জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা আত্মহত্যার ঘটনার এক বছর পূর্ণ হয়েছে গতকাল শনিবার (১৫ মার্চ)। তবে তাঁর আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে মায়ের করা মামলায় পুলিশ এক বছরেও অভিযোগপত্র জমা দেয়নি।

মায়ের অভিযোগ, এ ঘটনায় ‘দোষীদের বিরুদ্ধে’ ব্যবস্থা নিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গাফিলতি করেছে। পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সহযোগিতা করেনি।

অবন্তিকার মা তাহমিনা বেগম গতকাল প্রথম আলোর প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলেছেন । সেখানে তিনি এসব অভিযোগ করেন। কাঁদতে কাঁদতে একমাত্র মেয়েকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন এই মা।

তাহমিনা বেগম বলেন, ‘ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা আমার একমাত্র মেয়ে। তাকে শুধু মেধাবী নয়, একজন ভালো মানুষ হিসেবে আমি প্রস্তুত করেছি। তাকে বড় করে তুলতে শিক্ষকতার চাকরি ছেড়ে দিয়েছি। আজ আমার একমাত্র মেয়ে কবরে শুয়ে আছে। স্বপ্ন ছিল, মেয়েকে আমি ম্যাজিস্ট্রেট বানাব, কিন্তু পারিনি।’

অবন্তিকার মা বলেন, ‘আমার মেয়ে পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছে আজ এক বছর হলো। কিন্তু কোনো দৃশ্যমান বিচার আমি পাইনি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশ কোনো সহযোগিতা করছে না।’

পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ এনে অবন্তিকার মা বলেন, ‘মামলার আগের তদন্ত কর্মকর্তা বদলি হয়ে গেছেন অনেক আগে। নতুন একজন এসেছেন। তিনি আমার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ রাখেননি। আমি থানায় গিয়ে খোঁজ নিয়ে আসি। পুলিশ আমাকে বলে, ‘‘আপনি সাক্ষীদের হাজির করেন।’’’ তিনি আরও বলেন, ‘সাক্ষীদের যদি প্রয়োজন হতো, তাহলে মামলার এজাহারে সাক্ষীদের পরিচয় এবং যোগাযোগের ঠিকানা ও নম্বর দেওয়া আছে, সেখান থেকে তিনি নিতে পারতেন। কিন্তু তা করেননি, উল্টো আমি একজন সাক্ষীকে পাঠিয়েছি, তাঁর নাম–ঠিকানা লিখে চলে যেতে বলেছে পুলিশ। আমি কোনো ভরসা পাচ্ছি না।’

অবন্তিকার মায়ের করা মামলা বর্তমানে তদন্ত করছেন কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মিজানুর রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা মামলার সাক্ষী ও অবন্তিকার পরিবার থেকে তদন্তের ক্ষেত্রে তেমন কোনো সহায়তা পাচ্ছি না। তবে অবন্তিকা ও আসামিদের মুঠোফোনের ফরেনসিক পরীক্ষা হয়েছে। সেখানে ভালো কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। চেষ্টা করছি দ্রুত তদন্ত কাজ শেষ করার।’

ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা আমার একমাত্র মেয়ে। তাকে শুধু মেধাবী নয়, একজন ভালো মানুষ হিসেবে আমি প্রস্তুত করেছি। তাকে বড় করে তুলতে শিক্ষকতার চাকরি ছেড়ে দিয়েছি। আজ আমার একমাত্র মেয়ে কবরে শুয়ে আছে। স্বপ্ন ছিল, মেয়েকে আমি ম্যাজিস্ট্রেট বানাব, কিন্তু পারিনি।’অবন্তিকার মা তাহমিনা বেগম

