উমরানের জায়গায় কেকেআরে ‘নেট বোলার’ সাকারিয়া
Published: 17th, March 2025 GMT
চোটের কারণে এবার আইপিএলে দেখা যাবে না ভারতের তরুণ পেসার উমরান মালিককে। গতির ঝড় তোলা এই বোলারকে পাচ্ছে না কলকাতা নাইট রাইডার্স (কেকেআর)। তার পরিবর্তে স্কোয়াডে জায়গা পেয়েছেন বাঁহাতি পেসার চেতন সাকারিয়া।
আইপিএলের গত চার আসরে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে খেলেছেন উমরান। বিশেষ করে ২০২২ আসরে ১৫০ কিলোমিটার গতিতে নিয়মিত বল করে তিনি নজর কাড়েন। ওই আসরে ২২ উইকেট নিয়ে উদীয়মান ক্রিকেটারের পুরস্কারও জিতেছিলেন জাম্মু ও কাশ্মীরের এই পেসার। তবে এরপরের দুই মৌসুমে ফর্মে থাকেননি। ২০২৩ আসরে আট ম্যাচে নিয়েছিলেন মাত্র পাঁচ উইকেট। আর চলতি মৌসুমে সানরাইজার্সে ছিলেন না তিনি। গত নভেম্বরের নিলামে ৭৫ লাখ রুপিতে উমরানকে দলে নেয় কেকেআর। তবে এবার চোট বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অন্যদিকে চেতন সাকারিয়ার আইপিএল যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০২০ সালে, রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর নেট বোলার হিসেবে। এরপর ২০২১ সালে রাজস্থান রয়্যালস তাকে দলে নেয় ১ কোটি ২০ লাখ রুপিতে। অভিষেক মৌসুমেই ১৪ ম্যাচে ১৯ উইকেট নিয়ে নজর কাড়েন তিনি। পরে ২০২২ সালে দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে খেলেন এই বাঁহাতি পেসার। ৪ কোটি ২০ লাখ রুপিতে তাকে দলে নিলেও খুব বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি—দুই মৌসুম মিলিয়ে মাঠে নামেন মাত্র পাঁচ ম্যাচে।
২০২৪ সালের নিলামে ৫০ লাখ রুপিতে তাকে নেয় কেকেআর। তবে হর্শিত রানা ও মিচেল স্টার্কের মতো পেসারদের ভিড়ে একাদশে জায়গা পাননি সাকারিয়া। এর মধ্যে আবার চোটে পড়েছিলেন বাঁহাতি কবজিতে। এরপর ১৩ মাসের লড়াই শেষে আবারও প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে ফিরেছেন সাকারিয়া। মুম্বাইয়ের একটি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে খেলেছেন তিনি। এমনটা দেখে তাকে দুই লাখ রুপিতে নেট বোলার হিসেবে ডেকে নেয় কলকাতা। এবার উমরানের ইনজুরিতে ম্যাচ খেলার সুযোগ তার সামনে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
মাগুরার সেই শিশুকে একাই ধর্ষণ করেছেন বোনের শ্বশুর
মাগুরার সেই শিশুটিকে একাই ধর্ষণ করেছেন তার বোনের শ্বশুর। পরে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে হত্যার চেষ্টা করেন। বোন রান্নার কাজে ব্যস্ত ছিল। এই সুযোগ নেয় শ্বশুর।
৬ মার্চ সকালে তার ছোট ছেলের (শিশুটির বোনের স্বামী) কক্ষে শিশুটিকে একা পেয়ে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা করেন তিনি। ধর্ষণের মামলায় দোষ স্বীকার করে আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ কথা জানিয়েছেন মাগুরার সেই শিশুটির বোনের শ্বশুর। আদালত ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
গত শনিবার (১৫ মার্চ) বিকেলে মাগুরার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সব্যসাচী রায় ওই আসামির ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দি রেকর্ড করেন। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ধর্ষণ মামলার প্রধান এই আসামি জবানবন্দিতে জানান— ৬ মার্চ সকাল ৮টা ২০ মিনিটের দিকে তাঁর ছোট ছেলের কক্ষে শিশুটিকে একা শুয়ে থাকতে দেখে ঘরে ঢুকে পড়েন তিনি। শিশুটি চিৎকার করলে তার গলা চেপে ধরেন। শিশুটি জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। এরপর তিনি ধর্ষণের চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে ব্লেড দিয়ে শিশুটিকে ক্ষতবিক্ষত করেন। শিশুটিকে অচেতন ফেলে রেখে মাঠে কাজ করতে চলে যান। ঘটনার সময় বাড়ির অন্য সদস্যরা যে যার কাজে বেরিয়েছিলেন। আর শিশুটির বোন বাড়ির এক কোণে রান্নাঘরে মোবাইল ফোনে কথা বলায় ব্যস্ত ছিলেন।
আরো পড়ুন:
ধর্ষণের দায় একাই নিচ্ছেন মাগুরার সেই শিশুর বোনের শ্বশুর
ফেনীতে যৌতুকের জন্য নববধূকে হত্যা, শ্বশুর গ্রেপ্তার
ঘটনার কিছুক্ষণ পর শিশুটির বোন ঘরে গিয়ে তাকে অচেতন অবস্থায় দেখতে পান। এ সময় প্রতিবেশী এক নারী ওই বাড়িতে আসেন। তারা শিশুটিকে অচেতন দেখে তার মাথায় পানি ঢালেন। খবর পেয়ে বেলা ১১টার দিকে শিশুটির বোনের শাশুড়ি বাড়িতে এসে প্রথমে শিশুটিকে স্থানীয় এক কবিরাজের বাড়িতে নেন। সেখান থেকে নেওয়া হয় মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে।
মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, আসামির জবানবন্দির সঙ্গে মামলার বাদী শিশুটির মায়ের এজাহারের অমিল রয়েছে। বাদী বলেছিলেন, ঘটনা ঘটেছে রাতে। অবশ্য এজাহারে তিনি এ–ও উল্লেখ করেছিলেন, বিয়ের পর থেকে তার বড় মেয়েকে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন মেয়ের শ্বশুর। বিষয়টি পরিবারের অন্য সদস্যরা জানতেন। এ নিয়ে ঝগড়াও হয়েছে।
১ মার্চ মাগুরার শিশুটি নিজ বাড়ি থেকে বড় বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যায়। ৬ মার্চ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নেওয়া হয়। ১৩ মার্চ দুপুরে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় শিশুটি। সেদিন সন্ধ্যায় শিশুটির মরদেহ হেলিকপ্টারে করে মাগুরায় নেওয়া হয়। প্রথম জানাজা শেষে উত্তেজিত জনতা শিশুটির বোনের শ্বশুরবাড়িতে ভাঙচুর চালায় ও অগ্নিসংযোগ করে। এর আগে ৮ মার্চ মাগুরা সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণ ও ধর্ষণের মাধ্যমে আহত করার অভিযোগে মামলা করেন শিশুটির মা।
মামলায় শিশুটির বোনের স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুরকে আসামি করা হয়। এর মধ্যে প্রধান আসামি জবানবন্দি দিয়েছেন। বাকি তিন আসামির রিমান্ড চলছে।
রবিবার (১৬ মার্চ) দুপুরে মাগুরার পুলিশ সুপার মিনা মাহমুদা সদর থানায় সাংবাদিকদের বলেন, মামলার অন্যতম আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য তিন আসামির জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তদন্তের স্বার্থে এর চেয়ে বেশি কিছু বলা সম্ভব হচ্ছে না।
শাহীন/মাগুরা/বকুল