আপনি কি পরিবারের মেজ সন্তান? অভিনন্দন!
Published: 17th, March 2025 GMT
১. পরিবারের মেজ সন্তানেরা বড় বা ছোট সন্তানের মতো মা–বাবার সময় বা মনোযোগ না পেলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তাঁরা বঞ্চিত বা অবমূল্যায়িত বোধ করেন না। তাঁরা বরং ছোটবেলা থেকেই অবচেতনে নিজের দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার শিক্ষা পান। স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার চেষ্টা করেন।
২. মেজ সন্তানদের পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার দক্ষতা বেশি। যেকোনো বিপর্যয় সহজে সামাল দিতে পারেন।
৩.
৪. কানাডিয়ান মনোবিদ, লেখক ক্যাথেরিন স্যামন ও জার্মান লেখক ক্যাটরিন শুমানের ‘দ্য সিক্রেট পাওয়ার অব মিডল চিলড্রেন’ বইটি বেশ আলোচিত। এই বইয়ে লেখকদ্বয় বলেছেন, প্রাথমিকভাবে মেজ সন্তানেরা পরিবারে তাঁদের ভূমিকা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগেন। তবে সময়ের সঙ্গে নিজেরাই সেটি কাটিয়েও ওঠেন। সংসারে শান্তি ও যোগাযোগে ভারসাম্য রক্ষার ক্ষেত্রে মেজ সন্তানদের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। বড় ও ছোট সন্তান উভয়ের সঙ্গেই শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক বজার রাখার সেতুবন্ধ হিসেবে কাজ করেন তাঁরা। সবার সঙ্গে মিলেমিশে থাকার প্রবণতাও তাঁদের মধ্যে বেশি। এসব কারণে পরিবারের মেজ সন্তানকে বলা হয় ‘দ্য পিসকিপার’।
আরও পড়ুনদ্বিতীয় সন্তান নেওয়ার আগে নিজেকে যে ৩টি প্রশ্ন করবেন১২ ডিসেম্বর ২০২৪৫. ছোটবেলা থেকেই আধিক্যের সঙ্গে পরিচয় না থাকায় মেজ সন্তানেরা অল্পে তুষ্ট থাকেন। খুঁতখুঁতে স্বভাবের হন না। তাঁদের মধ্যে অভিযোগ করার প্রবণতাও কম।
৬. নিজ উদ্যোগে যোগাযোগদক্ষতা অর্জন করার ফলে তাঁরা সাধারণত বহির্মুখী, মিশুক ও পরোপকারী হন।
৭. একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মা–বাবার শেষ বয়স কাটে মেজ সন্তানের সঙ্গে। বড় ও ছোট সন্তানেরা যখন পরিবার থেকে বেরিয়ে নিজেদের পেশা ও পরিবার নিয়ে ব্যস্ত থাকেন, তখন দেখা যায় মেজ সন্তানেরাই শেষমেশ মা–বাবার দায়িত্ব নেন। এর একটা কারণ হতে পারে, মেজ সন্তানেরা ছোটবেলায় মা–বাবার সঙ্গে সবচেয়ে কম সময় কাটান। বড় হয়ে সেটি পুষিয়ে নেওয়ার একটা প্রবণতা দেখা যায়।
আরও পড়ুনবড় সন্তানেরা কেন বাকিদের তুলনায় এসব ঝুঁকিতে বেশি থাকে২০ জানুয়ারি ২০২৫আপনি মেজ সন্তান হলে কাকে বিয়ে করবেন৮১ বছর বয়সী মার্কিন মনোবিদ ও লেখক ডা. কেভিন লেম্যানের মতে, এক পরিবারের মেজ সন্তান ও আরেক পরিবারের ছোট সন্তানের দাম্পত্যজীবন অসাধারণ হয়ে থাকে। একাধিক গবেষণায়ও তার প্রমাণ মিলেছে। এ ধরনের জুটির বিচ্ছেদের হারও সবচেয়ে কম।
দেখা যায় বিপরীত চিত্রওঅনেক পরিবারের মেজ সন্তান ছোটবেলা থেকে অবজ্ঞা ও অবহেলার শিকার হয়ে নিজেদের নিয়ে হীনম্মন্যতায় ভোগেন। তৈরি হয় ‘কনফিডেন্স ইস্যু’। পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন বোধ করেন তাঁরা। খেই হারিয়ে হতাশায় নিমজ্জিত হন। তাঁদের মনে হতে পারে, ‘আমি যথেষ্ট নই।’ যোগাযোগের দক্ষতাও বাধাগ্রস্ত হতে পারে।
