বিকেল বাড়ার সঙ্গে ক্যাম্পাসে বাড়তে থাকে ব্যস্তুতা। কেউ ক্যাফেটেরিয়ায় যাচ্ছে, কেউ যাচ্ছে গেটে। কার আগে কে যাবে চলে সেই প্রতিযোগিতা। ফেরার পথে কারও হাতে থাকছে মুড়ি, কারও হাতে ছোলা, আলুর চপ, পেঁয়াজু। এরপর চলে জায়গা খোঁজার প্রতিযোগিতা। মাঠের কোথায় ঘাস আছে, চত্বরের কোন জায়গাটা পরিষ্কার আছে সে জায়গায় বসে পড়া। সূর্য ডোবার আগ মুহূর্তে চলে মুড়ি, ছোলা, পেঁয়াজু, শরবত তৈরির প্রস্তুতি। এই দৃশ্য পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রব)। রমজানের শুরু থেকে এভাবেই ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের ইফতারের আয়োজন চলে। এবারের রমজানে ক্লাস, পরীক্ষা থাকার কারণে অধিকাংশ শিক্ষার্থীই বাড়ি যেতে পারেননি। ক্যাম্পাসে ক্লাস পরীক্ষা চলবে আঠারো রমজান পর্যন্ত। তাই শিক্ষার্থীদের এবারের সাহ্রি ও ইফতার সারতে হচ্ছে ক্যাম্পাসেই। অধিকাংশ শিক্ষার্থী মেসে এবং হলে সাহ্রি করলেও ইফতার করতে আসেন ক্যাম্পাসে। বিকেলে
বন্ধু, সিনিয়র, জুনিয়রদের সঙ্গে বসে শেষ করেন ইফতারি। প্রতিদিন ক্লাস, পরীক্ষা শেষ করে বিকেলে ক্যাম্পাসে এক এক করে আসতে শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ, স্বাধীনতা চত্বর, শহীদ মিনার, মুক্তমঞ্চ, এলিভেটেডের ওপরে এবং লেক পাড়ে নিজেদের পছন্দমতো জায়গা খুঁজে নেন। এর পর শুরু হয় ইফতারের আয়োজন। ইফতারি কেউ ক্যাফেটেরিয়া থেকে কেনেন কেউ আবার ক্যাম্পাস গেট থেকে। এর পাশাপাশি অনেকে মেস থেকে তৈরি করে আনেন, অনেকে আবার অনলাইনে অর্ডার করেন। নানা প্রকারের ইফতারির পসরা নিয়ে শুরু হয় প্রস্তুতি পর্ব। কোন গ্রুপ পেপার আনতে যাচ্ছে, কোন গ্রুপ প্লেট নিয়ে আসছে। কেউ ফল কাটছে, শরবত বানাচ্ছেন, কেউ ছোলা, পেঁয়াজু, আলুর চপ, বেগুনি মাখাচ্ছে, কেউ বিতরণ করছে। এ যেন এক রীতিমতো এক উৎসব। গল্প আর আড্ডায় চলতে থাকে এই উৎসব। এই ইফতারে সিনিয়র, জুনিয়র পার্থক্য থাকে না। পার্থক্য থাকে না কে মুসলমান কে হিন্দু। সৌহার্দ্য আর সম্প্রীতি এক বিরল দৃশ্যের দেখা মেলে প্রতিদিনের ইফতারে।
বন্ধুদের সঙ্গে ইফতারের সময় মনে পড়ে যায় পরিবারের কথা। মায়ের হাতে বানানো সেই ইফতারের স্বাদ যেন অমৃত। তবু জীবনের তাগিদেই পরিবারের বাইরে ইফতার। তবে এই জায়গাটি যেন আরেকটি পরিবার। পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের মাহি বিন জাকির বলেন, ‘বাসায় থাকলে সাহ্রি, ইফতার পরিবারের সঙ্গেই হতো। কিন্তু ক্লাস পরীক্ষার কারণে সেটা সম্ভব হচ্ছে না। ক্যাম্পাসে সবাই মিলে ইফতার করি। এটাও একটা পরিবার।’ পরিসংখ্যান বিভাগের শ্রী তন্ময় কুমার বলেন, ‘ইফতারি
আমাদের মাঝে একটা সাম্প্রতিক বন্ধন তৈরি করে। ক্যাম্পাসের ইফতারে কেউ ধর্ম, বর্ণ খোঁজে না। রমজানের এই সময়টাতে
পুরো ক্যাম্পাসে ইফতারের আয়োজন নিয়ে একটা উৎসব
বিরাজ করে।’v
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইফত র ইফত র র র ইফত র পর ক ষ পর ব র রমজ ন
এছাড়াও পড়ুন:
প্রথমবার কানে যাচ্ছেন আলিয়া
