হাবিপ্রবিতে ভর্তির জন্য আবেদন করেছেন প্রায় ৭৩ ভর্তিচ্ছু
Published: 16th, March 2025 GMT
দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার জন্য ৭২ হাজার ৯৯৩ জন ভর্তিচ্ছু আবেদন করেছেন।
রবিবার (১৬ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ও রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. এম জাহাঙ্গীর কবির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পূর্বে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে আবেদনের তারিখ ও পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তন করা হয়েছিল। সেখানে আবেদনের শেষ সময় ছিল ১৩ মার্চ রাত ১১.
এ সময়ের মধ্যে বিভিন্ন ইউনিটে মোট আবেদন করেছেন ৭২ হাজার ৯৯৩ জন ভর্তিচ্ছু। এর মধ্যে ‘এ’ ইউনিটে মোট আবেদন করেছে ২৫ হাজার ৮০৬ জন, ‘বি’ ইউনিটে ২২ হাজার ২৯৫ জনের (তন্মধ্যে আর্কিটেকচারে ১ হাজার ৬৪৭ জন), ‘সি’ ইউনিটে ৬ হাজার ৮৪৯ জন (তন্মধ্যে বিজ্ঞান ও মানবিক বিভাগ থেকে ৪ হাজার ৪৫৫ জন) এবং ‘ডি’ ইউনিটে মোট আবেদন করেছেন ১৮ হাজার ৪৩৯ জন (তন্মধ্যে বিজ্ঞান ও বাণিজ্য বিভাগের ৬ হাজার ৬৬৮ জন)।
আবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ‘এ’ ইউনিটে প্রতি আসনের বিপরীতে প্রায় ৪৭ জন, ‘বি’ ইউনিটে প্রতি আসনের বিপরীতে প্রায় ৩০ জন, ‘সি’ ইউনিটে প্রতি আসনের বিপরীতে প্রায় ২৪ জন এবং ‘ডি’ ইউনিটে প্রতি আসনের বিপরীতে প্রায় ৭৭ জন ভর্তিচ্ছু লড়বেন।
প্রতি ইউনিটের আবেদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছিল ১ হাজার টাকা এবং আর্কিটেকচারের ড্রয়িং পরীক্ষার জন্য অতিরিক্ত ২০০ টাকা ফি প্রদান করতে বলা হয়েছিল।
‘এ’ ইউনিটে রয়েছে এগ্রিকালচার, ফিশারিজ এবং ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিম্যাল সায়েন্স অনুষদ; ‘বি’ ইউনিটে রয়েছে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং বিজ্ঞান অনুষদ; ‘সি’ ইউনিটে রয়েছে বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ এবং ‘ডি’ ইউনিটে রয়েছে সামাজিক বিজ্ঞান ও কলা অনুষদ।
ঢাকা/সংগ্রাম/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আসন র ব পর ত ভর ত চ ছ ইউন ট
এছাড়াও পড়ুন:
খরচই ওঠে না, ভেঙে ফেলা হচ্ছে সিনেমা হল
দুপুরের কড়া রোদ্দুর মাথায় গলে পড়ছে। কোনোমতে গামছা প্যাঁচিয়ে জিরানোর ছলে কী যেন ভাবছিলেন হাতুড়ি পিটিয়ে দেয়াল ভাঙার শব্দ শুনতে শুনতে। ষাটোর্ধ্ব বয়সী রিকশাচালক আবুল মিয়া এই শহরেই রিকশা চালান তিন যুগের বেশি সময় ধরে। চোখের সামনেই তাঁর কৈশোর-যৌবনের বিনোদনের জায়গাটা ভাঙা হচ্ছে। জানালেন বেদের মেয়ে জোছনা ছবিটা তাঁর খুব প্রিয়। এই শহরে সিনেমাটি যখন আসে টানা ১০ বার দেখেছেন। শেষে মায়ের বানানো গোবরের লাকড়ি বিক্রি করে সিনেমা দেখেছেন। তাঁর মতে সিনেমা দেখতে এত ভিড় অন্য কোনো সিনেমায় দেখেননি। একটা সময় পর নানা কারণে ছবি দেখা ছেড়ে দেন তিনি।
