Samakal:
2025-03-17@04:42:18 GMT

হ্যাক বুঝবেন কীভাবে!

Published: 16th, March 2025 GMT

হ্যাক বুঝবেন কীভাবে!

নিজের শরীর নিয়ে মাথাব্যথা কম থাকলেও স্মার্টফোনের পরিচালন বিপত্তির পেছনে কারণ খতিয়ে দেখতে অনেকে আগ্রহী। আবার ছোটখাটো হ্যাকের ঘটনাও ঘটে নিত্যনৈমিত্তিক। সুরক্ষার প্রশ্নে স্বাভাবিক কিছু ঘটনা সামনে আসে। কিন্তু বিশেষ নজর না দেওয়ার কারণেই ঘটে বিপত্তি। চিহ্নিত কয়েকটি কারণ নিয়ে লিখেছেন সাব্বিন হাসান

ঘুম ছাড়া স্মার্টফোন জীবনের নিত্যসঙ্গী। বিষয়টি গবেষণায় প্রমাণিত। নিজেরা যদি প্রশ্ন করি, তাহলে সদুত্তরে এমন তথ্য অস্বীকার করার সুযোগ নেই। ডিজিটাল ডিভাইস বিশেষজ্ঞরা স্মার্ট গ্যাজেটস হ্যাক হওয়ার পেছনে কয়েকটি কারণ চিহ্নিত করেছেন। যার মধ্যে অতিরিক্ত তাপ, বাড়তি কলচার্জ, অদ্ভুত ফোনকল, অনিয়ন্ত্রিত অ্যাডওয়্যার, বহুরূপী অ্যাপ ও ম্যালওয়্যার হগিং রিসোর্স অন্যতম কারণ হিসেবে দৃশ্যমান হয়েছে।
ধারাবাহিক কয়েকটি লক্ষণ দেখলে নিজের ব্যবহৃত স্মার্ট ডিভাইস হ্যাক হয়েছে কিনা, তার ঠিকঠাক ধারণা পাওয়া সম্ভব।
ব্যবহৃত স্মার্টফোন হুট করে বহুমুখী অদ্ভুত সব আচরণ দৃশ্যমান করবে– ঘটনা এমন হলে শঙ্কা হতেই পারে যে ডিভাইসটি হ্যাক হয়ে গেছে, আর তা হ্যাকারের নিয়ন্ত্রণে। সাধারণত বেশ কয়েকটি লক্ষণ দেখলে মোবাইল হ্যাক হয়েছে কিনা, সে বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া সম্ভব। ঠিক যেসব কারণে ডিভাইস হ্যাক হওয়ার প্রচেষ্টা হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়, সেসব কারণ শনাক্ত করলেই হ্যাক থেকে অনেকাংশে সুরক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব।
অতিরিক্ত তাপ
প্রথমত, ডিভাইসটি হ্যাক হলে তাতে ব্যাটারি খরচ তুলনামূলক ও অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়া দৃশ্যমান হয়। কারণ, হ্যাক হলে ডিভাইসের ব্যাকগ্রাউন্ডে ক্ষতিকারক সফটওয়্যার স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করতে থাকে। এমন পরিস্থিতিতে ডিভাইস টানা ব্যবহার করলে স্মার্টফোন গরম হয়ে যাওয়া স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু ধারাবাহিকভাবে ফোন গরম হওয়ার পেছনের কারণ ভিন্ন হতে পারে। বিশেষভাবে পর্যবেক্ষণ করলে ডিভাইসে স্পাইওয়্যার বা ম্যালওয়্যার উপস্থিতির প্রমাণ মিললে বিশেষ সতর্ক হতে হবে।
বাড়তি কলচার্জ
ডিভাইস হ্যাক হলে সেখানে হুট করেই ডেটা খরচ বহুলাংশে বেড়ে যায়। ফলে বুঝতে হবে, আক্রান্ত ডিভাইস থেকে নিজের অজান্তে তৃতীয় পক্ষের কাছে তথ্য প্রেরণে সক্রিয়। প্রিমিয়াম পরিষেবা বা আন্তর্জাতিক কলের জন্য চার্জ অনেকাংশে ও আগের তুলনায় নির্দেশনা ছাড়াই বাড়তি চার্জ কেটে নেওয়া।
অনিয়ন্ত্রিত অ্যাডওয়্যার
আবার ফোন হ্যাক হলে পপ আপ বা বিজ্ঞাপনের দৃশ্যমান মাত্রা আচমকা বহুলাংশে বেড়ে যায়। এমনকি কোনো ব্রাউজার ব্যবহার না করলেও ঘটনা এমন হতে পারে। অনেকে একে ‘অ্যাডওয়্যার’ সংক্রমণের লক্ষণ বলে চিহ্নিত করেছেন।
বহুরূপী অ্যাপ
ঘটনা এমনও হতে পারে, নিজের ডিভাইসে অচেনা অ্যাপ স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে ডাউনলোড হয়ে যেতে থাকে। যদি দৃশ্যমান পরিস্থিতি এমন হয়, তাহলে সেটা ফোন হ্যাক হওয়ার অন্যতম কারণ।
হগিং রিসোর্স
কারণ ছাড়াই হঠাৎ করে ফোন আচমকা ধীরগতি (স্লো) হয়ে পড়েছে। এমনটা অনুভূত হলে বুঝতে হবে, ডিভাইসে ম্যালওয়্যার হগিং রিসোর্সের আক্রমণ হয়ে থাকতে পারে। সর্বশেষ যা ঘটলে হ্যাক হওয়ার আশঙ্কা প্রায় নিশ্চিত বলে ধরে নেওয়া যায়।
অদ্ভুত ফোনকল
অন্যদিকে, কোনো ফোন হ্যাক হয়ে গেলে বিশেষ বা অপ্রয়োজনীয় কোনো কোনো অ্যাপ নিজে থেকেই স্বয়ংক্রিয় রূপ ধারণ করে বা অন্যের কাছে নিজ থেকেই মেসেজ বা ফোনকল করে বসে। যদি পরিচিতজনের কাছ থেকে এমন অভিযোগ সামনে আসে, তাহলে বুঝতে হবে ডিভাইসের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে হ্যাকার চক্র। তখন ঘটতে পারে যে কোনো ধরনের ক্ষতি। ঘটনাটা অনুমান করা সহজ নয়। তবে বিশেষ উদ্দেশ্য সাধনের জন্যই এমনটা ঘটেছে, তা নিশ্চিত হয়ে যাবেন। উল্লিখিত সব কারণ থেকে ডিভাইসকে সুরক্ষা দিলে হ্যাক হওয়ার ঝুঁকি অনেকাংশে কমবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: হ য ক হওয় র হ য ক হল হ য ক হয় ব যবহ

