এবার মুক্তাদীর-আরিফুল–সমর্থিত নেতা-কর্মীরা এক কাতারে
Published: 16th, March 2025 GMT
এবার সিলেটে দোয়া ও ইফতার মাহফিলে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল মুক্তাদীর ও আরিফুল হক চৌধুরী–সমর্থিত নেতা-কর্মীদের এক কাতারে দেখা গেছে। আজ শনিবার নগরের আরামবাগ এলাকার একটি কনভেনশন সেন্টারে এই দোয়া ও ইফতার মাহফিল হয়।
এর আগে ৯ মার্চ একই কনভেনশন সেন্টারে ইফতারের আয়োজন করেছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। এতে বিএনপির কেন্দ্রীয়-স্থানীয় নেতা-কর্মীসহ নানা শ্রেণি-পেশার কয়েক হাজার মানুষ অংশ নিলেও খন্দকার আবদুল মুক্তাদীর ও স্থানীয় বিএনপির শীর্ষ নেতাদের দেখা যায়নি।
স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা জানান, সিলেটে বিএনপির রাজনীতি এখন দুটি বলয়ে বিভক্ত। একটির নেতৃত্বে আছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-১ আসনে দলীয় প্রার্থী খন্দকার আবদুল মুক্তাদীর। অন্যটির নেতৃত্বে আছেন আরিফুল হক চৌধুরী।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সুস্থতা কামনায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ্ সিদ্দিকী আজ দোয়া ও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেন। এতে মুক্তাদীর ও আরিফুল বলয়ের প্রায় সব প্রভাবশালী নেতা-কর্মীই উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুনসিলেটে আরিফুলের ইফতারে ছিলেন না মুক্তাদীরসহ স্থানীয় বিএনপির শীর্ষ নেতারা১০ মার্চ ২০২৫ইফতার মাহফিল-পূর্ব সংক্ষিপ্ত আলোচনা পর্ব সঞ্চালনা করেন মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সালেহ আহমদ খসরু। কর্মসূচিতে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এনামুল হক চৌধুরী, খন্দকার আবদুল মুক্তাদীর ও আরিফুল হক চৌধুরী, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক এম এ সালাম, ক্ষুদ্রঋণবিষয়ক সহসম্পাদক আবদুর রাজ্জাক, নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ সুজাত মিয়া, ফয়সল আহমদ চৌধুরী ও হাদিয়া চৌধুরী মুন্নি, জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী, মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, দীর্ঘদিনের আন্দোলন-সংগ্রামের পর ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হয়েছে। মানুষ দীর্ঘদিন থেকে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। দেশের মানুষ ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য প্রতীক্ষায় রয়েছেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে অতীব জরুরি সংস্কার শেষে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জোর দাবি জানান বক্তারা।
ইফতার মাহফিলে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ এম সারওয়ারউদ্দিন চৌধুরী, সহ–উপাচার্য সাজেদুল করিম, সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য আশরাফুল আলম, সিলেট শিক্ষা বোর্ডের সচিব চৌধুরী মামুন আকবর, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ সিলেটের আহ্বায়ক শামীমুর রহমান ও সদস্যসচিব শাহনেওয়াজ আহমদ, বাংলাদেশ বেতার সিলেটের আঞ্চলিক পরিচালক আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তারিকসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি ও পেশাজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।
ইফতার শেষে যোগাযোগ করলে মিফতাহ্ সিদ্দিকী প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিএনপিতে কোনো কোন্দল-বিভাজন নেই। যে বা যাঁরা বলয়ের কথা বলছেন, সেটা সঠিক নয়। দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপির সবাই ঐক্যবদ্ধ। আজকের ইফতার মাহফিলে সব পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের উপস্থিতি আমাদের ঐক্যবদ্ধ অবস্থানকেই প্রমাণ করেছে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন য় ব এনপ র ব এনপ র স উপস থ ত
এছাড়াও পড়ুন:
‘গণ–অভ্যুত্থানপরবর্তী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সুন্দর পরিবেশ বিরাজ করছে’
গণ–অভ্যুত্থানপরবর্তী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সুন্দর পরিবেশ বিরাজ করছে। ছাত্র-জনতার এই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দীর্ঘদিন পর ক্যাম্পাসে ছাত্রসংগঠগুলোর সহাবস্থান লক্ষ্য করছি। এই রাজনৈতিক সহনশীলতার সংস্কৃতি জারি রাখতে হবে। গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (ডুজা) ইফতার মাহফিল ও ‘গণ–অভ্যুত্থানপরবর্তী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান এ কথাগুলো বলেন।
শুক্রবার বিকেল পাঁচটা থেকে ইফতারের আগ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) ক্যাফেটেরিয়ায় এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মহিউদ্দিন মুজাহিদ মাহির সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মামুন আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক এম জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক মাহবুব মোর্শেদ প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে নিয়াজ আহমদ খান বলেন, ডুজার সদস্যদের জুলাই আন্দোলনে যে নির্ভীক ভূমিকা ছিল তা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে বলে আমি আশা করি। তিনি আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল আয়োজনের জন্য ডুজার সদস্যরাসহ উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাহবুব মোর্শেদ বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সামিতির আয়োজনে ছাত্রসংগঠনগুলোর মধ্যে যে সহাবস্থান ও সহনশীলতার পরিচয় পেয়েছি, সেটি ভবিষ্যতে অব্যাহত থাকলে একটি সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মাণ সম্ভব। উপস্থিত ছাত্রসংগঠনগুলোর মধ্যে আমি সে সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছি।’
উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে ডুজা সভাপতি মহিউদ্দিন মুজাহিদ মাহি বলেন, গণ–অভ্যুত্থানে ছাত্রসংগঠনগুলোর যে একতা আমরা দেখেছি, সেটি শিক্ষার্থীদের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছে। ছাত্ররাজনীতি নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে ভয় ছিল, সেটি দূর করতে আপনাদের আন্তরিকতা ও সদিচ্ছা প্রয়োজন। যেকোনো সংঘাতময় পরিস্থিতি এড়িয়ে গঠনমূলক আলোচনা-সমালোচনার মাধ্যমে সব সংকট থেকে উত্তরণের পথ বের করতে হবে।
সভায় ছাত্রনেতাদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির, বাংলাদেশ ইমলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি দিলীপ রায়, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের (একাংশ) সভাপতি সালমান সিদ্দিকী, ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ এর সেক্রেটারি জেনারেল শেখ মাহবুবুর রহমান নাহিয়ান, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের (একাংশ) সভাপতি রাগীব নাঈম, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ এবং স্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্রসংসদের আহ্বায়ক জামালুদ্দীন মুহাম্মদ খালিদ।
বক্তব্যে ছাত্রনেতারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আহ্বান জানিয়েছেন।