শ্রেণিকক্ষের সংকট দূরীকরণসহ স্থায়ী ভবনের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি শুরু করেন তাঁরা। এতে ইনস্টিটিউটের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলছেন, ইনস্টিটিউটটি প্রতিষ্ঠার আট বছর পরও পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ, অফিস কক্ষ, সেমিনার কক্ষ ও ফিল্ম ল্যাব না থাকায় তাঁরা সংকটে আছেন। ইনস্টিটিউটের মোট সাতটি ব্যাচের প্রায় ২৬০ শিক্ষার্থীর জন্য রয়েছে মাত্র দুটি শ্রেণিকক্ষ। শুধু তা–ই নয়, বারবার সংস্কারের পরও কক্ষগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। নানা সময়ে প্রশাসনকে তাগাদা দেওয়া সত্ত্বেও তা আমলে নেওয়া হয়নি।

তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘মাত্র দুটি ক্লাসরুম নিয়ে আমাদের ইনস্টিটিউট পরিচালিত হয়ে আসছে। একটা ব্যাচের ক্লাস চললে আরেকটা ব্যাচ পরীক্ষা দিতে পারে না, ক্লাস করতে পারে না। এই সংকট নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো মাথা ঘামাচ্ছে না। আমরা চাই, পরিত্যক্ত পুরোনো ফজিলাতুন্নেছা হলের জায়গায় আমাদের জন্য একটি স্থায়ী ঠিকানা দেওয়া হয়।’

চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সাহারা আক্তার বলেন, ‘পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ না থাকায় যখন এক ব্যাচের ক্লাস হয়, তখন অন্য ব্যাচের শিক্ষার্থীরা আর ক্লাস করতে পারেন না৷ ফলে আমাদের সেশনজটে পড়তে হয়। এই সংকট দিন দিন আরও বেশি ঘনীভূত হচ্ছে। তাই আমরা চাই, আমাদের যেন দ্রুত নতুন ভবনে স্থানান্তর করা হয়।’

ইনস্টিটিউটের চলমান সংকট দূরীকরণে কমপক্ষে চারটি শ্রেণিকক্ষ, দুটি ল্যাব (একটি থিয়েটার ও একটি ল্যাব), একটি সেমিনার কক্ষ, লাইব্রেরি রুম, ২৬ জন শিক্ষকের বসার স্থানসহ আট দফা দাবি তুলে ধরেন অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

গোয়ালন্দে ঋণের ফাঁদ পেতে উধাও এনজিও

ঋণের প্রলোভন দেখিয়ে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ থেকে ২০ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে উধাও হয়েছে একটি কথিত বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা (এনজিও)। কয়েকজন গ্রাহক ঋণের টাকা তুলতে গিয়ে ওই প্রতিষ্ঠানের ভাড়ায় নেওয়া অফিস তালাবদ্ধ দেখতে পান। পরে বিষয়টি জানাজানি হয়। এ বিষয়ে সোমবার গোয়ালন্দ ঘাট থানায় লিখিত অভিযোগ দেন সাইফুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি।

সাইফুল ইসলাম উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের জামতলা হাটে রিকশার যন্ত্রাংশ বিক্রির ব্যবসা করেন। তাঁর ভাষ্য, ঊষার আলো ফাউন্ডেশন নামের একটি এনজিও কর্মকর্তারা ১৩ মার্চ তাঁর দোকানে যান। তারা নানা বিষয়ে আলোচনার পর ১০ লাখ টাকা ঋণ দেওয়ার আশ্বাস দেন। এ জন্য সাইফুলকে সঞ্চয় বাবদ ৮০ হাজার টাকা ও বীমা বাবদ পাঁচ হাজার টাকা জমা দিতে বলা হয়। তিনি ১৬ মার্চ ৭৫ হাজার ৫০০ টাকা প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়ে জমা দেন। কথা ছিল, পরদিন তিনি ১০ লাখ টাকা ঋণ পাবেন। নির্ধারিত দিনে সেখানে গিয়ে তিনি দেখতে পান, অফিস তালাবদ্ধ। সংস্থাটির কর্মকর্তাদের মোবাইল ফোন নম্বরে কল দিয়েও সংযোগ পাননি। পরে থানায় অভিযোগ দেন সাইফুল। জানা গেছে, অন্তত ২০-২৫ জন ব্যক্তি ওই সংস্থার মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

একইভাবে প্রতারিত হয়েছেন রাজবাড়ী সদরের ব্যবসায়ী মো. কামরুল ইসলাম। খানখানাপুর বাজারে তাঁর প্রসাধনসামগ্রীর ব্যবসা রয়েছে। কামরুল ইসলাম বলেন, ১৩ মাচ ঊষার আলো ফাউন্ডেশনের কয়েকজন তাঁর দোকানে যান। তাঁকে ঋণ দেওয়ার আশ্বাস দেন। তিনিও আগ্রহ প্রকাশ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই কর্মকর্তারা ১৫ মার্চ তাঁর বাড়িতে যান। সেখানেই ৮ লাখ টাকা ঋণ দেওয়ার বিষয়ে আলাপ হয়।

১৭ মার্চ ঋণ দেওয়া হবে জানিয়ে ৮০ হাজার টাকা সঞ্চয় জমা দিতে বলা হয় কামরুলকে। তিনি নিজ মোটরসাইকেল বন্ধক রেখে মাসিক ৫ হাজার টাকা সুদের বিনিময়ে ৮০ হাজার টাকা ঋণ করেন। সেই টাকা ১৬ মার্চ সংস্থাটির কর্মকর্তাদের হাতে তুলে দেন। ১৭ মার্চ ঋণ নিতে এসে কার্যালয়ে এসে অন্যদের কাছ থেকে জানতে পারেন, ওই ব্যক্তিরা পালিয়েছেন।

গত ৬ মার্চ ঊষার আলো ফাউন্ডেশনের নামে পৌর এলাকার নীলু শেখের পাড়ার একটি দোতলা ভবনের নিচতলার একটি কক্ষ ভাড়া নেওয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করে ওই ভবনের মালিক প্রান্তি সুলতানা বলেন, মাসে ৭ হাজার টাকা ভাড়া দেওয়ার শর্তে ওই কক্ষটি তিন বছরের জন্য ভাড়া নেওয়া হয়। তারা এ বিষয়ে পরে চুক্তিপত্র করবে বলে জানিয়েছিলেন।

সরেজমিন বুধবার ওই কক্ষটিতে দুটি টেবিল ও তিন-চারটা চেয়ার ছাড়া কিছু পাওয়া যায়নি। বক্তব্য জানতে ঊষার আলো ফাউন্ডেশনের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার পরিচয়দানকারী মো. রুবেল হাসানের মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হলেও সংযোগ মেলেনি। সংশ্লিষ্ট সবার ফোন নম্বরই বন্ধ পাওয়া যায়।

গোয়ালন্দঘাট থানার ওসি মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় তিনি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গত রোববারই ঊষার আলো ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম শুরুর বিষয়ে জানতে পেরেছিলেন গোয়ালন্দ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা রুহুল আমিন। তিনি বলেন, ‘তাদের কাগজপত্র জমা দিতে বলি, তারা এ জন্য দুই দিনের সময় চেয়েছিল। আজ আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম তারা পালিয়ে গেছে।’ সংস্থাটির নাম তাদের নিবন্ধন তালিকায় নেই বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