আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে পুলিশের ১২৭ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিশেষ বৈঠক চলছে।

সোমবার সকাল সোয়া ১১টার দিকে প্রধান উপদেষ্টার তেজগাঁও কার্যালয়ে এ বৈঠক শুরু হয় বলে জানা গেছে। এতে সভাপতিত্ব করছেন প্রধান উপদেষ্টা নিজেই।

এর আগে রোববার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেসসচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানান, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে মানুষের মধ্যে এক ধরনের উদ্বেগ রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সোমবার সারা দেশের মাঠপর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন প্রধান উপদেষ্টা।

তিনি জানান, পুলিশের উচ্চপদস্থ ১২৭ কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করবেন প্রধান উপদেষ্টা। বৈঠকে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা হবে। একইসঙ্গে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেবেন প্রধান উপদেষ্টা।

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আয়োজিত ওই বৈঠকে দেশের সব জেলার পুলিশ সুপার (এসপি), রেঞ্জ ডিআইজি (উপমহাপরিদর্শক), মহানগর পুলিশ কমিশনার, সব ইউনিটের প্রধান, পুলিশ সদর দপ্তরের তিনজন ডিআইজি ও সব অতিরিক্ত আইজিপি এবং আইজিপিদের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।

অনুষ্ঠানে পুলিশের পক্ষ থেকে ‘স্বাধীন পুলিশ কমিশন’ গঠনের দাবি উপস্থাপন করা হতে পারে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পুলিশের একশ্রেণির সদস্য নির্বিচার গুলি করে অসংখ্য মানুষ হত্যা করেছে। এ জন্য অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর পুলিশকে প্রভাবমুক্ত ও নিরপেক্ষ রাখতে স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠনের দাবি ওঠে।

পুলিশ সদরদপ্তরের মুখপাত্র এআইজি ইনামুল হক সাগর বলেন, প্রধান উপদেষ্টা পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেবেন। এতে তারা উজ্জীবিত হবেন। বাহিনীতেও ইতিবাচক বার্তা যাবে। পুলিশের আরেক কর্মকর্তা বলেন, সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের সঙ্গে বৈঠক হলে সেখানে স্বাভাবিকভাবে নানা প্রত্যাশা ও সমস্যার কথা তুলে ধরা হয়। এই বৈঠকেও এ ধরনের বিষয় সামনে আসতে পারে।

অন্তর্বর্তী সরকার গত ৩ অক্টোবর পুলিশ সংস্কার কমিশন গঠন করে। কমিশন ১৫ জানুয়ারি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয়। সংস্কার কমিশনের শিক্ষার্থী প্রতিনিধি পুলিশের জন্য পৃথক একটি কমিশন গঠনের পক্ষে মত দেন।

সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুলিশ সংস্কার কমিশন একটি নিরপেক্ষ প্রভাবমুক্ত ‘পুলিশ কমিশন’ গঠনের বিষয়ে নীতিগতভাবে ঐকমত্য পোষণ করে। প্রস্তাবিত পুলিশ কমিশন আইনের আওতায় অন্তর্ভুক্ত সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হবে, নাকি সাংবিধানিক কাঠামোভুক্ত একটি প্রতিষ্ঠান হবে– সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞ মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত হওয়া বাঞ্ছনীয়। এ ছাড়া পুলিশ কমিশনের গঠন, কার্যপরিধি, সাংবিধানিক বা আইনি বাধ্যবাধকতা ইত্যাদি বিষয় আরও বিচার-বিশ্লেষণ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা প্রয়োজন। বাছাই কমিটির সুপারিশের মাধ্যমে বিভিন্ন পেশা থেকে চারজন অরাজনৈতিক ব্যক্তি পুলিশ কমিশনের সদস্য হবেন। এর মধ্যে একজন আইনজ্ঞ, একজন অবসরপ্রাপ্ত আইজিপি, সমাজবিজ্ঞান বা পুলিশিং বিষয়ে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন শিক্ষাবিদ ও একজন মানবাধিকারকর্মী থাকবেন।

