‘ধর্ষণ’ শব্দ পরিহার নিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএম‌পি) ক‌মিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলীর করা মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। আজ রোববার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ধর্ষণ শব্দটি পরিহার নিয়ে ডিএম‌পি ক‌মিশনার শেখ মো.

সাজ্জাত আলীর করা মন্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। আট বছর বয়সী বা ৮০ বছর বয়সী, যার সঙ্গেই হোক না কেন—ধর্ষণ ধর্ষণই। এমন জঘন্য অপরাধকে অবশ্যই যথাযথভাবে উল্লেখ করতে হবে। বাংলাদেশের কোনো নাগরিকের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের সহিংসতা সহ্য করবে না অন্তর্বর্তী সরকার।’

উল্লেখ্য, গতকাল শনিবার গণপরিবহনে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ‘হেল্প’ অ্যাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘আমি দুটো শব্দ খুব অপছন্দ করি, এর মধ্যে একটি হলো “ধর্ষণ”। আপনাদের কাছে অনুরোধ, এটা ব্যবহার করবেন না। আপনারা “নারী নির্যাতন” বা “নিপীড়ন” বলবেন। আমাদের আইনেও নারী ও শিশু নির্যাতন বলা হয়েছে। যে শব্দগুলো শুনতে খারাপ লাগে, সেগুলো আমরা না বলি।’

আরও পড়ুন‘ধর্ষণ’ শব্দের বদলে ‘নারী নির্যাতন’ ব্যবহারের অনুরোধ ডিএমপি কমিশনারের১৫ মার্চ ২০২৫

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

রোজার বাকি দিনগুলো সুস্থ শরীরে কাটাতে হলে যেসব নিয়ম মানবেন

১. একজন রোজাদার ইফতার ও সাহ্‌রিতে কী খাবেন, তা নির্ভর করবে তাঁর স্বাস্থ্যের অবস্থা ও বয়সের ওপর। তাই সঠিক খাবার তালিকা অনুসরণ করে রোজা রাখুন। কখনোই শুধু পানি খেয়ে রোজা রাখবেন না। অতিভোজন থেকেও বিরত থাকুন। খাবার ভালোভাবে চিবিয়ে ধীরে ধীরে খান, যা আপনার হজমে সহায়ক হবে।

২. ইফতার ও সাহ্‌রিতে সাধারণ ৮–১০ গ্লাস পানি খাওয়া ভালো। তবে আপনি নিজেই বুঝবেন ঠিক কত গ্লাস পানি আপনার প্রয়োজন। গ্লাস গুনে পানি খেতে অসুবিধা হলে সমপরিমাণ পানি বোতলে ভরে রাখুন এবং ইফতার থেকে সাহ্‌রির সময়ের মধ্যে তার পুরোটা শেষ করুন। গ্রীষ্মকালীন রমজানে পরিমাণমতো বিশুদ্ধ পানি খাওয়া জরুরি। এশা ও তারাবির নামাজের পর অভ্যাস অনুযায়ী পরিমাণমতো ভাত, মাছ অথবা মুরগির মাংস, ডাল ও সবজি খান।

৩. দীর্ঘ সময় অভুক্ত থাকার কারণে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে এবং পানিশূন্যতার কারণে শরীরে দেখা দেয় নানান জটিলতা। অনেকে পানির পরিবর্তে লেমন অথবা রোজ ওয়াটার, শরবত, ভিটামিন ওয়াটারসহ নানান ধরনের প্রক্রিয়াজাত পানীয় খান। এ ব্যাপারে পুষ্টিবিদদের অভিমত, রোজাদারদের শুধু বিশুদ্ধ পানি খাওয়াই ভালো। কার্বোনেটেড ও সুগার ড্রিংক, চা ও কফি খেলে শরীর থেকে অধিক পানি বের হয়ে যায়। অ্যাসিডিটির সমস্যা মাথাচাড়া দেয়। রোজাদারদের বরং প্রচুর সবুজ শাকসবজি, ফলমূল খাওয়া প্রয়োজন।