সবাই একরকম ননতবে সব পরিবার একরকম নয়। আবার প্রত্যেক মানুষের ব্যক্তিসত্তাও আলাদা। তাই সব পরিবারের মেজ সন্তানের ক্ষেত্রে কথাগুলো পুরোপুরি খাটে না। তবে মা–বাবার দায়িত্ব—প্রত্যেক সন্তানকেই যথাযথ মনোযোগ ও প্রচেষ্টা নিয়ে বড় করে তোলা।
সূত্র: ওয়েব এমডি ও হেলথলাইন
আরও পড়ুনপরিবারের বড় মেয়েদের যে ৭টি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রবণত
এছাড়াও পড়ুন:
যেভাবে কাটিয়ে উঠবেন ভুলে যাওয়ার প্রবণতা
নানান ব্যস্ততায় বেড়ে যাচ্ছে ভুলে যাওয়ার প্রবণতা। এই অ্যাবসেন্ট মাইন্ড বা ভুলে যাওয়ার প্রবণতা কাটানোর ধরাবাঁধা কোনো নিয়ম বা কৌশল নেই। এ ক্ষেত্রে চাইলে আপনি নিজের জন্য আলাদা কোনো কৌশল খুঁজে বের করতে পারেন। চলুন, একজন অ্যাবসেন্ট মাইন্ডেড মানুষের মুখোমুখি হই–
আপনি কি সেই লোক: অস্বাভাবিক কিছু না। আপনিও হতে পারেন সেই লোক। যিনি নিজেই আপনাকে বলে যাচ্ছেন, তিনি একসঙ্গে অনেক ব্যাপারে মাথা ঘামাতে অপছন্দ করেন। এ ছাড়া তিনি খুবই অন্যমনস্ক। রিমাইন্ডার ছাড়া কোনো কাজই করতে পারেন না। এ ছাড়া তার যে কোনো কাজে দেরি করার অভ্যাস।
যে কোনো কাজে দেরি: সময়ের ভুল হিসাব করি অনেকেই। যেমন– আমার অনলাইন ক্লাস সকাল ৯টায়। তাহলে বসলেই শুরু হবে ক্লাস– এই ভেবে আমি মোবাইলে বা ল্যাপটপে নেট অন করি ৮টা ৫৫ মিনিটে। তখনই মনে হয় আমার প্রয়োজনীয় বই গোছানো হয়নি অথবা আমার হেড ফোনটা খুঁজে পাচ্ছি না। ফলে ক্লাসে দেরি হয়ে যায়।
ভুলে গেলেন: ঘুরতে গিয়ে বা শপিংয়ে যাওয়ার পর বুঝতে পারলেন, পর্যাপ্ত টাকা নেই সঙ্গে। বা হুট করেই সেলফোনের ব্যাটারির চার্জ ফুরিয়ে গেল। এমনও হতে পারে যে, ভালো প্রস্তুতির পরও ক্যালকুলেটর অথবা ঘড়ি সঙ্গে নিতে ভুলে গেলেন।
কাজের পুনরাবৃত্তি: যে কোনো ধরনের কাজ পুনরাবৃত্তি অপছন্দ করেন। যদিও আপনি ওই কাজে পারদর্শী নন। ধরুন, আপনি রেস্টুরেন্টের কিচেনে কাজ করতেন। তখন আপনি খুব বাজে সময় কাটাতেন। কারণ, সেখানে একত্রে নানান কাজ করতে হতো আপনাকে।
খেয়াল রাখতে পারেন: ওপরের প্রতিটি ঘটনার জন্য আলাদা সমাধান দেওয়া যেতে পারে। অনেকেই বলতে পারেন, এসব ব্যাপার এড়ানো খুব সহজ। বাস্তবে এ ধরনের সমস্যা কাটিয়ে ওঠা খুব কঠিন। তবে সঠিক কৌশল অবলম্বন করে আপনি এ ধরনের সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারেন। এ ক্ষেত্রে আপনি খেয়াল রাখতে পারেন–
দিনের শেষে এবং সকালে: রুটিন ও চেকলিস্ট ভুলে যাওয়ার অভ্যাস রোধে এ ব্যাপারটি অনুসরণ করতে পারেন। নিয়মিত দিনের শেষদিকে আপনার মোবাইল ফোনে চার্জ দিন ও সকালের দিকে মোবাইলটি চার্জার থেকে ডিসকানেক্ট করুন।
টাইমার: মোবাইল ফোন কিংবা হাতঘড়ির টাইমারটা ওপেন করে কাজ শুরু করুন।
নির্ধারিত জায়গা: এটি একটি নির্ধারিত জায়গা, যেখানে আপনার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র রাখা থাকবে। যেন বাসা থেকে বের হওয়ার পথ সহজেই খুঁজে পান।
হাত বাড়িয়ে দিন: যে কাজে আপনার কম দক্ষতা, তার সমাধানে অভিজ্ঞ কাউকে খুঁজুন। তবে সব কাজে এটি সম্ভব নাও হতে পারে। এ ক্ষেত্রে আপনিও অন্য কাউকে সাহায্য করতে পারেন।
নেভার বি লেট এগেইন: ‘নেভার বি লেট এগেইন’– এ বইটি পড়তে পারেন। বইটি থেকে আপনার প্রয়োজনীয় তথ্য পেতে পারেন। এ ছাড়াও ভুলে যাওয়ার অভ্যাস রোধে সবচেয়ে কার্যকর উপায় হতে পারে– গুরুত্বপূর্ণ কাজ নির্দিষ্ট সাইটে সংরক্ষণ করে রাখা। সামনের জরুরি কাজ ক্যালেন্ডারে দাগ দিয়ে রাখা। u