পুলিশ সূত্র জানায়, প্রতিবেদনের এই অংশ নিয়ে জোর আপত্তি রয়েছে পুলিশ সদস্যদের। সংস্কার কমিশন তাদের সুপারিশে সাধারণ মানুষের চাওয়াকে অগ্রাহ্য করেছে বলেও মনে করেন পুলিশ সদস্যরা। তারা বলছেন, কমিশন গঠনই করা হয়েছে বিশেষজ্ঞ সদস্যদের মাধ্যমে। সেখানে যখন সংস্কার কমিশনের সুপারিশে ‘বিশেষজ্ঞ মতামত’ গ্রহণের কথা বলা হয়, তখন তাদের ভূমিকা ও সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এ ছাড়া ‘পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও বিচার-বিশ্লেষণের’ কথাটিকে সংস্কার প্রক্রিয়া ঝুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা বলেও মনে করছেন কর্মকর্তাদের অনেকে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কর মকর ত পর স থ ত সদস য গঠন র

এছাড়াও পড়ুন:

বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা জব্দ: গাইবান্ধার সেই প্রকৌশলী ছাড়া পেলেন মুচলেকায়

নাটোরের সিংড়ায় আটক গাইবান্ধার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাবিউল ইসলামকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। লিখিত মুচলেকা নিয়ে পরিবারের জিম্মায় তাকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।

শুক্রবার (১৪ মার্চ) বিকেলে সাবিউল ইসলামকে ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসমাউল হক।

তিনি বলেন, সন্দেহভাজন হিসেবে প্রাইভেটকারটি তল্লাশি চালিয়ে ৩৬ লাখ ৯৪ হাজার ৩০০ টাকা জব্দ করা হয়। একইসঙ্গে গাড়িতে থাকা সাবিউল ইসলাম ও গাড়ির চালককে আটক করে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়। এরপর দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তদন্তের জন্য ডাকলে যেকোনও সময় হাজির হতে বাধ্য থাকবেন তিনি। পুরো বিষয়টি উদঘাটন করার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।

এর আগে, বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) রাত ২টার দিকে নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের চলনবিল গেট এলাকায় পুলিশের নিয়মিত চেকপোস্টে তল্লাশি করা হয়। এ সময় প্রাইভেটকারে থাকা ৩৬ লাখ ৯৪ হাজার ৩০০ টাকা জব্দ করা হয়। পরে টাকা ও প্রাইভেটকারটি জব্দ করে গাড়ির আরোহী প্রকৌশলী পরিচয় দেওয়া সাবিউল ও চালককে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।

অভিযোগের বিষয়ে মোবাইল ফোনে নির্বাহী প্রকৌশলী সাবিউল ইসলাম দাবি করেন, জমি বিক্রির বৈধ টাকা নিয়ে গাইবান্ধা থেকে রাজশাহী যাচ্ছিলেন। এর মধ্যে তল্লাশির নামে পুলিশ তাকে আটক করে। বর্তমানে রাজশাহীর মহানগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকার বাসায় অবস্থান করছেন তিনি।

তিনি বলেন, আটকের বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্নভাবে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। যেহেতু বিষয়টি দুদক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তদন্ত করে দেখছে সে কারণে তদন্তেই ঘটনার প্রকৃত সত্য উদঘাটন হবে বলে আশা রাখি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পুলিশের ১২৭ কর্মকর্তা সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক চলছে
  • চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিয়ে চায় সরকার: প্রেস সচিব
  • পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সোমবার জরুরি বৈঠকে বসবেন প্রধান উপদেষ্টা
  • পুলিশ শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সোমবার জরুরি বৈঠকে বসবেন প্রধান উপদেষ্টা
  • ফেনীতে সাত মাসে ১৯ খুন, ২৭ ধর্ষণ
  • মুচলেকা দিয়ে জামিন পেলেন এলজিইডির সেই নির্বাহী প্রকৌশলী
  • সিপিবির কার্যালয়ের সামনে সতর্ক অবস্থানে পুলিশ, বিকেলে শোকমিছিল
  • সিপিবি কার্যালয়ে ধর্ষণবিরোধী কর্মসূচি, নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী
  • বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা জব্দ: গাইবান্ধার সেই প্রকৌশলী ছাড়া পেলেন মুচলেকায়