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের বিরুদ্ধেও অভিযোগ করেন তাহমিনা বেগম। বলেন, ‘উপাচার্যকে আমি ফোন করেছিলাম, তিনি আমাকে জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কবে কী বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সেটা তিনি আমাকে বলেননি। একজন মেয়েহারা শিক্ষার্থীর মা হিসেবে আমি জানতে চাইতেই পারি। কিন্তু আমি কোনো উত্তর পাইনি।’ তিনি বলেন, ‘আমি কোষাধ্যক্ষকে ফোন করেছিলাম। তিনি বললেন, রেজিস্ট্রার থেকে জেনে নিতে। আমি ফোনে কল দেওয়ার পর রেজিস্ট্রার আমাকে বলেন, সিদ্ধান্ত যেন আমি আদালত থেকে জেনে নিই। তিনি আমার সঙ্গে আরও মিসবিহ্যাব (অসদাচরণ) করলেন। আপনারাই বলেন, আমি মেয়ের বিচার কার কাছে চাইব?’

অবন্তিকার মায়ের অভিযোগের ব্যাপারে জানতে রেজিস্ট্রার শেখ মো.

গিয়াসউদ্দিনকে একাধিকবার ফোন করা হয়। তবে তাঁকে পাওয়া যায়নি।

অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গঠন করা উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটির সদস্যদের নিয়ে অভিযোগ করেন অবন্তিকার মা। তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক এস এম মাসুম বিল্লাহকে আমি আগে থেকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছিলাম। তিনি কালক্ষেপণ করে অভিযুক্ত যারা ছিল, তারা যেন পরীক্ষা দিয়ে বের হয়ে যেতে পারে, সেই ব্যবস্থা করে রেখে গেছেন। এখন তারা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হয়ে গেল। আমি আগে থেকেই সন্দেহ করেছিলাম, এমন কিছুই একটা হবে। এখন তো তিনি নিজেই নেই। আমার ফোনকল রিসিভ করেন না।’

আমরা মামলার সাক্ষী ও অবন্তিকার পরিবার থেকে তদন্তের ক্ষেত্রে তেমন কোনো সহায়তা পাচ্ছি না। তবে অবন্তিকা ও আসামিদের মুঠোফোনের ফরেনসিক পরীক্ষা হয়েছে। সেখানে ভালো কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। চেষ্টা করছি দ্রুত তদন্ত কাজ শেষ করার।কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মিজানুর রহমান

২০২৪ সালের ১৫ মার্চ রাতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা (২৪) কুমিল্লার নিজ বাড়িতে আত্মহত্যা করেন। মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে নিজ বাড়িতে বাবার কবরের পাশে শায়িত হন অবন্তিকা।

পরে মেয়ের আত্মহত্যার ঘটনায় কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানায় অভিযোগ করেন অবন্তিকার মা। অভিযোগে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রায়হান সিদ্দিক আম্মান (২৬) এবং ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও সাবেক প্রক্টর দ্বীন ইসলামের নাম উল্লেখ করা হয়।

দাখিল করা অভিযোগে অবন্তিকার মা উল্লেখ করেন, অবন্তিকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হলে সিট পেলেও তাঁর ক্লাসমেট রায়হান সিদ্দিক আম্মান বিভিন্ন মাধ্যমে তাঁর মেয়েকে যৌন হয়রানিমূলক নিপীড়ন করেন ও বিষয়টি দ্বীন ইসলামকে জানানোর পরও তিনি আম্মানের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে উল্টো তাঁর পক্ষ নেন এবং তাঁর মেয়েকে গালমন্দ করেন। নিজেকে নিরাপদে রাখার জন্য ছাত্রী হল ছেড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে ছাত্রীদের মেসে থাকা শুরু করেন তাঁর মেয়ে। কিন্তু এরপরও অভিযুক্ত ব্যক্তিরা অবন্তিকার কয়েকজন সহপাঠীর মাধ্যমে তাঁর ওপর নজর রাখেন এবং মানসিক নিপীড়ন করতে থাকেন।

উল্লেখ্য, অবন্তিকার আত্মহত্যার খবরে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত শাস্তির আওতায় আনার দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। তাৎক্ষণিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সহকারী অধ্যাপক দ্বীন ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত ও আম্মানকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। ঘটনার পেছনে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেউ জড়িত আছেন কি না, সেটি তদন্তে গত বছরের ১৬ মার্চ পাঁচ সদস্যের উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

