ঈদে নতুন পোশাকের পাশাপাশি নতুন নোট সংগ্রহ করে থাকেন অনেকে। শিশুদের ঈদ আনন্দের বড় অংশজুড়ে থাকে নতুন টাকা। তবে এবারের ঈদে নতুন নোট বাজারে আসছে না। এর প্রভাব পড়েছে নতুন নোট বিক্রির দোকানগুলোতে। এসব দোকান থেকে ক্রেতাদের ৫, ১০, ২০ টাকাসহ সব ধরনের নতুন নোট কিনতে হচ্ছে আগের চেয়ে বাড়তি টাকায়। প্রতি বান্ডিলের দাম গত ঈদের মৌসুমের চেয়ে ২০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

চট্টগ্রাম নগরের নিউমার্কেট এলাকায় বিভিন্ন অস্থায়ী দোকানে নতুন নোট বিক্রি হয়। সেখানে ঈদের আগে থেকে নতুন নোট বিক্রির জন্য সাজিয়ে রাখেন বিক্রেতারা। প্রতিবারই এসব দোকানে সবচেয়ে বেশি চাহিদা থাকে ১০ ও ২০ টাকার নোটের।

গতকাল রোববার সরেজমিনে বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ দোকানে ১০ টাকার নতুন নোট নেই। যেসব দোকানে রয়েছে, সেখানে বিক্রেতারা ১০ টাকার এক বান্ডিল নতুন নোটের জন্য ১ হাজার ৪০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৪৫০ টাকা চাচ্ছেন। ১ বান্ডিলে ১০০টি ১০ টাকার নোট থাকে এবং এর মূল্যমান ১ হাজার টাকা। অর্থাৎ একটি ১০ টাকার নতুন নোটের দাম পড়ছে সাড়ে ১৪ টাকা। অন্যদিকে ২০ টাকার ১০০টি নতুন নোটের বান্ডিলের জন্য চাওয়া হচ্ছে ২ হাজার ৩৫০ থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকা।

এবারের ঈদে নতুন নোট বাজারে আসবে না—এমন খবরে দোকানগুলোতে বিক্রেতারা দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁরা মূলত ছেঁড়া ও পুরোনো টাকার ব্যবসা করেন। এ ছাড়া রমজানের আগে নতুন নোট সংগ্রহ করে বিক্রি করেন। বিক্রেতারা জানান, এ বছর নতুন নোটের জন্য বান্ডিলপ্রতি ক্রেতাদের ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা বাড়তি খরচ করতে হচ্ছে। গত বছর রমজানের সময় ২০০ থেকে ২৫০ টাকা বাড়তি দিয়েই মিলেছে নতুন নোটের বান্ডিল।

ঈদ সামনে রেখে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিবছরই নতুন নোট বাজারে ছাড়ে। তবে আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গত ১০ মার্চ জনসাধারণের মধ্যে নতুন নোট বিনিময় স্থগিত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, টাকায় শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি থাকায় বাধে আপত্তি।

নগরের নিউমার্কেট এলাকায় অন্তত ১০ থেকে ১৫ জন অস্থায়ী দোকানি নতুন টাকা বিক্রি করেন। সরেজমিনে ঘুরে দোকানগুলোতে তেমন ক্রেতা দেখা যায়নি। ব্যবসায়ীরা জানান, ২০ রোজার পর থেকে ক্রেতাদের মধ্যে নতুন টাকার চাহিদা বাড়বে।

১৯৮৬ সাল থেকে বিপণিবিতানের নিচে নতুন টাকা বিক্রি করে আসছেন কামাল হাওলাদার। স্ত্রী ও দুই ছেলে নিয়ে সংসার তাঁর। স্থায়ী নিবাস পটুয়াখালীতে। জীবিকার তাগিদে ১৯৮৬ সালে চট্টগ্রামে এসে পরিচিতদের মাধ্যমে যুক্ত হন এ পেশায়। বর্তমানে নিউমার্কেট এলাকার নতুন নোট বিক্রেতাদের মধ্যে তিনিই সবচেয়ে প্রবীণ। তবে চট্টগ্রামে নতুন টাকা বিক্রির প্রচলন আরও আগে হয়েছে বলে জানান তিনি।

