রাখাইনে মানবিক করিডোর ইস্যুতে ধীরে চলবে ঢাকা
Published: 17th, March 2025 GMT
মিয়ানমারের রাখাইনের সব অর্থনৈতিক কার্যক্রম ভেঙে পড়েছে। আর মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী রাখাইন দখলে থাকা আরাকান আর্মিকে কোণঠাসা করতে সব ধরনের সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে চলতি মার্চ বা আগামী এপ্রিলে সেখানে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা করছে জাতিসংঘ। এ কারণে বাংলাদেশ হয়ে রাখাইনে বেসামরিক নাগরিকদের জন্য মানবিক সহায়তা পাঠাতে চায় সংস্থাটি। তবে ঝুঁকি বিবেচনায় অনুমতি দিতে ধীরে চলো নীতি অনুসরণ করছে বাংলাদেশ।
১৩ থেকে ১৬ মার্চ বাংলাদেশ সফর করে গেলেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। রমজান উপলক্ষে রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশিদের প্রতি সংহতির এ সফরে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড.
রাখাইনে দুর্ভিক্ষ মোকাবিলা ও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে এর প্রভাব নিয়ে গত শনিবার যৌথ ব্রিফিংয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনকে সফল করতে মিয়ানমারে মানবিক সহায়তা পাঠিয়ে সহায়ক পরিবেশ তৈরি করতে হবে। এ কারণে পরিস্থিতি অনুকূল হলে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে মানবিক সহায়তা পাঠানোর সম্ভাব্যতা নিয়ে আলোচনা করেছি। তবে অবশ্যই এ বিষয়ে মিয়ানমারে সংঘাতে জড়িত পক্ষগুলোর অনুমোদন ও সহযোগিতা প্রয়োজন।
তবে বাংলাদেশ হয়ে রাখাইনে যাওয়ার করিডোর প্রসঙ্গে বাংলাদেশের অবস্থান নিয়ে মো. তৌহিদ হোসেন জানান, এ নিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। বিষয়টি অপারেশনাল, যা জাতিসংঘের স্থানীয় অফিসের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।
জাতিসংঘ বলছে, রাখাইনে মানবিক সহায়তা না পাঠানো হলে সেখানে থাকা বাকি জনগোষ্ঠীর খাদ্য অনুসন্ধানে প্রতিবেশী দেশে অনুপ্রবেশের আশঙ্কা রয়েছে। আর এবার শুধু রোহিঙ্গারাই নয়, রাখাইনের বাকি জনগোষ্ঠীরও প্রবেশের শঙ্কা রয়েছে। করিডোরটিকে মানবিক ক্ষেত্রে ত্রাণ পাঠানোর জন্য চিহ্নিত করা হলেও এটি বাংলাদেশের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। যেখানে আরাকান আর্মিকে কোণঠাসা করতে সব সরবরাহ আটকে দিয়েছে মিয়ানমারের জান্তা সরকার; সেখানে বাংলাদেশ হয়ে যে ত্রাণ যাবে, তা রাখাইনের বেসামরিক নাগরিকদের কাছে পৌঁছাবে, নাকি আরাকান আর্মি সেগুলো দখলে নেবে– তার নিশ্চয়তা ঢাকার কাছে নেই।
এমনিতে আয়োজন করে রোহিঙ্গাদের জন্য তহবিল সংগ্রহ করতে গিয়ে এক প্রকার হিমশিম খেতে হয় জাতিসংঘের। এখন পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের চাহিদার পূর্ণ সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। ফলে রাখাইনে যে মানবিক সহায়তা পাঠানোর কথা ভাবা হচ্ছে, তা হবে অপ্রতুল। সেখানে থাকা যেসব নাগরিক ত্রাণ পাবেন না, তাদের ত্রাণের উৎসে পৌঁছে যাওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে।
