বয়স বাড়ার সঙ্গে নানা রোগব্যাধি শরীরে বাসা বাঁধে। এসব রোগবালাইয়ের জন্য বিভিন্ন ওষুধ খাওয়ার প্রয়োজন হয়। রমজানের সময় বয়স্কদের কেউ কেউ অসুস্থতার কারণে রোজা রাখতে পারেন না। আবার অনেকে বাধা সত্ত্বেও রোজা রাখতে চান, তাঁদের ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।

সঠিক সময়ে সঠিক খাবার গ্রহণ

বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হজমশক্তি হ্রাস পায়, অল্প খেলেই পেট ফেঁপে যায়। অনেকে অতিরিক্ত মসলা ও তেলজাতীয় খাবার খেতে পারেন না। রমজান মাসে রকমারি ভাজাপোড়া খাবার দিয়ে ইফতার সাজানো হয়। এগুলোতে মসলা ও তেলের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে, যা বয়স্কদের খাওয়া ঠিক নয়। প্রয়োজনে তাঁদের জন্য আলাদা ইফতারির ব্যবস্থা করতে হবে। সাহ্‌রিতেও তাঁদের সহজপাচ্য খাবার দিন।

সঠিক সময়ে ওষুধ বা খাবার খেতে হবে বলে অনেকে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও রোজা রাখতে পারেন না। অনেক পরিবারে দেখা যায়, অন্যরা রোজা রাখছেন বলে তাঁর জন্য আলাদা করে রান্না করা হয় না। অনেক সময়, আগের দিনের বাসি খাবারই গরম করে তাঁকে খেতে দেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রে তাঁর বদহজম বা ফুড পয়জনিং হতে পারে।

যাঁদের ডায়াবেটিসের কারণে ইনসুলিন নিতে হয়, তাঁদের সময়মতো খাবার খাওয়া প্রয়োজন, হেরফের হলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমে যেতে পারে।

কিডনি রোগ, ডায়াবেটিসের মতো রোগে খাবার খাওয়ার ব্যাপারে অতিরিক্ত সতর্কতা মেনে চলতে হবে।

আরও পড়ুনডায়াবেটিসে রোজা রাখা কাদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫বয়স্কদের ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

গোয়ালন্দে ঋণের ফাঁদ পেতে উধাও এনজিও

ঋণের প্রলোভন দেখিয়ে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ থেকে ২০ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে উধাও হয়েছে একটি কথিত বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা (এনজিও)। কয়েকজন গ্রাহক ঋণের টাকা তুলতে গিয়ে ওই প্রতিষ্ঠানের ভাড়ায় নেওয়া অফিস তালাবদ্ধ দেখতে পান। পরে বিষয়টি জানাজানি হয়। এ বিষয়ে সোমবার গোয়ালন্দ ঘাট থানায় লিখিত অভিযোগ দেন সাইফুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি।

সাইফুল ইসলাম উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের জামতলা হাটে রিকশার যন্ত্রাংশ বিক্রির ব্যবসা করেন। তাঁর ভাষ্য, ঊষার আলো ফাউন্ডেশন নামের একটি এনজিও কর্মকর্তারা ১৩ মার্চ তাঁর দোকানে যান। তারা নানা বিষয়ে আলোচনার পর ১০ লাখ টাকা ঋণ দেওয়ার আশ্বাস দেন। এ জন্য সাইফুলকে সঞ্চয় বাবদ ৮০ হাজার টাকা ও বীমা বাবদ পাঁচ হাজার টাকা জমা দিতে বলা হয়। তিনি ১৬ মার্চ ৭৫ হাজার ৫০০ টাকা প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়ে জমা দেন। কথা ছিল, পরদিন তিনি ১০ লাখ টাকা ঋণ পাবেন। নির্ধারিত দিনে সেখানে গিয়ে তিনি দেখতে পান, অফিস তালাবদ্ধ। সংস্থাটির কর্মকর্তাদের মোবাইল ফোন নম্বরে কল দিয়েও সংযোগ পাননি। পরে থানায় অভিযোগ দেন সাইফুল। জানা গেছে, অন্তত ২০-২৫ জন ব্যক্তি ওই সংস্থার মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

একইভাবে প্রতারিত হয়েছেন রাজবাড়ী সদরের ব্যবসায়ী মো. কামরুল ইসলাম। খানখানাপুর বাজারে তাঁর প্রসাধনসামগ্রীর ব্যবসা রয়েছে। কামরুল ইসলাম বলেন, ১৩ মাচ ঊষার আলো ফাউন্ডেশনের কয়েকজন তাঁর দোকানে যান। তাঁকে ঋণ দেওয়ার আশ্বাস দেন। তিনিও আগ্রহ প্রকাশ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই কর্মকর্তারা ১৫ মার্চ তাঁর বাড়িতে যান। সেখানেই ৮ লাখ টাকা ঋণ দেওয়ার বিষয়ে আলাপ হয়।

১৭ মার্চ ঋণ দেওয়া হবে জানিয়ে ৮০ হাজার টাকা সঞ্চয় জমা দিতে বলা হয় কামরুলকে। তিনি নিজ মোটরসাইকেল বন্ধক রেখে মাসিক ৫ হাজার টাকা সুদের বিনিময়ে ৮০ হাজার টাকা ঋণ করেন। সেই টাকা ১৬ মার্চ সংস্থাটির কর্মকর্তাদের হাতে তুলে দেন। ১৭ মার্চ ঋণ নিতে এসে কার্যালয়ে এসে অন্যদের কাছ থেকে জানতে পারেন, ওই ব্যক্তিরা পালিয়েছেন।

গত ৬ মার্চ ঊষার আলো ফাউন্ডেশনের নামে পৌর এলাকার নীলু শেখের পাড়ার একটি দোতলা ভবনের নিচতলার একটি কক্ষ ভাড়া নেওয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করে ওই ভবনের মালিক প্রান্তি সুলতানা বলেন, মাসে ৭ হাজার টাকা ভাড়া দেওয়ার শর্তে ওই কক্ষটি তিন বছরের জন্য ভাড়া নেওয়া হয়। তারা এ বিষয়ে পরে চুক্তিপত্র করবে বলে জানিয়েছিলেন।

সরেজমিন বুধবার ওই কক্ষটিতে দুটি টেবিল ও তিন-চারটা চেয়ার ছাড়া কিছু পাওয়া যায়নি। বক্তব্য জানতে ঊষার আলো ফাউন্ডেশনের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার পরিচয়দানকারী মো. রুবেল হাসানের মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হলেও সংযোগ মেলেনি। সংশ্লিষ্ট সবার ফোন নম্বরই বন্ধ পাওয়া যায়।

গোয়ালন্দঘাট থানার ওসি মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় তিনি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গত রোববারই ঊষার আলো ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম শুরুর বিষয়ে জানতে পেরেছিলেন গোয়ালন্দ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা রুহুল আমিন। তিনি বলেন, ‘তাদের কাগজপত্র জমা দিতে বলি, তারা এ জন্য দুই দিনের সময় চেয়েছিল। আজ আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম তারা পালিয়ে গেছে।’ সংস্থাটির নাম তাদের নিবন্ধন তালিকায় নেই বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