এ বছর ‘কান চলচ্চিত্র উৎসব’-এ যাচ্ছেন বলিউড অভিনেত্রী আলিয়া ভাট। বিশ্বের মর্যাদাপূর্ণ এই চলচ্চিত্র উৎসবে প্রথমবার পা রাখতে যাচ্ছেন তিনি। এ খবর শুনে অনেকে অবাক হয়েছেন। কারণ একটাই, নন্দিত এই অভিনেত্রীর এখনও ‘কান চলচ্চিত্র উৎসব’-এ অংশ নেওয়া হয়নি, সে খবর অনেকের অজানা। সুপারস্টারদের বাইরেও বলিউড অভিনেত্রীদের অনেকে ছুটে গেছেন কান সাগর পারে। চলচ্চিত্র উৎসবকে কেন্দ্র করে দ্বিতীয় সারির অভিনেত্রীদের দেখা মিলেছে কান সাগর পারে; অথচ আলিয়া সেখানে যাননি! বিস্ময় নিয়ে এ প্রশ্নই উঠে এসেছে নেটিজেনদের কাছ থেকে। আলিয়া নিজেই যখন বিষয়টি খোলাসা করেছেন, তখন এ নিয়ে আর কোনো প্রশ্নের অবকাশ থাকে না।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া থেকে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার সকালে মুম্বাইয়ে পাপারাজ্জিকে নিয়ে প্রি-বার্থডে সেলিব্রেশনে মেতে উঠেছিলেন আলিয়া ভাট। সে অনুষ্ঠানেই অভিনেত্রী ফাঁস করেন কানে যাওয়ার খবরটি। জানান, চলতি বছরের কান চলচ্চিত্র উৎসবে যোগ দিচ্ছেন তিনি। এমনিতেও প্রতি বছর কানের মঞ্চে ভারতীয় বিনোদর দুনিয়ার তারকাদের দেখা যায়। সেই তালিকায় ঐশ্বর্য রাই বচ্চনের পাশাপাশি দীপিকা পাড়ুকোন, ক্যাটরিনা কাইফ থেকে শুরু করে অদিতি রাও হায়দরি, এশা গুপ্তা, মল্লিকা শেরওয়াত, ম্রুণাল ঠাকুর, হিনাসহ রয়েছে অনেকের নাম। সেখানে এবার নবতম সংযোজন আলিয়া ভাট। এই আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে যোগ দেওয়ার জন্য মুখিয়ে থাকেন তারকারা। সেই আমন্ত্রণ এবার আলিয়া ভাটের কাছে। এ নিয়ে আগেও গুঞ্জন শোনা গিয়েছিল, তবে বিষয়টি যে সত্যি, সেটি বৃহস্পতিবার নিশ্চিত করেছেন অভিনেত্রী নিজে। আলিয়ার কথায়, ‘‘আমি এখন প্রহর গুনে যাচ্ছি ‘কান চলচ্চিত্র উৎসব’-এ যোগ দেওয়ার জন্য। কারণ অভিনয় জগতের সবার মতো আমার কাছেও এই উৎসবটি স্পেশাল।’’
এদিকে অভিনয়ের পাশাপাশি প্রযোজনা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন আলিয়া ভাট। অভিনেত্রী হিসেবে সবসময় ভিন্ন স্বাদের গল্প-চরিত্রের সিনেমা বেছে নিয়েছেন, তেমনি প্রযোজক হিসেবে ভালো কিছু কাজ উপহার দেওয়া তাঁর লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন এই অভিনেত্রী। এও জানিয়েছেন, অন্য প্রযোজকদের মতো বক্স অফিসের নম্বর নিয়ে তিনি কখনও মাথা ঘামান না। বক্স অফিসের ইঁদুর দৌড়ে অংশ নেওয়ার ইচ্ছাও তাঁর নেই। তাই প্রযোজক হিসেবে ভালো কনটেন্টকে প্রাধান্য দিয়ে আসছেন।
প্রসঙ্গত এক দশকের অভিনয় ক্যারিয়ারে নানা ধরনের গল্প ও চরিত্রে অভিনয় করে আলিয়া জয় করেছেন অগণিত দর্শক হৃদয়। অনবদ্য অভিনয়ের জন্য জাতীয় পুরস্কার থেকে শুরু একাধিকবার ফিল্মফেয়ারসহ বিভিন্ন পুরস্কার ও সন্মাননা পেয়েছেন এ অভিনেত্রী। আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে পুরস্কার উঠেছে তাঁর হাতে। বলিউড জয় করে পা রেখেছেন হলিউডের মাটিতে। দর্শক প্রশংসা কুড়িয়েছেন হলিউড হিসেবে ‘হার্ট অব স্টোন’-এ অভিনয় করে। ২০২৪ সালে বিশ্বের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের তালিকাতেও যুক্ত হয়েছে আলিয়ার নাম।