এ অঞ্চলটি বিশ্বে মাদক, অবৈধ অস্ত্র এবং নারী ও শিশু পাচারের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে পরিচিত। করিডোর দিলে মাদক বা অবৈধ অস্ত্র বাংলাদেশে প্রবেশের আশঙ্কা থাকবে। এ ছাড়া মিয়ানমারের রাখাইনে বর্তমানে কোনো স্বীকৃত প্রশাসন নেই। ফলে সেখানকার অস্বীকৃতদের সঙ্গে কোনো ধরনের দরকষাকষির আলাদা ঝুঁকি রয়েছে। সেই সঙ্গে অন্যান্য নিরাপত্তা ঝুঁকি তো রয়েছেই। এ ক্ষেত্রে শুধু বাংলাদেশের ওপর ভরসা না করে প্রতিবেশী অন্যান্য দেশেও সম্ভাবনা অন্বেষণ করার পরামর্শ বাংলাদেশের।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, সার্বিক দৃষ্টিকোণে মানবিক করিডোর নিয়ে ধীরে চলো নীতিতে রয়েছে ঢাকা। একটি চালান যেতে দিলেও দ্বিতীয়টিতে সমস্যা তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশ ‘কেস টু কেস’ আবেদনগুলো বিবেচনা করবে।
মহাসচিবের সফরে করিডোর নিয়ে কোনো নিশ্চিত ফলাফল না পেলেও রোহিঙ্গাদের জন্য ২০২৫ সালের আসন্ন তহবিল সংগ্রহ জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যানের (জেআরপি) বৈশ্বিক আবেদন জানিয়ে গেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব। রোহিঙ্গাদের জন্য অনুদান এমনিতেই কমে আসছে। এর মধ্যে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে পশ্চিমা অনুদান অনেক কমে গেছে। ফলে ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম (ডব্লিউএফপি) জনপ্রতি রোহিঙ্গার খাদ্য বরাদ্দ অর্ধেক করে দিয়েছে, যা ১২ ডলার থেকে ৬ ডলারে নেমেছে। বাংলাদেশ সফরে তহবিল সংকটের সার্বিক ঝুঁকি তুলে ধরে বিশ্বকে অনুদান বাড়াতে আবেদন করেছেন আন্তোনিও গুতেরেস। সেই সঙ্গে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের আগপর্যন্ত বৈশ্বিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
৫ আগস্টের গণঅভুত্থ্যানের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার পতনের পর নতুন বাংলাদেশ সফর করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব। বাংলাদেশ যেহেতু গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার ও পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, ফলে জাতিসংঘ শান্তি, জাতীয় সংলাপ, আস্থা ও নিরাময়ে সহায়তা করতে প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। সবার জন্য একটি টেকসই ও ন্যায়সংগত ভবিষ্যৎ গড়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে কাজ করে অবিচল অংশীদার হিসেবে জাতিসংঘের ওপর নির্ভর করতে বাংলাদেশিদের আহ্বান জানিয়েছেন আন্তোনিও গুতেরেস। রাজনৈতিক দলগুলো আলোচনার সময় নিজ সুবিধার জায়গা থেকে নিজ অবস্থান তুলে ধরেছে। তবে বাংলাদেশের গণতন্ত্রে উত্তরণের স্বার্থে নিজদের মধ্যকার মতানৈক্য দূর করে ঐকমত্যের ভিত্তিতে নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব।
একই সঙ্গে বাংলাদেশের পরিস্থিতি জটিল বিবেচনায় গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের স্বার্থে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে নাগরিক সমাজের সংলাপ অব্যাহত রাখারও পরামর্শ দিয়েছেন আন্তোনিও গুতেরেস। এ সংলাপ যেন শুধু আলোচনার স্বার্থে না হয়, সংলাপকে হতে হবে কার্যকর পদক্ষেপের জন্য বলেও মন্তব্য করেন তিনি। আলোচনায় মহাসচিব ধারণা পেয়েছেন, দীর্ঘদিনের দুঃশাসনের ফলে কাঠামোগত পরিবর্তন হলেও সুশাসন প্রতিষ্ঠা হয়নি। ফলে নারী, ধর্মীয় সংখ্যালঘু, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীসহ বাংলাদেশের জনগণের ঝুঁকি বেড়ে গেছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র খ ইন দ র জন য কর ছ ন কর ড র র খ ইন আশঙ ক
এছাড়াও পড়ুন:
‘বিনিময়’ ব্যর্থ, তবু ২৭৭ কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে চেয়েছিল আইসিটি বিভাগ
