নেতাকর্মীর অপকর্মে বিএনপির ভোট কমছে
Published: 16th, March 2025 GMT
বরিশালে মতবিনিময় সভায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা অভিযোগ করেছেন, সারাদেশে নেতাকর্মীর অপকর্মের কারণে দলের ভোট কমে যাচ্ছে। হুঁশিয়ার করে তারা বলেন, সামনে কঠিন সময়। আন্দোলন-সংগ্রামের মতো নির্বাচনেও ঐক্য ধরে রাখতে হবে। স্কুল ও মসজিদ কমিটি কিংবা বাজারঘাটের ইজারায় যাওয়া যাবে না।
রোববার নগরের বরিশাল ক্লাবে বিভাগের ছয় জেলার আট সাংগঠনিক কমিটির নেতাদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতাদের মতবিনিময়ে কঠোর গোপনীয়তা ছিল। অংশগ্রহণকারীদের সভাকক্ষে মোবাইল ফোন ব্যবহারে ছিল বিধিনিষেধ। এর পরও দক্ষিণ জেলায় পকেট কমিটি গঠনের পাঁয়তারার অভিযোগ তুলে একাংশ সভা থেকে বের হয়ে বাইরে বিক্ষোভ করে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও বিভাগীয় টিমপ্রধান আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, ‘সামনে কঠিন সময়। নেতাকর্মীকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সতর্ক হতে হবে।’
কেন্দ্রীয় বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মজিবর রহমান সরোয়ার কাউন্সিলের মাধ্যমে কমিটি গঠনের তাগিদ দিয়ে দলকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানান।
যুবদল সভাপতি মোনায়েম মুন্না স্কুল কমিটি, মসজিদ কমিটি, বাজারঘাটের ডাকে নেতাকর্মীকে যেতে নিষেধ করেন। ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আমানউল্লাহ আমান বলেন, ‘নেতাকর্মীর বদনামের জন্য দলের ভোট কমে যাচ্ছে।’
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি রাজিব আহসান বলেন, ‘আপনারা অঙ্গ সংগঠনকে কেবল শাসান। অভিভাবক হয়ে আপনারা অপকর্ম করলে অঙ্গ সংগঠনের নেতারাও সেদিকেই ধাবিত হয়।’
সভায় নগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবুল হোসেন, উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক দেওয়ান শহীদুল্লাহ, ভোলা জেলা আহ্বায়ক আলমগীর নবী প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
জানতে চাইলে আকন কুদ্দুসুর রহমান বলেন, ‘কুচক্রী মহল নেতাকর্মীকে ভুল পথে নিচ্ছে। এ জন্য আমরা সাবধান করছি। নেতাদের বলা হয়েছে, চাপ দিয়ে কোনো কমিটিতে আসা যাবে না।’ ভোট কমে যাওয়া বক্তব্যের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ভোট কম-বৃদ্ধি বিষয় না। নেতাকর্মীর প্রতি স্পষ্ট বার্তা– আওয়ামী লীগ যে ভাষায় কথা বলেছে, তা বলা যাবে না। জনগণের পাশে থাকতে হবে।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: বর শ ল ব এনপ ন ত কর ম র ব এনপ র কর ম ক ভ ট কম
এছাড়াও পড়ুন:
চাঁদাবাজ–দখলবাজদের বিএনপিতে জায়গা নেই: ইশরাক
চাঁদাবাজ দখলবাজদের বিএনপিতে জায়গা হবে না বলে উল্লেখ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা কমিটির বিশেষ সহকারী ইশরাক হোসেন। তিনি বলেছেন, বিএনপির সুনাম ক্ষুণ্ন করার জন্য দু-একজন যে অপকর্ম করছে, এদের চিহ্নিত করে দল থেকে বের করে দিতে হবে।
বিএনপি এই নেতা আরও বলেন, ‘যারা আন্দোলন–সংগ্রামে রাজপথে ছিলাম, চাঁদাবাজ দখলবাজদের জন্য আমরা বিতর্কিত হতে পারব না। জনগণের বিরাগভাজন হতে পারব না।’
আজ রোববার বিকেলে বংশালের নর্থ সাউথ রোডের সুরিটোলা স্কুলমাঠে থানা বিএনপি আয়োজিত রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতে বিএনপির ‘৩১ দফা সংস্কার কর্মসূচি ও জনসম্পৃক্তি’ কর্মসূচিতে তিনি এ কথা বলেন। এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
ইশরাক বলেন, ‘বিগত দিনে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে বিএনপির একটি সুনাম অর্জিত হয়েছে, জনগণের সহমর্মিতা সমর্থন আমাদের ওপর তৈরি হয়েছে। কিন্তু দুঃখের সঙ্গে বলতে হবে, সেটা অনেকখানি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্বৈরাচার হাসিনার রেখে যাওয়া মিডিয়ার কোনো পরিবর্তন হয়নি। ৫ আগস্টের পর এরা গর্তের মধ্যে ঢুকে ছিল, এখন মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। এখন আমরা দেখতে পারছি সুপরিকল্পিতভাবে, সংঘবদ্ধভাবে বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।’
বিএনপির সুনাম ক্ষুণ্ন করার জন্য একটি মহল উঠেপড়ে লেগেছে অভিযোগ করে ইশরাক বলেন, ভবিষ্যতে বুদ্ধিবৃত্তিক রাজনীতির মাধ্যমে জনগণের মন জয় ও ভোট নিশ্চিত করতে হবে। জনগণের ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হতে হবে।
নিজেদের সমালোচনা করে উপস্থিত নেতা–কর্মীদের উদ্দেশে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমাদের যেভাবে আচার-আচরণ হওয়া উচিত ছিল, সেটা কি শতভাগ করতে পেরেছি? আমাদের মধ্যে কি দোষ-ত্রুটি, ত্রুটি-বিচ্যুতি হয় নাই? আমাদের মধ্যে কেউ কেউ কি অপকর্ম লিপ্ত হয় নাই? অবশ্যই হয়েছে। একটা–দুইটা ঘটনা ঘটতে পারে, অপকর্ম সব দলের লোকজনই করছে, সবাই করছে। বিএনপি বড় দল, এখন আমাদের একটু সচেতন হওয়ার সময় এসেছে। যেহেতু আমাদের সামনে নির্বাচন ছাড়া বিকল্প নাই। জনগণের মন জয় করে আমাদের রাজনীতি করতে হবে।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনুর সভাপতিত্বে সদস্যসচিব তানভীর আহমেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহীর সদস্য হামিদুর রহমান হামিদ, রফিকুল ইসলাম, সাবেক কাউন্সিলর মোহাম্মদ মোহন প্রমুখ।