজট সৃষ্টিকারী মহাসড়কের টোলপ্লাজা অতিরিক্ত জনবল নিয়ে যানজট নিরসনের উদ্যোগ নিতে হবে।
৬. সড়কে ডাকাতি ও ছিনতাই বন্ধে হাইওয়ে পুলিশ, জেলা ও মেট্রোপলিটন ট্রাফিক পুলিশকে স্পটে দাড়িয়ে গাড়ির কাগজপত্র দেখার পরিবর্তে ঈদের ১০ দিন আগে থেকে পেট্রোলিং ডিউটির নির্দেশনা দিতে হবে। সড়কে ডাকাতি ও ছিনতাই বন্ধে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কর্মীদের সড়কে সক্রিয় রাখতে হবে। পুলিশের তৎপরতার পাশাপাশি স্ব স্ব এলাকার ঝুঁকিপূর্ণ মহাসড়কের পয়েন্টে স্থানীয় রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে কমিউনিটি পুলিশিং পন্থায় ঈদের আগে-পরে পাহারাদারি নিশ্চিত করতে হবে।
৭. সড়ক, রেল ও নৌপথে যাত্রী হয়রানি, অজ্ঞানপাটি, মলমপাটি, টিকিট কালোবাজারী বন্ধে গোয়েন্দা পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার দৃশ্যমান কার্যক্রম চালু করতে হবে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনের সাবেক সচিব ড. মুহাম্মদ জাকারিয়া, বিআরটিএ পরিচালক মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ, হাইওয়ে পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি (অপারেশন) মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব সাইফুল আলম, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান, নারীনেত্রী ও শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ রফিকা আফরোজ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন শ চ ত কর দ র ঘটন ঈদয ত র ছ নত ই ত করত হয়র ন
এছাড়াও পড়ুন:
রজতজয়ন্তী পালনে সতীর্থ ’০১ এর কমিটি গঠন
নারায়ণগঞ্জ হাই স্কুলের ২০০১ সনে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের সংগঠন সতীর্থ ’০১ এর রজতজয়ন্তী পালন উপলক্ষ্যে ১২ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কমিটিতে মো. রকিবউদ্দিনকে আহবায়ক, আসিফ মতিন জনিকে সদস্যসচিব ও সমরজিৎ চক্রবর্তী মিতুকে অর্থসচিব করা হয়েছে। কমিটিতে সদস্য হিসেবে রয়েছেন-ডাঃ অভিষেক হোসেন তন্ময়, মো. ওমর ফারুক, নবাব তানভীর খান অনি, শুভ ঘোষ, মুঃ সাব্বির হোসাইন, তানভীর আলম চৌধুরী সনেট, শহীদুল আলম রিগ্যান, মৃনাল মোদক চৌধুরী মিথুন ও সজীব রহমান।
কমিটির নেতৃবৃন্দরা জানায়, ২০১৫ সালে নারায়ণগঞ্জ হাই স্কুলের ২০০১ সনে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের নিয়ে পথচলা শুরু হয় সংগঠনটির। সংগঠনটি শুধু নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক মিলনেই সীমাবদ্ধ ছিলো না মানবিক ও সামাজিক অনেক কাজের সঙ্গেও যুক্ত রয়েছে।
তারা জানান, রজতজয়ন্তী একটি সংগঠনের জন্য একটি মাইলফলক। সুতরাং সেই মাহেন্দ্রক্ষণকে স্মরণীয় ও স্মৃতিময় করে রাখতে সতীর্থ ’০১ এর সকল সদস্য তাদের সবটুকু মেধা-মনন ও শ্রম ঢেলে দিয়ে কাজ করবে। যাতে নারায়ণগঞ্জ হাই স্কুলের অন্য এসএসসি ব্যাচের কাছে বিষয়টি অনুকরণীয় হয়ে থাকে।