কামাল হাওলাদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগের বছরের তুলনায় এ বছর ক্রেতা কম। বাংলাদেশ ব্যাংক টাকা দিচ্ছে না, তাই দাম বেশি। আমি ১০ টাকার বান্ডিল এবার পাইনি। দামও বেশি তাই আর সংগ্রহ করিনি। ৫০ টাকার বান্ডিল আছে বেশি। পাশাপাশি ১০০ ও ২০০ টাকার বান্ডিলও আছে।’

নতুন নোট বিক্রির জন্য ক্রেতার অপেক্ষায় এক বিক্রেতা.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: নত ন ন ট ব ক র র নত ন ন ট নত ন ন ট র নত ন ট ক ১০ ট ক র র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

গোপালগঞ্জে প্রতিবন্ধী যুবক হত্যা রহস্য উন্মোচন

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার কুশলা ইউনিয়নের লাখিরপাড়া গ্রামের আলোচিত ডাকাতিকালে প্রতিবন্ধী যুবক পিয়াস মজুমদার হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ।

মূলত ঋণের টাকা শোধ ও ব্যবসার মূলধন যোগাড় করতে ডাকাতির পথ বেছে নেয় তারা। আর ডাকাতি করতে গিয়েই প্রতিবন্ধী যুবককে হত্যা করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত তিন জনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার এ তথ্য জানিয়েছেন।

শনিবার (১৫ মার্চ) বিকালে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের হল রুমে প্রেস ব্রিফিং করে এসব তথ্য জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- উপজেলার চোরখুলী গ্রামের আতাউর শেখের ছেলে সামিউল শেখ (৩৫), একই উপজেলার আশুতিয়া গ্রামের সোহরাফ খানের ছেলে মো. মোরশেদ ওরফে কামাল (৪০) ও চোরখুলি গ্রামের রহম ভুইয়ার ছেলে শওকত ভুইয়া (৫০)। 

এদেরকে কোটালীপাড়া, গোপালগঞ্জ জেলা শহর ও বাগেরহাট থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় এদের কাছ থেকে পুলিশ লুণ্ঠিত ২৪ হাজার ১০০টাকা উদ্ধার করে।

পুলিশ সুপার জানান, হত্যা ও ডাকাতির ঘটনার দিন ১১ মার্চ নিহত পিয়াসের বাবা পল মজুমদার খোকন বাদি হয়ে থানায় একটি মামলা করেন। পরদিন ১২ মার্চ উপজেলার চোরখুলী গ্রাম থেকে সামিউল শেখকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যমতে বাগেরহাট জেলায় অভিযান চালিয়ে মো. মোরশেদ ওরফে কামালকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর গতকাল শুক্রবার (১৪ মার্চ) রাতে গোপালগঞ্জ শহর থেকে শওকত ভুইয়াকে (৫০) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে এদের কাছ থেকে ২৪ হাজার ১০০টাকা উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ সুপার বলেন, “এর আগে প্রথমে ৮ ও ১০ মার্চ ডাকাতির চেষ্টা চালালেও তারা ব্যর্থ হয়। পরে ১১ মার্চ তারা ঘটনাটি ঘটিয়েছে। ডাকাতি শেষে তারা লুণ্ঠিত টাকা ও মালামাল ভাগাভাগি করে নেয় এবং সেই টাকা দিয়ে ঋণ পরিশোধ করে। শওকত ভুইয়ার নামে ১১টি মামলা রয়েছে।”

প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার (১১ মার্চ) কোটালীপাড়া উপজেলার লাখিরপাড় গ্রামের পল মজুমদার খোকন নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে দিনে দুপুরে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এসময় ডাকাতরা তার ছেলে পিয়াস মজুমদারকে হাত পা বেঁধে হত্যা করে টাকা পয়সা, স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। হত্যা ও ডাকাতির ঘটনায় ওই দিনই পল মজুমদার খোকন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনের বিরুদ্ধে কোটালীপাড়া থানায় একটি হত্যা ও ডাকাতি মামলা দায়ের করেন।

ঢাকা/বাদল/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শচীনের গৌরবের নতুন মানদণ্ড সেঞ্চুরির সেঞ্চুরি
  • গোপালগঞ্জে প্রতিবন্ধী যুবক হত্যা রহস্য উন্মোচন