Samakal:
2025-04-16@03:01:37 GMT

বিষয়ভিত্তিক পরামর্শ

Published: 16th, March 2025 GMT

বিষয়ভিত্তিক পরামর্শ

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন ও ভূমি ব্যবস্থাপনা বিভাগে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন নাহিদ হাসান জয়। প্রথম বর্ষ থেকেই সহকারী জজ হওয়ার লক্ষ্য স্থির করে পরিকল্পিতভাবে পড়াশোনা চালিয়ে যান। ১৭তম বিজেএস পরীক্ষায় প্রথমবারেই সহকারী জজ হিসেবে সুপারিশপ্রাপ্ত হন তিনি। সহকারী জজ হওয়ার স্বপ্ন যাদের, তাদের জন্য নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে বিষয়ভিত্তিক পরামর্শ দিয়েছেন জয়। সে বিষয়টি তুলে ধরেছেন ইরফান উল্লাহ রাফসানজানি
১.

বিজেএস সিলেবাস ও প্রশ্নপত্র বিশ্লেষণ:
বিজেএসের প্রিপারেশনের শুরুতেই ওয়েবসাইট থেকে বিজেএসের সিলেবাসটি প্রিন্ট করে কয়েকদিন সেটা নিয়েই ভাবা উচিত। কোন বিষয়গুলো একজন শিক্ষার্থীর নিয়ন্ত্রণাধীন এবং কোনগুলো দুর্বলতা সেগুলো খুঁজে বের করা প্রথম কাজ।
২. বাংলা ও ইংরেজিতে বিশেষ নজর:
বাংলা গ্রামার অংশে থাকে ৪০ নম্বর এবং ইংরেজি গ্রামার অংশে থাকে ৩০ নম্বর। তাই এই অংশে প্রথমেই বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। যে টপিকগুলো থেকে প্রতিনিয়ত প্রশ্ন হচ্ছে প্রশ্নপত্র বিশ্লেষণ করে সেই টপিকগুলোর আদ্যোপান্ত সব পড়ে ফেলতে হবে। বাকি অংশগুলো ফ্রিহ্যান্ড রাইটিং দক্ষতার ওপর নির্ভর করবে। 
৩. গণিত বুঝে পড়া:
বেশির ভাগ শিক্ষার্থীই এই অংশে খারাপ করে তাই প্রিপারেশনের শুরু থেকে শেষ অবধি প্রতিদিনই গণিত অনুশীলন করা উচিত। প্রথমেই মাধ্যমিক শ্রেণি পর্যন্ত গণিতের ওপর দক্ষতা বাড়াতে হবে এবং সেই সঙ্গে বাজারের প্রচলিত বইগুলো থেকে বিভিন্ন পরীক্ষায় আসা প্রশ্নপত্রগুলো সলভ করলে গোছানো একটি প্রিপারেশন নেওয়া সম্ভব।
৪. বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়:
বাংলাদেশ-আন্তর্জাতিক টপিক প্রিলি, লিখিত এবং ভাইভা প্রতিটি ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ। এর জন্য প্রতিনিয়ত দেশ-বিদেশে ঘটে যাওয়া আলোচিত বিষয়বস্তু সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা রাখতে হবে।
৫. বিজ্ঞান অংশ:
১৬ এবং ১৭শ বিজেএস লিখিত প্রশ্নপত্র বিশ্লেষণ করলে দেখা যাচ্ছে, মোট ১৩টি প্রশ্ন থাকছে এবং ১০টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে এই অংশে ভালো করতে প্রথমেই মাধ্যমিক পর্যন্ত বিজ্ঞান বইগুলো ভালোভাবে পড়াশোনা করলে বেসিক ক্লিয়ার করা সম্ভব। সেই সঙ্গে বাজারের প্রচলিত বইগুলো থেকে বিগত বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্নপত্রগুলো বিশ্লেষণ করলে প্রিপারেশনকে আরও শানিত করা সম্ভব। 
৬. সমসাময়িক বিষয় ও পত্রিকা পড়া:
ফ্রিহ্যান্ড রাইটিং স্কিল বাড়াতে হলে সমসাময়িক বিষয়গুলোর সঙ্গে নিজেকে আপডেট রাখতে হবে এবং এ ক্ষেত্রে পত্রিকা পড়ার কোনো বিকল্প নেই। 
