ছেলের সঙ্গে দেখা নেই বলে আদালতে কাঁদলেন শাজাহান খান
Published: 17th, March 2025 GMT
আদালতে রিমান্ড শুনানির সময় কাঁদলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান।
রাজধানীর বাড্ডা থানায় দায়ের করা রফিকুল ইসলাম হত্যা মামলায় আজ সোমবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে এই রিমান্ড শুনানি হয়।
শুনানিতে পাঁচ দিন রিমান্ডের পক্ষে যখন একের পর এক যুক্তি উপস্থাপন করছিলেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী, তখন বিমর্ষমুখে কাঠগড়ায় নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে ছিলেন শাজাহান খান।
একপর্যায়ে বিচারকের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য শাজাহান খান তাঁর ডান হাত উঁচু করেন। কিন্তু তিনি সাড়া পেতে ব্যর্থ হন।
পরে শাজাহান খানের আইনজীবীরা শুনানিতে বক্তব্য রাখেন। আসামিপক্ষের আইনজীবীদের বক্তব্য শেষ হওয়ার পর শাজাহান খানকে কথা বলার অনুমতি দেন আদালত।
তখন শাজাহান খান বলেন, ‘মাননীয় আদালত, আমার বয়স হয়েছে। সাড়ে ছয় মাস হয়ে গেল আমার ছেলে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে। আমিও কারাগারে। কিন্তু আমার ছেলের সঙ্গে আমার একবারও দেখা হয়নি।’ এ কথা বলেই শাজাহান খান কাঁদতে থাকেন।
তবে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী আদালতকে বলেন, ‘এই শাজাহান খান আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণ পর্যায়ের সর্বোচ্চ একজন নেতা। তিনি ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার অন্যতম সহযোগী।
আদালত শুনানি নিয়ে বাড্ডা থানার এই মামলায় শাজাহান খানের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
‘সাড়ে ৬ মাস ছেলের সঙ্গে দেখা নেই’
ঘড়ির কাঁটায় তখন সকাল ৯টা ৪৪ মিনিট। শাজাহান খানকে আদালতের হাজতখানার ভেতর থেকে বের করে আনে পুলিশ। তাঁর দুই হাত পেছনে, পরানো হাতকড়া। মাথায় হেলমেট। বুকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট। পরনে সাদা রঙের পাঞ্জাবি আর পায়জামা।
‘ক্লিন শেভ’ করা শাজাহান খানকে যখন হাজতখানার সামনে নিয়ে আসা হয়, তখন তাঁর সামনে অন্তত আটজন পুলিশ। পেছনে আরও কয়েকজন পুলিশ দাঁড়িয়ে।
শাজাহান খানকে আদালতের নিচতলা থেকে সিঁড়ি দিয়ে হাঁটিয়ে দুই তলার এজলাসকক্ষের সামনে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন সাংবাদিকদের দেখে শাজাহান খান কথা বলার চেষ্টা করেন। এর পরপরই তাঁকে ধরে কাঠগড়ায় তোলে পুলিশ। তখন তাঁর এক হাতের হাতকড়া খুলে দেন পুলিশসদস্যরা। মাথা থেকেও খুলে ফেলা হয় হেলমেট।
কাঠগড়ায় লোহার শিক ধরে দাঁড়িয়ে থাকেন শাজাহান খান। তাঁকে দেখে তাঁর আইনজীবী মিজানুর রহমান কাঠগড়ার দিকে এগিয়ে যান।
আক্ষেপের সুরে শাজাহান খান তাঁর আইনজীবী মিজানুর রহমানকে বলেন, ‘আমার ছেলে আসিবুর রহমান খান কোথায়? আজ না তাঁকে আদালতে আনার কথা ছিল? এখনো আনেনি আমার ছেলেকে?’