বেশির ভাগ অংশের ভাঙার কাজ শেষ, সামনের অংশটুকু গুঁড়িয়ে দিলেই আর চেনা যাবে না ময়মনসিংহ নগরীর পূরবী সিনেমা হলটি। এই বিনোদন কেন্দ্র ভাঙতে দেখে কৈশোরের স্মৃতিচারণ ও আক্ষেপ করলেন গোহাইলকান্দি এলাকার বাসিন্দা রিকশাচালক আবুল মিয়া।
মালিক পক্ষ জানায়, কয়েক বছর ধরে প্রতি শোতে পাঁচ-সাতজন দর্শক হয়। অনেক সময়
দর্শক না থাকায় শো বন্ধ থাকে। দিনের পর দিন স্টাফ খরচও না ওঠায় হল ভাঙার সিদ্ধান্ত
নিতে হয়েছে। সেখানে বহুতল ভবন করে দর্শক চাহিদার ওপর ভিত্তি করে প্রয়োজনে পূরবী সিনেপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে।
অনেকে বলছেন, আগেও যতগুলো সিনেমা হল ভাঙা হয়েছে কর্তৃপক্ষের ছিল একই উছিলা। সিনেপ্লেক্সের জায়গায় হয়েছে মোবাইল, প্রসাধনীর জমকালো দোকান। এর আগে ২০০২ সালের ৭ ডিসেম্বর অলকা, অজন্তা, ছায়াবাণী ও পূরবী সিনেমা হলে একজোগে বোমা হামলা হয়। এর পরই মূলত সিনেমা হলগুলোয় দর্শকসংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমতে থাকে। করোনার পর থেকে সেই সংখ্যা আরও বাড়ে। হলের নিচতলায় ৭০০ আসন, দ্বিতীয় তলায় ডি চেয়ার ছিল ৩২০টি এবং বক্স ছিল ২০টি। এ ছাড়া মানসম্মত সিনেমা তৈরি না হওয়ায় দর্শক হারিয়েছে সিনেমা হলগুলো।
গতকাল রোববার সরেজমিন দেখা গেছে, ৮-১০ জন শ্রমিক দেয়াল ভেঙে ইট, পাথর ও লোহা সরানোর কাজ করছেন। শ্রমিক মুকুল মিয়া বলেন, ‘গত ২৫ ডিসেম্বর থেকে হল ভাঙার কাজ শুরু করেছি। দৈনিক গড়ে ১২-১৪ জন শ্রমিক কাজ করছি। প্রথম-দ্বিতীয় তলার ছাদ এবং দেয়াল ভাঙা হয়েছে। সম্পূর্ণ ভাঙতে আরও কমপক্ষে তিন মাস সময় লাগবে।’
ঠিকাদার হারুন অর রশিদ বলেন, ‘১৫ লাখ টাকায় পূরবী সিনেমা হলের পুরাতন মালপত্র
ক্রয় করেছি। আমরা সেগুলো ভেঙে এখন জায়গা খালি করছি। সব মিলিয়ে আমাদের চার মাস
সময় লাগবে।’
স্থানীয় বাসিন্দা জলিল মিয়া জানান, এই হলটি দেখতে দেখতে বড় হয়েছেন তারা। এক
সময় সিনেমার জোয়ার ছিল। তাই মানুষ হলের আশপাশে অনেক ভিড় জমাত। এখন ছবি না চলার কারণে মালিকপক্ষ হল ভাঙছে। এতে খারাপ লাগলেও মালিক তো আর বছরের পর বছর লোকসান গুনবেন না।
পূরবী সিনেমা হলের ম্যানেজার মোখতার হোসেনের ভাষ্য, দেশের নামকরা কয়েকটি হলের একটি ছিল পূরবী। স্বাধীনতার বেশ কয়েক বছর আগে হলটি নির্মাণ করা হয়েছিল। তখন ভালো ভালো ছবি নির্মিত হওয়ায় হলভর্তি দর্শক হতো। বিশেষ করে করোনার পর হলের দর্শক একেবারে ধস নামে। তিনি বলেন, ‘সবশেষ এক মাস আগে আমরা একবুক জ্বালা ছবিটি চালিয়েছিলাম। আমার কিছু আর জানা নেই।’