৭. আইনসংক্রান্ত বিষয়ে পারদর্শিতা:
ক. আইন অংশে ৬০০ মার্কস থাকে। তাই এই অংশে ভালো করার কোনো বিকল্প নেই। ৬০০ মার্কসের মধ্যে কিছু অংশে বেশি ভালো করা যায় যেমন– মুসলিম আইনের উত্তরাধিকার সংক্রান্ত বিষয়াবলি এবং হিন্দু আইনের উত্তরাধিকার সংক্রান্ত বিষয়াবলি মিলেই ৪০ মার্কস ভালোভাবে পাওয়া সম্ভব। সাধারণত প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষেই পারিবারিক আইন পড়ানো হয়; তাই এই সেটে সবারই কম বেশি জ্ঞান থাকে। 
খ. এ ছাড়া দেওয়ানি সংক্রান্ত বিষয়াবলিতে একটু কৌশলী হয়ে সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন, তামাদি আইন, সিভিল কোর্টস অ্যাক্ট এই ছোট-ছোট আইনগুলো ভালোভাবে পড়লে ৬০ মার্কস কভার হয়ে যায়।
গ. সাংবিধানিক আইনে সবসময় একটু বিশেষ নজর দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সংবিধান খুব ভালোভাবে আয়ত্তে রাখার পাশাপাশি অন্যান্য দেশের সংবিধানের তুলনামূলক বিশ্লেষণ করে পড়া উচিত। সংবিধানের ইতিহাস, গুরুত্বপূর্ণ মামলা, সংশোধনীগুলো আয়ত্তে রাখলে এই অংশের ১০০ মার্কসে ভালো করা সম্ভব।
ঘ. সম্পত্তি ও ভূমিসংক্রান্ত সেটে মূল আইনগুলোকে ভালোভাবে পড়তে হবে। মূল আইনগুলো উদাহরণসহ ভালোভাবে পড়লে এই অংশে ভালো করা সহজ হয়ে পড়বে।
ঙ. ফৌজদারিসংক্রান্ত আইনগুলো কিছুটা বড় হলেও কৌশলী হতে হবে। এ ক্ষেত্রে বিগত প্রশ্নগুলো বিশ্লেষণ করে দেখতে হবে কোন অংশ থেকে বেশি প্রশ্ন হচ্ছে এবং সেগুলো ভালোভাবে পড়তে হবে। পাশাপাশি কিছু রেফারেন্স বই থেকে নিয়মিত জ্ঞানের পরিধি বাড়াতে হবে।
চ. স্পেশাল বা ঐচ্ছিক সেটের জন্য একজন শিক্ষার্থীর পছন্দকে সম্মান জানানো হয়। এ ক্ষেত্রে ঐচ্ছিক-১ বা ঐচ্ছিক-২ স্বাধীনভাবে গ্রহণ করতে পারেন একজন শিক্ষার্থী। স্পেশাল অংশের জন্য মূল আইনের ধারাগুলো ভালোভাবে আয়ত্তে রাখাই যথেষ্ট। সেই সঙ্গে আদালতের বিশেষ কোনো সিদ্ধান্ত থাকলে সেগুলোও ধারাগুলোর সঙ্গে কানেক্ট করে পড়তে হবে।
৮. খাতায় লেখার মান ও ভাষা:
আমি বরাবরই সবাইকে বলি, খাতায় লেখার মান বাড়াতে হবে। বাংলা বা ইংরেজি যে ভাষাতেই লেখা হোক না কেন, সেটা যেন মানসম্পন্ন হয় সে বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে। 
৯. নতুনদের জন্য পরামর্শ:
সর্বশেষ নতুনদের জন্য পরামর্শ হলো– ধৈর্যশীল হতে হবে। প্রথমেই লক্ষ্য ঠিক করে নিতে হবে। তারপর সেই লক্ষ্য অনুযায়ী রুটিন করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। মনে রাখতে হবে, সঠিকভাবে চেষ্টা করলে সফলতা আনবেই। পরিশ্রম করার কোনো বিকল্প নেই, তাই ধারাবাহিকভাবে পরিশ্রম করে যেতে হবে।v
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর ক ষ প রথম ই এই অ শ ব জ এস র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

