তবে যাত্রীদের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে মেট্রোরেল চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সেই মোতাবেক কর্মীদের কর্মবিরতির মধ্যেও আজ সোমবার সকাল থেকে শিডিউল মোতাবেক চলছে মেট্রোরেল। কোনো কোনো কাউন্টারে লোক থাকলেও তারা টিকিট বিক্রয় কার্যক্রম থেকে বিরত ছিলেন। এর ফলে টিকিট ছাড়াও অনেকে চলাচল করেন বলে জানা গেছে।

বেসরকারি চাকরিজীবী মো.

তরিকুল ইসলাম সমকালকে জানান, ‘আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশন থেকে ট্রেনে উঠি। কিন্তু কাউন্টারে লোক থাকলেও তারা টিকিট বিক্রয় কার্যক্রম থেকে বিরত ছিলেন। ফলে টিকিট ছাড়াই ফার্মগেটে আসি।’

এর আগে গতকাল রাত দুইটার দি‌কে ‘ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের সব কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ’ এর ব্যানারে ঘটনা তুলে ধরে এক বিজ্ঞপ্তিতে ৬ দফা দাবি জানানো হয়। দাবিগু‌লো হ‌লো- এক কার্যদিবসের মধ্যে ঘটনার মূল হোতা পুলিশের উপপ‌রিদর্শক মাসুদকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত এবং প‌রিদর্শক র‌ঞ্জিত, কন্সটেবল শাস্তি দি‌তে হবে। তাদেরকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। এমআর‌টি পু‌লিশ বি‌লোপ ক‌রে মে‌ট্রো‌রেলের নিরাপত্তায় নিজস্ব বা‌হিনী‌ গঠন কর‌তে হ‌বে। স্টেশ‌নে দা‌য়িত্ব পালন করা মে‌ট্রো কর্মকর্তা ও কর্মচারী‌দের শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। পরিচয়পত্র এবং অনুমতি ছাড়া কোন ব্যক্তি স্টেশনের পেইড জোনে প্রবেশ করতে পার‌বে না। আহত কর্মীর চিকিৎসার দায়িত্ব কর্তৃপক্ষকে নিশ্চিত করতে হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হ‌য়, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত মেট্রোরেলের সব স্টাফ কর্মবিরতি পালন করবে। প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হ‌বে। একা‌ধিক কর্মী জানান, ১৭ মার্চ সকাল থেকে ট্রেন চালানো হ‌বে না।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও দা‌বি করা হ‌য়ে, রোববার বিকেল সোয়া ৫টার দি‌কে দুজন নারী পরিচয়পত্র না দে‌খি‌য়ে বিনা টিকিটে ভ্রমণ করে, স্টেশ‌নের সুইং গেইট ব্যবহার করে পেইড জোন থেকে বের হতে চান। নির্ধারিত পোশাক পরিহিত না হওয়ায় তাদের পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীরা সুইং গেইট দিয়ে বের হওয়ার কারণ জানতে চাই‌লে সংশ্লিষ্ট পুলিশের কর্মকর্তারা উত্তেজিত হয়ে তর্কে জড়ান। একপর্যায়ে এমআরটি পুলিশের কন্ট্রোল রুমে চলে যান। পরবর্তীতে পু‌লি‌শের এপিবিএন দুইজন সদস্য সুইং গেইট ব্যবহার করে, তা না লাগিয়ে চলে যান। মে‌ট্রোর কর্মীরা কারণ জানতে চাই‌লে, তারা এবং কন্ট্রোল রুম থেকে আরও কয়েকজন পুলিশ এসে তর্কে জড়ান। কর্মরত কর্মীর কাঁধে বন্ধুক দিয়ে আঘাত করে। আরেকজন কর্মী‌কে এমআরটি পুলিশ বক্সে তু‌লে নিয়ে মারধর করে। এছাড়াও বন্দুক তাক করে গুলি করার হুম‌কি দেয়। পরে উপস্থিত অন‌্যান‌্য কর্মী ও যাত্রীরা এমআরটি পুলিশের হাত থেকে কর্মকর্তাকে উদ্ধার ক‌রে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কর মকর ত র কর ম কর ম র

এছাড়াও পড়ুন:

ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ হঠাৎ বাড়ছে

দেশের ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকারের ঋণ হঠাৎ করে বাড়তে শুরু করেছে। চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে গত ১০ মার্চ পর্যন্ত সরকার নিট ৩৮ হাজার ৫১০ কোটি টাকার ঋণ নিয়েছে। গত জানুয়ারি পর্যন্ত যেখানে সরকারের ব্যাংক ঋণ ছিল ১৩ হাজার ৫৭১ কোটি টাকা। এর মানে প্রথম ৭ মাসে সরকার যে পরিমাণ ঋণ নিয়েছিল, শেষ এক মাস ১০ দিনে নিয়েছে তার প্রায় দ্বিগুণ। ব্যাংক খাত থেকে ঋণ বাড়ার কারণের মধ্যে রাজস্ব আদায় কম হওয়া, সঞ্চয়পত্র থেকে প্রত্যাশিত ঋণ না পাওয়া এবং বিদেশি উৎস থেকে ঋণছাড় কমে যাওয়া উল্লেখযোগ্য।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, অর্থবছরের শেষ সময়ে স্বাভাবিকভাবে সরকারের ঋণ বেড়ে থাকে। তবে এখন পর্যন্ত যে ঋণ নিয়েছে, লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় তা অনেক কম। আওয়ামী লীগ সরকারের দেওয়া বাজেটে চলতি অর্থবছর ব্যাংক  থেকে ১  লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ঋণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। তবে অন্তর্বর্তী সরকার লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ৯৯ হাজার কোটি টাকা করেছে। গভর্নর জানিয়েছেন, ব্যাংক খাতের বর্তমান বাস্তবতায় সরকারের ঋণ ৯০ হাজার কোটি টাকার মধ্যে সীমিত রাখা হবে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, বর্তমান সরকার ব্যয় সংকোচন নীতিতে চলছে। তবে বকেয়া ঋণ ও সুদ পরিশোধ অনেক বেড়েছে। আবার বেতন-ভাতাসহ সরকারের চলতি ব্যয় প্রতিবছর বেড়ে থাকে। তবে চলতি

অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে এনবিআরের রাজস্ব
আদায় গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১ হাজার ৫৪৩ কোটি টাকা কমে ১ লাখ ৫৬ হাজার ৪৪৬ কোটি টাকায় নেমেছে। সঞ্চয়পত্র থেকে নিট ঋণ ঋণাত্মক। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬ মাসে যা ঋণ
নেওয়া হয়েছে, তার চেয়ে এ খাতে আগের দায় শোধ হয়েছে ২ হাজার ২৪৪ কোটি টাকা বেশি। এ ছাড়া বিদেশি উৎস থেকে ঋণ ছাড় ও প্রতিশ্রুতি কমেছে। সব মিলিয়ে শেষ দিকে এসে
ব্যাংক ঋণে নির্ভরতা কিছুটা বাড়ছে। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের গত ১০ মার্চ পর্যন্ত বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে সরকার ৮৫ হাজার ৬৬৩ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। এ সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে আগে নেওয়া ঋণের ৪৭ হাজার ১৫৩ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে। বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে ঋণ নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পরিশোধ করায় মুদ্রাবাজার সংকোচন হয়। অবশ্য এ সময়ে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে টাকা ছাপিয়ে ২৯ হাজার ৪১০ কোটি টাকা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাজারে মুদ্রা সরবরাহ বাড়াতে যা কিছুটা হলেও সহায়ক ভূমিকা রেখেছে। 
মূলত বিগত সরকারের সময়ে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় কয়েকটি ব্যবসায়ী গ্রুপ ঋণের নামে বিপুল পরিমাণের অর্থ আত্মসাৎ করে। এখন আর সে ঋণ ফেরত না আসায় কোনো কোনো ব্যাংক আমানতকারীদের অর্থ ঠিকমতো ফেরত দিতে পারছে না। যে কারণে গত নভেম্বর থেকে তিন দফায় বিশেষ ধার দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। 
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী গত ১০ মার্চ সার্বিকভাবে ব্যাংক ব্যবস্থায় সরকারের ঋণস্থিতি দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ১২ হাজার ৯৯৯ কোটি টাকা। গত জুন শেষে যা ছিল ৪ লাখ ৭৪ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা। বাণিজ্যিক ব্যাংকে ঋণস্থিতি বেড়ে ৪ লাখ ৪ হাজার ১০৫ কোটি টাকা হয়েছে। গত জুন শেষে যা ছিল ৩ লাখ ১৮ হাজার ৪৪১ কোটি টাকা। আর বাংলাদেশ ব্যাংকে স্থিতি কমে ১ লাখ ৮ হাজার ৮৯৫ কোটি টাকায় নেমেছে। গত জুন শেষে যা ছিল ১ লাখ ৫৬ হাজার ৪৮ কোটি টাকা। গত সরকারের সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে গোপনে ‘ওভারড্রাফট’ খাতে নেওয়া ৪৮ হাজার ৭৪৬ কোটি টাকা সমন্বয় করে এখন ৬ হাজার ৭৪২ কোটি টাকায় নেমেছে। 

সংশ্লিষ্টরা জানান, উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে এমনিতেই মানুষের সঞ্চয় ক্ষমতা কমেছে। গত বছর আমানত বেড়েছে মাত্র ৭ দশমিক ৪৭ শতাংশ। এ সময়ে ট্রেজারি বিল এবং বন্ডের বিপরীতে ঋণ নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আগের দায় শোধ করা হচ্ছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য নীতি সুদহার বাড়িয়ে ১০ শতাংশে নেওয়া হয়েছে। গত ফেব্রুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি কমে ৯ দশমিক ৩৪ শতাংশে নেমেছে। মূল্যস্ফীতি আরও কমবে বলে মনে করেন গভর্নর।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কর্মবিরতিতেও চলছে মেট্রোরেল, সকালে টিকিট ছাড়াই গন্তব্যে অনেক যাত্রী
  • কর্মবিরতিতেও চলছে মেট্রোরেল, সকালে টিকিট ছাড়াই গন্তব্যে যাত্রীরা
  • কর্মবিরতিতেও চলছে মেট্রোরেল, টিকিট ছাড়াই গন্তব্যে যাত্রীরা
  • কর্মবিরতিতেও চলছে মেট্রোরেল, টিকিট ছাড়াই চলাচল করছেন যাত্রীরা
  • চলছে মেট্রোরেল কর্মীদের কর্মবিরতি, র‍্যাপিড পাস ছাড়া যেতে পারছে ন
  • এমআরটি পুলিশ-মে‌ট্রো কর্মচারী‌দের হাতাহা‌তি, ট্রেন ব‌ন্ধের হুঁ‌শিয়া‌রি
  • এমআরটি পুলিশ-মে‌ট্রো কর্মচারী‌দের হাতাহা‌তি, সকাল থেকে বন্ধ মেট্রোরেল
  • এমআরটি পুলিশ ও মে‌ট্রো কর্মচারী‌দের হাতাহা‌তি, ট্রেন ব‌ন্ধের হুঁশিয়া‌রি
  • ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ হঠাৎ বাড়ছে