ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) চারজন কর্মীকে এমআর‌টি পু‌লিশ শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত ক‌রে‌ছে অভিযোগ ক‌রে বিচার দা‌বি ক‌রে‌ছে মে‌ট্রো‌রেলের কর্মকর্তা কর্মচারীরা। তা‌দের ভাষ‌্য অনুযায়ী দায়ী পু‌লিশ সদস‌্যদের এক‌দি‌নের ম‌ধ্যে স্থায়ী বরখাস্ত না করা পর্যন্ত কর্মবির‌তি তথা ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখার ঘোষণা দি‌য়ে‌ছেন। ফলে ১৭ মার্চ সোমবার সকাল থেকে মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ থাকবে।

রোববার রাত দুইটার দি‌কে এক বিজ্ঞ‌প্তি‌তে এ তথ‌্য জা‌নি‌য়ে‌ছে মে‌ট্রো‌রে‌লের কর্মীরা। ‘ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড এর সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ’ এর ব্যানারে বিজ্ঞপ্তিতে ঘটনা তুলে ধরে ৬ দফা দাবি জানানো হয়। এগু‌লো হ‌লো, এক কার্যদিবসের মধ্যে ঘটনার মূল হোতা পুলিশের উপপ‌রিদর্শক মাসুদকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত এবং প‌রিদর্শক র‌ঞ্জিত, কন্সটেবল শাস্তি দি‌তে হবে। তাদেরকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। এমআর‌টি পু‌লিশ বি‌লোপ ক‌রে মে‌ট্রো‌রেলের নিরাপত্তায় নিজস্ব বা‌হিনী‌ গঠন কর‌তে হ‌বে। স্টেশ‌নে দা‌য়িত্ব পালন করা মে‌ট্রো কর্মকর্তা ও কর্মচারী‌দের শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। পরিচয়পত্র এবং অনুমতি ছাড়া কোন ব্যক্তি স্টেশনের পেইড জোনে প্রবেশ করতে পার‌বে না। আহত কর্মীর চিকিৎসার দায়িত্ব কর্তৃপক্ষকে নিশ্চিত করতে হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হ‌য়ে‌ছে, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত মেট্রোরেলের সব স্টাফ কর্মবিরতি পালন করবে। প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হ‌বে। একা‌ধিক কর্মী জানান, ১৭ মার্চ সকাল থেকে ট্রেন চালানো হ‌বে না।
 
বিজ্ঞপ্তিতে দা‌বি করা হ‌য়ে‌ছে, রোববার বিকেল সোয়া ৫টার দি‌কে দুজন মহিলা পরিচয়পত্র না দে‌খি‌য়ে বিনা টিকিটে ভ্রমণ করে, স্টেশ‌নের সুইং গেইট ব্যবহার করে পেইড জোন থেকে বের হতে চান। নির্ধারিত পোশাক পরিহিত না হওয়ায় তাদের পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীরা সুইং গেইট দিয়ে বের হওয়ার কারণ জানতে চাই‌লে সংশ্লিষ্ট পুলিশের কর্মকর্তারা উত্তেজিত হয়ে তর্কে জড়ান। একপর্যায়ে এমআরটি পুলিশের কন্ট্রোল রুমে চলে যান। পরবর্তীতে পু‌লি‌শের এপিবিএন দুইজন সদস্য সুইং গেইট ব্যবহার করে, তা না লাগিয়ে চলে যান। মে‌ট্রোর কর্মীরা কারণ জানতে চাই‌লে, তারা এবং কন্ট্রোল রুম থেকে আরও কয়েকজন পুলিশ এসে তর্কে জড়ান। কর্মরত কর্মীর কাঁধে বন্ধুক দিয়ে আঘাত করে। আরেকজন কর্মী‌কে এমআরটি পুলিশ বক্সে তু‌লে নিয়ে মারধর করে। এছাড়াও বন্দুক তাক করে গুলি করার হুম‌কি দেয়। পরে উপস্থিত অন‌্যান‌্য কর্মী ও যাত্রীরা এমআরটি পুলিশের হাত থেকে কর্মকর্তাকে উদ্ধার ক‌রে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কর মকর ত ত কর ম র কর ম কর ম র

এছাড়াও পড়ুন:

আনন্দ শোভাযাত্রা শুরু সকাল ৯টায়, পরা যাবে না মুখোশ

আগামীকাল পয়লা বৈশাখ। চারুকলা অনুষদের আয়োজনে প্রতিবছরের মতো এবারও বের হবে শোভাযাত্রা। তবে শোভাযাত্রায় পরা যাবে না কোনো ধরনের মুখোশ এবং নিরাপত্তার স্বার্থে সঙ্গে নিতে হবে পরিচয়পত্র। 

সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকাল ৯টায় চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা' শুরু হবে। 

রবিবার(১৩ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ সব জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, উৎসবমুখর পরিবেশে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাংলা নববর্ষ উদযাপনে সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। ‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’ প্রতিপাদ্য নিয়ে আগামীকাল সকাল ৯টায় চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’ বের করা হবে।