তদন্ত কমিটি বেশ কয়েকবার কুমিল্লায় অবন্তিকার বাড়িতে গিয়ে তাঁর মায়ের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি শিক্ষক দ্বীন ইসলাম ও শিক্ষার্থী আম্মানকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর এবং অবন্তিকার ১৫-২০ জন সহপাঠীসহ প্রায় অর্ধশত ব্যক্তির সঙ্গে ঘটনাসংশ্লিষ্ট বিষয়ে কথা বলেছে তদন্ত কমিটি।

আরও পড়ুনচার মাস আগেও আম্মানের বিরুদ্ধে নিপীড়নের অভিযোগ করেন অবন্তিকা, ব্যবস্থা নেননি প্রক্টর ১৭ মার্চ ২০২৪

তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন ও সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত

গত ২ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৯তম সিন্ডিকেট সভায় অবন্তিকার আত্মহত্যায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন উপস্থাপিত হয়। প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সভায় কিছু সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এগুলো হলো:

অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় প্ররোচনার সম্পৃক্তি দৃশ্যমানভাবে প্রমাণিত হওয়ায় রায়হান সিদ্দিকী আম্মানের বিরুদ্ধে বিধিমোতাবেক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য বিষয়টি শৃঙ্খলা বোর্ডে পাঠানো হবে।

আত্মহত্যার প্ররোচনায় আইন বিভাগের শিক্ষার্থী লাকি আকতার ও রাগিব শাহরিয়ার রাফির সংশ্লিষ্ট থাকা প্রমাণিত হওয়ায় তাঁদের বিরুদ্ধে শান্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য বিষয়টি শৃঙ্খলা বোর্ডে পাঠানো হবে।

আরও পড়ুনঅবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার শিক্ষক দ্বীন ইসলাম জামিনে মুক্ত০৮ মে ২০২৪

আইন বিভাগের শিক্ষার্থী রিমি জামান, সামিরা আক্তার, মহসিনা আক্তার, রিয়াজুল ইসলাম, গীতা মণ্ডল, মাহিমা আক্তার, আফসানা জাহানের বিরুদ্ধেও আত্মহত্যার ঘটনায় প্ররোচনা দেওয়ার বিষয়টি অনুমেয় হলেও সুনির্দিষ্টভাবে প্রমাণিত নয়—তদন্ত কমিটি এমন মতামত প্রদান করায় তাঁদের আরও দায়িত্বশীল হওয়ার ও আচরণে আরও সতর্ক হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলো।

সহকারী অধ্যাপক দ্বীন ইসলামের বিরুদ্ধে আদালতে সংশ্লিষ্ট মামলা চলমান থাকায় পরবর্তী সময়ে তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।

আইন বিভাগ সাবেক চেয়ারম্যান ও অধ্যাপক সরকার আলী আক্কাস অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় প্ররোচনার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীর দুই দফায় উত্থাপিত আবেদন গভীরভাবে অনুধাবন না করে এবং এর মাত্রিকতা বিশ্লেষণ না করে শুধু প্রক্টর বরাবর তা অগ্রায়ন করে দায়িত্ব শেষ করা, অপেশাদারসুলভ মনোভাব প্রকাশ করা, অবন্তিকা ও তাঁর মায়ের বারবার বিভাগে এসে অনুরোধ করা সত্ত্বেও বিভাগীয় পর্যায়ে সুনির্দিষ্ট ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করা এবং আত্মহত্যার ঘটনার পর পরিস্থিতি সামলানোর ক্ষেত্রে ভূমিকা না রেখে কর্তব্যে অবহেলা করায় তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় কার্যক্রম শুরু করা হবে।

