রেলের অস্থায়ী শ্রমিকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার
Published: 17th, March 2025 GMT
আগামী রবিবারের মধ্যে বকেয়া বেতন পরিশোধের আশ্বাস পেয়ে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেছেন বাংলাদেশ রেলওয়ের অস্থায়ী (টিএলআর) শ্রমিকরা।
সোমবার (১৭ মার্চ) রাজধানীর রেল ভবনে বাংলাদেশ রেলওয়ের অস্থায়ী (টিএলআর) কর্মচারীদের পক্ষ থেকে কর্মবিরতি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়া হয়।
এর আগে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম আন্দোলনরত টিএলআর শ্রমিকদের বকেয়া বেতন আগামী রবিবারের (২৩ মার্চ) মধ্যে পরিশোধের আশ্বাস দেন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি বলেছেন, ইন্টিগ্রেটেড বাজেট অ্যান্ড অ্যাকাউন্টিং সিস্টেম (আইবাস) সংক্রান্ত জটিলতার কারণে রেলওয়ের টিএলআর শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধে সমস্যা ছিল। সে সমস্যা সমাধানে অর্থ বিভাগ ও মন্ত্রণালয় পর্যায়ে অভ্যন্তরীণ কার্যক্রম চলছে। আশা করা যাচ্ছে, আগামী রবিবারের মধ্যে টিএলআর শ্রমিকদের বকেয়া বেতন তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পৌঁছে যাবে।
আগামী এপ্রিল মাস থেকে তাদের বেতন প্রতি মাসের ১০ তারিখের মধ্যে পরিশোধ করা সম্ভব হবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন। তার এ আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে টিএলআর শ্রমিকরা তাদের কর্মবিরতি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। তবে, রবিবারের মধ্যে বকেয়া বেতন পরিশোধ করা না হলে তারা পুনরায় আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করবেন বলে জানিয়েছেন।
প্রেস ব্রিফিংকালে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো.
ঢাকা/হাসান/রফিক
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর রব ব র র র লওয় র পর শ ধ
এছাড়াও পড়ুন:
একটি সেতু হলেই দুঃখ ঘুচবে ৫০ হাজার চরবাসীর
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে সেতুর অভাবে দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন দুই ইউনিয়নের অন্তত ৫০ হাজার বাসিন্দা। কয়েক দশক ধরে মরা পদ্মা নদী পারাপারে খেয়া নৌকাই ভরসা দৌলতদিয়া ও উজান চরবাসীর। ঝড়-বৃষ্টিসহ নানা কারণে মাঝেমধ্যে বন্ধ থাকে খেয়া নৌকার চলাচল। এতে দুর্ভোগ আরও বেড়ে যায় চরের বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ফরিদপুর জেলার সীমানাঘেঁষে গোয়ালন্দ উপজেলার উজানচর ইউনিয়ন। পদ্মাপারের বিস্তীর্ণ এ ইউনিয়নে নানা ধরনের ফসল উৎপাদনের আদর্শ অঞ্চল। পরিবহন সমস্যায় উৎপাদিত ফসলের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হন কৃষক। এ ইউনিয়নের একটি গ্রাম দড়াপের ডাঙ্গী। মরা পদ্মা নদী পার হলেই স্কুল-মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। তবুও একটি সেতুর কারণে দড়াপের ডাঙ্গী গ্রামের অসংখ্য শিশু-কিশোরের পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছে। শুধু তাই নয়, কেউ অসুস্থ হলে তাকে হাসপাতালে নিতে ৭-৮ কিলোমিটার পথ ঘুরতে হয়। এখানে একটি সেতু নির্মাণ হলে উজানচর ও দৌলতদিয়া ইউনিয়নবাসী সরাসরি উপকৃত হবেন। ফরিদপুর জেলা শহর ছাড়াও পার্শ্ববর্তী জামতলার হাট, মমিনখার হাটসহ বিভিন্ন এলাকার সঙ্গে দুই ইউনিয়নের চর এলাকার বাসিন্দাদের সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হবে। বদলে যাবে এলাকার কৃষি, শিক্ষা, চিকিৎসাসেবাসহ সামগ্রিক পরিস্থিতি।
গোয়ালন্দ উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালে উজানচর ইউনিয়নের দড়াপের ডাঙ্গী এলাকায় ২৬০ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি সেতু নির্মাণের জন্য প্রকল্প প্রস্তাব ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর পাঠানো হয়েছিল। এখন পর্যন্ত তাতে সাড়া মেলেনি।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. কামাল হোসেন জানান, তাদের এ এলাকাটি কৃষিনির্ভর। প্রচুর ফসল উৎপাদন হয়। পরিবহন সমস্যার কারণে তারা ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হন। মালপত্র পরিবহন করা খুব কষ্টকর। তিনি বলেন, একটি সেতু নির্মাণ করা হলে তাদের জীবনযাত্রায় ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। দুর্ভোগ থেকে মুক্তি মিলবে চরের হাজার হাজার বাসিন্দার।
জামতলা দাখিল মাদ্রাসার ছাত্রী ইনসানা আক্তার ও লামিয়া আক্তার জানায়, তাদের মতো চর এলাকার কয়েকশ ছাত্রছাত্রী প্রতিদিন খেয়া নৌকা পাড়ি দিয়ে স্কুল-মাদ্রাসায় পড়ালেখা করতে যায়। সময়মতো খেয়া ধরতে না পারলে ঘাটে রোদ-বৃষ্টির মধ্যে দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষা করতে হয়। আবহাওয়া খারাপ হলে স্কুলেও যাওয়া হয় না। এতে তাদের স্বাভাবিক পড়াশোনা ব্যাহত হয়।
খেয়াঘাটের মাঝি শাকিল শেখ জানান, ঝড়-বৃষ্টি ছাড়াও সামান্য বাতাসে নৌকা পারাপার বন্ধ থাকে। এ ছাড়া মরা পদ্মা নদীতে থাকা ঘন কচুরিপানার কারণে চলাচলের পথ বন্ধ হয়েও মাঝেমধ্যে পারাপার বন্ধ হয়ে যায়। এখন প্রায় সব জায়গায় ব্রিজ হয়ে গেছে। শুধু এখানে হলো না। চরবাসীর দুর্দশা খুব কাছ থেকে দেখতে পাই। এখানে ব্রিজটি হলে হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগ থেকে বেঁচে যেত।
গোয়ালন্দ উপজেলা প্রকৌশলী ফয়সাল জাহাঙ্গীর স্বপ্নিল বলেন, মরা পদ্মা নদীতে একটি সেতু নির্মাণ হওয়াটা খুব জরুরি। সেখানে এতদিনেও সেতু না হওয়াটা অত্যন্ত দুঃখজনক। জনসাধারণের ভোগান্তি লাঘবে বিষয়টি নিয়ে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলবেন।
গোয়ালন্দের ইউএনও মো. নাহিদুর রহমান জানান, চর এলাকার মানুষের সুবিধার্থে দরাপের ডাঙ্গী এলাকায় সেতু নির্মাণের বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়াসহ সব ধরনের চেষ্টা করা হবে।