তখন সূর্য পশ্চিম আকাশে অনেকটা হেলে পড়েছে। আর কিছু সময় পরই মাগরিবের আজান পড়বে। এমন সময়ে ঝালকাঠি নেছারাবাদ এন এস কামিল মাদ্রাসা সংলগ্ন মাঠে চলছে ইফতারের আয়োজন। শিক্ষার্থীরা ইফতারের প্লেট সাজাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

সারা দিনের রোজা শেষে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও পথচারী সাধারণ মানুষ ইফতারের জন্য প্যান্ডেলে দিকে আসছেন। প্রায় এক হাজার মানুষের এই ইফতারে শামিল হতে কোনো টাকা লাগে না। বিনা মূল্যে রোজাদাররা প্লেটে চিড়ামুড়ি, খেজুর, জিলাপি, পেঁয়াজু, লেবু, শরবত আর বিশুদ্ধ পানি পাচ্ছেন। দীর্ঘ বছর ধরে এখানে এভাবেই হাজার মানুষের জন্য ইফতারের আয়োজন করছে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এই ইফতারে অর্থায়ন করেন।

শনিবার বিকেলে কিছু বেলা থাকতে ঝালকাঠি নেছারাবাদ এন এস কামিল মাদ্রাসা সংলগ্ন মাঠে গিয়ে দেখা যায়, ইফতারের প্রস্তুতি তখন শুরু হয়ে গেছে। শিক্ষার্থীরা চিড়ামুড়ি, খেজুর, জিলাপি ও পেঁয়াজু দিয়ে প্লেট সাজাচ্ছেন। মাইকে জিকির ও গজল শোনা যাচ্ছে। আগে থেকেই মাঠে রঙিন কাপড়ের লম্বা চাদর বিছিয়ে রাখা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা ইফতারের প্লেট সেই চাদরের ওপর সাজিয়ে রাখছেন। ইফতারের সময় ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে সমবেত হতে থাকেন মাদ্রাসা ও এতিমখানার শিক্ষক-শিক্ষার্থী, পথচারী ও গ্রামের লোকজন। পুরো প্রক্রিয়াটি বসে পর্যবেক্ষণ করছিলেন মাদ্রাসার শিক্ষকেরা।

ইফতারের আগমুহূর্তে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাতের আয়োজন করা হয়। সেখানে দেশের মানুষের কল্যাণ কামনা করা হয়। এখানে পুরো এক মাস ডেকোরেটরের মাধ্যমে প্যান্ডেল করা হয়। রোজাদারদের বসার জন্য রঙিন কাপড় বিছানো হয়। প্যান্ডেলের মধ্যে আলোকসজ্জাসহ এক উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে সেখানে।

ঝালকাঠি কৃষি ব্যাংকের মুখ্য আঞ্চলিক কার্যালয়ের পক্ষ থেকে শনিবার এখানে ইফতারের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা তাঁদের নিজেদের বেতনের অংশ থেকে প্রায় ২০ হাজার টাকা ইফতারের জন্য খরচ করেছেন।

কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক মো.

মোহাইমিনুর রহমান বলেন, ‘একসঙ্গে এত মানুষের জন্য ইফতারের আয়োজন করা ভাগ্যের বিষয়। একজন রোজাদারকে ইফতার করানো অনেক সওয়াবের কাজ। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে আমাদের অফিসের পক্ষ থেকে এখানে ইফতারের আয়োজন করা হয়েছে।’

দক্ষিণ পিপলিতা গ্রাম থেকে ইফতার করতে আসা সোলায়মান হায়দার (৫৫) বলেন, একসঙ্গে এত মানুষ ইফতার করার নেয়ামত অন্য রকম। এ ছাড়া এই ইফতার মাহফিলে বসে মোনাজাতে অংশ নেওয়াটাও ভাগ্যের ব্যাপার।

মাদ্রাসার দাখিলের শিক্ষার্থী নেছার উদ্দিন বলে, প্রতিদিন ইফতারের বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী তৈরি করতে তারা সহায়তা করে। সবাই মিলে আনন্দের সঙ্গে কাজটি করে তারা।

ঝালকাঠি নেছারাবাদ এন এস কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা গাজী মুহাম্মদ শহিদুল ইসলাম বলেন, প্রতিবছরের মতো এবারও মাদ্রাসার পক্ষ থেকে মাসব্যাপী রোজাদারদের জন্য ইফতারের আয়োজন করা হচ্ছে। এখানে প্রতিদিন প্রায় এক হাজার মানুষকে সুশৃঙ্খলভাবে ইফতার করানো হয়। অনেক ধনী ব্যক্তির অর্থায়নে এই ইফতারের আয়োজন করা হয়।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