জবাবে মিজানুর রহমান বলেন, ‘শাজাহান ভাই, আপনার ছেলেকে এখনো আদালতের হাজতখানায় আনেনি পুলিশ।’
শাজাহান খান আবার তাঁর আইনজীবীকে বলেন, ‘সাড়ে ছয় মাস হয়ে গেল, আমার ছেলের সঙ্গে আমার কোনো দেখা নেই। কত চেষ্টা-তদবির করলাম, আমার ছেলের সঙ্গে দেখা করতে। কিন্তু কোনো লাভ হলো না। ছেলের সঙ্গে আমার আর দেখা হলো না।’
বিমর্ষ মুখে শাজাহান খান এসব কথা বলে চলছিলেন। তখন তাঁর আইনজীবী তাঁকে বলেন, ‘শাজাহান ভাই, নিশ্চয়ই আজ আপনার ছেলেকে আদালতে আনবে পুলিশ।’
আইনজীবীর সঙ্গে এসব কথা বলার পর চুপচাপ কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকেন শাজাহান খান। মাঝেমধ্যে কাঠগড়া থেকে আদালতের সামনের বারান্দার দিকে তাঁকে তাকিয়ে থাকতে দেখা যায়।
‘তিনি ফ্যাসিস্ট হাসিনার অন্যতম সহযোগী’
কাঠগড়ায় তোলার ১০ মিনিট পর সকাল ১০টা ২০ মিনিটে বিচারক এজলাসে আসেন। তখন পুলিশের একজন কর্মকর্তা শাজাহান খানের নাম ধরে ডাকেন।
এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (পুলিশ) সাক্ষীর কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে আদালতে বলেন, ‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় বাড্ডা এলাকায় রফিকুল ইসলাম নামের এক যুবককে গুলি করে হত্যা করা হয়। এই হত্যার ষড়যন্ত্রের সঙ্গে আসামি শাজাহান খান জড়িত।’
পরে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, ‘মাননীয় আদালত, আপনার সামনে যে আসামি দাঁড়িয়ে, তিনি আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার অন্যতম সহযোগী। গত বছরের জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমাতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গণভবনে একাধিক মিটিংয়ে এই প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান উপস্থিত ছিলেন। আন্দোলনের দমনের জন্য তাঁরা নানামুখী ষড়যন্ত্র করেন।’
ওমর ফারুক ফারুকী আরও বলেন, ‘মাননীয় আদালত, জুলাই-আগস্টে দুই হাজার নিরীহ ছাত্র-জনতাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। তিন হাজার লোক পঙ্গু হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের সঙ্গে শাজাহান খান সরাসরি জড়িত। যেহেতু তিনি আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ পর্যায়ের নীতিনির্ধারণী একজন নেতা, তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই জুলাই-আগস্টের ষড়যন্ত্রের আরও অনেক তথ্য পাওয়া যাবে। তাই বাড্ডা থানার রফিকুল হত্যা মামলায় তাঁকে পাঁচ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি।’
পিপির এই বক্তব্যের বিরোধিতা করে আদালতে পাল্টা যুক্তি তুলে ধরেন শাজাহান খানের আইনজীবী মিজানুর রহমানসহ কয়েকজন।
শাজাহান খানের একজন আইনজীবী বলেন, ‘মাননীয় আদালত, আমার মক্কেল একজন বয়স্ক মানুষ। তাঁর বয়স এখন ৭৬ বছর। তিনি নানাবিধ শারীরিক জটিলতায় আক্রান্ত। তিনি আটবার এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। দুবার ছিলেন নৌমন্ত্রী। তিনি কোনো ধরনের অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত নন।’
শাজাহান খানের এই আইনজীবীর বক্তব্য শেষ হওয়ার পর আরেকজন আদালতকে বলেন, এই মামলার যিনি বাদী, তাঁর বাড়ি মাদারীপুরে। এই হত্যা মামলার ৩৫ আসামির মধ্যে অন্তত ২০ জনের বাড়ি মাদারীপুরে। ষড়যন্ত্র করে এ মামলায় শাজাহান খান ও তাঁর ছেলে আসিবুর রহমানকে আসামি করা হয়েছে।
‘ছেলে কারাগারে, আমিও কারাগারে’
আসামিপক্ষের এমন বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেন পিপি ওমর ফারুক ফারুকী। তিনি আদালতকে বলেন, কে মামলা করলেন, তাঁর বাড়ি কোথায়, এটি বিবেচ্য বিষয় নয়। যেকোনো লোক ফৌজদারি মামলা করতে পারেন। মামলার এজাহার প্রাথমিক তথ্য। তবে পুলিশ তদন্ত করে দেখবে, আসামির সংশ্লিষ্টতা আছে কি না। এটা বলে পার পাওয়ার সুযোগ নেই যে, পূর্বশত্রুতা করে মামলা দেওয়া হয়েছে।
এ সময় কাঠগড়ায় নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে থাকা শাজাহান খান তাঁর ডান হাত উঁচু করে তুলে ধরে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। আদালতের অনুমতি পাওয়ার পর শাজাহান খান বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে এ মামলা দায়েরের কারণ কী? যিনি এ মামলা করেছেন, তাঁর বাড়ি মাদারীপুরে। রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করার জন্য আমার বিরুদ্ধে এ মামলা করা হয়েছে।’
এ সময় শাজাহান খান আদালতকে আরও বলেন, ‘পুলিশকে গুলি করার কোনো নির্দেশ আমি দিইনি। আমার বয়স হয়েছে। সাড়ে ছয় মাস হয়ে গেল আমার ছেলে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে। আমিও কারাগারে। কিন্তু আমার ছেলের সঙ্গে আমার একবারও দেখা হয়নি।’
ছেলের কথা বলার পরই আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন শাজাহান খান। দুই হাতজোড় করে কাঁদতে কাঁদতে বিচারকের উদ্দেশে শাজাহান খান বলতে থাকেন, ‘মাননীয় আদালত আমার বয়স হয়েছে। আমার এলাকার এক চেয়ারম্যান আমাকে এই মামলায় ফাঁসিয়ে দিয়েছে। আমার ছেলেকেও তাঁরা এই মামলায় ফাঁসিয়ে দিয়েছেন।’
শাজাহান খান যখন আরও কথা বলতে চাচ্ছিলেন, তখন বিচারক তাঁকে থামিয়ে দেন। বিচারক শাজাহান খানের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আপনার আইনজীবী এ বিষয়ে বিস্তারিত কথা বলেছেন।’
এরপর শাজাহান খান আবার তাঁর দুই হাতজোড় করে বিচারকের উদ্দেশে বলতে থাকেন, ‘মাননীয় আদালত, মাননীয় আদালত.