বিজ্ঞপ্তির বর্ণনায় বলা হয়, সকাল ৮টা থেকে শোভাযাত্রার প্রস্তুতি চলবে। শোভাযাত্রাটি চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে শুরু হয়ে শাহবাগ মোড় ঘুরে টিএসসি মোড়, শহীদ মিনার, শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্র, দোয়েল চত্বর হয়ে বাংলা একাডেমির সামনের রাস্তা দিয়ে পুনরায় চারুকলা অনুষদে গিয়ে শেষ হবে। শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারীরা শুধু নীলক্ষেত ও পলাশী মোড় দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে পারবেন। শোভাযাত্রা চলাকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য প্রবেশ পথ ও সংলগ্ন সড়ক বন্ধ থাকবে। শৃঙ্খলা ও সৌন্দর্য রক্ষার্থে আশপাশ দিয়ে শোভাযাত্রায় প্রবেশ করা যাবে না। শেষ প্রান্ত দিয়ে শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণের জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ জানানো যাচ্ছে। নিরাপত্তার স্বার্থে শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারীদের নিজ নিজ পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখার জন্য অনুরোধ করা হয়। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বহুদিনের ঐতিহ্য ও স্বকীয়তা অব্যাহত রেখে অধিকতর অন্তর্ভুক্তিমূলক করার জন্য লোক-ঐতিহ্য ও ২৪ এর চেতনাকে ধারণ করে আরো বড় পরিসরে এবং বৈচিত্র্যপূর্ণভাবে এবছর শোভাযাত্রায় সর্বজনীন অংশগ্রহণের আয়োজন করা হয়েছে। শোভাযাত্রায় এ বছর ২৮টি জাতিগোষ্ঠী, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ বিভিন্ন দেশের অতিথিবৃন্দ অংশ নেবেন। এই বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রায় এ বছর থাকবে ৭টি বড় মোটিফ, ৭টি মাঝারি মোটিফ এবং ৭টি ছোট মোটিফ।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, পয়লা বৈশাখে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কোনো ধরনের মুখোশ পরা এবং ব্যাগ বহন করা যাবে না। তবে চারুকলা অনুষদ থেকে প্রস্তুতকৃত মুখোশ হাতে নিয়ে প্রদর্শন করা যাবে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ভুভুজিলা বাঁশি বাজানো ও বিক্রি করা থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। 

বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা চলাকালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশের জন্য ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের সম্মুখস্থ রাজু ভাস্কর্যের পেছনের গেইট,  চারুকলা অনুষদ সম্মুখস্থ ছবির হাটের গেইট এবং বাংলা একাডেমির সম্মুখস্থ রমনা কালী মন্দির সংলগ্ন গেইট বন্ধ থাকবে বলেও জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

শৃঙ্খলা বজায়ের স্বার্থে যানবাহন সম্পর্কিত নির্দেশনা দেওয়া  হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে। বলা হয়, ক্যাম্পাসে নববর্ষে সব ধরনের অনুষ্ঠান আগামীকাল বিকাল ৫টার মধ্যে শেষ করতে হবে। নববর্ষের দিন ক্যাম্পাসে বিকাল ৫টা পর্যন্ত প্রবেশ করা যাবে। ৫টার পর কোনোভাবেই প্রবেশ করা যাবে না, শুধু বের হওয়া যাবে। 

নববর্ষ উপলক্ষে আজ ১৩ এপ্রিল রবিবার সন্ধ্যা ৭টার পর ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিকারযুক্ত গাড়ি ছাড়া অন্য কোনো গাড়ি প্রবেশ করতে পারবে না। নববর্ষের দিন ক্যাম্পাসে কোন ধরনের যানবাহন চালানো যাবে না এবং মোটরসাইকেল চালানো সম্পূর্ণ নিষেধ। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বসবাসরত কোনো ব্যক্তি নিজস্ব গাড়ি নিয়ে যাতায়াতের জন্য শুধু নীলক্ষেত মোড় সংলগ্ন গেইট ও পলাশী মোড় সংলগ্ন গেইট ব্যবহার করতে পারবেন।

নববর্ষ উপলক্ষে নিরাপত্তার স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা ও আর্চওয়ে স্থাপনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। 

গত শতকের আশির দশকে সামরিক শাসনের অর্গল ভাঙার আহ্বানে পয়লা বৈশাখে চারুকলা থেকে যে শোভাযাত্রা বের হয়েছিল; সেটিই পরে মঙ্গল শোভাযাত্রায় রূপ নেয়। ২০১৬ সালে ইউনেস্কোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পায় এ কর্মসূচি। তবে বর্ষবরণের অন্যতম আয়োজন ‘মঙ্গল শোভযাত্রা’ নামটি এবারের আয়োজনে থাকছে না। এই শোভাযাত্রার নাম থেকে ‘মঙ্গল’ শব্দটি বাদ দিয়ে নতুন নামকরণ হয়েছে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’।

ঢাকা/সৌরভ/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আনন্দ শোভাযাত্রা শুরু সকাল ৯টায়, পরা যাবে না মুখোশ