সাজা স্থগিত, আপিল করার অনুমতি পেলেন মীর নাসির ও মীর হেলাল
Published: 16th, March 2025 GMT
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় সাজার রায়ের বিরুদ্ধে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন ও তাঁর ছেলে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিনের লিভ টু আপিল (আপিল করার অনুমতি চেয়ে আবেদন) মঞ্জুর করেছেন আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে এই মামলায় মীর নাসিরের ১৩ বছরের সাজা এবং তাঁর ছেলে মীর হেলালের তিন বছরের সাজা স্থগিত করা হয়েছে।
আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো.
আদালতে মীর নাসির ও মীর হেলালের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রাগীব রউফ চৌধুরী। দুদকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী আসিফ হাসান।
আদেশের পর জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রাগীব রউফ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, মীর নাসিরের ১৩ বছর এবং মীর হেলালের তিন বছরের সাজা স্থগিত করা হয়েছে। তাঁদের করা লিভ টু আপিল মঞ্জুর করে আদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়া শেষে আপিলের ওপর শুনানি হবে।
অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে মীর নাসির ও তাঁর ছেলে মীর হেলালের বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের ৬ মার্চ গুলশান থানায় দুদক মামলা করে। এ মামলায় বিশেষ জজ আদালত একই বছরের ৪ জুলাই মীর নাসির উদ্দিনকে ১৩ বছর এবং মীর হেলালকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে তাঁরা হাইকোর্টে পৃথক আপিল করেন। হাইকোর্ট ২০১০ সালের ১০ আগস্ট মীর নাসিরের এবং একই বছরের ২ আগস্ট মীর হেলালের সাজা বাতিল করে রায় দেন। হাইকোর্টের রায় বাতিল চেয়ে আপিল আবেদন করে দুদক। এর শুনানি নিয়ে ২০১৪ সালের ৩ জুলাই আপিল বিভাগ হাইকোর্টের দেওয়া রায় বাতিল করেন। একই সঙ্গে বিচারিক আদালতের সাজার বিরুদ্ধে বাবা–ছেলের করা পৃথক আপিল হাইকোর্টে পুনরায় শুনানির নির্দেশ দেওয়া হয়।
আপিলের ওপর পুনরায় শুনানি নিয়ে ২০১৯ সালের ১৯ নভেম্বর হাইকোর্ট রায় দেন। এই রায়ে মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দিনকে বিচারিক আদালতের দেওয়া ১৩ বছরের সাজা এবং মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিনকে দেওয়া তিন বছরের কারাদণ্ড বহাল রাখা হয়। এই রায়ের বিরুদ্ধে ২০২০ সালে তাঁরা পৃথক লিভ টু আপিল করেন। শুনানি নিয়ে এই লিভ টু আপিল মঞ্জুর করে সাজা স্থগিত করে আদেশ দেওয়া হয়।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম র ম হ ম মদ ত ন বছর র বছর র স জ ১৩ বছর
এছাড়াও পড়ুন:
মডেল মেঘনা আলমের আটকাদেশ কেন অবৈধ নয়: হাইকোর্ট
মডেল মেঘনা আলমকে পরোয়ানা ছাড়া গ্রেপ্তার, কারণ উল্লেখ না করে গ্রেপ্তার, ২৪ ঘন্টার বেশি গোয়েন্দা কার্যালয়ে হেফজতে রাখা প্রশ্নে রুলে দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে মেঘনা আলমকে দেওয়া আটাকাদেশ কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা রুলে জানতে চাওয়া হয়েছে।
একটি রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি রাজিক আল জলিল ও বিচারপতি তামান্না রহমান খালিদীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার এ রুল দেন। মেঘনা আলমকে আটকের প্রক্রিয়া ও আটকাদেশের বৈধতা নিয়ে তার বাবা বদরুল আলম রিট আবেদন দায়ের করেন।
গত ৯ এপ্রিল রাতে মডেল মেঘনা আলমকে রাজধানীর বসুন্ধরার বাসা থেকে আটক করে হেফাজতে নেয় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আদেশ অনুযায়ী, পর দিন ১০ এপ্রিল রাতে আদালত তাঁকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৩০ দিন আটক রাখার আদেশ দেন। তিনি কারাগারে আছেন।
সুনির্দিষ্ট কারণ না জানিয়ে মেঘনা আলমের আটকের ঘটনা নানা আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়। অপরাধে জড়ালে মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার না করে তাঁকে কেন বিশেষ ক্ষমতা আইনের বিতর্কিত ‘প্রিভেন্টিভ ডিটেনশন’ বা প্রতিরোধমূলক আটক করা হলো, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এমন প্রেক্ষাপটে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) পদ থেকে রেজাউল করিম মল্লিককে গতকাল শনিবার সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এ দিকে মেঘনা আলমকে যে প্রক্রিয়ায় আটক করা হয়েছে, তা সঠিক হয়নি বলে আজ রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে মন্তব্য করেছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। এর আগে মেঘনা আলমকে গ্রেপ্তার ও আটকাদেশের বৈধতা নিয়ে মেঘনার বাবা আজ রিটটি করেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সারা হোসেন, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী কাজী জাহেদ ইকবাল ও প্রিয়া আহসান চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ ও জামিলা মমতাজ।
রুলে পরোয়ানা ছাড়া বাসা থেকে মেঘনা আলমকে গ্রেপ্তার, কারণ না জানিয়ে গ্রেপ্তার, ডিবি কার্যালয়ে ২৪ ঘণ্টার বেশি হেফাজতে রাখা ও আইনজীবীর সুযোগ না দেওয়া কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বিশেষ ক্ষমতা আইনে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে দেওয়া আটকাদেশ কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তাও জানতে চেয়েছেন আদালত।
স্বরাষ্ট্রসচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার, ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) প্রধান,ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ও ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।