এ সময় টিস্যু দিয়ে দুই চোখ মুছতে থাকেন শাজাহান খান। এরপর আদালত সিদ্ধান্ত দেন। আদালতের সিদ্ধান্ত পুলিশের একজন কর্মকর্তা উচ্চ স্বরে জানিয়ে দেন। তিনি বলেন, ‘শাজাহান খানের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে।’
রিমান্ড মঞ্জুর হওয়ার কথা শোনার পর বিমর্ষ হয়ে পড়েন শাজাহান খান। তিনি কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকেন। একজন পুলিশসদস্য কাঠগড়ায় উঠে তাঁর দুই হাত পেছনে নিয়ে হাতকড়া পরিয়ে দেন। মাথায় পরিয়ে দেন হেলমেট। এরপর পুলিশ তাঁর দুই হাত ধরে তাঁকে কাঠগড়া থেকে নামিয়ে আদালতে বারান্দায় নিয়ে যান।
শাজাহান খানকে সিঁড়ি দিয়ে হাঁটিয়ে আবার নিচতলায় আনা হয়। তখন তিনি সাংবাদিকদের দেখে আবার কথা বলতে শুরু করেন। তবে তাঁকে দ্রুত হাঁটিয়ে আদালতের হাজতখানায় নিয়ে যান পুলিশসদস্যরা।
‘আব্বার সঙ্গে দেখা হয়নি’
পুলিশ ও আইনজীবী সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, শাজাহান খানকে আজ সকাল সাড়ে আটটার দিকে কাশিমপুর কারাগার থেকে ঢাকার সিএমএম আদালতের হাজতখানায় আনা হয়। অন্যদিকে তাঁর ছেলে আসিবুরকে সকাল সাড়ে দশটার পর কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ঢাকার সিএমএম আদালতের হাজতখানায় আনা হয়। রিমান্ড শুনানি শেষে শাজাহান খানকে ঢাকার সিএমএম আদালতের হাজতখানার একটি কক্ষে রাখা হয়। আর শাজাহান খানের ছেলে আসিবুর রহমানকে রাখা হয় অন্য আরেকটি কক্ষে।
বেলা ১২টার দিকে শাজাহান খানের ছেলে আসিবুর রহমানকে আদালতের হাজতখানা থেকে বের করে আনা হয়। তাঁকে যখন আদালতের নিচতলায় আনা হয়, তখন তাঁর দুই হাত পেছনে ছিল। পড়ানো ছিল হাতকড়া। দীর্ঘদেহী আসিবুর রহমানের মাথায় ছিল পুলিশের হেলমেট, বুকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট। দ্রুত তাঁকে নিচতলা থেকে সিঁড়ি দিয়ে হাঁটিয়ে আদালতের দ্বিতীয় তলায় আনা হয়। তখন বিচারক অন্য একটি মামলার শুনানি গ্রহণ করছিলেন।
কাঠগড়ায় আসিবুর রহমানকে তোলার পর তাঁর এক হাতের হাতকড়া খুলে দেওয়া হয়। আসিবুর রহমানকে তাঁর আইনজীবী বলেন, ‘আপনার আব্বার সঙ্গে দেখা হয়েছে?’ বিমর্ষমুখে আসিবুর রহমান তাঁর আইনজীবীকে বলেন, ‘না, আমার আব্বার সঙ্গে দেখা হয়নি।’
আইনজীবী আসিবুর রহমানকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আপনার আব্বা এখনো হাজতখানায় আছেন।’
এরপর আসিবুর রহমানের রিমান্ড শুনানি শুরু হয়। একজন পুলিশ কর্মকর্তা আদালতকে বলেন, বাড্ডার রফিকুল হত্যার সঙ্গে শাজাহান খানের ছেলে আসিবুর রহমান সরাসরি জড়িত। কার গুলিতে, কীভাবে রফিকুল মারা যান, তা জানতে তাঁকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি।
অপরদিকে আসিবুর রহমানের আইনজীবী আদালতকে বলেন, ‘আমার মক্কেল মাদারীপুরের একজন উপজেলা চেয়ারম্যান। তাঁর মুঠোফোন কল বিশ্লেষণ করলেই বোঝা যাবে, তিনি ঢাকায় ছিলেন নাকি মাদারীপুরে ছিলেন। পিতার রাজনীতির কারণে ছেলেকে এই মামলায় আসামি করা হয়েছে।’
