Prothomalo:
2025-03-17@09:21:36 GMT

শিশুকিশোরদের প্রথম রোজা

Published: 17th, March 2025 GMT

রমজান একটি আধ্যাত্মিক মাস। এই মাসের রীতিনীতির মধ্যে শিশুদের সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে রমজান তাদের কাছে আরও অর্থবহ করে তোলা যেতে পারে। যদিও রোজা রাখা শিশুদের জন্য চ্যালেঞ্জিং, তবে বাবা-মায়ের কিছু কৌশল এবং পারিবারিক ঐতিহ্যের উষ্ণতা তাদের অভিজ্ঞতাকে সুন্দর ও মনে রাখার মতো করে তুলতে পারে।

 রোজা রাখার জন্য প্রস্তুতি ও অভ্যাস গঠন গুরুত্বপূর্ণ। শিশুদের জন্য রমজানে রোজা রাখা জরুরি নয়, তবে পারিবারিকভাবে সন্তানদের ছোটবেলা থেকে রোজার প্রস্তুতি নিতে উৎসাহিত করা যায়, যাতে তারা পরবর্তী সময়ে রোজা রাখতে প্রস্তুত থাকে। বাবা-মায়েদের উচিত তাদের সন্তানের শারীরিক সক্ষমতা, স্বাস্থ্যের অবস্থা এবং খাদ্য গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং তারা কতক্ষণ রোজা রাখবে তা ঠিক করে দেওয়া।

সাহরি প্রশিক্ষণ

শিশু বিশেষজ্ঞ ডা.

ওমর জাবের ‘ন্যাশনাল চিলড্রেন ফাউন্ডেশন’র একটি নিবন্ধে বলেছেন যে, বাবা-মায়ের প্রথম থেকেই প্রত্যাশা করা উচিত নয় যে, ছোট শিশু পুরো একটা দিন রোজা রাখবে, বরং তাদের একটু একটু করে অভিজ্ঞতা দিতে হবে। পর্যায়ক্রমে তাদের রোজার সময়কাল বাড়ালে তাদের শরীর ধীরে ধীরে অভ্যস্ত হয়ে উঠবে।

আরও পড়ুনরোজার নিয়তের বিধান কী১২ মার্চ ২০২৫

তিনি কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন, যা শিশুর রোজা রাখার সময় বাবা-মাকে মনে রাখতে হবে:

 ১. সাহরি খাবার: সাহরির খাবার অবশ্যই ফাইবার ও প্রোটিন সমৃদ্ধ হতে হবে। যেমন পূর্ণ শস্য, শিম, ফল, সবজি, চর্বিহীন মাংস, ডিম ও দুগ্ধজাত পণ্য।

 ২. খাবারে পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ: মিষ্টি খাবার এড়িয়ে চলতে উৎসাহিত করা উচিত।

 ৩. পর্যাপ্ত পানি পান: অস্বাস্থ্যকর খাবার এড়িয়ে চলতে হবে এবং রোজা না-রাখার সময়ও পর্যাপ্ত পানি পান করতে দিতে হবে।

 ৪. অতিরিক্ত খাবার বর্জন: কারণ এটি হজমের সমস্যা এবং অস্বস্তি ভাব হতে পারে। শিশুকে ছোট ছোট খাবার খেতে উৎসাহিত করুন।

আরও পড়ুনরমজানে অলসতা ভর করার কারণ১২ মার্চ ২০২৫

শিশুদের উৎসাহিত করার উপায়

বাবা-মায়ের উচিত রমজান মাসে কিছু ইতিবাচক পদ্ধতির মাধ্যমে শিশুদের উৎসাহিত করা। এখানে কয়েকটি ‘প্রোডাকটিভ মুসলিম’ ও ‘নাসা ফাউন্ডেশন’র ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া হয়েছে:

 ১. রমজানের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন করা: রমজান মাস শুরুর আগে শিশুদের রমজান সম্পর্কে সচেতন করা উচিত। রমজান বড়দের রোজার মাস নয়, শিশুদের জন্যও রমজানের গভীরতা ও পবিত্রতা শেখানোর বহু কিছু আছে। যেমন: আল্লাহর প্রতি ভয়, দরিদ্রদের কষ্ট বোঝা এবং ক্ষুধায় ধৈর্য ধারণ করার মতো বিষয়গুলো তাদের পরিচিত করানো যায়।