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের এক মাস আগে পাঁচ বছরের জন্য আর্থিক লেনদেন প্ল্যাটফর্ম ‘বিনিময়’-এ বড় অঙ্কের বিনিয়োগের উদ্যোগ নিয়েছিল তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ।
‘বিনিময়’-এর জন্য আইসিটি বিভাগের অধীন সংস্থা বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) দিয়ে ২৭৭ কোটি টাকার বেশি ব্যয়ের একটি প্রকল্প গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল।
চালুর পর ‘বিনিময়’ জনপ্রিয়তা পায়নি। আইসিটি বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, ‘বিনিময়’ ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও আওয়ামী ঘনিষ্ঠদের আর্থিক সুবিধা দিতেই এ প্রকল্পের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।
তবে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর উদ্যোগটি বাতিল করে আইসিটি বিভাগ। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রস্তাবটি বাদ দেওয়া হয়েছে।’
আইসিটি বিভাগের উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন একাডেমি প্রতিষ্ঠাকরণ (আইডিয়া) প্রকল্পের আওতায় ৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ইন্টার-অপারেবল ডিজিটাল ট্রানজেকশন প্ল্যাটফর্ম (আইডিটিপি) ‘বিনিময়’ চালু হয় ২০২২ সালের নভেম্বরে। ব্যাংক ও মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের (এমএফএস) মধ্যে আর্থিক লেনদেনের জন্য প্ল্যাটফর্মটি করা হয়।
বিনিময় চালুর পর তা সুবিধা করতে পারেনি। বিনিময়ে লেনদেন তেমন না হওয়া সত্ত্বেও থেমে থাকেনি আইসিটি বিভাগ।
২০২৪ সালের জুলাই থেকে ২০২৯ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদে ২৭৭ কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে ‘বিনিময় প্ল্যাটফর্ম উন্নত ও স্থিতিশীলকরণ’ নামের প্রকল্পের উদ্যোগ আইসিটি বিভাগের আগ্রহে গ্রহণ করা হয়েছিল।
প্রকল্প প্রস্তাবের উদ্দেশ্য-লক্ষ্যে বলা হয়েছিল, প্ল্যাটফর্মটি সমৃদ্ধ করা, কারিগরিভাবে আরও শক্তিশালী করা, পরিচালনায় সহায়তার পাশাপাশি সরকারি বিল, বেতন-ভাতা, কর-ভ্যাট সংগ্রহ, পেনশন, মেট্রোরেলের কার্ড রিচার্জের মতো সুযোগ তৈরি করা।
আইসিটি বিভাগ সূত্র বলছে, যে প্রকল্প থেকে ‘বিনিময়’ তৈরি করা হয়েছে, সেখানে বেশি অর্থ ব্যয়ের সুযোগ ছিল না। তাই এখান থাকে আরও লাভবান হতে বিসিসিকে দিয়ে আরেকটি প্রকল্পের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর গত জানুয়ারি মাসে বলেছিলেন, মোবাইলে আর্থিক সেবার (এমএফএস) আন্তলেনদেন পরিচালনার জন্য বিনিময় নামের যে প্ল্যাটফর্ম করা হয়েছিল, সেটি ছিল সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের শেল কোম্পানি। এমএফএসে আন্তলেনদেনব্যবস্থা এগোতে না পারার একটা বড় কারণ, এটি আইসিটি মন্ত্রণালয়ের অধীন দেওয়া হয়েছিল।
সজীব ওয়াজেদ ছাড়াও এ প্ল্যাটফর্ম থেকে সুবিধা নিয়েছেন সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের ছেলে জারেফ হামিদ। বিনিময় প্ল্যাটফর্মটি ওরিয়ন ইনফরমেটিক্স, মাইক্রোসফট, ফিনটেক লিমিটেড ও সেইন ভেঞ্চারস যৌথভাবে তৈরি করে। এর মধ্যে ফিনটেক লিমিটেড নসরুল হামিদের স্ত্রী সীমা হামিদ ও ছেলে জারেফ হামিদের, যা ২০২২ সালে নাম পরিবর্তন করে হয় ভেলওয়্যার লিমিটেড। এর মালিকানায় আছে জারেফ হামিদ ও যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কোম্পানি