অবশেষে প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে বাংলাদেশে এসে পৌঁছালেন হামজা চৌধুরী। বাংলাদেশ সময় সাড়ে ১১টার দিকে হামজাকে বহনকারী বিমানটি সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এর আগেও বহুবার নিজের দেশ বাংলাদেশে এসেছেন তিনি। তবে এবার তার আসাটা ভিন্ন। এবার তিনি শুধু সিলেটের ছেলে হিসেবে নয়, এসেছেন বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের সদস্য হিসেবে।

যুক্তরাজ্যে জন্মগ্রহণ করা হামজা ইংল্যান্ডের হয়ে বয়সভিত্তিক দলে খেলেছিলেন। বর্তমানে খেলছেন প্রিমিয়ার লিগের শেফিল্ড ইউনাইটেডে। গত বছর ইংল্যান্ড ও ফিফার বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে আন্তর্জাতিক ফুটবলে বাংলাদেশ দলের হয়ে খেলার অনুমোদন পান তিনি। আগামী ২৫ মার্চ এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচে ভারতের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। এই ম্যাচের দলে আছেন হামজা। মূলত এই ম্যাচ খেলতেই বাংলাদেশে এসেছেন তিনি।

হামজাকে দেখার পরপরই ভক্তদের 'ওয়েলকাম টু মাদারল্যান্ড হামজা, হামজা' স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে এয়ারপোর্ট প্রাঙ্গণ। লাল-সবুজ ফ্লেয়ার স্মোক উড়িয়ে এই তারকা ফুটবলারকে বরণ করে নেয় সমর্থকরা। বাংলাদেশে পা রাখার প্রায় ৪০ মিনিট পর ভিআইপি গেটের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে আসেন হামজা। সেখানে ভারত ম্যাচ নিয়ে নিজের প্রত্যাশার কথা জানতে চান এক সাংবাদিক। হামজার উত্তরের পর দাবি উঠে বাংলায় কথা বলার।

তিনি পরে স্থানীয় সিলেটিতে দেন উত্তর, 'ইনশাল্লাহ আমরা উইন খরমু। আমি কোচ হ্যাভিয়ের কাভরেরার লগে মাতছি বহুত্তা।  আমরা উইন খরিয়া প্রগ্রেস করতাম ফারমু।' (ইনশাল্লাহ আমরা জিতব। আমি কোচ হ্যাভিয়ের কাবরেরার সঙ্গে অনেক কিছু আলাপ করেছি। আমরা জিতে পরের ধাপে যেতে পারব)।

সিলেট বিমানবন্দর থেকে ইতোমধ্যে হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল থানার স্নানঘাটে পৈতৃক বাড়ির উদ্দেশে সপরিবারে রওনা হয়েছেন হামজা। সেখানে একদিন থেকে আগামীকাল রাতে ঢাকায় টিম হোটেলে যোগ দেবেন তিনি।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

বরগুনায় ধর্ষণের শিকার কিশোরীর পরিবারের দায়িত্ব নিলেন জামায়াতের আমির

বরগুনায় ধর্ষণের শিকার কিশোরীর ছোট ভাই সাবালক না হওয়া পর্যন্ত ওই পরিবারের পাশে থাকবেন বলে জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। আজ সোমবার বেলা ১১টায় বরগুনায় ওই কিশোরীর বাড়ি গিয়ে পরিবারের সঙ্গে দেখা করে এ কথা বলেন তিনি। তিনি ভুক্তভোগী পরিবারটিকে ন্যায়বিচার পেতে সব ধরনের সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন।

এর আগে সকাল সোয়া ১০টার দিকে হেলিকপ্টারে শফিকুর রহমান বরগুনা সার্কিট হাউস প্রাঙ্গণে এসে পৌঁছান। সেখান থেকে তিনি পৌর শহরে ভুক্তভোগী কিশোরীর বাড়িতে যান।

বরগুনা পৌর এলাকার ওই পরিবারটি বলছে, ৪ মার্চ বিকেলে প্রাইভেট পড়ে বাড়ি ফেরার পথে সপ্তম শ্রেণিপড়ুয়া কিশোরীকে (১৪) এক বখাটের নেতৃত্বে কয়েকজন অপহরণ করে। এরপর তাকে ধর্ষণ করা হয়। পরের দিন সকালে ওই কিশোরীকে স্থানীয় পার্কে ফেলে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় কিশোরীর বাবা (৩৭) ওই দিন রাতেই বরগুনা সদর থানায় সিজিত রায়সহ দুজনের নামে ধর্ষণের মামলা করেন। এরপর ১১ মার্চ কর্মস্থলে গিয়ে নিখোঁজ হন কিশোরীর বাবা। ওই দিন দিবাগত রাত সোয়া ১২টার দিকে বাড়ির পাশের ঝোপে তাঁর লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় কিশোরীর মা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা পাঁচ থেকে ছয়জনকে আসামি করে বরগুনা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। পরিবারের দাবি, পরিকল্পিতভাবেই বাদীকে হত্যা করা হয়েছে।

ওই কিশোরীর বাড়িতে তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করার পর শফিকুর রহমান সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় জামায়াতের আমির বলেন, ‘শিশুটির সঙ্গে পশুর মতো আচরণ করা হয়েছে, যা অত্যন্ত লজ্জার বিষয়। তার বাবা এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে একটি মামলা করেছেন। কিন্তু এর ঝাল মেটানোর জন্য তার বাবাকে খুন করা হয়েছে। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি পরিবারের সদস্যদের প্রতি।’

শফিকুর রহমান বলেন, ‘সামাজিকভাবে যদি আমরা এভাবে মজলুমের পাশে সবাই এগিয়ে আসি, তাহলে আশা করি মজলুমরা শক্ত হবে। আর জালিমরা ভয় পাবে। ওদেরকে ভয় দেখাতে হবে, তাদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। আমরা তাদের আশ্বস্ত করেছি, প্রতি মাসেই আমরা তাদের সঙ্গে থাকব। এই পরিবারের বাচ্চাগুলো তার বাবা থাকা অবস্থায় যেভাবে চলেছে, আমরা আশা করি, তার চেয়ে এক ভাগ বেশি ভালো থাকবে ইনশা আল্লাহ। আমরা এ–ও বলেছি, তাদের একটি নবজাতক শিশু রয়েছে, তার বয়স ১৮ বছর না হওয়া পর্যন্ত আমরা এই পরিবারের সঙ্গে থাকব। মামলার ব্যাপারে জনাব তারেক রহমান সাহেব দায়িত্ব নিয়েছেন। আর লেখাপড়া, তাদের জীবন নির্বাহ—একটি সাধারণ পরিবারে যেভাবে চলে, আমরা সেভাবে চালাব।’

এরপর শফিকুর রহমান বরগুনা টাউন হল মাঠে দলের এক পথসভায় বক্তব্য দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোয়াজ্জেম হোসেন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম (মাসুদ), কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য জহির উদ্দিন মোহাম্মদ, বরগুনার জেলা আমির মহিবুল্লাহ হারুন প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