প্রায় ২৮ বছর আগে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছিল মান্না-মৌসুমী জুটির প্রথম সিনেমা ‘লুটতরাজ’। কাজী হায়াৎ পরিচালিত সিনেমাটি ব্যাবসায়িক সফলতা পেয়েছিল। অভিনয়ের পাশাপাশি কৃতাঞ্জলী চলচ্চিত্রের ব্যানারে এর প্রযোজনা করেন নায়ক মান্না। এতে আরও অভিনয়ে ছিলেন দিতি। সিনেমাটির মাধ্যমে প্রথমবার সিনেমায় প্লেব্যাক করেন সংগীতশিল্পী আইয়ুব বাচ্চু। গেল বছর সিনেমাটির ২৭ বছর উপলক্ষে প্রথম আলোর কথা হয় কাজী হায়াতের সঙ্গে। সিনেমার জানা-অজানা অনেক বিষয় নিয়ে কথা বলেন তিনি।

‘লুটতরাজ’ সিনেমায় মান্নার বিপরীতে নায়িকা হিসেবে চূড়ান্ত ছিলেন দিতি ও অঞ্জু ঘোষ। কিন্তু শেষ মুহূর্তে অঞ্জু ঘোষের স্থলাভিষিক্ত হন মৌসুমী। প্রথম আলোকে কাজী হায়াৎ বলেন, ‘এই সিনেমায় মান্নার বিপরীতে প্রধান নায়িকা হিসেবে দিতিকে নেওয়া হয়, দ্বিতীয় নায়িকা হিসেবে অঞ্জু ঘোষকে নেওয়ার কথা প্রায় পাকা ছিল। অঞ্জুকে সাইনিং মানিও দেওয়া হয়েছিল। সে সময় মৌসুমীর কাছের একজন আমাকে এসে বলেন, অনুমতি পেলে মৌসুমীর সঙ্গে গল্পটি তিনি শেয়ার করতে চান। তখন আমি তাকে বলি, এই সিনেমায় ও মনে হয় না অভিনয় করতে রাজি হবে, তবু আলাপ করতে পারো। দুই দিন পর সে জানায়, মৌসুমী এ সিনেমাটা করতে চায়। তখন বিএফডিসির চার নম্বর ফ্লোরে মৌসুমী শুটিং করছিল। আমি সেখানে যাওয়ার পর দেখা হলে আমাকে ‘‘লুটতরাজ’’ সিনেমায় অভিনয়ের ইচ্ছার কথা জানায়।’

কাজী হায়াৎ জানান, সিনেমার গল্প নিয়ে কথা বলতে চাইলে তাঁকে থামিয়ে দেন মৌসুমী। মৌসুমী তখন তাঁকে বলেন, ‘গল্প আমার জানার দরকার নেই। আমি দ্বিতীয় নাকি তৃতীয় নায়িকা, তা–ও মুখ্য নয়। আমি কাজী হায়াতের সিনেমায় অভিনয় করছি, এটাই মুখ্য। আমি তৈরি আছি, কাল আমার বাবার কাছ থেকে শিডিউল নিয়ে আসবেন।’ এরপর মৌসুমীর বাবার কাছে সাইনিং মানি দিয়ে শিডিউল নিয়ে আসেন মান্না।

দিতি.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

যশোরে বাড়িতে ঢুকে দুর্বৃত্তরা গুলি করে হত্যা করল যুবককে 

যশোরের ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ ম্যানসেলের প্রধান সহযোগী মীর সামির সাকিব সাদী (৩৫) দুর্বৃত্তদের ছোড়া গুলি ও ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছে। সোমবার রাত পৌনে ১২টার দিকে শহরের মুড়িব সড়ক জয়ন্তী সোসাইটির পেছনে বাড়িতে ঢুকে দুর্বৃত্তরা তাকে হত্যা করে। নিহত সাদী ওই এলাকার মীর শওকত আলীর ছেলে। এ ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন এবং জড়িতদের ধরতে অভিযান শুরু করেছে।
 
নিহতের চাচাতো ভাই রাকিব জানান, রাত পৌনে ১২টার দিকে তিনি ও সাদী বাড়ি ফেরেন। বাড়ির উঠানে মোটরসাইকেল তোলার সময় পেছন থেকে সাদীকে চাকু দিয়ে আঘাত করা হয়। এরপর তাকে গুলি করে। এক রাউন্ড গুলির পর গুলি বের হচ্ছিলো না। এ সময় তিনি হামলাকারী সুমন, মেহেদীসহ তাদের সহযোগীদের লক্ষ্য করে ইট নিক্ষেপ করলে তারা আরও ৫-৬ রাউন্ড গুলি ছুঁড়ে পালিয়ে যায়। তাদের ছোড়া দু’টি গুলি সাদীর গলা ও বুকে লাগে। 

স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ মরদেহ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। তিনি দাবি করেন, সাদী রেল বাজারের ইজারাদার। হামলাকারীরা বাজার এলাকায় চাঁদাবাজি করত। তাদের প্রশয় না দেওয়ায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে।

যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নূর-ই-আলম সিদ্দিকী জানান, খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। জড়িতদের ধরতে পুলিশের একাধিক টিম অভিযান শুরু করেছে। হত্যার কারণ জানতে পুলিশ তদন্ত করছে। তিনি জানান, নিহত সাদী ও হত্যাকাণ্ডে জড়িত বলে যাদের নাম আসছে উভয়পক্ষই সন্ত্রাসী। সকলের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা বলছেন, সাদী যশোরের শীর্ষ সন্ত্রাসী ম্যানসেলের প্রধান সহযোগী ও ম্যানেজার। সাদীকে যারা হত্যা করেছে তারাও ম্যানসেলের সহযোগী। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা ও ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ ম্যানসেলসহ তার পক্ষের লোকজন গা-ঢাকা দেয়। সম্প্রতি সাদীসহ তাদের কেউ কেউ এলাকায় ফিরতে শুরু করেছে। এরই মধ্যে তাদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে সাদী খুন হয়।

স্থানীয়রা জানান, ২০১৩ সালের ৯ ডিসেম্বর যশোর শহরের সিভিল কোর্ট মোড়ে জেলা ছাত্রদলের তৎকালীন সহসভাপতি কবির হোসেন পলাশকে খুন করে মোটরসাইকেলযোগে পালানোর সময় শহরের পালবাড়ি ভাস্কর্য মোড়ে সড়ক দুর্ঘটনার আহত হন সাদী। দুর্ঘটনায় তার এক পা কেটে ফেলতে হয়। এক পা হারিয়েও ম্যানসেলের প্রধান সহযোগী পরিচয়ে সাদী এলাকায় সন্ত্রাসী তৎপরতা চালিয়ে আসছিল।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