প্রাইম হোল্ডিংস এলএলসি। বিনিময় পরিচালনার জন্য ভেলওয়্যারের সঙ্গে ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে চুক্তি করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বিনিময় তৈরির আগেই বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় একই ধরনের সেবা চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছিল। ২০২০ সালের ২৭ অক্টোবর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সেবাটি চালুর কথা ছিল। তখন এ নিয়ে প্রজ্ঞাপনও জারি করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে শেষ পর্যন্ত সেবাটি আর চালু হয়নি। কারণ, এ কাজের সঙ্গে যুক্ত হয় আইসিটি বিভাগ। নেওয়া হয় নতুন সরকারি প্রকল্প।
সূত্র জানায়, এখন ‘বিনিময়’ রাখতে চাচ্ছে না বাংলাদেশ ব্যাংক। ‘বিনিময়’-এর মতো সেবা থাকবে, তবে এ প্ল্যাটফর্ম (বিনিময়) ব্যবহার করা হবে না। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে এ ব্যাপারে এখনই কিছু বলছে না বাংলাদেশ ব্যাংক।
বিনিময়ের ব্যাপারে জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকটির মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান প্রথম আলোকে বলেন, ভেলওয়্যারের সঙ্গে চুক্তির শর্ত অনুযায়ী পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ ঠিকমতো হচ্ছে না। তাদের কাছ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। বাংলাদেশ ব্যাংকও তাদের কাছ থেকে কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছে না। তাদের চিঠি দেওয়া হয়েছে। জবাব না পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সূত্র জানায়, এ চুক্তি রাখার ইচ্ছা নেই বাংলাদেশ ব্যাংকের। কারণ, সেবাটি প্রায় অকার্যকর হয়ে আছে। এ ছাড়া ভেলওয়্যারের সঙ্গে যে চুক্তিটি হয়, সেটার সবকিছু প্রস্তুত করে বাংলাদেশ ব্যাংকের হাতে দেওয়া হয়েছিল।
সরকার পতনের পরপরই ‘বিনিময়’ নিয়ে আইসিটি বিভাগের পক্ষ থেকে একটি প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সাল থেকে ‘ক্যাশলেস সোসাইটি’ গড়ার উদ্দেশ্যে বিনিময় তৈরির আলোচনা শুরু হয়। ২০২৪ সালের ১০ আগস্ট পর্যন্ত বিনিময়ের গ্রাহকসংখ্যা ৩ লাখ ৭১ হাজার ৮০০ জন। ‘বিনিময়’-এ গড়ে প্রতিদিন ২৮–৩০ লাখ টাকা লেনদেন হয়। একই সময় পর্যন্ত বিনিময়ে ৮৯ কোটি ৮২ লাখ ২৮ হাজার ৩৫০ টাকার লেনদেন সম্পন্ন হয়েছে।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক যদি বিনিময় বন্ধের মতো কোনো সিদ্ধান্তে যায়, তবে সেটাকে সাধুবাদ জানাতে হবে। দেশের আর্থিক খাতের লেনদেনের প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন ধরনের পেমেন্ট সিস্টেম থাকতে পারে। কিন্তু সর্বজনীন মাধ্যম (ইউনিভার্সাল পেমেন্ট গেটওয়ে এগ্রিগেটর) একটাই হতে পারে।
সেটা ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচ বাংলাদেশকেই (এনপিএসবি) হতে হবে। অবশ্যই সেটা বেসরকারি খাতের হাতে থাকতে পারে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের যে এনপিএসবি সেবা আছে, সেটাকে বরং এখন শক্তিশালী করতে হবে। এখানে ব্যাংক, আর্থিক সেবা খাত, মার্চেন্ট, মার্কেট ও এমএফএস যুক্ত রয়েছে। বিনিময়ের পেছনের যে গোষ্ঠী আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছিল, তারা দেখেছে, বাংলাদেশে এমএফএস খাত ভালো করছে। তাই সেটাকে তারা টার্গেট (নিশানা) করেছিল।