দুই পক্ষের বক্তব্য শোনার পর আদালত শাজাহান খানের ছেলে আসিবুর রহমানের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডের আদেশ হওয়ার পর আসিসবুর রহমান খানের দুই হাত পেছনে নিয়ে পরিয়ে দেওয়া হয় হাতকড়া। কাঠগড়া থেকে ধরে তাঁকে আদালতের বারান্দায় আনা হয়। এরপর দ্রুত তাঁকে আদালতের হাজতখানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত ঢাকার সিএমএম আদালতের হাজতখানার পৃথক দুটি কক্ষে অবস্থান করেছিলেন শাজাহান খান ও আসিবুর রহমান। সে সময় সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো প্রথম আলোর এই প্রতিবেদককে বলে, অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই শাজাহান খানকে প্রিজনভ্যানে করে কাশিমপুর কারাগারে নিয়ে যাওয়া হবে। আর আসিবুর রহমানকে নিয়ে যাওয়া হবে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ওমর ফ র ক ফ র ক ম জ ন র রহম ন ন র আইনজ ব ষড়যন ত র র হ জতখ ন র কর মকর ত ক ঠগড় য় র একজন আম র ব র স মন আওয় ম র বয়স হওয় র ন চতল হ তকড় তখন ত আপন র
এছাড়াও পড়ুন:
হবিগঞ্জ মেডিকেল কলেজ অন্য স্থানে সরিয়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ, মহাসড়ক অবরোধ
হবিগঞ্জ সরকারি মেডিকেল কলেজ অন্য স্থানে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনার প্রতিবাদে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক প্রায় ৪০ মিনিট অবরোধ করা হয়েছে। আজ রোববার দুপুরে জেলা শায়েস্তাগঞ্জ গোলচত্বরে এ কর্মসূচি পালন করে হবিগঞ্জ সম্মিলিত নাগরিক সমাজ।
এ কর্মসূচিতে মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীসহ জেলা সদরের বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা অংশ নেন। এ সময় মহাসড়কের দুই প্রান্তে কয়েক শ যানবাহন আটকা পড়ে।
আজ দুপুরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার গোলচত্বরে অবস্থান কর্মসূচি পালনের কর্মসূচি দেওয়া হয়েছিল। বেলা একটা থেকে আন্দোলনকারীরা ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। বেলা ১টা থেকে ১টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলাকালে মহাসড়কের দুই প্রান্তে কয়েক শ যানবাহন আটকা পড়ে।
এ সময় সমাবেশে বক্তরা বলেন, হবিগঞ্জ মেডিকেল কলেজকে মানহীনতা দেখিয়ে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। আট বছর ধরে চলা এ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জেলার মানুষ স্বাস্থ্যসেবা পেয়ে আসছেন। এখানে দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করছেন। বিগত সরকারের ব্যর্থতায় এ কলেজ স্থায়ী ক্যাম্পাস পায়নি। শিক্ষকের কোটা পূরণ করা হয়নি। ভালো ল্যাব দেওয়া হয়নি। এ দায় কলেজ বা হবিগঞ্জবাসীর নয়। এর দায় সেই সময়কার সরকারের। হবিগঞ্জ মেডিকেল কলেজকে মানহীন কলেজ দেখিয়ে এখন অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার যে ষড়যন্ত্র চলছে, তা কিছুতেই হবিগঞ্জের মানুষ মেনে নেবে না।
সম্মিলিত নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক হবিগঞ্জ বাপার সভাপতি ইকরামুল ওয়াদুদের সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব সামসুল হুদার সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন সাংবাদিক মনসুর আহমেদ ইকবাল, জেলা জামায়াতের আমির মুখলিছুর রহমান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সৈয়দ মুশফিকুর রহমান, জেলা ছাত্রদল সভাপতি রাজীব আহমেদ প্রমুখ।
হবিগঞ্জ মেডিকেল কলেজ ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে এ কলেজে ৩৫০ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছেন। হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যার হাসপাতালের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলার কয়েকটি কক্ষে মেডিকেল কলেজের কার্যক্রম চলছে।