সাবেক প্রক্টর ও অধ্যাপক মোস্তফা কামাল আত্মহত্যার ঘটনায় প্ররোচনার অভিযোগ ন্যায়সংগতভাবে নিষ্পত্তি করতে না পারায়, প্রক্টরিয়াল বডির করা নিষ্পত্তি ফলোআপ করতে ব্যর্থ হওয়ায়, অবন্তিকার করা অভিযোগের বিষয়ে নিষ্ক্রিয় থাকায়, বিষয়টি প্রশাসনকে অবহিত না করে ও নতুন প্রক্টরের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তরের সময়ে তা নজরে না এনে কর্তব্যে অবহেলা করায় তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় কার্যক্রম শুরু করা হবে।

জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক রেজাউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘তদন্ত কমিটি থেকে যে রিপোর্ট পেয়েছি, সে অনুসারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। যে সিদ্ধান্তগুলো আমরা নিয়েছি, সেটি প্রক্রিয়াধীন অবস্থায় আছে। খুব দ্রুত সিদ্ধান্তসমূহ আমরা বাস্তবায়ন করব।’

তবে সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তে আপত্তি জানিয়েছেন অবন্তিকার মা। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তার কোনো যৌক্তিকতা নেই। অভিযুক্তদের ছাড় দেওয়া হয়েছে, এমনকি তাদের পড়াশোনা শেষ। তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বোর্ড কী শাস্তি দেবে? তারা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হয়েছে। আমি চাই, তাদের আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হোক ও সার্টিফিকেট বাতিল করা হোক।’

আরও পড়ুনস্নাতকে চূড়ান্ত পরীক্ষায় তৃতীয় হয়েছেন সেই অবন্তিকা১৯ মে ২০২৪

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক দ ব ন ইসল ম আইন ব ভ গ র প রথম আল তদন ত ক ব যবস থ র জন য ন র পর আম ম ন পর ক ষ কর ছ ল ব ষয়ট

এছাড়াও পড়ুন:

মালিকের ‘কিছু ফুটবলার অতিরিক্ত বেতন পায়’ মন্তব্যের জবাব দিলেন ব্রুনো

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মালিকদের মধ্যে একজন হচ্ছেন স্যার জিম র‍্যাটক্লিফ। তিনি দিন দুয়েক আগে একটা সাক্ষাৎকারে দাবি করেছিলেন, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডর কিছু খেলোয়াড়ের মান যথেষ্ট ভালো নয় এবং কিছু খেলোয়াড় অতিরিক্ত বেতন পাচ্ছেন।

এই মন্তব্যটা সহজভাবে নেননি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের অধিনায়ক ব্রুনো ফের্নান্দেজ। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ, ২০২৫) দিবাগত রাতে ইউরোপা লিগের ম্যাচে রিয়াল সোসিয়েদাদের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করে দলকে কোয়ার্টার ফাইনালে তুলেছেন এই পর্তুগিজ মিডফিল্ডার। মালিকের আনা বিশাল অপবাদের হাত থেকে খানিকয়া হলেও সতীর্থদের রক্ষা করেছেন। এরপর বললেন, চুক্তিটা ক্লাবের সম্মতিতেই যখন হয়, তখন।

র‍্যাটক্লিফ সেই সাক্ষাৎকারে অবশ্য ফের্নান্দেজকে ‘অদ্বিতীয় ফুটবলার’ বলে প্রশংসাত ভাসিয়েছিলেন। তবে, অন্যান্য খেলোয়াড়দের ‘যতটুকু প্রয়োজন তত ভালো না’ এবং ‘অতিরিক্ত বেতন’ পায় বলতে শুনা যায়।

আরো পড়ুন:

আর্জেন্টিনার বিপক্ষে খেলা হচ্ছে না নেইমারের

রোনালদোর নৈপুণ্যে আল নাসরের জয়

ব্রুনো এর জবাবে বলেন, ‘এটা স্পষ্টই বলা যায় যে, এমনটা শোনা মোটেই ভালো নয়। আমার মনে হয় না কোনো খেলোয়াড়ই সমালোচনা শুনতে পছন্দ করে। বিশেষ করে যখন আপনার সম্পর্কে বলা হয় যে, আপনি যথেষ্ট ভালো নন অথবা আপনি অতিরিক্ত বেতন পাচ্ছেন”।