 ২. বাড়ি সাজানো: বাড়ির মধ্যে রমজান মাসের পরিবেশ তৈরি করা শিশুদের জন্য রমজানকে আরও আনন্দময় করে তুলতে পারে। ফানুস, রমজান পোস্টার এবং চাঁদ-তারা খচিত স্টিকার ব্যবহার করা যায়। শিশুদের সঙ্গে নিয়ে রং-বেরঙের কাগজ কেটে সাজানোর আয়োজন করলে তারা নিজেদের রমজানের সঙ্গে আরও যুক্ত ভাববে।

আরও পড়ুনরমজানের মাঝের ১০ দিনে করণীয়১৩ মার্চ ২০২৫

৩. একসঙ্গে খাবার প্রস্তুত করা: শিশুদের রমজান মাসের প্রতি আগ্রহ বাড়ানোর একটি দুর্দান্ত উপায় হলো তাদের সাহরি ও ইফতার প্রস্তুতিতে যুক্ত করা। শিশুরা টেবিল সাজাতে সাহায্য করতে পারে, অথবা তাদের স্ন্যাক্স বা মিষ্টান্ন, শরবত তৈরি করতে দেওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া প্রতিবেশীদের বাসায় ইফতার পৌঁছাতেও তাকে উৎসাহিত করা যেতে পারে।

 ৪. রমজান ভিত্তিক কার্যক্রম: রমজানে শিশুদের জন্য বিভিন্ন আনন্দময় কার্যক্রমের সুযোগ করে দেওয়া যায়। যেমন, রমজান ক্যালেন্ডার তৈরি করা, যেখানে প্রতিদিনের ছোট ছোট কাজ থাকবে। বা কোরআন থেকে একটি আয়াত পড়া অথবা নবীদের রোজা রাখার গল্প, অথবা নবী যুগের শিশুদের প্রথম রোজা রাখার ঘটনা শোনানো।

 ৫. রমজান মূল্যবোধ শিক্ষা দেওয়া: রমজান মাসকে ব্যবহার করে শিশুদের নৈতিক শিক্ষা দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। যেমন, দরিদ্রদের সাহায্য করা এবং দানশীলতা শেখানো, পথে মুসাফিরকে খাবার বিতরণ বা অর্থ ও জামা কাপড় দান করা ইত্যাদি। এ জন্য তাকে ছোট কোনো উপহার দেওয়া যায়।

 সূত্র: আলজাজিরা ডট নেট

আরও পড়ুনসাহরির যে ৭টি বিধান মনে রাখা জরুরি১২ মার্চ ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ শ দ র জন য রমজ ন ম স রমজ ন র

এছাড়াও পড়ুন:

শিশুকিশোরদের প্রথম রোজা

রমজান একটি আধ্যাত্মিক মাস। এই মাসের রীতিনীতির মধ্যে শিশুদের সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে রমজান তাদের কাছে আরও অর্থবহ করে তোলা যেতে পারে। যদিও রোজা রাখা শিশুদের জন্য চ্যালেঞ্জিং, তবে বাবা-মায়ের কিছু কৌশল এবং পারিবারিক ঐতিহ্যের উষ্ণতা তাদের অভিজ্ঞতাকে সুন্দর ও মনে রাখার মতো করে তুলতে পারে।

 রোজা রাখার জন্য প্রস্তুতি ও অভ্যাস গঠন গুরুত্বপূর্ণ। শিশুদের জন্য রমজানে রোজা রাখা জরুরি নয়, তবে পারিবারিকভাবে সন্তানদের ছোটবেলা থেকে রোজার প্রস্তুতি নিতে উৎসাহিত করা যায়, যাতে তারা পরবর্তী সময়ে রোজা রাখতে প্রস্তুত থাকে। বাবা-মায়েদের উচিত তাদের সন্তানের শারীরিক সক্ষমতা, স্বাস্থ্যের অবস্থা এবং খাদ্য গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং তারা কতক্ষণ রোজা রাখবে তা ঠিক করে দেওয়া।

সাহরি প্রশিক্ষণ

শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. ওমর জাবের ‘ন্যাশনাল চিলড্রেন ফাউন্ডেশন’র একটি নিবন্ধে বলেছেন যে, বাবা-মায়ের প্রথম থেকেই প্রত্যাশা করা উচিত নয় যে, ছোট শিশু পুরো একটা দিন রোজা রাখবে, বরং তাদের একটু একটু করে অভিজ্ঞতা দিতে হবে। পর্যায়ক্রমে তাদের রোজার সময়কাল বাড়ালে তাদের শরীর ধীরে ধীরে অভ্যস্ত হয়ে উঠবে।

আরও পড়ুনরোজার নিয়তের বিধান কী১২ মার্চ ২০২৫

তিনি কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন, যা শিশুর রোজা রাখার সময় বাবা-মাকে মনে রাখতে হবে:

