চুন–সুরকির শতবর্ষী মসজিদ গরমের সময় ঠান্ডা আর শীতে উষ্ণ থাকে
Published: 17th, March 2025 GMT
কক্সবাজার শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বিজিবি ক্যাম্প এলাকার সড়কে দাঁড়িয়ে পূর্ব দিকে তাকালে নজরে পড়ে শতবর্ষী দৃষ্টিনন্দন মসজিদ। এলাকায় মসজিদটি গায়েবি মসজিদ নামে পরিচিত। সম্পূর্ণ চুন-সুরকির এই মসজিদটি গরমের সময় ঠান্ডা আর শীতের সময় গরম থাকে।
সোনালি গম্বুজ ও সাদার মাঝে গোলাপি নকশায় অপরূপ এই মসজিদ দেখতে দূর থেকেও দর্শনার্থী আসেন। আয়তনে ছোট হলেও এর স্থাপত্যশৈলী ও গঠন দৃষ্টিনন্দন। মসজিদের উত্তর পাশে রয়েছে বিশাল এক দিঘি। মসজিদটির উত্তর-দক্ষিণে লম্বা ৩৪ ফুট, পূর্ব-পশ্চিমে ২৬ ফুট। চারটি পিলার বা স্তম্ভের ওপর দাঁড়িয়ে আছে মসজিদটি। মসজিদের দরজা একটি। এর উচ্চতা পাঁচ ফুট। দুটি জানালার উচ্চতা সাড়ে চার ফুট, প্রস্থ তিন ফুট। মসজিদের দেয়াল পাঁচ ফুট চওড়া। প্রাচীন মসজিদটি সম্পূর্ণ চুন-সুরকি দিয়ে তৈরি। মসজিদের বিশালাকৃতির একটি গম্বুজ তৈরি হয়েছে লোহাবিহীন চুন-সুরকি দিয়ে।
মসজিদটির নির্মাণ কাল নিয়ে নানা মতভেদ রয়েছে। এর মুঘল ধাঁচের নির্মাণ শৈলী দেখে অনেকের ধারণা এটি সুবেদার শাহ সুজার সময়কালে (১৬১৬ -১৬৬১) তৈরি হয়েছিল। মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি প্রবীণ শিক্ষক গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী বলেন, প্রকৃত অর্থে গায়েবি মসজিদটি কে তৈরি করেছিলেন, তার সঠিক তথ্য-প্রমাণ কিংবা ইতিহাস কারও জানা নেই। তবে এটির বয়স ৪০০ বছর হতে পারে।
৫ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার কিছু মানুষ মনে করেন, মুঘল শৈলীর হলেও সাচী চৌধুরী নামে এলাকার একজন দানশীল মানুষ ১৮৬১ খিষ্টাব্দের দিকে এই মসজিদ তৈরি করেছেন। এ কারণে মসজিদের নামকরণ হয়েছে সাচী চৌধুরী মসজিদ নামে। সাচী চৌধুরীর আদি নিবাস ছিল চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায়।
জানা যায়, ১৮৫৪ খ্রিষ্টাব্দে কক্সবাজার মহকুমায় উন্নীত হওয়ার পরেই সাচী চৌধুরী আনোয়ারা থেকে কক্সবাজারে এসে বসবাস শুরু করেন। তাঁর নামে গ্রামের নামকরণ হয়েছে চৌধুরী পাড়া। কয়েক বছর আগে মসজিদের সংস্কারকাজ করা হয়েছে। নামাজ পড়ার পরিসর বাড়ানো হয়েছে।
জানা যায়, ১৯৬০ ও ১৯৯১ সালের দুটি বড় ঘূর্ণিঝড় ক্ষতি করতে পারেনি মসজিদটির। অথচ, ওই দুই ঝড়ে আশপাশের সবকিছু বিধ্বস্ত হয়েছিল। এ কারণে লোকমুখে মসজিদটি নাম হয়েছে গায়েবি মসজিদ।
মসজিদের দীর্ঘ কয়েক বছর ইমামতি করেন স্থানীয় মাওলানা আবুল হোছাইন। তাঁর ছেলে নুরুল হুদা (৫৫) বলেন, তাঁর বাবার মুখ থেকে মসজিদ নিয়ে অনেক জনশ্রুতি শুনেছেন তাঁরা। গভীর রাত পর্যন্ত মসজিদে মুসল্লিরা আসেন। ইবাদত করেন। এর থেকে অনেকে বিশ্বাস করেন, এখানে জিনেরা নামাজ পড়ে।