ফুটবলার যেমনই হোক, তাদের দলে ভিড়িয়েছে ক্লাব কতৃপক্ষ। প্রতিটা ফুটবলারই একটা চুক্তির মাধ্যমে দলে আসে আর সেই চুক্তিপত্র যে ম্যানেজম্যান্টই তৈরি করে সেই ব্যাপারটাও মনে করিয়ে দিলেন ব্রুনো, “প্রতিটি খেলোয়াড়ের নিজস্ব চুক্তি রয়েছে। ক্লাব তখনই চুক্তি করে যখন আপনি এখানে আসেন বা যখন আপনি চুক্তি নবায়ন করেন।”

এদিকে র‍্যাটক্লিফ ফের্নান্দেজের প্রশংসা করলেও রেড ডেভিলদের সাবেক অধিনায়ক রয় কিন তীব্র সমালোচনা করেছেন পর্তুগিজ মিডফিল্ডারের। কিন বলেন, “ফার্নান্দে যোদ্ধা নয় এবং তার প্রতিভা যথেষ্ট নয়।”

যদিও শেষ কয়েক বছর ধরে ইউনাইটেডকে ফের্নান্দেজ একাই টানছেন। রেড ডেভিলদের জার্সি গায়ে এখন পর্যন্ত ২৯৬ ম্যাচ খেলে করেছেন ৯৪ গোল ও ৭৯ অ্যাসিস্ট। এই মৌসুমে ইতিমধ্যেই করে ফেলেছেন ১৫ গোল ও ১৩ অ্যাসিস্ট।

সোসিয়েদাদের বিপক্ষে অসাধারণ পারফরম্যান্সের পর কিনের মন্তব্যের জবাবে ফের্নান্দেজ বলেন, “প্রত্যেকেরই একটি মতামত থাকে। আমি মানুষের মন পরিবর্তন করতে পারব না। আমি যা করি সেটা হচ্ছে মাঠে নামা এবং ক্লাবের জন্য আমার সর্বোত্তম চেষ্টা করা। কিন ক্লাবের একজন অসাধারণ অধিনায়ক ছিলেন, যাকে সবাই শ্রদ্ধা করে। আমার শ্রদ্ধাও তার প্রাপ্য। তিনি প্রোগ্রামে তার মতামত দিতে পারেন।”

“আমার অনেক কিছু উন্নতি করতে হবে, শুধু অধিনায়ক হিসেবে নয়, একজন খেলোয়াড় হিসেবেও এমনকি একজন মানুষ হিসেবেও। সেটা ঠিক আছে। সমালোচনা সবসময়ই থাকবে এবং এটি আমাকে সমৃদ্ধ করতে সাহায্য করবে এবং বুঝতে সাহায্য করবে যে এখনও অনেক কিছু শেখার বাকি আছে।"- যোগ করেন ব্রুনো।  
 

ঢাকা/নাভিদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ১২৭ কর্মকর্তার সঙ্গে আজ প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক
  • রোজার কাজা কাফফারা ফিদইয়া ও মানবিক বিধান 
  • বেড়াতে গিয়ে হামলার শিকার দম্পতি, স্বামী আহত
  • রাঙামাটিতে ইউপিডিএফ কর্মীকে গুলি করে হত্যা
  • ইংল্যান্ডে দায়িত্ব ছাড়লেন একজন, অপেক্ষায় ৫ জন
  • বাউফলে তরমুজের ট্রলারে ডাকাতির সময় পিটুনিতে একজন নিহত, আহত ৩
  • প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতির বক্তব্য, সমালোচনা
  • তেঁতুলিয়া নদীতে ট্রলারে ডাকাতি, গণপিটুনিতে নিহত ১
  • মালিকের ‘কিছু ফুটবলার অতিরিক্ত বেতন পায়’ মন্তব্যের জবাব দিলেন ব্রুনো