রমনা হত্যাকাণ্ড: কী ঘটেছিল ১৯৭৪ সালের ১৭ মার্চ
Published: 17th, March 2025 GMT
দিনটি ছিল রোববার, সরকারি ছুটির দিন। তারিখের হিসেবে ১৭ মার্চ, ১৯৭৪। ওই দিন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৫৪তম জন্মবার্ষিকী। অবশ্য ওই মার্চ মাসেই তিনি বেশ অসুস্থ ছিলেন। তাই উন্নত চিকিৎসার জন্য রুশ সরকারের আমন্ত্রণে ১৯ মার্চ সোভিয়েত ইউনিয়নের রাজধানী মস্কো যান। তাঁর ঢাকা ত্যাগের দুইদিন আগেই ঘটে সেই ঘটনা।
কী ঘটেছিল সেদিনআইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে ১৭ মার্চ পল্টনে জনসভা করে জাসদ। সভা শেষে দলের সভাপতি মেজর (অব.
‘ইত্তেফাক’ জানায়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসভবন ঘেরাও কর্মসূচিতে পুলিশ ও রক্ষীবাহিনীর হামলায় আহত ৩৬ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ছেড়ে দেওয়া হয়। ১৬ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে তিনজন মারা যান। আহতদের মধ্যে সাতজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁরা হলেন বাচ্চু মিয়া, কাজী মোস্তফা, আবুল কাশেম, আব্দুল বারেক, শাহজালাল, ফরহাদ, আবদুল হাই, শহীদুল্লাহ, আবুল হোসেন, মাঈনুদ্দীন খান বাদল, শামসুদ্দীন আজাদ, মোহাম্মদ বেলায়েত ও একজন অজ্ঞাতনামা। হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইডেন কলেজের ছাত্রী মুকুল দেসাই, জাহাঙ্গীর ও শহীদুল হক। এর মধ্যে মুকুল দেসাই ও শহীদুল হকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
সেই ঘটনায় আহতদের ছবি প্রকাশ করেছিল বাংলার বাণীউৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বান্দরবানে শান্তির সুবাতাস
৫ আগস্ট সরকার পতনের পর গত সাত মাসে বান্দরবানে বড় কোন অঘটন ঘটেনি, আইনশৃঙ্খলাও রয়েছে নিয়ন্ত্রেণ। তবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নামে বেশ কয়েকটি গায়েবি মামলা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এতে প্রায় ৬০০ নেতাকর্মী ঘরছাড়া।
৫ আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের সময় বান্দরবানেও বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভেঙ্গে ফেলে বিক্ষুদ্ধ জনতা। এর আগে জেলা আওয়ামী লীগের অফিস ভাঙচুর করে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। ভাঙচুর করা হয় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লক্ষীপদ দাশ ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি অমল দাশের বাসভবন। তিনি সাবেক পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিংয়ের খুবই ঘনিষ্ঠ ছিলেন। বীর বাহাদুরের বাসভবনেও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে বিক্ষুব্ধ জনতা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জেলা বিএনপি ও জামায়াতের শীর্ষ নেতা জানান, মন্ত্রীর বাসায় হামলার পেছনে শীর্ষস্থানীয় নেতারা জড়িত ছিলেন না। কয়েক ধাপ নিচের সারির নেতাদের ইন্ধনে পাশের সাতকানিয়া ও কেরানিহাট থেকে লোক এনে হামলা চালানো হয়েছে। কথিত আছে, দুই দফা মন্ত্রী থাকাকালীন বীর বাহাদুর স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াতের শীর্ষ কয়েকজন নেতাকে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ ও অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করেন। এ কারণে মন্ত্রীর বাসায় হামলায় তাদের কোন ইন্ধন ছিলগত সেপ্টেম্বরে পার্বত্য খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ হলেও বান্দরবানে তেমনটি ঘটেনি। আওয়ামী লীগের ১৫ বছরেও বিএনপি ও জামায়াতের সঙ্গে দলটির বড় কোন সংঘর্ষ হয়নি। বলা যায় এক ধরনের সম্প্রীতির পরিবেশ ছিল জেলাজুড়ে।
জেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক জাবেদ রেজা বলেন, ‘বান্দরবানে সবসময় সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকে। তবে আওয়ামী লীগের কতিপয় নেতার কারণে রাজনৈতিক পরিবেশ নষ্ট হয়েছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের পুলিশ দিয়ে ধরপাকড় করা হয়েছে। নির্যাতন চালানো হয়েছে। অনেকে রাত ঘরে ঘুমাতে পারেননি। বিভিন্ন গায়েবি মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়েছে।’
৬০০ জনের নামে করা মামলায় আসামি করা হয়েছে জেলা আ’লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা, সাধারণ সম্পাদক ও পরিষদ সদস্য লক্ষিপদ দাশ, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ও পরিষদ সদস্য মোজাম্মেল হক বাহাদুর, সাংগঠনিক সম্পাদক ও পৌর কাউন্সিলর অজিত দাশ, প্রচার সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রীর পিএস সাদেক হোসেনকে। এই মামলায় জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রাশেদুল ইসলাম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় দাশ আদালতে আত্বসমর্পণ করলে আদালত তাদের কারাগারে পাঠান। তবে তারা ১০-১৫ দিন পর জামিন পান। তবে আত্মসমর্পণ করা জেলা আ’লীগের প্রচার সম্পাদক সাদেক হোসেন এখনো কারাগারে রযেছেন।
জেলা জামায়াতের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও আইনজীবী মো. আবুল কালাম বলেন, ‘জামায়াত ইসলামী পরিচ্ছন্ন রাজনীতিতে বিশ্বাসী। আল্লাহর আইন ও সৎ লোকের শাসন কায়েমের জন্য অন্যায়ের পথ ধরে ক্ষমতায় যেতে চায় না।’
জেলা পুলিশ সুপার মো. শহিদুল্লাহ কাওছার বলেন, ‘আইন তার নিজস্ব প্রক্রিয়ায় চলে, কারো ইশারায় নয়। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না, সেটা যে দলেরই লোক হোক না কেন।’