কক্সবাজারের ইতিহাস-ঐতিহ্যের জড়িত এই মসজিদের সংরক্ষণ জরুরি বলে উল্লেখ করেন মসজিদের খতিব মাওলানা আমান উল্লাহ। তিনি বলেন, ১৯৬০ ও ৯১ প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাসে বিশাল এলাকা লন্ডভন্ড হলেও গায়েবি মসজিদ অক্ষত অবস্থায় ছিল। এ সময় মসজিদের আশপাশের লোকজনের শত শত পাকা ঘরবাড়ি অবকাঠামো বিধ্বস্ত হয়েছিল। মসজিদটি রক্ষা পাওয়ায় লোকজনের কাছে মসজিদটি গায়েবি মসজিদ নামে পরিচিতি পায়। গায়েবি অর্থ অলৌকিক শক্তি। এ মসজিদের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো, প্রচণ্ড গরমেও ভেতরে পরিবেশ থাকে ঠান্ডা-শীতাতপ। আবার শীতকালে গরম অনুভূত হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: মসজ দ র মসজ দ ন র সময়
এছাড়াও পড়ুন:
না’গঞ্জ আই.ই.টি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়’র শতবর্ষ উদযাপন পরিষদের আহবায়ক কমিটি গঠন
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অতিরিক্ত কর কমিশনার মর্তুজা শরিফুল ইসলামকে আহবায়ক ও আবদুল আউয়াল সরকারকে সদস্য সচিব করে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট নারায়ণগঞ্জ ইসলামিক এডুকেশন ট্রাস্ট (আই.ই.টি) সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শতবর্ষ উদযাপন পরিষদের আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে।
শনিবার চাষাড়ার একটি রেস্টুরেন্টে ইফতার পরবর্তী সভায় বিভিন্ন ব্যাচের ছাত্রদের নিয়ে প্রাথমিকভাবে কার্য পরিচালনার জন্য এ আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়।
১৫ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটির সদস্যরা হলেন মর্তুজা শরিফুল ইসলাম আহবায়ক, আবদুল আউয়াল সরকার সদস্য সচিব, মো. ওয়াহিদুজ্জামান জুয়েল কোষাধ্যক্ষ এবং সদস্যরা হলেন মো. রমিজ উদ্দিন, কাজী খালেদ কায়েস বাপ্পী, মো. কামরুল ইসলাম, হাসান নাসির আহমেদ রুবেল, মো. মফিজুর রহমান আলামিন, মো. সাজ্জাদ হোসেন, মো. শাহাজাদা, মো. লিটন প্রধান, মো. মোক্তার হোসেন, ইমরুল ইসলাম সুইট, মো. তামিম রায়হান ও মো. মোস্তাফিজুর রহমান তিলক।
উল্লেখ্য, আগামী বছর ২০২৬ সালে ইসলামিক এডুকেশন ট্রাস্ট (আই.ই.টি) সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্ণ হবে। আগামী তিন মাসে বিভিন্ন ব্যাচের প্রতিনিধিদের কাছ থেকে নিজ নিজ ব্যাচের সদস্যদের ডাটা কালেক্ট করা ও সারা বাংলায় সকল প্রাক্তন আইইটিয়ানদের কাছে শতবর্ষ উদযাপনের বার্তা পৌছে দেয়াই এ কমিটির লক্ষ্য।
দায়িত্বপ্রাপ্ত আহবায়ক কমিটির প্রধান মর্তুজা শরিফুল ইসলাম বলেন, আগামী তিন মাসে আই ই টি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে অংশগ্রহণ ও স্কুলের বিভিন্ন অবকাঠামোগত সমস্যা যার মধ্যে সেনিটেশন, বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা সহ স্কুলের লেখাপড়ার মান উন্নয়নে বিভিন্ন কাজ করবেন প্রাক্তন ছাত্ররা।
সেই সাথে ছোট ছোট কিছু ইভেন্টের মাধ্যমে সবার কাছে বার্তা পৌছে দেয়ার প্রয়াসসহ আই ই টি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় একাডেমিক ফলাফল ও খেলাধুলাসহ অন্যান্য সহায়ক কার্যক্রম পূর্নাঙ্গভাবে চালু করা, নারায়ণগঞ্জের সেরা স্কুলের তালিকায় পূর্বের অবস্থানে পৌছে দিতে কাজ শুরু করবে সাবেক আইইটিয়ানসহ পুরো আই ই টি পরিবার। একটি আলমনাই এসোসিয়েশন করে স্কুলের বিভিন্ন কার্যক্রমে সব সময়ে নিয়োজিত থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।