এছাড়াও পড়ুন:

‘তিনটে ছেলে-মেয়ে এতিম হয়ে গেছে, স্বামীর হত্যাকারীদের বিচার চাই’

রাজকী বেগমের চোখের সামনে স্বামীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষ। তাঁর ছেলেমেয়েদেরও কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। আহাজারি করতে করতে রাজকী বেগম বলছিলেন, ‘আমার তিনটে ছেলে-মেয়ে এতিম হয়ে গেছে, আমার স্বামী হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই, ফাঁসি চাই।’

নড়াইলের কালিয়া উপজেলার শিলিমপুরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গত শনিবার সকালে দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়। এতে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রাজকী বেগমের স্বামী হাসিম মোল্যা (৩৮)। ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল রোববার বিকেলে গ্রামের বাড়িতে হাসিম মোল্যার মরদেহ এসে পৌঁছায়। আসরের নামাজ পর জানাজা শেষে স্থানীয় বাগমারা কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কালিয়ার হামিদপুর ইউনিয়নের শিলিমপুরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শনিবার সকালে ঠান্ডু মোল্যা ও জনি মোল্যা পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের ১৩ জন ও ২ পুলিশ সদস্য আহত হন৷ স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে কালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরে গুরুতর আহত জনি মোল্যা ও তাঁর ভাই হাসিম মোল্যাকে খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসিম মোল্যা মারা যান। ওই ঘটনায় সিরাজ মোল্যা ও আজিজার শেখ নামের দুজনকে ১টি একনলা বন্দুক, ২০টি গুলিসহ আটক করা হয়।

গতকাল বিকেলে শিলিমপুরে গিয়ে দেখা যায়, এলাকার পরিবেশ থমথমে। নিহত ব্যক্তির প্রতিপক্ষ ঠান্ডু মোল্যা পক্ষের কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুর ও পোড়ানো হয়েছে। মরদেহ আসার খবরে আত্মীয়স্বজন ও স্থানীয় লোকজন ভিড় করেছেন হাসিম মোল্যাদের বাড়িতে। অঝোরে কাঁদছেন বৃদ্ধ মা জাহিদা বেগম। তাঁর পাশেই কাঁদছেন হাসিম মোল্যার স্ত্রী রাজকী বেগম।

রাজকী বেগমের অভিযোগ, বাড়ির পাশে তাঁর সামনেই প্রতিপক্ষের লোকজন স্বামী ও সন্তানকে কুপিয়েছিলেন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্বামী মারা গেছেন। ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে রাজকী বেগম বলেন, ‘আমার সামনেই ওরা (প্রতিপক্ষ) স্বামীর মাথায় কোপ দেয়, হাত কেটে ফেলে। আমি কইছি, আর মারিস না, আমার কথা শুনল না। পাশেই আমার সন্তানরেও ওরা কোপাইয়ে ফেলাই থুইছে। ওই সময় আমার কেয়ামত হয়ে যাচ্ছে। আমি স্বামীর কাছে আসব, নাকি সন্তানের কাছে যাব। আমার ছেলের এক পায়ে তিনটে কোপ দেছে। আমি এসবের বিচার চাই।’

নিহত হাসিম মোল্যার বোন নাজনীন আক্তার বলেন, ‘প্রতিপক্ষ আমার এক ভাইয়ের হাত কেটে দেছে, ভাতিজাকে কুপিয়েছে। আমার আরেক ভাইকে খুন করিছে যারা, তাদের ফাঁসি চাই।’

এদিকে হাসিম মোল্যার মৃত্যুর পর প্রতিপক্ষ ঠান্ডু মোল্যা পক্ষের লোকজন এলাকায় না থাকায় তাঁদের সঙ্গে কথা বলা যায়নি।

গতকাল রাত ১০টার দিকে কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাশিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে এলাকার পরিবেশ স্বাভাবিক। নিহত হাসিমের মরদেহ দাফন সম্পন্ন হয়েছে। নিহত ব্যক্তির পরিবার এখনো কোনো মামলা করেনি। তবে পুলিশকে মারধর এবং অস্ত্র, গুলিসহ দুজনকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে দুটি মামলা করেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