৪২ বন্ধু একত্র হয়ে মানুষের অভাব-দুঃখ লাঘবের লড়াই
Published: 17th, March 2025 GMT
এত দিন যে যাঁর সাধ্যমতো মানুষের পাশে দাঁড়াতেন তাঁরা। একসময় উপলব্ধি করলেন—ছোট ছোট প্রয়াসগুলো একসঙ্গে করলে আরও বড় কিছু করা সম্ভব। সেই ভাবনা থেকে সবাই মিলে গড়ে তুললেন একটি প্ল্যাটফর্ম। যার মাধ্যমে অসহায় নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের পুনর্বাসন করা হচ্ছে। সুপেয় পানির জন্য স্থাপন করে দেওয়া হচ্ছে গভীর নলকূপ। শিক্ষা ও চিকিৎসা সহায়তার পাশাপাশি দরিদ্রদের স্বাবলম্বী করতে ব্যবসার পুঁজি-উপকরণও দেওয়া হচ্ছে।
২০২৩ সালে গড়ে ওঠা প্ল্যাটফর্মটির নাম ‘৮৪ ইভেন্ট’, যা ৪২ জন সদস্যের নিরলস প্রচেষ্টায় মানবসেবার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে সংগঠনটি নিজেদের মধ্যে চাঁদা তুলে ২০ লাখ ৫০ হাজার টাকা বিভিন্ন সহায়তা কার্যক্রমে ব্যয় করেছে।
এই উদ্যোগের সদস্যদের কেউ প্রবাসী, আবার কেউ দেশে ব্যবসা কিংবা সরকারি চাকরিতে প্রতিষ্ঠিত। তাঁরা প্রতি মাসে ন্যূনতম এক হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা দেন। পাশাপাশি নিজেদের জাকাতের অর্থ থেকেও একটি অংশ এই তহবিলে প্রদান করেন।
২০২৫ সালে সংগঠনটি খাদ্য, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা, গভীর নলকূপ স্থাপন, বৃক্ষরোপণ ও পুনর্বাসনসহ বিভিন্ন প্রকল্পে ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকা সহায়তার দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। এই কার্যক্রম সিরাজগঞ্জ, নরসিংদী, ঢাকা, মুন্সিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, উজিরপুর, ভোলা, বানারীপাড়া, খাগড়াছড়ি ও বরিশালে পরিচালিত হবে।
এই প্ল্যাটফর্মটি গড়ে তোলার চিন্তা এসেছিল সিরাজগঞ্জের বাসিন্দা শারমিন স্নিগ্ধার কাছ থেকে। রাজধানীর ইডেন কলেজ থেকে রসায়নে স্নাতক করা এই নারী দীর্ঘদিন স্বাস্থ্য বিভাগের বিভিন্ন বেসরকারি প্রকল্পে কাজ করেছেন মুন্সিগঞ্জ ও ঢাকায়। এরপর নিজের জেলায় ফিরে এসে একটি অনলাইন খাবারের দোকান চালু করেন।
শারমিন স্নিগ্ধা জানান, সচ্ছল পারিবারিক পরিবেশে বড় হলেও মানবসেবার এক অন্তর্নিহিত তাগিদ সব সময় তাঁকে তাড়িত করত। বছরের পর বছর ধরে তিনি দুস্থ নারী ও শিশুদের জন্য কাজ করে আসছিলেন। নিজের রান্না করা খাবার স্টেশনে গিয়ে অসহায় মানুষদের মাঝে বিতরণ করতেন। সেই হাস্যোজ্জ্বল মুখগুলোর প্রতিক্রিয়া তাঁকে আপ্লুত করত। কিন্তু একা কতটুকুই–বা করা যায়! তিনি চেয়েছিলেন আরও বড় পরিসরে কিছু করতে।
কিশোরগঞ্জে দুস্থদের সাবলম্বী করার জন্য ৮৪ ইভেন্টের পক্ষ থেকে ব্যবসার দেওয়া হয়.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পঞ্চগড়ে বর্ষবরণে শিশু-কিশোরদের ঘুড়ি উৎসব
বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে পঞ্চগড়ে শিশু-কিশোরদের নিয়ে ঘুড়ি উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (১৪ এপ্রিল) বিকেলে সদর উপজেলার জগদল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এই উৎসবের আয়োজন করে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ষড়ঋতু।
উৎসবে প্রায় ২০০ শিশু-কিশোর অংশ নেয়। রং-বেরঙের ঘুড়ি ও নাটাই হাতে নিয়ে জগদল উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে আসেন তারা। প্রজাপতি, চিল, ঈগল ও মাছ আকৃতির ঘুড়ি আকাশে উড়ায় তারা। যার ঘুড়ি বেশি সময় আকাশে থেকেছে তাকে দেওয়া হয় পুরষ্কার। উৎসবকে আরো আনন্দময় করে তুলতে আয়োজন করা হয়েছিল লোকজ সঙ্গীতের।
ঘুড়ি উৎসব ছাড়াও ষড়ঋতু সংগঠনটি বিভিন্ন গ্রামীণ খেলাধুলার আয়োজন করেছিল। এসব খেলা দেখতে ভিড় করেন বিভিন্ন বয়সী মানুষ।
আরো পড়ুন:
ডিআরইউতে বর্ণিল আয়োজনে বাংলা নববর্ষ উদযাপিত
বৈশাখে চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীদের উচ্ছ্বাস
ষড়ঋতু সংগঠনটির সভাপতি রহিম আব্দুর রহিম বলেন, “আমাদের শৈশব কেটেছে ঘুড়ি উড়িয়ে। বারো মাস আমরা ঘুড়ি উড়াতাম। এখন শিশু-কিশোররা মোবাইলে আসক্ত। তাদের মধ্যে ঘুড়ি উড়ানোর আনন্দ ছড়িয়ে দিতেই আমাদের এই আয়োজন। শিশু-কিশোররা দারুন উপভোগ করেছে এই ঘুড়ি উৎসব।”
তিনি আরো বলেন, “ঘুড়ি উৎসব উদযাপন আবহমান গ্রামীণ বাংলার একটি ঐহিত্য। এ উৎসব আয়োজনের মাধ্যমে আমরা নিজেরাও শৈশবে ফিরে গেছি। ছোট বেলার কথা মনে পড়েছে, যখন এক টাকায় একটি রঙিন ঘুড়ি কিনতাম এবং একজন আরেকজনের ঘুড়ি কেটে দিতাম। এখন এই নীল আকাশে বেগুনি, নীল, সাদা রঙের ঘুড়ি উড়তে দেখে ভালোই লেগেছে।”
এদিকে, বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসন লাঠি ও হা-ডু-ডুসহ গ্রামীণ খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
ঢাকা/নাঈম/মাসুদ