বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশে খুন, জখম ও ধর্ষণের ঘটনায় তিনি পীড়িত। পাশাপাশি তরুণ প্রজন্মের অসহিষ্ণু হয়ে ওঠা, যখন-তখন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের দাবিদাওয়া নিয়ে রাস্তায় নেমে আসার ঘটনায় তিনি বিচলিত। এ জন্য তিনি সবাইকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানান।

আজ রোববার ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) যৌথভাবে এই ইফতার অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘একটা ভয়াবহ দানবীয় পরিবেশ থেকে আমরা বেরিয়ে এসেছি। সেখানে আমাদের একটু ধৈর্য ধারণ করতে হবে। পত্রিকার পাতা খুললে বিচলিত হয়ে পড়ি। আবার সেই খুন, জখম, ধর্ষণ—এগুলো এমন একটা জায়গায় চলে যাচ্ছে, যেই জায়গাগুলো আমাদের সবাইকে অত্যন্ত পীড়িত করছে।’

তরুণ প্রজন্ম, বিশেষ করে ছাত্ররা অসহিষ্ণু হয়ে উঠছে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘অন্যদিকে দেখছি ইয়ার জেনারেশন (তরুণ প্রজন্ম), বিশেষ করে ছাত্ররা অসহিষ্ণু হয়ে উঠছে। আবার দেখি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলো আছে তাদের কর্মীরা, তারাও তাদের দাবিদাওয়া নিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে আসছে। মনে হয় সবার এ ব্যাপারে ধৈর্য ধরার প্রয়োজন আছে।’

মির্জা ফখরুল মনে করেন, যত দ্রুত নির্বাচন হবে, যত দ্রুত জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা সংসদে আসবেন, সংসদে এসে একদিকে দেশ পরিচালনা করবেন, অন্যদিকে প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলোর সবাই মিলে একসঙ্গে করতে পারবেন।

অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে বিএনপির এই নেতা বলেন, দেরি হওয়ার সুযোগ নিয়ে ফ্যাসিস্ট শক্তিগুলো মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে শুরু করছে। তারা শুধু নয়, একই সঙ্গে উগ্রবাদীরা এই সুযোগগুলো নেওয়ার চেষ্টা করছে।

বিএনপি সংস্কারের বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ জানিয়ে দলের মহাসচিব বলেন, ‘আমরা ৩১ দফা দাবি দুই বছর আগে দিয়েছি। যখন এই সংস্কারের কথা কেউ ভাবেনি। সেই সংস্কারগুলোর সঙ্গে আজকে যে প্রস্তাবগুলো আসছে, সেই প্রস্তাবগুলোর খুব একটা পার্থক্য দেখা যাচ্ছে না। সে জন্যই মনে করি, যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের ব্যবস্থা করা উচিত। নির্বাচিত সরকারের হাতে দায়িত্ব দিয়ে দেশে স্থিতিশীলতা রক্ষা করার ব্যবস্থা করা দরকার।’

শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট সরকারকে পরাজিত করে স্বাধীনতার স্বাদ পেয়েছেন উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, হাসিনা সরকার রাষ্ট্রের এবং গণতন্ত্রের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। একদিকে রাজনৈতিক কাঠামো নষ্ট করেছে, অন্যদিকে অর্থনৈতিক কাঠামো ধ্বংস করেছে। এই ধ্বংসস্তূপ থেকে বাংলাদেশ গড়ে তোলা এখন শুধু সরকারের দায়িত্ব নয়, সবার দায়িত্ব।

যেসব সংস্কার অত্যন্ত প্রয়োজনীয়, সেগুলো দ্রুত সম্পন্ন করে দ্রুত একটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিকে যেতে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আহ্বান জানান তিনি।

ইফতার অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহিন, বিএফইউজের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন সরক র র ফখর ল ব এনপ ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান শেষ, গাজায় নিহতদের স্মরণে ১ মিনিট নীরবতা

রাজধানীর রমনার বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের হামলায় নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়েছে।

সোমবার (১৪ এপ্রিল) বাংলা নতুন বছরের প্রথম দিনে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান শেষের আগমুহূর্তে শিল্পী ও দর্শনার্থীরা দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন। পরে ছায়ানটের শিল্পীদের সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে ছায়ানটের এবারের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান শেষ হয়।

নীরবতা পালনের আগে ছায়ানটের নির্বাহী সভাপতি সারওয়ার আলী বলেন, ফিলিস্তিনের গাজায় ভয়াবহ মানবতার বিপর্যয় এবং গণহত্যায়, বিশেষ করে শিশু হত্যার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। ফিলিস্তিনবাসী আপন ভূমি রক্ষায় যে সংগ্রাম করছেন, তার প্রতি আমরা সংহতি জানাই। ইসরায়েলের নির্বিচার হত্যাযজ্ঞে নিহত মানুষদের স্মরণে সবাইকে এক মিনিট নীরবতা পালনের অনুরোধ করছি।

এবার ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের মূল বার্তা ‘আমার মুক্তি আলোয় আলোয়’। আলো, প্রকৃতি, মানুষ ও দেশপ্রেমের গান দিয়ে সাজানো হয় আজকের অনুষ্ঠান।

বাংলা বর্ষবরণের এ আয়োজন সরাসরি সম্প্রচার করে ছায়ানটের ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেজ। বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলেও এই অনুষ্ঠান প্রচার করা হয়।

দেশের ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক সংস্থা ছায়ানট ১৯৬৭ সাল থেকে রমনা বটমূলে পয়লা বৈশাখে বর্ষবরণের অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে। এবার ১৪৩২ বঙ্গাব্দকে বরণ করে নিতে গত তিন মাস ধরে ধানমন্ডির ছায়ানট সংস্কৃতি ভবনে চলে গানের মহড়া। 

ঢাকা/সুকান্ত/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