সাবেক মন্ত্রী তাজুলের পরিত্যক্ত বাড়িতে তরুণীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ: গ্রেপ্তার ৫ জন আদালতে
Published: 17th, March 2025 GMT
কুমিল্লার লাকসামে স্বামীকে জোরপূর্বক সিএনজি চালিত অটোরিকশা থেকে ফেলে দিয়ে তার স্ত্রীকে দুই দফায় দলবব্ধ ধর্ষণে জড়িত পাঁচজনকে আদালতে আনা হয়েছে। আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাদেরকে কুমিল্লা জেলা আদালতে আনা হয়।
এ ঘটনায় জড়িত সকলকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে সমকালকে নিশ্চিত করেছেন লাকসাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাজনীন সুলতানা। তিনি বলেছেন, গ্রেপ্তাররা প্রাথমিকভাবে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। এদের মধ্যে একজন নারী আছেন, যার বাসায় ওই গৃহবধূকে দ্বিতীয় দফায় ধর্ষণ করা হয়।
এদিকে লাকসামে আবারও আলোচনায় সাবেক স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো.
ওই দম্পতির বরাতে পুলিশ জানায়, গত বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) গৃহবধূ তার স্বামীকে নিয়ে নানা শ্বশুরবাড়ি লাকসামে আসেন। পরদিন ভোরে তারা লাকসাম বাইপাস মোড় থেকে বাড়ি ফেরার জন্য সিএনজিতে ওঠেন। এসময় সিএনজিচালক মো. মাসুদ তাদের কাছে জানতে চান তার স্বামী-স্ত্রী কিনা এবং এ বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে। একপর্যায়ে তিনি তাদের লাকসামের গন্ডামারা এলাকায় নিয়ে যান। এসময় অভিযুক্তরা তাদের ব্যাগ তল্লাশি করে। পরে পরিকল্পিতভাবে তাদের পাশের লালমাই উপজেলার মগবাড়ি এলাকায় নিয়ে স্বামীকে ফেলে রেখে তার স্ত্রীকে অপহরণ করে লাকসামে নিয়ে যায়।
পুলিশ আরও জানায়, পরে ভিকটিমকে লাকসামের পাইকপাড়া এলাকায় সাবেক স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলামের শ্যালক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মহব্বত আলীর একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে অভিযুক্ত মো. মাসুদ ও মোহাম্মদ আলী তাকে ধর্ষণ করে। এরপর ভিকটিমকে লাকসাম পৌর শহরের ৮নং ওয়ার্ডের তালুকদার ভিলায় আসামিদের পরিচিত বিলকিছ আক্তার কল্পনার ভাড়া বাসায় নিয়ে আবারও ধর্ষণ করে। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় ওই গৃহবধূ উদ্ধার হন। এ ঘটনায় রোববার লাকসাম থানায় মামলা দায়ের করেন ওই নারীর মা।
এ ঘটনায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে রোববার দিনভর ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তাররা হচ্ছেন, লাকসাম উপজেলার মনোহরপুর এলাকার মৃত খলিলুর রহমানের ছেলে মোহাম্মদ আলী (২৫), পৌরসভার শ্রীপুর মধ্যপাড়ার মো. মমিনের ছেলে মো. মাসুদ (২৩), বাতাখালী এলাকার আবু তাহেরের ছেলে মনির হোসেন হৃদয় (২৩), উত্তর বিনই এলাকার মৃত ছিদ্দিকুর রহমানের ছেলে আল আমিন (২৩) ও মধ্য লাকসাম এলাকার মৃত মোস্তাফিজ মজুমদারের স্ত্রী বিলকিছ আক্তার কল্পনা (৪০)।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এল ক য় এল ক র মন ত র গ হবধ
এছাড়াও পড়ুন:
শিবচরে ডাকাত সন্দেহে চারজনকে গণপিটুনি
মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের পাঁচ্চরে ডাকাত সন্দেহে চারজনকে আটক করে ‘গণপিটুনি’ দিয়েছে স্থানীয়রা। পরে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এসময় তাদের কাছ থেকে ছুরি, চাকু উদ্ধার করে পুলিশ।
রবিবার (১৬ মার্চ) ভোর রাতের দিকে এ চারজনকে আটক করে ‘গণপিটুনি’ দেওয়া হয়।
স্থানীয়দের থেকে জানা গেছে, রবিবার ভোররাতের দিকে এক্সপ্রেসওয়ের পাঁচ্চর গোলচত্বরে একটি অ্যাম্বুলেন্স থেকে এ চারজন নামেন। এসময় তাদের গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হলে স্থানীয়রা তাদের নাম পরিচয় জানতে চান। এক পর্যায়ে চার আগুন্তুকের কথাবার্তায় অসংলগ্নতা মনে হয় স্থানীয়দের। উত্তেজিত হয়ে চারজনের একজন হঠাৎ করেই ছুরি বের করে আঘাত করার চেষ্টা করে। এসময় আশেপাশের লোকজন চিৎকার দিলে স্থানীয়রা এসে চারজনকে আটক করে গণপিটুনি দেয়। এরপর পুলিশকে খবর পুলিশ এসে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
আটককৃতরা হলেন, বাগেরহাট জেলার মোল্লারহাটের কাচনা এলাকার মৃত সিরাজ মীরের ছেলে সোহরাব মীর (২৫), নুরু মীরের ছেলে মেহেদী মীর (২৪), ভান্ডারখোলা এলাকার মৃত শাহজাহান শেখের ছেলে বশির শেখ (২৮) এবং নগরকান্দি এলাকার কবির শেখের ছেলে রাজু শেখ (২৮)।
স্থানীয় রাকিব নামে একজন বলেন, “একটা অ্যাম্বুলেন্সে করে এরা পাঁচ্চর গোলচত্বরে আসে। চারজন বের হলে তাদের সাথে বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে ছুরি দিয়ে আঘাত করে। এসময় লোকজন চলে এলে পালিয়ে যেতে পারেনি। তবে অ্যাম্বুলেন্সটি নিয়ে ওই সময় অন্যরা পালিয়ে যায়। ধারণা করা হচ্ছে অ্যাম্বুলেন্সে আরও ডাকাত সদস্য ছিল। দেশীয় অস্ত্রও থাকতে পারে।”
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রতন শেখ বলেন, “ভোর রাত ৪টা ২০ মিনিটের দিকে পাঁচ্চর গোলচত্বর এলাকায় অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে ডাকাতদল ডাকাতি করতে আসছে সন্দেহে স্থানীয় জনসাধারণ গণপিটুনি দেয়। খবর পেয়ে ডিউটিরত এসআই সালাউদ্দিন এসআই মিরাজ সংগীয় ফোর্স আহত অবস্থায় চারজনকে উদ্ধার করে। তাদের কাছ থেকে ছুরি জব্দ করা হয়। আহতাবস্থায় চারজনকে পুলিশ হেফাজতে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়। আইনগত প্রক্রিয়া শেষে তাদের আদালতে পাঠানো হবে।”
ঢাকা/বেলাল/টিপু