রাজস্ব আদায়ে পদক্ষেপ নিন

স্টেশন বন্ধ। কিন্তু ট্রেন আসে, ট্রেন যায়। যাত্রীরাও ওঠানামা করেন। তবে টিকিট ছাড়া। কারণ, স্টেশন বন্ধ থাকায় কোনো টিকিট বিক্রি হয় না। কুমিল্লার লাকসাম থেকে রেলপথে নোয়াখালী পর্যন্ত প্রায় ৫২ কিলোমিটারের দূরত্বে এ রকম ছয়টি স্টেশন আছে। প্রায় দুই দশক ধরে বিভিন্ন সময়ে স্টেশনগুলোর কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। এতগুলো স্টেশন থেকে বিনা টিকিটে যাত্রী ওঠানামা করেন। ফলে প্রতিনিয়ত রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। এটি কোনোভাবেই কাম্য নয়।

প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, দীর্ঘ রেলপথটিতে মোট ১২টি স্টেশন রয়েছে। এর মধ্যে লাকসামের দৌলতগঞ্জ, মনোহরগঞ্জের খিলা ও বিপুলাসার, নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীর বজরা, নোয়াখালী সদরের মাইজদী ও হরিনারায়ণপুর স্টেশনের কার্যক্রম ২০০৩ সালের পর থেকে পর্যায়ক্রম বন্ধ হয়ে যায়। সর্বশেষ ২০১৭ সালে লাকসাম পৌর শহরের দৌলতগঞ্জ স্টেশনটির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। আগে এই রেলপথে প্রতিদিন আন্তনগর, এক্সপ্রেস, লোকাল, ডেমুসহ অন্তত ১২টি ট্রেন চলাচল করত। এ রেলপথে এখন আন্তনগর উপকূল এক্সপ্রেস নামে একটি ট্রেন চলাচল করে। আর তিনটি ভিন্ন নামে আরেকটি এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল করে, যেটি স্থানীয় ব্যক্তিদের কাছে লোকাল ট্রেন হিসেবে পরিচিত।

পূর্বাঞ্চলীয় রেলওয়ের কর্মকর্তাদের বক্তব্য, জনবলসংকটসহ নানা কারণে বিভিন্ন সময়ে এসব স্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। তবে মানুষের কথা চিন্তা করে এখনো ট্রেনসেবা চালু রাখা হয়েছে। এসব স্টেশনে বিনা টিকিটে যাত্রী ওঠার পাশাপাশি বুকিং ছাড়াই মালামালও পারাপার হচ্ছে। এ ক্ষেত্রেও প্রতিনিয়ত রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই ধন্যবাদ দিতে হয় যে মানুষের কথা চিন্তা করে ট্রেনসেবাটি তারা বন্ধ করেনি। তবে স্টেশনগুলো আবার চালু করাও সময়ের দাবি। কারণ, স্থানীয় লোকজনই বলছেন স্টেশনগুলো দিয়ে বিপুল মানুষ যাতায়াত করে থাকেন। এক ব্যক্তি বলছেন, ‘খিলা ও বিপুলসার স্টেশন আমাদের গ্রামের দুই দিকে কাছাকাছি। একসময় এই স্টেশনগুলো জমজমাট ছিল। দিনরাত ট্রেনের হুইসেল বাজত। কিন্তু এখন জৌলুশ নেই। স্টেশনগুলো বন্ধ থাকায় রাতে সেখানে মাদকসেবীদের আড্ডাসহ অসামাজিক কার্যক্রমও চলে। আমরা চাই, রেলের সোনালি দিনগুলো ফিরে আসুক।’

দৌলতগঞ্জ স্টেশনটি দেড় দশক আগেও খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। স্টেশনটি ডাকাতিয়া নদীর তীরে অবস্থিত হওয়ায় নদীপথে আসা মালামাল ট্রেনে আনা-নেওয়ার জন্য এটিকে ব্যবহার করা হতো। এখন টিকিট বেচা ও মালামাল পরিবহনে বুকিং কার্যক্রম বন্ধ। কিছু জায়গা এখন দখল হয়ে কয়েক শ অস্থায়ী দোকান বসে গেছে, যার মধ্যে গড়ে উঠেছে লাকসামের বৃহৎ কাঁচাবাজার।

আমরা আশা করব, প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ করে স্টেশনগুলো আবারও চালু করা হবে। ইতিমধ্যে এ বিষয়ে পর্যালোচনা করা হচ্ছে বলে আমরা জানতে পারছি। এখন কবে নাগাদ পরিবর্তন দেখতে পাব আমরা, সেটিরই অপেক্ষা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