হঠাৎ ভিসা বাতিল জেনে যেভাবে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়লেন কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারতীয় শিক্ষার্থী
Published: 17th, March 2025 GMT
দিনটা ছিল শুক্রবার। সাতসকালে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের তিনজন অভিবাসন কর্মকর্তা নিউইয়র্কের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি আবাসিক ফ্ল্যাটের দরজায় হাজির হন। তল্লাশির জন্য সেখানে যান তাঁরা কিন্তু দরজা খোলা হয়নি।
ওই অ্যাপার্টমেন্টে থাকতেন ভারতীয় শিক্ষার্থী রঞ্জনী শ্রীনিবাসন। তিনি জানতে পারেন, মার্কিন কর্তৃপক্ষ তাঁর শিক্ষার্থী ভিসা বাতিল করেছে। পরের রাতে (শনিবার) অভিবাসন কর্মকর্তারা আবার তাঁর ফ্ল্যাটের দরজায় হাজির হন। ওই সময় রঞ্জনী ওই ফ্ল্যাটে ছিলেন না।
এর কয়েক ঘণ্টা পর (রোববার) একই ক্যাম্পাসের আবাসিক এলাকা থেকেই গ্রেপ্তার করা হয় কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী মাহমুদ খলিলকে। এই ফিলিস্তিনি গত বছর কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ফিলিস্তিনপন্থীদের বিক্ষোভে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন।
এসব ঘটনায় শঙ্কা মাথায় নিয়ে দ্রুত ব্যাগ গুছিয়ে ক্যাম্পাস ছাড়েন রঞ্জনী। কেননা, গত বছরের বিক্ষোভের সময় তিনিও গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। যা–ই হোক, নিউইয়র্কের লাগার্ডিয়া বিমানবন্দর থেকে উড়োজাহাজে চেপে কানাডায় পাড়ি জমান রঞ্জনী। প্রিয় বিড়ালটিকে রেখে আসেন একজন বন্ধুর জিম্মায়।
অভিবাসন কর্মকর্তারা গত বৃহস্পতিবার আবারও রঞ্জনীর ফ্ল্যাটে যান। বিচারিক পরোয়ানা নিয়ে তাঁরা রঞ্জনীর ফ্ল্যাটে আসেন। ততক্ষণে রঞ্জনী যুক্তরাষ্ট্র ছেড়েছেন।
৩৭ বছর বয়সী রঞ্জনী শ্রীনিবাসন গত শুক্রবার নিউইয়র্ক টাইমসের সঙ্গে কথা বলেন। যুক্তরাষ্ট্র ছাড়ার পর এটাই তাঁর কোনো সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে প্রথম আলাপ। তিনি বলেন, ‘আমি খুবই দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলাম।’
রঞ্জনী ফুলব্রাইট বৃত্তি পেয়ে নগর পরিকল্পনা বিষয়ে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করছিলেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গত বছর ক্যাম্পাসে ফিলিস্তিনপন্থীদের বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের ওপর ফেডারেল অভিবাসন ক্ষমতা ব্যবহার করে কঠোর ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছেন। এ জালে আটকে গিয়েছে রঞ্জনীর ভাগ্য।
কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনপন্থীদের বিক্ষোভের পরিচিত মুখ মাহমুদ খলিলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কল ম ব য়
এছাড়াও পড়ুন:
হার্ভে উইনস্টেইনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও যৌন অপরাধের মামলার বিচার আবার শুরু হচ্ছে
যুক্তরাষ্ট্রের প্রযোজক হার্ভে উইনস্টেইনের বিরুদ্ধে করা ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের মামলার বিচারকাজ আবার শুরু হতে যাচ্ছে। নিউইয়র্কের একটি আদালতে আগামী মঙ্গলবার এ বিচারকাজ শুরু হবে।
ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের অভিযোগে হওয়া মামলায় যুক্তরাষ্ট্রের এই মিডিয়া মোগলকে দোষী সাব্যস্ত করে সাজা ঘোষণা করা হয়েছিল।
জোডি ক্যানটর ও মেগান টুহে নামের নিউইয়র্ক টাইমসের ২ প্রতিবেদক ২০১৭ সালের ৫ অক্টোবর হার্ভে উইনস্টেইনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলে প্রতিবেদন লিখে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন। তাঁদের প্রতিবেদনের সূত্র ধরে সে সময় সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছিল ‘হ্যাশট্যাগ মি টু’ আন্দোলন।
উইনস্টেইনের বিরুদ্ধে তাঁর সাবেক প্রযোজনা সহকারী মিমি হ্যালেইকে যৌন নির্যাতন (২০০৬ সালে) এবং অভিনেত্রী জেসিকা মানকে ধর্ষণের (২০১৩ সালে) অভিযোগে মামলা হয়েছে।
২০২০ সালে নিউইয়র্কের একটি জুরিবোর্ড মিমি হ্যালেইকে যৌন নির্যাতন এবং অভিনেত্রী জেসিকা মানকে ধর্ষণসহ উইনস্টেইনের বিরুদ্ধে আনা পাঁচটি অভিযোগের দুটিতে তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করেন। তখন উইনস্টেইনকে ২৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন উইনস্টেইনের আইনজীবীরা। ২০২৪ সালের এপ্রিলে একটি আপিল আদালত নিউইয়র্ক জুরিবোর্ডের ওই আদেশ বাতিল করে দেন।
আপিল আদালত থেকে বলা হয়, উইনস্টেইনের বিচারের সময় আদালতে যেভাবে সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে, তা যথাযথ আইন মেনে হয়নি। আদালত থেকে বিচারকাজ আবার শুরু করার আদেশও দেওয়া হয়।
আগামী মঙ্গলবার ম্যানহাটন ফৌজদারি আদালতে উইনস্টেইনের বিচারকাজ শুরু হবে। ছয় সপ্তাহের মধ্যে বিচারকাজ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
উইনস্টেইনের বয়স এখন ৭৩ বছর। তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের নতুন করে তদন্ত করা হবে বলে আশা করেন তিনি।
আরও পড়ুন'মি টু' আন্দোলনের জয়, দোষী সাব্যস্ত উইনস্টেইন২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০উইনস্টেইন তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের অভিযোগ কখনো স্বীকার করেননি; বরং দাবি করেন যে তিনি কোনো ভুল করেননি। যা কিছু হয়েছে, তা পারস্পরিক সম্মতিতে।
ক্যালিফোর্নিয়ায় অন্য একটি ধর্ষণের মামলায় ২০২৩ সালে আদালত উইনস্টেইনকে দোষী সাব্যস্ত করে ১৬ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন।
আরও পড়ুনজোলি আর গিনেথকেও কুপ্রস্তাব দিয়েছিলেন হার্ভে১১ অক্টোবর ২০১৭