দোকান থেকে ডেকে নিয়ে যুবককে অপহরণ, ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি
Published: 16th, March 2025 GMT
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে নয়ন চন্দ্র দাস (২৬) নামে এক নববিবাহিত যুবককে অপহরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অপহরণকারীরা তার মুক্তির জন্য ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছে এবং বিষয়টি পুলিশ বা অন্য কারও কাছে জানালে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দিয়েছে।
রোববার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার ফান্দাউক ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। প্রকাশ্যে বাজার থেকে একজন ব্যবসায়ীকে অপহরণের ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।
নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
অপহৃত যুবকের মা রত্না রানী দাস বলেন, আমার ছেলে মাত্র ১০ দিন আগে বিয়ে করেছে। তার একটি মোবাইল সার্ভিসিংয়ের দোকান আছে। প্রতিদিনের মতো রোববার সকালে দোকানে যাওয়ার পরপরই কিছু অপরিচিত লোক মাইক্রোবাস নিয়ে সেখানে আসে। নয়নের নাম জানতে চেয়ে তারা দোকানের ঠিকানা নিশ্চিত করে। এরপর দোকানে গিয়ে নয়নকে গাড়িতে করে নিয়ে যায়। তারপর থেকেই সে নিখোঁজ।
নয়নের বাবা জানান, রোববার রাত ১০টার দিকে অপহরণকারীরা ফোন করে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা সোমবার সকালের মধ্যে দিতে হবে, নইলে নয়নকে আর ফিরিয়ে দেওয়া হবে না বলে হুমকি দেওয়া হয়।
ফান্দাউক ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. আলমগীর শাহ বলেন, প্রকাশ্যে বাজার থেকে একজন ব্যবসায়ীকে অপহরণ করা হয়েছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এ ঘটনায় পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
স্থানীয়রা দ্রুত নয়নকে উদ্ধার ও অপহরণকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন। পুলিশ বলছে, দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
অপহরণকারী আখ্যা দিয়ে বাবাকে পেটাচ্ছিল, পাশে কাঁদছিল শিশু রাইসা
কিশোরগঞ্জের ভৈরব থেকে নিজের তিন বছরের মেয়েকে নিয়ে অটোরিকশাযোগে জেলাশহরে ফিরছিলেন সোহেল মিয়া (৩০)। পথে কুলিয়ারচর উপজেলার রামদি ইউনিয়নের তাতারকান্দি এলাকায় তাকে শিশু অপহরণকারী আখ্যা দিয়ে অটোরিকশা থেকে নামায় স্থানীয় কিছু লোকজন। এ সময় পেছনে হাত বেঁধে সন্তানের সামনে সোহেল মিয়াকে উপস্থিত মানুষ পেটাতে থাকে। পাশেই রাইসা বাবা বাবা বলে চিৎকার করলেও তার কথা কেউ শোনেনি।
বিষয়টি দেখে একজন কুলিয়ারচর থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে বাবা-মেয়েকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
কুলিয়ারচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হেলাল উদ্দিন জানান, রবিবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে ফোন আসলে ঘটনাস্থলে গিয়ে সোহেল মিয়া ও রাইসাকে থানায় নিয়ে আসা হয়। পরে যাচাই-বাছাই করে জানা যায়, রাইসা সোহেল মিয়ার সন্তান। পরিবারের লোকজনকে খবর দিয়ে রাত ৯টার দিকে সোহেল মিয়া ও তার সন্তানকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ বিষয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
বাংলাদেশে তিনটি বড় হাসপাতাল করতে চায় চীন: স্বাস্থ্য উপদেষ্টা
কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের ওষুধ ‘চুরি’, আটক ২
এ ঘটনায় সাধারণ ডায়েরি মোতাবেক পুলিশ পদক্ষেপ নিবে কি-না জানতে চাইলে ওসি বলেন, ‘‘ঘটনাটি ভুল বুঝাবুঝির মাধ্যমে হয়েছে। জনগণতো জনগণই। কাউকে সন্দেহ হলে পুলিশকে খবর দেওয়া উচিত। আইন নিজের হাতে তোলে তো অপরাধ।’’
অপর আরেক প্রশ্নের জবাবে ওসি জানান, এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, সবাইকে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।
সোহেল মিয়া কিশোরগঞ্জ পৌরসভা এলাকার হারুয়া সওদাগর পাড়ার বাসিন্দা। সোহেল মিয়ার স্বজনেরা জানান, সোহেলের সঙ্গে প্রতিবেশী সাবিনা আক্তারের (২৫) ১০ বছর আগে বিয়ে হয়। এই দম্পতির তিন সন্তান রয়েছে। কিছু দিন হয় সোহেলকে তালাক দিয়ে চলে যান সাবিনা। সন্তান রয়ে যায় বাবার কাছে। তিন বছর বয়সী রাইসা মায়ের কাছে যেতে অস্থির। কোনো উপায় না পেয়ে রাইসাকে সঙ্গে নিয়ে সাবেক স্ত্রীর খোঁজে বের হয়েছিলেন সোহেল। ভৈরবে এক স্বজনের বাড়িতে রাইসার মা থাকতে পারে, ভেবে কয়েক দিন আগে রাইসাকে নিয়ে সেখানে যান সোহেল, কিন্তু তাঁকে পাননি। গতকাল রবিবার (১৩ এপ্রিল) ভৈরব থেকে বাড়ি ফেরার সময় আগরপুর বাসস্ট্যান্ডে অপ্রীতিকর পরিস্থিতির শিকার হন তিনি।
ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করার পর কুলিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আহত সোহেল মিয়াকে প্রাথমিক চিকিৎসা করিয়েছে পুলিশ। বর্তমানে পরিবারের সদস্যদের তত্ত্বাবধানে বেসরকারি হাসপাতালে তিনি চিকিৎসা নিচ্ছেন।
ঢাকা/রুমন/বকুল