 ১. সাহরি খাবার: সাহরির খাবার অবশ্যই ফাইবার ও প্রোটিন সমৃদ্ধ হতে হবে। যেমন পূর্ণ শস্য, শিম, ফল, সবজি, চর্বিহীন মাংস, ডিম ও দুগ্ধজাত পণ্য।

 ২. খাবারে পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ: মিষ্টি খাবার এড়িয়ে চলতে উৎসাহিত করা উচিত।

 ৩. পর্যাপ্ত পানি পান: অস্বাস্থ্যকর খাবার এড়িয়ে চলতে হবে এবং রোজা না-রাখার সময়ও পর্যাপ্ত পানি পান করতে দিতে হবে।

 ৪. অতিরিক্ত খাবার বর্জন: কারণ এটি হজমের সমস্যা এবং অস্বস্তি ভাব হতে পারে। শিশুকে ছোট ছোট খাবার খেতে উৎসাহিত করুন।

আরও পড়ুনরমজানে অলসতা ভর করার কারণ১২ মার্চ ২০২৫

শিশুদের উৎসাহিত করার উপায়

বাবা-মায়ের উচিত রমজান মাসে কিছু ইতিবাচক পদ্ধতির মাধ্যমে শিশুদের উৎসাহিত করা। এখানে কয়েকটি ‘প্রোডাকটিভ মুসলিম’ ও ‘নাসা ফাউন্ডেশন’র ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া হয়েছে:

 ১. রমজানের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন করা: রমজান মাস শুরুর আগে শিশুদের রমজান সম্পর্কে সচেতন করা উচিত। রমজান বড়দের রোজার মাস নয়, শিশুদের জন্যও রমজানের গভীরতা ও পবিত্রতা শেখানোর বহু কিছু আছে। যেমন: আল্লাহর প্রতি ভয়, দরিদ্রদের কষ্ট বোঝা এবং ক্ষুধায় ধৈর্য ধারণ করার মতো বিষয়গুলো তাদের পরিচিত করানো যায়।

 ২. বাড়ি সাজানো: বাড়ির মধ্যে রমজান মাসের পরিবেশ তৈরি করা শিশুদের জন্য রমজানকে আরও আনন্দময় করে তুলতে পারে। ফানুস, রমজান পোস্টার এবং চাঁদ-তারা খচিত স্টিকার ব্যবহার করা যায়। শিশুদের সঙ্গে নিয়ে রং-বেরঙের কাগজ কেটে সাজানোর আয়োজন করলে তারা নিজেদের রমজানের সঙ্গে আরও যুক্ত ভাববে।

আরও পড়ুনরমজানের মাঝের ১০ দিনে করণীয়১৩ মার্চ ২০২৫

৩. একসঙ্গে খাবার প্রস্তুত করা: শিশুদের রমজান মাসের প্রতি আগ্রহ বাড়ানোর একটি দুর্দান্ত উপায় হলো তাদের সাহরি ও ইফতার প্রস্তুতিতে যুক্ত করা। শিশুরা টেবিল সাজাতে সাহায্য করতে পারে, অথবা তাদের স্ন্যাক্স বা মিষ্টান্ন, শরবত তৈরি করতে দেওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া প্রতিবেশীদের বাসায় ইফতার পৌঁছাতেও তাকে উৎসাহিত করা যেতে পারে।

 ৪. রমজান ভিত্তিক কার্যক্রম: রমজানে শিশুদের জন্য বিভিন্ন আনন্দময় কার্যক্রমের সুযোগ করে দেওয়া যায়। যেমন, রমজান ক্যালেন্ডার তৈরি করা, যেখানে প্রতিদিনের ছোট ছোট কাজ থাকবে। বা কোরআন থেকে একটি আয়াত পড়া অথবা নবীদের রোজা রাখার গল্প, অথবা নবী যুগের শিশুদের প্রথম রোজা রাখার ঘটনা শোনানো।

 ৫. রমজান মূল্যবোধ শিক্ষা দেওয়া: রমজান মাসকে ব্যবহার করে শিশুদের নৈতিক শিক্ষা দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। যেমন, দরিদ্রদের সাহায্য করা এবং দানশীলতা শেখানো, পথে মুসাফিরকে খাবার বিতরণ বা অর্থ ও জামা কাপড় দান করা ইত্যাদি। এ জন্য তাকে ছোট কোনো উপহার দেওয়া যায়।

 সূত্র: আলজাজিরা ডট নেট

আরও পড়ুনসাহরির যে ৭টি বিধান মনে রাখা জরুরি১২ মার্চ ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