আরও পড়ুনরোজায় গ্যাসের সমস্যা এড়াতে খাবারের বেলায় যেসব নিয়ম মানবেন০৬ মার্চ ২০২৫

৪. সারা দিন অভুক্ত থাকার ফলে শরীরের শক্তির জন্য প্রয়োজনীয় এবং দ্রুত শক্তি পাওয়া যায়, এমন খাবারের উদাহরণ হলো গ্লুকোজ। এ ছাড়া তৎক্ষণাৎ শক্তির জোগান দিতে সক্ষম খাবারের মধ্যে আছে আঙুর, খেজুর, ফলের রস। এসব যেমন শরীরে সহজে শক্তি আহরণে কাজে লাগে, তেমনি শরীরের পানি ও খনিজের প্রয়োজনও মেটায়।

৫. ইফতারে মুখরোচক খাবারগুলো স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে তৈরি করা হয়েছে কি না, ভেজাল তেল, বেসন ও কৃত্রিম রং মেশানো হয়েছে কি না, সেদিকে নজর দিন। কোনো কিছু ভাজার জন্য একবারের বেশি তেল ব্যবহার করা উচিত নয়। কারণ, একই তেল বারবার আগুনে ফোটালে কয়েক ধরনের রাসায়নিক দ্রব্য তৈরি হয়, যেমন পলি নিউক্লিয়ার হাইড্রোকার্বন। এই রাসায়নিকের মধ্যে বেনজা পাইরিন নামক ক্যানসার তৈরিতে সক্ষম এমন পদার্থের মাত্রা বেশি থাকে। ইফতারে বেশি ক্যালরি সমৃদ্ধ এবং সহজে ও তাড়াতাড়ি হজম হয়, এমন খাবার খান।

আরও পড়ুনসেবার কেন ২৮ রমজানে ঈদ হয়েছিল আরবে?১০ এপ্রিল ২০২৪

৬. সাহ্‌রির খাবার সহজপাচ্য ও স্বাস্থ্যসম্মত হওয়া জরুরি। অধিক তেল, অধিক ঝাল, অধিক চর্বিজাতীয় খাবার খাওয়া একদম উচিত নয়। ভাতের সঙ্গে মিশ্র সবজি, মাছ অথবা মাংস খান। অনেকেই মনে করেন, যেহেতু সারা দিন না খেয়ে থাকতে হবে, তাই সাহ্‌রির সময় প্রয়োজনের অতিরিক্ত বেশি খাবার খেতে হবে। তা মোটেই ঠিক নয়। কারণ, চার–পাঁচ ঘণ্টা পার হলেই খাদ্যগুলো পাকস্থলী থেকে অন্ত্রে গিয়ে হজম হয়ে যায়। তাই প্রয়োজনের তুলনায় বেশি না খাওয়াই ভালো বরং মাত্রাতিরিক্ত খেলে ক্ষতির আশঙ্কাই বেশি।

৭. ভাজাপোড়া ও অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাদ্য বুক জ্বালাপোড়া এবং বদহজমের সমস্যা তৈরি করে। তাই এসব বর্জন করুন। রান্নার সময় খাবারে ডালডার পরিবর্তে যতটা সম্ভব কম পরিমাণে সয়াবিন তেল ব্যবহার করুন। অতিরিক্ত লবণ ও লবণাক্ত খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন। কারণ, এসব রোজার সময় পানির পিপাসা বাড়ায়।

৮. ঘুমানোর আগে ও সাহ্‌রির পরে অবশ্যই দাঁত ব্রাশ করতে ভুলবেন না। রোজা রাখা অবস্থায় সকালে ব্যায়াম না করে ইফতারের পর ব্যায়াম করা ভালো। খাওয়ার আগে অবশ্যই হাত ধুতে ভুলবেন না। দিনে সুযোগ থাকলে ঠান্ডা ও ছায়াযুক্ত স্থানে থাকুন। দৈনিক কাজকর্ম এমনভাবে ঠিক করুন, যাতে রাতের বেলা বেশ ভালোভাবে ঘুমানো যায়।

আরও পড়ুনদই-চিড়া কেন সেরা ইফতারি১০ মার্চ ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