৫ বছরের জন্য উৎসে কর কমানোর দাবি বিজিএপিএমইএর

পাঁচ বছরের জন্য পণ্য রপ্তানিতে উৎসে কর ১ শতাংশ থেকে কমিয়ে দশমিক ৫ শতাংশ করার দাবি জানিয়েছে তৈরি পোশাকশিল্পের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও মোড়কপণ্য সরবরাহকারী কারখানামালিকদের সংগঠন বিজিএপিএমইএ। এ ছাড়া স্থানীয় বাজার থেকে কেনা কাঁচামালের ওপর থেকে ভ্যাট প্রত্যাহার, স্থায়ী বা অস্থায়ী আন্তঃ বন্ড স্থানান্তরের ব্যবস্থা, একসঙ্গে দুই বছরের জন্য আমদানিপ্রাপ্যতা প্রদানসহ কয়েকটি দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

আগামী ২০২৫–২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে বাস্তবায়নের জন্য এই দাবিগুলো জানায় বিজিএপিএমইএ। গত বৃহস্পতিবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রাক্–বাজেট আলোচনায় দাবিগুলো তুলে ধরেন বিজিএপিএমইএর সভাপতি মো. শাহরিয়ার।

বিজিএপিএমইএ বলছে, তৈরি পোশাক খাতের বিভিন্ন ধরনের সরঞ্জাম এবং পোশাকসহ অন্য খাতের মোড়কপণ্য উৎপাদনে দেশ এখন স্বাবলম্বী। বর্তমানে কার্টন, পলিব্যাগ, হ্যাঙ্গার, বোতাম, লেবেল, জিপার, হ্যাংট্যাগ ও গাম টেপসহ পোশাক খাতের ৩০ থেকে ৩৫ ধরনের সরঞ্জাম এবং অন্যান্য খাতের মোড়ক তৈরি করে এ খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো। বিজিএপিএমইএর সদস্যসংখ্যা প্রায় দেড় হাজার।

মো. শাহরিয়ার কাঁচামালের আমদানি প্রাপ্যতা একসঙ্গে দুই বছর দেওয়ার দাবি জানান। তিনি বলেন, দুই বছরের জন্য আমদানি প্রাপ্যতা দেওয়া হলে সেবাদাতা ও গ্রহীতা উভয়ের সময়, শ্রম ও অর্থ সাশ্রয় হবে। বন্ডের আওতায় বিনা শুল্কে আমদানির সুযোগ থাকায় রাজস্বের ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব পড়বে না। এ ছাড়া তিনি কন্টিনিউয়াস বন্ডের সুবিধা চান। তিনি বলেন, তৈরি পোশাক খাতের মতো এ উপখাতের প্রতিষ্ঠানগুলোয় কন্টিনিউয়াস বন্ডের সুযোগ না থাকায় উৎপাদন কার্যক্রম বিঘ্নিত হয়। এতে রপ্তানি কমে যায়।

কোম্পানির সঞ্চয়ী ও স্থায়ী আমানতের মুনাফার ওপর উৎসে কর ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করার দাবি জানান বিজিএপিএমইএর সভাপতি। তিনি বলেন, টাকার অবমূল্যায়ন ও ডলার–সংকটসহ বিভিন্ন কারণে তফসিলি ব্যাংকগুলোতে তারল্যসংকট রয়েছে। তারল্যসংকট দূরীকরণে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সঞ্চয়ী বিনিয়োগ ভালো ভূমিকা রাখে। তাই আমানতের মুনাফার ওপর উৎসে কর কমালে দেশের রপ্তানি বাড়বে।

পাঁচ বছরের জন্য উৎসে কর দশমিক ৫ শতাংশ করার দাবি জানানোর পেছনে মো. শাহরিয়ারের যুক্তি হলো, বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হলে কোনো পণ্যে আর্থিক প্রণোদনা দিতে পারবে না। এরই মধ্যে প্রণোদনা কমাতে শুরু করেছে সরকার। প্রণোদনা হ্রাস বা বন্ধ হলে কিছু পণ্য আন্তর্জাতিক বাজারে টিকে থাকতে পারবে না। সে জন্য উৎসে কর কমানো হলে রপ্তানি উৎসাহিত হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাস্তবের জুটির সঙ্গে ঈদের দুই নাটকে
  • বুয়েট ছাত্র আবরার হত্যা মামলায় ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ৫ জনের যাবজ্জীবন
  • ২৫ বছর আগে দেখা, আমিরের নতুন প্রেমিকা কে এই গৌরী
  • প্রবাসীদের নিয়ে দেশের ফুটবলে নতুন স্বপ্ন
  • আবরার হত্যা: আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায় কাল
  • বাস্তবের জুটি আবার পর্দায়
  • ৫ বছরের জন্য উৎসে কর কমানোর দাবি বিজিএপিএমইএর
  • ২০ বছর ধরে একসঙ্গে ইফতার
  • হোয়াটসঅ্যাপে আসছে মেসেজ থ্রেড, যে সুবিধা পাওয়া যাবে